বন্ধু মানেই এলিয়ে দেয়া নিরাপত্তার নি:শ্বাস…
বন্ধু মানেই এলিয়ে দেয়া নিরাপত্তার নি:শ্বাস…

তিরি-রিনী-অহম-পিউ কথোপকথন :

পিউ – আপু এই জল।
তিরি – এতোক্ষণে?
পিউ – না আপনার বন্ধুকে দেখলাম রান্না করছেন।
তিরি – ও হ্যা, বললো রান্না করবে। একটু হেল্প করো না ওকে।আমাদের যাওয়া নিষেধ। তোমায় মানা করতে পারবেনা।
পিউ – তিরি আপু….
তিরি – কি হলো? ঠিক আছে, যেতে হবেনা।
পিউ – আপু তোমার মনে যা চলছে, সে কি ঠিক লাগছে তোমার কাছে?
রিনী – দেখো পিউ, সরাসরি একটা প্রশ্ন করি।তোমার কি ভালো লেগেছে অহমকে?
পিউ – ভালো লাগার মতো মানুষ উনি।কিন্তু সম্পর্কের সেতু এমন একটা ভিত্তির উপর নির্ভর করে,যা আমাদের মধ্যে নেই।এই যে কথা বলছি,বন্ধুত্ত্বের সূচনা।আর কিছু নয়।
রিনী – সব সম্পর্কই বন্ধুত্ত্ব দিয়ে শুরু হয়।অহমের সব জানিয়েছি তোমায়।আমরা চাই সমস্ত সত্যি নিয়ে ওকে কেউ ভালোবাসুক।আর অহমও জীবনটাকে সাজাক।এমন তো নয় ওই মেয়েকে এখনও ভালোবাসে।আসলে একটা দ্বিধা কাজ করছে, যদি আবারও…
তিরি – তোমরা দুজন যখন একটা বিন্দুতে আসবে তোমার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলবো।আর অহমের অভিভাবক বলো আর যা কিছুই বলো আমরাই ওর সব।
অহম – এই যে তিন কন্যা,কি নিয়ে কথা হচ্ছে?নিশ্চিত আমি এই ভি.আই.পি কে নিয়ে?
তিরি – নিজেকে তুই কি মনে করিস?জেমস বন্ড?
অহম – মাথা খারাপ!তোদের কাছে জেমস বন্ড এলে বেচারা এ জীবনেও আর নায়ক হতে চাইবে না।
রিনী – কি বলতে চাস?আমরা মারকুটে? ঝগড়াটে?
অহম – না,না।তোরা দুজন আমার প্রাণ।যাক শোন,পরশু আমার ফ্লাইট।উড়াল দিতে হবে।অলরেডি মেইল এসেছে,ফোনও।
তিরি – আমায় না জানিয়ে টিকিট কনফার্মও করে ফেলেছিস?
অহম – আচ্ছা পাগলী শোন আবার তো আসছি তিন মাসের মধ্যেই।তবে তুই বললে চাকরী ছেড়ে দেবো।
রিনী – আর কয়েকটি দিন পারবিনা থাকতে?
অহম – একটু বোঝ তোরা,আমায় কি বলতে হয়?কিভাবে এসেছি, আমার মারকুটটা সত্যি ভালো রে।এভাবে যে এসেছি,এমন লাগে যেনো আমার নিজের অফিস।তাও যদি বলিস চাকরী ছেড়ে দিতে,দেবো ছেড়ে।
তিরি – নাআআআআআ চাকরী ছাড়িস না। রিনী নারে থাকুক ওকে যেতে দে। আসলে এভাবে এসেই চলে যাচ্ছিস তো,তাই খারাপ লাগছে।
অহম – এইতো আমার পাগলীটা।তুই এমনই থাকিস রে ময়না পাখী। মিস পিউ কি বুঝছেন?
পিউ – দেখছি আপনাদের বন্ধন।
অহম – আর কিছু দেখেননি? অসহায়ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে একজন পুরুষ?
তিরি – ইস! পিউ বোঝে, মেয়েরাই আবেগটা বোঝে।তোরা তো আছিস মেয়েদের ব্যবহার করতে।
অহম – এই রে মাছ ভাঁজা…
পিউ – ঠিক আছে, উল্টে এসেছি।
তিরি – দেখলি তো? পিউ বাঁচালে নয়তো পোড়া মাছ কপালে জুটতো।
অহম – তোদের পাল্লায় পড়লে পোড়া মাছও প্লেটে লাফাবে।যাক আসছি প্রায় শেষ।এই তোরা তোদের বরকে ফোন দিয়ে বল আজকের ডিনার অহম স্পেশাল। চলে আসতে এখানে।রিনী তুইও গিয়ে গুড়িয়াটাকে নিয়ে আয়।
রিনী – পিউর কি হবে?ওর তো বর নেই।
তিরি – দেখলি কিভাবে এড়িয়ে গেলো?কি যে করি।
রিনী – সময় দে তিরি।
তিরি – কিন্তু পরশু যে চলে যাচ্ছে?
রিনী – তাতে কি? আবার তো আসবে।এছাড়া কথা তো হবেই।কি পিউ ঠিক বললাম?
পিউ – তিরি আপু তুমি অনেক বেশী বোঝো,জানো।আমার কাছে লাগছে রিনী আপু যেনো ঠিকই বলছে।আর আমার ওনার বন্ধুত্ত্বপূর্ণ সাহচর্য অনেক বেশী ভালো লেগেছে।
তিরি – ওরে বাবা, এ যে দেখছি আরেকজন সাপোর্টার হয়ে গেলো অহমের।জানলে তো আমার অবস্থা রাখবে না।
অহম – কার এতো সাহস যে তোর অবস্থা রাখবে না? সৃষ্টিকর্তার স্পেশ্যাল প্রতিনিধি এলো নাকি পৃথিবীতে?
তিরি – তুই কিন্তু আজ বেশী বেশী-ই করছিস।চুপ করে থাক। ওভাবে মুখে হাত দিয়ে না শুধু, একটা শব্দ যদি শুনি আজ তোর পিঠ ভাঙ্গবো।
রিনী – এই হয়েছে থাম তো। পিউ এসব বুঝতে তো পারছো।আমাদের এই পাগলামীগুলো আজও আছে বলেই বন্ধুত্ত্বে শ্যাঁওলা পড়েনি।
পিউ – এমনই যেনো থাকে।তোমাদের পাগলামীতে আবেশচ্ছন্ন হোক, কিন্তু কেউ যেনো ভেঙ্গে-গুড়িয়ে দিয়ে যেতে না পারে।
অহম – পিউ ম্যাম একটু হেল্প করতে পারেন আমায়? কিছু যদি মনে না করেন।
পিউ – আরে না, না। বলুন কি করতে হবে? চুলায় রান্না তো আর নেই।
অহম – আসুন আমার সাথে, বলছি।
পিউ – হুম, চলুন।

ক্রমশ প্রকাশ্য

হ্যামিল্টন, কানাডা
১৬ জুন, ২০১৫ ইং।

৩৬৭জন ৩৬৫জন
0 Shares

৩০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