
জর্জ ফ্লয়েড,
তুমি যখন একটু শ্বাস নেয়ার জন্য আকুতি জানাচ্ছিলে
সারাবিশ্ব তখন থমকে দাঁড়ায়
এই নশ্বর পৃথিবীতে উন্মুক্ত বিশ্বে জন্মাবধি যে শ্বাস নেয়ার অধিকার
করোনায় বিধস্ত মানুষ যখন একটু শ্বাস নেয়ার জন্য
একটি ভ্যান্টিলেটর কিংবা আইসিওর জন্য হাসপাতালের বারান্দায় ঘুরে মরে।
কোন বর্ণবাদী পুলিশ হাঁটুর নীচে পিষ্টে তোমার শ্বাস রোধ করে।
তোমার নি:শ্বাস নেয়ার ফরিয়াদ তাঁদের কর্ণকূহুরে প্রবেশ করে না।
কারণ তারা মানুষ চিনে না
তারা বর্ণবাদে আসক্ত,
তারা তোমার মনের ছেয়ে রঙকে বাঁচার শর্ত মনে করে
জর্জ ফ্লয়েড,
তুমি একটু শ্বাস নেয়ার জন্য যখন আহত পাখির মতো ছটপট করছিলে
আমার পোষা পাখিটা ডানা ঝাপটিয়ে মরে
তোমার নিষ্পাপ দেহখানি যখন ঐ কাপুরুষের পায়ের নীচে পিষ্ট হয়
তখন আমার সদ্যজাত শিশুটি আর্তনাদ করে।
চাপা পড়ে যায় মানবতার শেষ চিন্হটুকু।
জর্জ ফ্লয়েড,
তোমার নিথর দেহখানি যখন কালো পিচঢালা পথে মিশে যায়
তপ্ত আগুনে দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে কালো বিটুমিনের জলন্ত পাথরগুলি।
আঘাতে আঘাতে পর্যুদস্ত করে সাদা কাপড়ে ঢাকা ঐ ক্ষমতার মসনদ খানি।
গর্জে উঠে সারাদেশ ,কেঁপে উঠে ক্ষমতার তখততাউস
টেক্সাসে জ্বলে উঠা দাবানল যুক্তরাষ্ট থেকে আজ ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্ব ময়।
জর্জ ফ্লয়েড,
তোমার ঘাড় আর দেহখানি যখন লাইসেন্স ধারী
সাদা পুলিশের পায়ের তলায় পিষ্ট হয়
তখন আধুনিক সভ্যতাকে ব্যঙ্গ করে
আভিজাত্য আর দাম্ভিকতাকে ভেঙে দেয় তছনছ করে
লজ্জা আর ঘৃণায় নত হয়ে যায় স্ট্যাচু অব লিবার্টি।
জর্জ ফ্লয়েড
তোমার দুচোখ যখন এ পৃথিবীর বুকে একজন মানুষ খোঁজে
তখন অন্ধ হয়ে যায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
তোমার নিস্পলক চোখে যখন অন্ধকার নামে
তখন দিবানিদ্রায় বিভোর থাকে এমেনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল।
তোমার আত্ন চিৎকারে যখন খোদার মসনদ কাঁপে
ঐ জাতিসংঘ, মানব অধিকার থোকা থোকা নাম
উট পাখির মত মুখ থুবড়ে পড়ে বালির মরু সাগরে।
আপনারা কেউ কি আছেন এই নশ্বর পৃথিবীতে
ঘৃণার প্রাচীরে গড়ে উঠা দেয়াল খানি ভেঙে
দেবেন উন্মুক্ত করে ?
আমরা আজ একটু নি:শ্বাস নিতে চাই এই খোলা প্রান্তরে।
২৪টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
বিষয়টি খুব বেদনাদায়ক, স্পর্শকাতর কিছু বলার ভাষা নেই। ধন্যবাদ দাদা বিষয়টি নিয়ে কবিতা উপহার দেবার জন্য। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আমরাও প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে চাই। শুভ কামনা রইলো
সুপায়ন বড়ুয়া
এই অমানবিক দৃশ্যটা যতবার দেখি
ততবার বুকটা হাহাকার করে উঠে।
জন্মান্ধরা এভাবেই দানবীয় আচরন করে।
শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
চাইলেই নিঃশ্বাস নিতে দেয়া হয় না, হয়নি যেমন আগেও।
এতো শতাব্দী পুরানো দাস মনিবের খেলা, সেই রড ইন্ডিয়ানরা কোথায়, যেটি ছিল তাদের জন্মভূমি!
সভ্যতার মুখোশ পড়ে পৃথিবীকে পদপিষ্ট করে চলছে, সাদা দানবেরা।
সুপায়ন বড়ুয়া
সহমত ভাইজান।
এই অমানবিক দৃশ্যটা কাম্য ছিল না।
বর্ণবাদ যখন মাথাছাড়া দিয়ে উঠে
তখন বর্বরতা রোধ করা যায় না।
শুভ কামনা।
আতা স্বপন
বিষয়টি সত্যিই অমানবিক। কিন্তু এটিকে হাতিয়ার করে ব্যাপক লুটতরাজ শুরু হয়েছে। নিরীহ নাগরিকদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে। সময় টিভির একজন সাংবাদিককে দেখলাম লাঞ্ছিত হতে। উভয়টিই সত্যি দুঃখ জনক। ধন্যবাদ
সুপায়ন বড়ুয়া
সত্যিই তাই।
বিষয়টি সত্যিই অমানবিক। কিন্তু এটিকে হাতিয়ার করে সুযোগসন্ধানীর এ বসে নাই।
সময় টিভির একজন সাংবাদিককে লাঞ্চিত করাটা সত্যি দুঃখ জনক।
পাশাপাশি নালিশ পাটিরা চুপসে যাওয়াটা ও কাম্য নয়।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
ফয়জুল মহী
অত্যন্ত মননশীল অভিব্যক্তি । পড়ে অভিভূত হলাম
সুপায়ন বড়ুয়া
ধন্যবাদ বন্ধু সাথে থাকার জন্য।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
কেউ কি আছেন এই নশ্বর পৃথিবীতে
ঘৃণার প্রাচীরে গড়ে উঠা দেয়াল খানি ভেঙে
দেবেন উন্মুক্ত করে?
