ছাত্রী হিসেবে কখনো খুব ভাল মানের ছিলাম না। বরাবর টেনেটুনে পাশ
মার্ক পেয়ে উপরের ক্লাশে প্রমোশন পেয়ে স্বস্তির নিঃস্বাস ফেলেছি। তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি! এইম ইন লাইফ রচনা মুখস্ত করছি। খুবজোরে জোরে মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে একটা লাইন অনেক বার পড়ছি, ‘ফুটুরি ইন লাইফ!’ ‘ফুটুরি ইন লাইফ’ পাশের ঘর থেকে বাবা এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে বল্লেন, ‘বুড়ী লাইনটা আবার পড়’
আমি পড়লাম, ‘ ফুটুরি ইন লাইফ’
বাবা আমাকে আরো পাঁচবার পড়তে বলেছিলেন এবং পাঁচবারই আমি একি উচ্চারন
করেছিলাম। এরপর বাবা আমাকে বল্লেন, ‘বুড়ি ফুটুরি বানান কর,’
আমি খুব আত্মবিশ্বাসের সাথে বানান করলাম এফ(f), ইউ(u), টি(t), ইউ(u), আর(r), ই(e)!
বাবা বল্লেন এবার উচ্চারন কর,
আমি আনন্দের সাথে উচ্চারন করলাম ফুটুরি।
এবার বাবার ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙল! আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে বাবা হুঙ্কার দিয়ে বল্লেন,
‘গাধা কোথাকার! ফিউচার কে বারবার ফুটুরি বলছিস কেন তুই? আমি সাদা কাগজে লিখে দিলাম তুই পরীক্ষায় ফেইল করবি।’
আমি বাবার হুঙ্কারে পাঁচমিনিট কথা বলতে পারিনি, টানা দুদিন হাপুস নয়নে কেঁদেছিলাম। যাই হোক সেবারেও আমি ফেইল না করে টেনেটুনে পাশ করে ক্লাস
সেভেনে উঠেছিলাম।
এইচ,এস,সি তে আমাদের W.Somerset maugham এর the luncheon গল্পটা ছিল।
পরীক্ষার আগে গল্পে প্রশ্ন মুখস্ত করার সময় আমি ইচ্ছাকৃত ভাবে luncheon কে লুনচিঅন, {লুন(lun) চি(che) অন(on)} উচ্চারন করতাম, আর somerset maugham এর maugham কে উচারন করতাম মাউগহাম, মাউগ(maug) হাম (ham)}
উচ্চারনের এমন বেহাল দশার কারন ছিল যাতে পরীক্ষার হলে বানান ভুল না করি। ঠিক উচ্চারন করলে হয়ত আমি সামারসেট মম কে somerset mom আর দি লাঞ্চন কে the
lanchon লিখে দিয়ে আসতাম খাতায়।
আসলে খারাপ মানের ছাত্রী থাকায় টার্গেট থাকত ভুল ভাবে উচ্চারন করেই হোক আর যে ভাবেই হোক পরীক্ষায় খাতায় ঠিকঠাক লিখে কোন রকমে পাশ করে যাওয়া।
১৪টি মন্তব্য
শিশির কনা
মজা পেলাম খুব (y) (y)
মিসু
আমার এখনো হাসি আসে এসব ভাবলে 🙂
খসড়া
তুমি যে সব ভুল করতে সেগুলো ছিল মারাত্বক।
প্রমথ চৌধুরী কে বলতে প্রথম চৌধুরী
জনৈক উচ্চারন করতে যেয়ে সর্বদাই
জৈনিক উচ্চারণ করে ফেলতে তুমি।
মিসু
:p :p
অদ্ভুত শূন্যতা
ছোট ছোট ভুল, ভুলে ভরা শৈশব
যান্ত্রিক জীবনে উড়ে গেল কই সব?
দারুন মজা পেলাম, সোনেলার মেকি গাম্ভির্য ভেঙ্গে চমৎকার মজার পোস্ট। ধন্যবাদ।
মিসু
সোনেলার মেকি গাম্ভির্য ভেঙ্গে চমৎকার মজার পোস্ট ?? আপনি বায়রনিক শুভ্র ভাইয়ের লেখা তাহলে পড়েনই নি । পড়ে দেখুন 🙂 ধন্যবাদ আপনাকেও ।
তুমি আমি এক
প্রমথ চৌধুরী এই নাম টা আমি আমার জীবনে প্রথম যেদিন দেখেছি সে দিন ই ভুল করেছি তাও আবার আমার আপুর বইয়ের নাম কেটে প্রথম চৌধুরী লিখেছিলাম । পরে অবশ্য যতবার ই এই নাম টা দেখেছি ততবারই ঐ কথা আমার মনে এসেছে আর আমি পাগলের মতই নিজে নিজে হেসেছি অনেক অনেক বেশি । এখন ও হাসি আসতেছে । 🙂
মিসু
আমারও ভাইয়া 🙂
প্রজন্ম ৭১
এমন উচ্চারন বিভ্রাট সবার থাকে কিছু কিছু । আপনার লেখার উপাস্থপনাটি সুন্দর ।
মিসু
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
আদিব আদ্নান
পাশ করেছেন সেই ঢের , টেনেটুনে হলে হোক ।
মিসু
ঠিক ঠিক , পাশ করেছি এটাই ঢের :p
জিসান শা ইকরাম
হা হা হা হা হা , দারুন মজা পেলাম ।
রাফখাতার সাথে এমন কিছু শেয়ার করলে ভালোই হয় ।
মিসু
চেস্টা করবো ভাইয়া 🙂