ইউনিজয় এবং বিজয় এই নিয়ে কপিরাইট ঝামেলা হচ্ছে এটি নিয়ে সবাই নিশ্চিত কম বেশি শুনেছেন। আমি আগে ফেসবুকের একটি পোষ্টে মন্তব্যে বলেছিলাম যে ইউনিজয় এবং বিজয় লেআউট যদিও প্রায় এক রকম কিন্তু এদের মাঝে বেশ কিছু পার্থক্য বিদ্যমান। যেখানে একটা কি পরিবর্তিত হলে পুরো সিস্টেম পাল্টে যায় সেখানে বেশ কয়েকটা পরিবর্তন অবশ্যই আলাদা একটা ঘটনা বলে স্বীকার করতেই হবে।
যাই হোক আমি সরাসরি এই দুই লে আউটের মাঝে পরিবর্তনটুকু তুলে ধরার চেষ্টা করলাম-
সাধারণ কি বোর্ডের Q বাটনে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন একে ব্যবহার করে ‘ঙ’ এবং ‘ং’ এই দুটি বর্ণ লিখা যায়। যারা বিজয় লেআউট ব্যবহার করেন তারা সাধারণ ভাবে Q বাটনটি চাপলে ‘ঙ’ আর Shift চেপে তারপর টাইপ করলে ‘ং’ প্রিন্ট হবে। কিন্তু যখন আপনি ইউনিজয় লে আউট ব্যবহার করবেন তখন এটি পরিবর্তিত হয়ে যাবে। এখানে সাধারণ ভাবে Q বাটন চাপলে আসবে ‘ং’ এবং Shift সহ চাপলে আসবে ‘ঙ’
এরপর কি বোর্ডের X বাটনটি দেখুন। যারা বিজয় ব্যবহার করছেন কিংবা করেছেন তারা অবশ্যই জানেন যে বিজয় লেআউটে সরাসরি ‘ো’ এবং ‘ৌ’ এই দুটি এক ক্লিকে আসে না। ‘ো’ লিখতে হলে প্রথমে আপনাকে x চেপে ‘ে’ আনতে হবে আর তারপর মাঝে বর্ণ বসিয়ে f চেপে ‘ো’ নিয়ে আসতে হবে। একই ভাবে যদি ‘ৌ’ আনতে চান তাহলে প্রথমে c চেপে ‘ে’ এনে তারপর মাঝে বর্ণ বসিয়ে শেষে Shift+X চেপে ‘ৌ’ প্রিন্ট দিতে হবে। এখন আপনি যদি ইউনিজয় ব্যবহার করেন তাহলে ‘ো’ এবং ‘ৌ’ লেখার জন্যে আপনাকে এত ঝামেলার মধ্য দিয়ে যেতে হবে না। আপনি কাঙ্ক্ষিত বর্ণটি লিখে x চাপলে ‘ো’ চলে আসবে আর Shift+X চাপলেই ‘ৌ’
এরপর \ ( 3 নম্বর চিহ্নিত বাটন ) টি খেয়াল করলে দেখতে পাবেন এখানে বিজয় ব্যবহার করে আপনি সাধারণ ভাবে “ৎ” এবং Shift সহ চেপে “ঃ” প্রিন্ট করতে পারবেন। কিন্তু সেই একই বাটন যখন ইউনিজয় ব্যবহার করবেন তখন সাধারণভাবে এটি “ৱ” এবং Shift চাপা অবস্থায় “ৰ” প্রিন্ট করবে। অর্থাৎ এটি একেবারেই ভিন্ন আউটপুট অন্য কথায় ইউনিক বাটন।
এরপর কি বোর্ডের 6 বাটন (4 নম্বর দ্বারা চিহ্নিত) টি দেখলেই বুঝতে পারবেন এটি বিজয় ব্যবহার করে সাধারণ ভাবে ‘৬’ এবং Shift চেপে ‘ৰ’ প্রিন্ট করে। কিন্তু ইউনিজয় লেআউটে সেটি সাধারণভাবে “৬” এবং Shift চেপে “ঃ” প্রিন্ট হয়।
কি বোর্ডের 7 বাটনটিতে (5 নম্বর দ্বারা চিহ্নিত) আপনি বিজয় ব্যবহার করে সাধারণ ভাবে আউটপুট পাবেন ‘৭’ এবং Shift চেপে পাবেন “ঁ”। কিন্তু ইউনিজয় লেআউটে সেটি সাধারণভাবে “৭” এবং Shift চেপে “ৎ” প্রিন্ট করবে।
এরপর কি বোর্ডের 2 বাটনটি (6 দ্বারা চিহ্নিত) খেয়াল করলে দেখবেন সেখানে বিজয় ব্যবহার করে আপনি সাধারণভাবে ‘২’ এবং shift চেপে ‘@ (কিংবা এর পরিবর্তিত একটি রূপ)” প্রিন্ট করতে পারবেন। কিন্তু ইউনিজয় ব্যবহার করলে সাধারণভাবে ‘২’ এবং shift চেপে ‘ঁ’ প্রিন্ট হবে।
এরপর 7 এবং 8 চিহ্নিত বাটন দুটি লক্ষ করলে দেখবেন সেখানে বিজয় লে আউট দিয়ে দুটি বর্ণ প্রিন্ট করা যায় এমন নির্দেশ দেয়া আছে। কিন্তু ইউনিজয় সিস্টেমে এমন কোন নির্দেশ নেই। অর্থাৎ এই দুটিও সম্পূর্ণ ইউনিক বিজয়ের তুলনায়।
আরও একটা ব্যাপার অতিরিক্ত সংযুক্তি হিসেবে বলছি। ইউনিবিজয় বা ইউনিজয় লেআউটগুলো বের হয়েছে ২০০৩ সাল বা তারও আগে, ১৯৮৭ সালে ডিজাইন করা হলেও বিজয়ের স্বত্তাধীকারী বিজয়ের পেটেন্ট পেয়েছেন ২০০৮/২০০৯ সালে। সেক্ষেত্রে পেটেন্টের আগের থেকেই থাকা এই লেআউটগুলো কীভাবে পেটেন্ট বিরোধী হয়ে যায়?