কেউ নেই,কেউ নেই
আগেও ছিল না এখনও নেই
আর ভবিষ্যত বলা বাহুল্য
চমৎকার লিখেছেন দাদা
সুপায়ন বড়ুয়া
বর্ণটা যখন মানুষ পরিমাপের মাপকাটি হয়
তখন ঘৃনার প্রাচীরটা বাড়তে থাকে।
এইখান থেকে আমরা মুক্তি চাই।
ভাল থাকবেন আপু। শুভ কামনা।
তৌহিদ
এই শতাব্দীতে এসেও বর্ণবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে ভাবতেই খারাপ লাগে। সেই মুহূর্তে জর্জের মানসিক অবস্থার কথা স্মরণ করে শিউরে উঠেছি।
আর এই আন্দোলনকে ঘিরে যে ব্যাপক অচলাবস্থার তৈরী হয়েছে সেটা যেন অতি দ্রুত নিস্পত্তি হয় এটাই কাম্য। ভালো লিখেছেন দাদা। শুভকামনা সবসময়।
সুপায়ন বড়ুয়া
এ সময়ে নতুন দুর্ভোগ কাম্য ছিল না।
এই অচলাবস্থা নিরসন না হলে লুটতরাজ আর
দাঙ্গা সারাবিশ্বটা বিপদে ফেলবে।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
নিতাই বাবু
মহান স্রষ্টার এই পৃথিবীর শেষ করোনা যুদ্ধ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে এ আরেক আলামত দেখা দিলো। এই আলামতে মনে হয় যুক্তরাষ্ট্রের অনেককিছুই পরিবর্তন হয়ে যাবে। বিশেষ করে পরিবর্তন হতে পারে বর্ণবৈষম্যের।
সময়োপযোগী পোস্ট কবিতার ছন্দে ছন্দে বিস্তারিত তুলে ধরতে পেরেছেন, দাদা। অজস্র ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সুপায়ন বড়ুয়া
এই বর্ণবাদের বৈশ্বিক সমস্যা নতুন মাত্রা পেয়েছে।
সেখানে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই তাই বিকট আকার
ধারন করেছে।
তা থেকে মুক্তি নাহলে নতুন বিপদ দেখা দেবে।
শুভ কামনা। ভাল থাকবেন দাদা।
জিসান শা ইকরাম
সমসাময়িক ঘটনা অত্যন্ত নিপুনতার সাথে কবিতায় তুলে এনেছেন।
অনেক অনেক ভালো লেগেছে দাদা।
শুভ কামনা।
সুপায়ন বড়ুয়া
এই নতুন বিপদের কিভাবে অবসান হয় জানিনা
এই সমস্যা বৈশ্বিক রুপ নিচ্ছে। দাঙ্গা আর লুটতরাজ নতুন করে বিপদ ডাকছে।
ভাল থাকবেন ভাইজান। শুভ কামনা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সত্যিই খুবি বেদনাদায়ক দাদা।
যুগযুগ ধরে বর্ণবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।
সমসাময়িক লেখনী দাদা।
সুপায়ন বড়ুয়া
এই বর্ণবাদের শেষ কোথায় কেউ জানিনা।
সেখানে সেয়ানে সেয়ানে লড়াইয়ে নতুন মাত্রা পাচ্ছে
ভাল থাকবেন। শুভকামনা।
আরজু মুক্তা
পৃথিবী এগিয়ে যায়, বর্ণবাদ শেষ হয়না!
সুপায়ন বড়ুয়া
ঠিক বলেছেন আপু।
এটা একটা মানবতার জন্য অভিশাপ।
ভাল থাকবেন। সবসময়।
মাহবুবুল আলম
এই কোভিড-১৯ এর মধ্যেও বিশ্বের মানুষ একটা নৃশংস হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করলো।
ধন্যবাদ আপনাকে বিষয়টি তুলে ধরার জন্য!
সুপায়ন বড়ুয়া
কৃতজ্ঞতা ভাইজান।
এই অমানবিক দৃশ্যটি বেদনাদায়ক কাম্য ছিল না
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
এমন উন্নত একটা রাষ্ট্রে এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটবে কে ভেবেছিলো! পৃথিবীর যত মানুষ রোগে-শোকে মারা যায়, তারচেয়ে বেশিরভাগ মারা যায় ধর্ম যুদ্ধ আর বর্ণবাদে। বিষয়টি বারবার প্রমাণিত।
সুপায়ন বড়ুয়া
সহমত আপু,
মানুষ ধর্ম আর বর্ণ বৈষম্যের উদ্ধে উঠতে পারেনা বলেই আজ এত হানাহানি। জানি না এ থেকে মুক্তি মিলবে কিনা।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।