চলে যায় সময়। ঋতুর পরিবর্তন হয়, দিন-মাস-বছর চলে যায় তাদের তৈরী নিয়মে। আর মানুষের বাড়ে বয়স। ছোট থেকে বড়ো হয়, তারপর বার্ধক্য। ঋতু থেকে যায়। ঋতুর সাথে থেকে যায় স্মৃতি। চলে যায় কেবল মানুষ।
অনেক ভারী কথা মাথার ভেতর কিলবিল করে বিষাক্ত সাপের বাচ্চাগুলোর মতো। এ জীবনে সাপ দেখেছি, আবার মানুষও। বড়ো বেশী বিষাক্ত হয় মানুষ। খেলে আবার পোড়ায়, ফোস্কা ফেলে আবার ঔষধও মাখিয়ে দেয়। খেলা নয়তো কি!
এক একটি দিন দেখে এই চোখ, কতো কিছুর পরিবর্তন হয়। সকালে যখন কাজের উদ্দেশ্যে বের হই বাসা থেকে ঝকঝকে মন নিয়ে, ফিরে আসি ধূসর ক্লান্তি নিয়ে। এই যাওয়া-আসার মধ্যে একা একা হাসি, কথা বলি, মনের ভেতরে কান্নাও জমে। কিন্তু কাঁদতে যাওয়ার আগেই জীবনের সবগুলো আনন্দকে উথাল-পাথাল করে তুলে আনি। অমনি কান্না উধাও। কষ্ট কার থাকেনা? কিন্তু আমরা কষ্ট পাই এমন কিছু নিয়ে যার কোনো মানেই হয়না। অভাববোধ কি জিনিস, যারা ইন্টারনেটে বসে ব্লগে/ফেসবুকে বসে, তারা সেটা জানেনা। হুম মধ্যবিত্ত অভাব আছে, ওটা স্বাভাবিক। বিদেশে থেকে অনেকেই অভাবে থাকে, কিন্তু দেশের মানুষ জীবনেও বিশ্বাস করবে না। আমিও করতাম না। যাক এলোমেলো কথায় আজ সত্যিই এলোমেলো। অনেক পাওয়া হয়ে গেছে এই ২০১৪ সালে। চাকরী পেলাম। আর এমন চাকরী জীবনে কখনো পাবো ভাবিনি। স্বপ্ন দেখার মতো এতো স্বস্তিদায়ক মন শুকিয়ে গেছিলো অনেক আগেই। কিছু মানুষ আমাকে আবার স্বপ্ন দিয়েছে। চাওয়ার পরিধি বেড়েছে, কিন্তু পাওয়ার সীমা পার করে যেতে পারেনি।
ভালোবাসা অনেক বড়ো অসুখ, তার কোনো ভ্যাকসিন নেই, ঔষধ নেই। যাকে ভালোবাসা যায়, সে অবহেলা দেবেই। আর অবহেলা তার কপালে জোটে, যে ভালোবেসে যায়। একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। অনেক অনেক বছর আগে একটা কবিতা লিখেছিলাম মনে নেই। ব্লগে হয়তা আছে, নাম “মূল্য।” ভালোবাসো এবং ভালোবাসতে শেখাও।
একটা কবিতা দিয়ে যদি পথ চলা শুরু করি,
কেমন হয়?
রইবে কাছে? নাকি যাবে সরে?
পাচ্ছি ভেবে ভীষণ ভয়।
সাঁতার কাটছি হাওয়া সরিয়ে
আসতে তোমার কাছে
যতোই আসছি কাছে তোমার
যাচ্ছো ততো দূরে।
তরী আমার দাঁড়িয়ে কূলে
নদী যাচ্ছে শুকিয়ে
এলোমেলো আস্ত আমি
বৃষ্টি ভেঁজা আদ্যোপান্ত।
আজ খ্রীষ্টমাস। মানে বড়দিন। সারারাত চলেছে অনেক সুর-বাহার-আড্ডা। সকালে কাজে বেড়িয়ে দেখি পথ-ঘাট সব ফাঁকা। আকাশের উপর থেকে মেঘের কান্না। তবে এবার আর শুভ্রতা ছড়ানো নেই বড়দিনের দিন। সব পাল্টে যাচ্ছে। হঠাৎ শোনা যাবে আমাদের দেশটায় ছোট্ট শিশুরা স্নোবল বানাচ্ছে। তবে আজকালকার বাচ্চাদের বুঝিনা আমি। ওদের কাছে ভিডিও গেম ছাড়া আর কিছু আছে নাকি? যাক সেদিন স্নো পেয়ে হাতের মুঠোয় ভরলাম।
সবাই বলে বয়স বাড়ছে, এখন তো কিছুটা বয়সাণুযায়ী চলি। এখনও স্বপ্ন দেখি যা দেখেনা এই বয়স। আমরা মানুষেরা সবকিছুতেই নিয়ম-নীতি দিয়ে বসিয়ে দিয়েছি কি কি করতে হবে। আমিও বুড়ো আঙুল(কাঁচকলার অনেক দাম এখানে) দেখাই। আর কাঁচকলা জিনিসিটা আমার কাছে অখাদ্য লাগে। কিভাবে যে সবাই খায়। নাহ এসব হচ্ছেটা কি! শেষকালে এসে কাঁচকলা? আজ তাহলে এটুকুই থাক।
হয়তো চলবে
নয়তো না
কি যে হবে
সে জানিনা…
হ্যামিল্টন, কানাডা
২৫ ডিসেম্বর, ২০১৪ ইং।
২৩টি মন্তব্য
অরণ্য
“খেলে আবার পোড়ায়, ফোস্কা ফেলে আবার ঔষধও মাখিয়ে দেয়। খেলা নয়তো কি!”