এরপর আর আলাদা করে কোন মন্তব্য করতে রুচি হচ্ছে না। এখনো যদি কেউ যদি বলেন ইউনিজয় লেআউটটি বিজয় থেকে সরাসরি কপি করা হয়েছে তাহলে তার বুদ্ধিমত্তা নিয়েই আমার প্রশ্ন থাকবে।
চিত্র সূত্র :
** বিজয় লেআউটঃ বিজয়ের সাথে সরবরাহকৃত নির্দেশিকা।
** ইউনিজয় লেআউটঃ অভ্রের পুরাতন ভার্সনের সাথে রিলিজ কৃত ইউনিজয় লেআউট এর কিবোর্ড লেআউট ভিউয়ার।
আরেকটা খোঁড়া যুক্তি ওনার।
উনি আপত্তি যদি তুলতেই হতো তাহলে এই লে-আউটের উপর আপত্তি তুলতে পারতেন। কিন্তু তিনি সরাসরি যা করেছেন তা একমাত্র স্বার্থোদ্দেশী ব্যবসায়ীর দ্বারাই করা সম্ভব। তিনি সরাসরি একটি এ্যাপ কিংবা প্রোগ্রামকে পাইরেটেড বলছেন। এখানেই থেমে থাকছেন না, অতীতে অভ্রকে হ্যাকিং এর সাথে জরিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন। আর এখন গুগলের বরাবর রিদিমিক নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছেন।
তার জন্যে অল্প কিছু সম্মান জমিয়ে রেখেছিলাম, তিনি এই কাজগুলি করে সেই সম্মানের পুরোটাই অসম্মানে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন।
আর তার আপত্তির মূল কারণটা কিন্তু সেখানেই :p
সবাই যদি অভ্র ছেড়ে এখনো তার সফট কিনে কিনে ব্যবহার করতো তাহলে অভ্র লাইন-টু-লাইন কপি পেস্ট করে প্রোগ্রাম বানালেও তার কোন কথা থাকত না।
১৩টি মন্তব্য
আর্বনীল
শুনলাম ‘অভ্র’ নিয়ে নাকি জব্বার আংকেলের কিঞ্চিত সমস্যা হচ্ছে… প্লে-স্টোর থেকে রিদমিক ও নাকি সরিয়ে নিছে…।
অলিভার
আরেকটা খোঁড়া যুক্তি ওনার।
উনি আপত্তি যদি তুলতেই হতো তাহলে এই লে-আউটের উপর আপত্তি তুলতে পারতেন। কিন্তু তিনি সরাসরি যা করেছেন তা একমাত্র স্বার্থোদ্দেশী ব্যবসায়ীর দ্বারাই করা সম্ভব। তিনি সরাসরি একটি এ্যাপ কিংবা প্রোগ্রামকে পাইরেটেড বলছেন। এখানেই থেমে থাকছেন না, অতীতে অভ্রকে হ্যাকিং এর সাথে জরিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন। আর এখন গুগলের বরাবর রিদিমিক নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছেন।
তার জন্যে অল্প কিছু সম্মান জমিয়ে রেখেছিলাম, তিনি এই কাজগুলি করে সেই সম্মানের পুরোটাই অসম্মানে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন।
আবু জাকারিয়া
প্লে থেকে রিদ্মিক কিবোর্ড উঠিয়ে নেওয়া ঠিক হল না।
অলিভার
যেখানে তার মত বিচক্ষণ লোকের উচিৎ ছিল এই দুই প্রজন্মের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করা তিনি সেখানে তৈরি করছেন বিভেদ। এর বেশি কিছু বলার নেই।
মাহামুদ
ষ্টিভ জব্বার মারাত্বক খেল দেখিয়ে দিলো…
অলিভার
হয়তো সহসাই হবে না।
কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে তাকে ঘৃণা ভরেই মনে করবে বাংলা ভাষাভাষীর এই প্রজন্ম কিংবা ভবিষ্যৎ।
মাহামুদ
দরকার হলে apk চালাবো তাও বিজয় না।
খেয়ালী মেয়ে
এতো কিছু বুঝি না, অভ্রতে লিখতেই স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করি 🙂
অলিভার
আর তার আপত্তির মূল কারণটা কিন্তু সেখানেই :p
সবাই যদি অভ্র ছেড়ে এখনো তার সফট কিনে কিনে ব্যবহার করতো তাহলে অভ্র লাইন-টু-লাইন কপি পেস্ট করে প্রোগ্রাম বানালেও তার কোন কথা থাকত না।
আমি অথবা অন্য কেউ
জব্বর মিয়া যাই করুক, বিজয় জর কইরা গিলাইতে পারবেনা। রিদ্মিক সরাইছে, নো সমস্যা, অন্য নামে, অন্যভাবে চলে আসবে। অভ্রের চেয় সহজ আর কিছু নাই। আসল কথা হইলো ব্যবসার ধান্ধা নাই এইটায়।
অলিভার
:D)
সবাই বুঝে, আফসোস শুধু কাগুই বুঝে না তিনি কি করতেছে :p
ব্লগার সজীব
বুঝলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।
অলিভার
সময় নিয়ে দেখার জন্যে আপনাকেও ধন্যবাদ 🙂