“আমি বেশ ভুলোমনের, বাউণ্ডুলে, ছন্নছাড়া….
এই পাগল গোছের আর কী!”
নিজের সম্পর্কে এমন কথা কারও মুখে শুনলে মুখ বেঁকিয়ে বলতেই পারি আমরা, এঁহ্, হুঁশে তোমার মতো পাকা আর কে আছে হে, নিজেরটা তো বুঝে নাও ষোলআনাই, অন্যের বেলাতেই হুঁশ হারিয়ে পাগল !
এ প্রসঙ্গে ছোট্ট একটি গল্প বলি —
একবার কোর্টে এক আসামীর জামিন শুনানি হচ্ছে। আসামী পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী বিচারককে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে আসামী মানসিক ভারসাম্যহীন বা পাগল। একপর্যায়ে বিচারক আসামীর কাছে জানতে চান, সে আসলেই পাগল কিনা। উত্তরে আসামী কাঁদো কাঁদো গলায় জানায় যে সে সত্যিই পাগল। তৎক্ষণাৎ তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়। কারণ, কখনও কোনও মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি স্বীকার করবেই না যে সে পাগল।
রঙিন এই ধরনীতে প্রাণ আছে যার সে-ই প্রাণী। কিন্তু মন নাকি শুধু মানুষেরই আছে। মানে বোধবুদ্ধি কেবলমাত্র মানুষেরই আছে। আর সেই সাথে আছে বোধবুদ্ধি কাজে লাগিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করার উপায়। শব্দ করতে সক্ষম অনেক প্রাণীই, কিন্তু সেই শব্দকে নির্দিষ্ট ছকে ফেলে মনের মোক্ষম ভাবটির প্রকাশ, অর্থাৎ কথা বলার ক্ষমতা একমাত্র এই মনুষ্যজাতিরই আছে। তো এই মনুষ্যজাতি কথা বলার ক্ষমতা তার নিজের ইচ্ছেমতো প্রয়োগ করে মনের সাধ মেটায়। কেউ কেউ অনর্গল কথা বলে, কেউ স্বল্পভাষী, কেউ মাঝামাঝি। কেউ কেউ কথা বলতেই চান না, “দশ চড়ে রা কাড়ে না” এই গোছের। এদেরকে নিয়ে আবার সমস্যার অন্ত নেই। রা কাড়েন না বটে, তবে সব প্রশ্নের উত্তরে এরা আবার চোখের ভাষা কিংবা ঠোঁটের মৃদু হাসিকেই হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন। এ কারণে তাদের আশেপাশে যারা থাকেন তাদের যদি গভীর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা না থাকে, তাহলে ওই চোখের ভাষা আর ঠোঁটের হাসির মর্মদ্ধার করা শুধু মুশকিল হি নেহি, না-মুমকিন ভি হ্যায়!
যাইহোক, কথা দিয়ে, কথা নিয়ে, তর্কাতর্কি করে আমরা আনন্দ পাই, সময় কাটাই। আর ভাব ভালোবাসার সম্পর্কও তো গড়ে ওঠে কথা বলে বলেই। এই কথা বলতে গিয়ে কেউ নিজেকে ভুলোমনা, ছন্নছাড়া, পাগল টাগল দাবি করছে, কেউ আবার দেখাতে চাইছে সে খুব বুদ্ধিমান। সব আপন আপন মর্জি। বলি কথা অনর্গল, কিন্তু কাউকে আঘাত করে নয়। আমাদের একটি ভালো কথা হয়তো সহজেই ভুলে যাবে কেউ, তবে আঘাত মুছে যায় না সহজে। মন তা মনে রাখে সুদীর্ঘকাল।
২৮টি মন্তব্য
শান্ত চৌধুরী
শুভ কামনা সতত ….