“ভালোবাসা অনেক বড়ো অসুখ, তার কোনো ভ্যাকসিন নেই, ঔষধ নেই। ”
“যাকে ভালোবাসা যায়, সে অবহেলা দেবেই। আর অবহেলা তার কপালে জোটে, যে ভালোবেসে যায়।”
“এখনও স্বপ্ন দেখি যা দেখেনা এই বয়স।”
…
সবগুলোই ইন্টারেস্টিং!(y) শুভেচ্ছা আপনার জন্য। -{@ চলুক।
নীলাঞ্জনা নীলা
ধন্যবাদ অরণ্য……… চলবে 🙂
নুসরাত মৌরিন
“ভালোবাসা অনেক বড়ো অসুখ, তার কোনো ভ্যাকসিন নেই, ঔষধ নেই। যাকে ভালোবাসা যায়, সে অবহেলা দেবেই। আর অবহেলা তার কপালে জোটে, যে ভালোবেসে যায়”।-খুব ভাল লেগেছে এই কথা কয়টি।
এলোমেলো কিছু কথার মধ্যেই যে কত কী বলে গেলেন…অভাবের কথা,পাওয়া-না পাওয়ার কথা,ভালবাসার কথা-বাচ্চাদের ভিডিও গেমস খেলার কথা-বয়স আর বয়স শিকলে মানুষের তৈরী নিয়মের কথা,কাঁচকলার কথা।
এত কথা এত সুন্দর করে গুছিয়ে বললে পরে তা কি আর এলোমেলো কথা থাকে?তা যে বড় গোছানোভাবে একরাশ ভাল লাগার আবেশ ছড়িয়ে দিয়ে যায়। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
আপনি খুব সুন্দর করে কথা বলেন।ধন্যবাদ ……… মৌরিন
জিসান শা ইকরাম
এটা যদি এলোমেলো কথা হয়,তবে সারাক্ষনই এই এলোমেলো কথা লিখবে।
কাচকলা ইলিশ মাছে দিয়ে খেয়ে দেখবে,অনেক স্বাদ।
কিভাবে রান্না করতে হয়, জেনে নিও তোমার নানির কাছে।
প্রথম ছবিটায় কি আছে কে জানে
মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে আছি ছবির দিকে।
নীলাঞ্জনা নীলা
লিখে যাচ্ছি একটার পর একটা। কাঁচকলা খেতে পারিনা তো।আচ্ছা জেনে নেবো নানীর কাছ থেকে। ছবিটা আমারো ভালো লাগছে খুব। ছবি আরো ছোট করতে চাই।পারিনা কেনো?সেল ফোনে ছবি তুলি।একারনেই কি এমন বড় আসে?
আমি আবার ‘তুমি’ হলাম কবে?প্রমোশন না ডিমোশন হলো আমার? 🙁
ব্লগার সজীব
ভালো লেগেছে আপনার এলোমেলো কথা নীলাদি।
নীলাঞ্জনা নীলা
ধন্যবাদ………… সজীব -{@
রিমি রুম্মান
প্রথম ছবিটায় এলোমেলো হলাম বেশ। বয়সের কথা মনে করিয়ে দেয় যেন।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালো লাগাতে পেরে ধন্য হলাম………… রিমি রুম্মান -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
সজীবের মন্তব্যটি আপনার মন্তব্যের সাথে মিলিয়ে ফেলেছিলাম :p জি আমাকেও এলোমেলো করে দেয়।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ভাল লাগল বেশ -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
ধন্যবাদ ………… মনির হোসেন -{@
ছাইরাছ হেলাল
আপনি লেখায় দেখায় সব কিছুকেই কাঁচকলা দেখিয়ে যাচ্ছেন সব সময়।
নীলাঞ্জনা নীলা
সব আপনাদের শুভ কামনায় 🙂 জানি আমার জন্য প্রার্থনা করার মানুষ আছেন এখানে।
মেহেরী তাজ
ঋতুর পরিবর্তন লেখায় এবং ছবিতে ফুটিয়ে তুলেছেন সুন্দর ভাবে। কি ক্যামেরায় ছবি তোলা ? (y)
নীলাঞ্জনা নীলা
ধন্যবাদ ……… মেহেরী তাজ -{@ ক্যামেরার ছবি নয় এসব। আমার সেল ফোনের।চলতি পথে দৌড়ের উপরে তোলা সব।
শুন্য শুন্যালয়
আপনি এলোমেলো লিখলেও ভালো লাগে। তবে এমন এলোমেলো লিখতে কিছুটা মন খারাপ, কিছুটা অস্থিরতা জরুরি, যা আপনাকে দিব্যি দেখিয়ে দিচ্ছে। খুব সুন্দর লেখা।
নীলাঞ্জনা নীলা
বুঝে ফেললেন আমাকে 🙂 ধন্যবাদ আপনাকে………… শুন্য শুন্যালয় -{@
বনলতা সেন
কাঁচকলার রেছেপিটি দিয়ে দিন।
নীলাঞ্জনা নীলা
পারিনাতো ……………… বনলতা সেন। নানীর কাছ থেকে জেনে দিতে পারবো :p
থার্ড পার্সন পুরাল
অনেক ভারী কথা মাথার মধ্যে কিলবিল করছে বিষাক্ত সাপের মত ।অগোছালো কথাগুলো বেশ গুছিয়ে লিখেছেন ।যার মধ্যে আছে হাসি-কান্না অনেক কিছু ।
ভাল লেগেছে খুব।
নীলাঞ্জনা নীলা
ধন্যবাদ…… থার্ড পার্সন পুরাল -{@