
শিরিণ/ আছো?
বন্যা/ এলাম, বলো আজ কেমন আছো?
শিরিণ/ আছি….
বন্যা/ কেমন সে থাকা?
শিরিণ/ অস্থির বেদুঈন কি তা জানে?
বন্যা/ বেদুঈন নয় চোরা গলির পথিক। অবারিত মরুপ্রান্তর চষে ফেলে ক্ষমতার অধিক।
শিরিণ/ দৈণ্য মনে করছে বিরাজ- কি লিখবো আর শাদা কাগজে! মগজ বেজায় ঢিলে।
তোমার সাথে তাল কি হবে বলো! ঘুম নেই চোখে সেই কবে থেকে!!
বন্যা/ মানায় কি বলো রাখলে খালি কাগজ?
দাম নেইকো – না রাখলে
কিছু পঙ্তিমালা শাদা আর কালোয়।
শিরিণ/ আচ্ছা, এসব বাদ দাওতো! আজ কোথায় ছিলে বলোতো? তোমাকে খুঁজেছি কত?
বন্যা/ আচ্ছা, বাদ।
কোথায় খুঁজেছো?
শিরিণ/ আর কোথায় খুঁজবো? এখানেই!!
বন্যা/ তা–ই বলো!!
শিরিণ/ কেন?
বন্যা/ শুধু এখানে খুঁজলে পাবার কোনো ভরসা আছে?
শিরিণ/ কেনো বলছো এমন?
বন্যা/ হা হা হা হা….
শিরিণ/ হাসছো কেন?
বন্যা/ এটা সেই ঠিকানা, যে ঠিকানার কোনো ভরসা নেই। যদি এখানে না আসি?
যদি এখানে আসার কারনগুলো অকারনে বিদ্রোহ করে বসে!! কি করে তবে পাবে এখানে?
খুঁজতে হলে — খোঁজার মতো খুঁজে দেখো! ঠিকানা ছেড়ে আপন ঠিকানায় চলে যাবার আগ পর্যন্ত পাবে।
শিরিণ/ কি যে সব বলো তুমি!
বন্যা/ হুমম, বলি।
শিরিণ/ দুপুরে খুঁজেছিলাম তোমাকে– কবিতা নিয়ে খেলবো করে—-
বন্যা/ আহারে! এখানে আসার কারনগুলো সব আজ একযোগে বিদ্রোহ ঘোষনা করে বসলো যে!!
তাই নিশ্চুপ শাদা পতাকা উড়িয়ে, শান্তিচুক্তিতে দস্তখৎ করে বসেছিলাম।
শিরিণ/ তোমার কাব্যিকতায় বাতাস দিয়ে যায় শীতল পরশ।
বন্যা/ আহা! জানি বলেই আমি বৈশাখী ঝড়ের মতো বাতাস পাঠাই অক্ষরের ছদ্মবেশে—
শিরিণ/ বিষয় দিচ্ছি, নাও এখন শুরু করো তো! কবিতার কথপকথন!
বন্যা/ আচ্ছা, বলো—
শিরিণ/ আজ একটু ভিন্ন রকম কিছু করি। কবিতা বানাবো।
বন্যা/ ভিন্নরকম?
শিরিণ/ হ্যাঁ, তুমি ছেলে চরিত্র করবে, আর আমি মেয়ে। বিষয়ঃ ভীষণ রকম আকাশ ভারী। বৃষ্টি হবে।
বন্যা/ এ্যাঁ— এডা কি কইলা? আচ্ছা, চেষ্টা তো করি! যা হয় হবে।
একলা দুপুর যাচ্ছে হেঁটে, পাশ কেটে চলে যাচ্ছে আমার একাকীত্ব।
শিরিণ/ আমি নেই কোথাও? তোমার ভাবনার ধুম্রজালে!
বন্যা/ খুঁজেছি অনেক যখন! এসেছো প্রাণের প্রদীপ হাতে লয়ে।
আকাল খরায় অধৈর্যের শুকনো চরাচর ভিজেছে
হঠাৎ বরষনে।
শিরিণ/ আজ ভীষণরকম আকাশভারী, বৃষ্টি হবে–
বন্যা/ এসো তবে আজ
হাতে রাখো হাত।ছেড়ে দিয়ে চারদেয়ালের আড়াল;
ভিজবো আজ ,এমন ভেজেনি আগে কেউ যেমন!
শিরিণ/ দিগন্তের ওপাড়ে ,যেখানে সবুজ আর নীল খেলা করে!
আমি স্বপ্নলোকের ওপার হতে দেখেছি কতবার!
তুমি কেবলই স্বপ্ন দেখাও……
বন্যা/ আমার চোখে দেখো; এখানে সমুদ্র! ছেড়ে দাও তোমার সমস্ত স্বপ্নতরী। পাল হবো আমি। বন্ধ নয়, খোলাচোখে গুণে নাও স্বপ্নের যত রং আছে!