রেহানা বীথি
শুভকামনা আপনার জন্যেও।
ছাইরাছ হেলাল
দেখুন আমি কিন্তু একটুও আঘাতকারী না।
দিব্বি দিতে পারি।
গুছিয়ে কথা/লেখার অভ্যাসটি আপনার বেশ পুরোন।
দিন কে দিন দ্যুতি ছড়াচ্ছে।
রেহানা বীথি
দিব্বি দিতে হবে না ভাইয়া, বেশ বুঝতে পারি।
ভালো থাকবেন সবসময়।
কামাল উদ্দিন
কথা চালাচালি বেশী হলে চুলোচুলিও হয়ে যায়……..শুভ কামনা সব সময়।
রেহানা বীথি
তা অনেক সময় হয় বটে।
ভালো থাকুন।
কামাল উদ্দিন
আপনিও সব সময় ভালো থাকুন, আপু।
মোঃ মজিবর রহমান
একটি বিষয় সুন্দরভাবে উপস্থআপন করেছেন কিন্তু সত্যই কি সব মানুষের পক্ষে সুবচন, সুন্দর কথা বলার অধিকার মহান স্রিস্টিকর্তা সদিয়েছেন সবাইকে????
বেশি বললে বাচাল
কম বললে “দশ চড়ে রা কাড়ে না”. ।
কোথায় যাব আমরা!!!!
রেহানা বীথি
সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেছেন আমাদেরকে। বাকিটা আমরা নিজ দায়িত্বে কিংবা দায়িত্ববোধহীনতায় করি।
কোথাও যাওয়ার দরকার নেই, শুধু খেয়াল রাখি, আমার আচরণে কেউ যেন আঘাত না পায়।
ভালো থাকবেন সবসময়।
মোঃ মজিবর রহমান
হ্যা এটা ঠিক নিজের আচিরণে কেউ যেন কস্ট না পাই, সত্য।
রুমন আশরাফ
সুন্দর উপস্থাপনা
রেহানা বীথি
ধন্যবাদ
তৌহিদ
আমি কিন্তু মোটেই কথা কাটাকাটি করিনা আপু। তবে অন্যায় কিছু বললে কথা সেখানে আমি বলবই।
সবার বোধবুদ্ধি সদা জাগ্রত থাকুক এটাই কাম্য। আপনার লেখা মানেই পাঠকের কাছে অন্যরকম অনুভূতি। ভালো লাগলো।
রেহানা বীথি
অন্যায়ের প্রতিবাদ করা সবসময়ই উচিৎ। সেটা চারিত্রিক দৃঢ়তার পরিচয়ই বহন করে।
ভালো থাকবেন ভাই সবসময়।
জিসান শা ইকরাম
কথা একটি আর্ট, যে যত সুন্দর ভাবে তা ফুটিয়ে তুলতে পারেন, বাস্তব জীবনে তার তত জয়জয়কার।
আমাদের কথায় কেউ যেন আঘাতপ্রাপ্ত না হয়।
ভাল লিখেছেন আপু।
রেহানা বীথি
ভালো থাকবেন ভাইয়া।
সুপায়ন বড়ুয়া
“আমাদের একটি ভালো কথা হয়তো সহজেই ভুলে যাবে কেউ, তবে আঘাত মুছে যায় না সহজে। মন তা মনে রাখে সুদীর্ঘকাল।”
চীরন্তন এই বাণী
সুনিপুন হাতের লেখনী।
শুভ কামনা বন্ধু।
রেহানা বীথি
শুভকামনা আপনার জন্যেও ।
ফয়জুল মহী
দারুণ এক অনুভুতি ,বেশ লাগলো ।
রেহানা বীথি
অনেক ধন্যবাদ।
অনন্য অর্ণব
প্রতিটি শব্দ বর্ণ চরণ এক একটি ইনডিভিজ্যুয়াল ভাবার্থের ধারক। খুবই ভালো লাগলো।
রেহানা বীথি
অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সবসময়।
ইসিয়াক
চমৎকার উপস্থাপন।
শুভকামনা জানবেন আপু্
ভালো থাকুন ।
রেহানা বীথি
অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন আপনিও।
দেবজ্যোতি কাজল
পড়ে ভাল লাগল ।
ভাল থাকবেন
রেহানা বীথি
অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন আপনিও।
সঞ্জয় মালাকার
বেশ ভালো লাগলো দিদি।
রেহানা বীথি
অনেক ধন্যবাদ দাদা।