মেয়েঃ এত দেরী হলো কেন? সেই কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি তোমার জন্য।
ছেলেঃ আর বলো না। এত জ্যাম রাস্তায়….
মেয়েঃ থাক, হয়েছে। সবসময় অজুহাত দেয়াটাই তোমার কাজ। তোমার মাঝে বিন্দুমাত্র সময়ানুবর্তিতা নেই।
ছেলেঃ দুঃখিত বলা ছাড়া আমার আর কোন কিছু বলার নেই।
মেয়েঃ আর কি বলার আছে শুনি? যুগ যুগ ধরে মেয়েরাই তো অপেক্ষায় থাকে। ছেলেগুলো সব পাষাণ, জানো তো!
ছেলেঃ আমার একার জন্য সব দোষ ছেলেদের হয়ে গেলো! তুমি পারোও বটে!!
মেয়েঃ থাক হয়েছে। আর তর্ক করতে হবে না। কি এনেছো আমার জন্য?
ছেলেঃ এখন না, একটু পর দেব৷ আমি একটা বিশেষ মুহুর্তের অপেক্ষায় আছি।
মেয়েঃ আজ তো আমার জন্মদিন। এর চেয়ে বিশেষ মুহুর্তও তোমার জীবনে আছে নাকি!!
ছেলেঃ না। তা থাকবে কেন? তবে এটার সাথে ওটার একটা বিশেষ সম্পর্ক আছে। সময় হোক, টের পাবে।
মেয়েঃ কাব্যিক কথাবার্তা অনেক হয়েছে, এবার খাবারের অর্ডার দাও। ক্ষুধা লেগেছে।
ছেলেঃ তোমার পছন্দের খাবারটাই অর্ডার করি।এই যে ওয়েটার ভাই…
খাবার খেতে খেতে…
মেয়েঃ আজকের আবহাওয়াটা দেখেছো। চমৎকার না!
ছেলেঃ হ্যাঁ, চমৎকার। জগতের সকল প্রেম যেন আজকের দিনটার সাথে আষ্ঠেপৃষ্ঠে বেঁধে আছে। একটু বাতাসের স্পর্শ পেলেই আজ আমার রোমান্টিকতা যেন বেড়ে যাচ্ছে।
মেয়েঃ এই যে, শুরু হয়ে গেল কাব্যিক কথাবার্তা। তোমাকে নিয়ে আর পারা গেলো না।
ছেলেঃ কি আর করা বলো। আবহাওয়াটা এতটাই চমৎকার যে ঘুম থেকে উঠে বাইরে তাকাতেই প্রকৃতির মাঝে তোমায় খুঁজে পেলাম। বাইরে বের হতে না হতেই আচমকা দমকা হাওয়ার মাঝেও তোমার শরীরের ঘ্রাণটা স্পষ্ট অনুভব করলাম। রিক্সায় ওঠার পর পর টিপটিপ বৃষ্টি গায়ে লাগতেই, তোমার স্পর্শের অনুভব পেলাম। আমার দিনটা আজ তুমিময় হয়ে উঠলো।
মেয়েঃ বাব্বাহ! তুমি আজ রোমান্টিকতার কোন পথ্য খেয়েছো নাকি!!
ছেলেঃ জ্বী না ম্যাডাম। আমি বরাবরই রোমান্টিক। তুমিই বোঝো না। অথবা বুঝতে চাও না।
মেয়েঃ তোমার ভালোবাসার কাছে আমার ভালোবাসা তো নস্যি। পৃথিবীর অন্য সবার ভালোবাসাকে এক করলেও আমার জন্য তোমার ভালোবাসার সমান কখনও হতে পারবে না।
ছেলেঃ কাব্যিক কথাবার্তায় তুমি তো আজ আমাকে হারিয়ে দিলে দেখছি।
বাইরে এতক্ষণ টিপটিপ বৃষ্টি পরছিলো। হঠাৎ ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হলো।
ছেলেঃ তোমাকে একটা বিশেষ মুহুর্তের কথা বলেছিলাম না?
মেয়েঃ হুম।
ছেলেঃ মুহুর্তটি চলে এসেছে। তোমার কাছে একটা জিনিস চাইবো। রাখবে?
মেয়েঃ হম। বলো।
ছেলেঃ আমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজবে? তোমায় নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আজ পুরো শহর ঘুরবো।
মেয়েঃ ওহ্, এই কথা! আমি ভাবলাম কি না কি চাইবে! তোমার চাওয়াটা যে আমারও চাওয়া। ভাবছিলাম বলবো। কিন্তু সাহস পাচ্ছিলাম না।
ছেলেঃ কী, প্রমাণ হলো আবারও? আমার ভালোবাসাটা কতটুকু পুরু।
রিক্সায় ভিজতে ভিজতে চলছে ওরা দুজন। হঠাৎ পকেট থেকে একটা কদম ফুল বের করে মেয়েটার কানে গুঁজে দিল ছেলেটা।
ছেলেঃ আমি এই বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিলাম। এটাই সেই মুহুর্ত যার কথা তোমাকে বলেছিলাম । ভালোবাসি তোমাকে।অনেক অনেক ভালোবাসি।
মেয়েঃ তোমাকেও ভালোবাসি। আজ যে উপহারটি আমাকে দিলে তা এ পর্যন্ত আমার জীবনে পাওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার, আর মুহুর্তটিও আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহুর্ত। আমি কি তোমার কাঁধে আমার মাথাটা একটু রাখতে পারি?.
ছেলেঃ এর জন্যও কি আমার অনুমতি লাগবে? রাখো।
১০টি মন্তব্য
বন্যা লিপি
এই কথোপকথন উপলব্ধি করে মনে হলো,,,,আরেকটু হলেই একটা ছোটখাটো নাটিকা হয়ে যেত।
চালু রাখুন এ কথোপকথন। পুরোটা মিলেমিশে শেষাবধি কোনো একটা কিছু গিতিনাট্যে রূপান্তরিত হয়েই যাবে।
ফজলে রাব্বী সোয়েব
ধন্যবাদ। ভালোবাসা অবিরাম।
হালিমা আক্তার
বৃষ্টি ভেজা পথে পথ চলিতে চলতি, বর্ষার কদম কেয়া থাকে যদি সাথে।আর কি কিছু বলার থাকে। শুভ কামনা রইলো।
ফজলে রাব্বী সোয়েব
ধন্যবাদ। ভালোবাসা অবিরাম।
সাবিনা ইয়াসমিন
সকল অভিযোগ অভিমান মূহুর্তেই ম্লান হয়ে যায় প্রিয়জনের সান্নিধ্যে। ভালো লাগলো কথোপকথন।
নিয়মিত লিখুন সোয়েব ভাই।
শুভ কামনা 🌹🌹
ফজলে রাব্বী সোয়েব
ধন্যবাদ। ভালোবাসা অবিরাম
রোকসানা খন্দকার রুকু
সুন্দর কথোপকথন। মাঝেমাঝেই আসুন এমন কথেপকথন নিয়ে। শুভকামনা সবসময়।।।
ফজলে রাব্বী সোয়েব
ধন্যবাদ। ভালোবাসা অবিরাম
বোরহানুল ইসলাম লিটন
সুন্দর উপহার!
বৃষ্টিময় শহরে পাশাপাশি ঘুরে বেড়ানো
স্বপ্নময় কদম ফুল, এর চেয়ে সুন্দর উপহার আর কি হতে পারে!
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানবেন সতত।
ফজলে রাব্বী সোয়েব
ধন্যবাদ। ভালেবাসা অবিরাম