শিরিণ/ তুমি বড্ড রোদের মতো। পুড়িয়ে দাও যখন তখন। খাঁচার পাখিকে কেন আকাশ দেখাও?
এ জীবন তো আকাশের রং ভুলে গেছে, শুধু সবুজবন দু’চোখে!!……
বন্যা/ জানো না?
আকাশ ছাড়া পাখি মানায় না! তোমার খাঁচা হবো আমি। পুরো সবুজবনের রানী হবে তুমি। হাঁটবে তুমি,সাথে রইবো আমি!
রোদের তাপ দেখবো দু’জন
কৃষ্ণচুড়ার ছায়ে!!!
শিরীন– মিতা আর থাক, এর বেশি হলে আর জমবে না।
বন্যা– আমিও তাই বলি।
আজ এ পর্যন্তই……..
বন্যা ইসলাম
শিরিণ হক//
১০ মে ২০২০
১৫টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আহ্। দুবান্ধবীর কাব্যকথন কথোপকথন এ জম্পেশ আড্ডা হলো। খালি কাগজের কোনো ই্ মূল্য নেই । আকাশ ছাড়া পাখি সত্যিই বেমানান। আপনারাও একজন আরেকজন ছাড়া বেমানান। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা রইলো
বন্যা লিপি
আড্ডার হলো কি ছোটদি? ইফতারের পরে আসেন। জমবে আড্ডা….
ছাইরাছ হেলাল
দুজনের কথোপকথনের ভঙ্গিতে লেখাটি দারুন দ্যোতনা সৃষ্টি করেছে,
যদিও পাঠকের জন্য আনন্দ-আস্বাদন কঠিন হবে বৈকি।
বন্যা লিপি
সেটাই ভাবছি, উপস্থাপনায় আরো একটু সতর্ক থাকা যেত।
তৌহিদ
দুই বান্ধবীর কথোপকথন বেশ জমেছে দেখছি। এরকম আড্ডা পোস্ট এই প্রথম পেলাম। সাধু সাধু।
বন্যা লিপি
ব্যাপারটা আমার কাছেও গোলমেলে লাগলো……এরকম একটা লেখার বিভাগ কি দেয়া যায়? না একান্ত অনুভূতি, না গল্প,না উপন্যাস, না ভ্রমন কাহিনী, না আত্মস্মৃতি কথন, না ভূতের কাহিনী, না প্রেমগল্প, না বিবিধ, না সমসাময়িক, না অনুগল্প, না রম্য, না রিভিউ পোস্ট, না খেলাধুলা বিষয়ক, না অন্যান্য, কতগুলো বিভাগ আছে ব্লগে? ধুর মনেও তো নাই…… শেষমেশ এই একটা বিভাগই মনে ধরলো “আড্ডা” কি আর করবো ভাই, লেখার সাথে উপযুক্ত কোনো বিভাগ আর হাতরাইয়া পাইলাম না।
সুপায়ন বড়ুয়া
জমানো কথোপকথনটি উপভোগ্য।
ভালো লাগলো। শুভ কামনা।
বন্যা লিপি
……ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রদীপ চক্রবর্তী
বাহ্!
কী সুন্দর দুই বান্ধবীর কথোপকথন।
বেশ ভালো লাগলো দিদি।
শুভকামনা…
ফয়জুল মহী
অসামান্য ভাবনায় নান্দনিক লেখনী ।
আরজু মুক্তা
ভালোই কল্পনায় ভাসলেন
লকডাউনে এছাড়া উপায় নেই।
শামীম চৌধুরী
বন্যা আপু কোন সাগরে যে ভাসলাম বুঝতে পারলাম না। তবে ভালই লাগলো। ভালো থাকুন আপু।
শিরিন হক
আমরা দুজনেই পরিকল্পনা করে নতুন কিছু দেবার চেষ্টা করি পাঠকের জন্য। বন্যা ইসলাম যথেষ্ট গুনি এবং বিচক্ষণ লেখক। তার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল আমাদের এই কাব্য কথন
ধন্যবাদ সকলকে আমাদের উৎসাহ দেবার জন্য। আগামীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আমাদের যৌথ প্রচেষ্টায়।
মিতা তুমি পাশে থেকো সবসময়। যেনো আমরা কখনো দূরে সরে না যাই।
ভালোবাসা অপরিমেয়।তোমার
জিসান শা ইকরাম
দু বান্ধবীর যৌথ লেখা! দারুন হয়েছে।
সোনেলায় এমন যৌথ পোস্ট এর আগে আর আসেনি।
লেখার একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিলে দুজনে।
চালু থাকুক এই ধরনের যৌথ লেখা।
শুভ কামনা।
হালিম নজরুল
বাহ। বান্ধবীদ্বয়ের সুন্দর কাব্যকথন।