
আবেগঃ
আবেগ শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ “Emotion” এটি ল্যাটিন শব্দ “Emovere” থেকে এসেছে। আবেগ মানুষের জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কম বেশী প্রত্যেক মানুষের জীবনে আবেগ রয়েছে।আবেগের দুই ধরনের দিক রয়েছে।
১.Positive Emotion: হাসি,সুখ,আনন্দ,ভালোবাসা এসব positive emotion
২.Negative Emition: দুঃখ,বেদনা, কষ্ট,ভয় এগুলো Negative Emotion
আবেগ ছাড়া জীবন অচল,আবেগ আছে বলেই মানুষের জীবনে প্রেম,ভালোবাসা,দুঃখ ভয় সব রয়েছে।তবে আবেগের মাত্রা বেশী হয়ে গেলে, মানুষের নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে যায়,ফলেই মানুষ হতাশা,বিষন্ণতা,ভয়ে ভোগে, অনেকে নেশাগ্রস্ত হয়,খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে এবং জীবনে বাঁচার তাগিদ হারিয়ে ফেলে।
তাই জীবনে আবেগকে ততটুকুই প্রশ্রয় দিতে হবে যতটুকু জীবনে দরকার।কেননা আবেগের সাথে বিবেকও জড়িত।
আসুন আবেগ নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায় জেনে নেইঃ
আবেগ নিয়ন্ত্রণের উপায়ঃ
১.নিজেকে সময় দিনঃ
পারিবারিক, সামাজিক চাপে আমরা নিজে কি চাই সেটাই ভুলে যাই,তাই নিজে কি চাই,নিজের মধ্যে কি কি আছে এসব ভাবার সময়ই থাকে না। তাই নিজের চাওয়াগুলো বুঝে নিজেকে সময় দিন।নিজের গুনগুলোকে প্রকাশ করুন।
২.নিজের ভালোলাগার কাজ করুনঃ
ধরুন, আপনি ভালো গান গাইতে পারেন,বা ছবি আঁকতে পারেন,এইসব করে নিজেকে ভালো রাখুন।
৩.ডায়েরী লিখুনঃ
যখন অনেক খারাপ লাগে,বা ভালো লাগে তখন সাথে সাথে নিজের মনের ককথাগুলো নিজ ডায়েরী লিখুন,এতে নিজেকে হাল্কা লাগে।
৪.ইতিবাচক চিন্তা করুনঃ
মনের মাঝে খারাপ কিছু এলেই সাথে সাথে নেতিবাচক চিন্তা না করে ইতিবাচক চিন্তা করুন।
৫.নিজের চিন্তাভাবনায় ভালো পরিবর্তন করুনঃ
যখনি অতীতের কিছু নিয়ে নিজেকে খুব অসহায় মনে হয় তখন অতীতের খারাপগুলোকে ভুলে ভালো স্মৃতি মনে রাখুন।
৫.প্রিয় ও আপনজনের সাথে কথা বলুনঃ
যখন একেবারেই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবেন না তখন প্রিয় মানুষের সাথে কথা বলে সময় কাটান।
৬.ব্যায়াম করুনঃ
ব্যায়াম মানসিক চাপ কমায়,তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
৭.নিজেকে নিজেই কাউন্সিলিং করুনঃ
অতিরিক্ত আবেগের সময় মনকে প্রশ্রয় না দিয়ে নিজেই নিজের ভালো মন্দ বিচার করুন,নিজেকে বোঝান এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।
৮.জীবনকে ভালোবাসুনঃ জীবন এত সুন্দর এটা বুঝুন এবং সেই জীবনকে উপভোগ করুন।
৯.মোকাবেলা করার শক্তিঃ
জীবনের সব বাঁধাগুলোকে জয় করতে শিখুন।
১০. স্বপ্ন দেখতে শিখুনঃ আপনি যত বড় স্বপ্ন দেখতে চান, ঠিক ততটাই দেখুন, কেননা সেই স্বপ্নকে আপনি ছুঁতে পারবেন,মনে জোর রাখুন,এই প্রত্যাশা রাখুন।
আসুন,আবেগ নিয়ন্ত্রণ করি,নিজেকে সময় দেই,নিজেকে গুছয়ে নেই,নিজে ভালো থাকি,স্বপ্ন দেখতে শিখি,সর্বোপরি নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে উপভোগ করি।
* ছবি- নেট থেকে নেয়া।
৩৩টি মন্তব্য
নাসির সারওয়ার
কোথায় যেনো পড়েছিলাম, যে মানুষের রাগ নাই সে মানুষ না। তেমনই আবেগ না থাকলেও মনে হয় কিছু কমতি থাকে। তবে আবেগকে নিয়ন্ত্রনেও রাখতে হয় যা আপনি ভালো ভাবেই বলেছেন।
১০ নম্বর – “স্বপ্ন দেখতে শিখুনঃ”। তা দেখার তরিকাটা যদি বলে দিতেন, একটু চেষ্টা করে দেখতাম।
সুন্দর লেখা। ভালো লেগেছে। ভালো থাকুন আর ভালো ভালো লেখা পড়ার সুযোগ দিন।
নাসির সারওয়ার
নোটঃ পোষ্টের ছবিটা যদি নেট থেকে নেয়া হয়, তাহলে একটা পাদটীকা দিয়ে লেখাটা আরও উন্নত করুন । “ছবি সুত্রঃ নেট থেকে নেয়া।” এরকম কিছু।
রেজওয়ানা কবির
ভাইয়া এটা নেট থেকে নেয়া, কিন্তু কোথায় লিখব তা জানি না, তাই চেষ্টা করেও পারি নি।
নাসির সারওয়ার
পাদটীকা (নোট) আপনার লেখার শেষ লাইনেই দেয়া উত্তম।
রেজওয়ানা কবির
ভাইয়া তরিকাটা একেকজনের কাছে একেকরকম, তবে আমার মনে হয় স্বপ্ন যাই দেখি না কেন তা পজিটিভভাবে দেখলেই ভাল।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
বাহ্ আবেগ নিয়ে দারুণ একটি থিসিস পড়লাম মনে হয়। খুব সুন্দর করে লিখেছেন। আবেগহীন মানুষ কিন্তু মানুষ নয় , রোবট । আবেগ একজন মানুষের সৌন্দর্য, মানবতা হিসেবেই গণ্য করি আমি। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ আপু,একটা গোপন কথা আজ বলি, আমি আপনাকে কখনো দেখি নি কিন্তু কেন জানি আপনাকে অনেক আপন মনে হয়। ভালো থাকবেন।সহজে কাউকে জাজ করা ঠিক না তবু মনে হয় আপনি একটা ভালো মনের মানুষ।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
কথাটা শুনে সত্যিই আবেগী হয়ে গেলাম আপু। অনেক সময় এমনটাই হয় কিন্তু , চিনিনা জানিনা তবুও মনে হয় অনেক দিনের চেনা, আপন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু
রোকসানা খন্দকার রুকু।
ম্যাডামরা দেখি আবেগের ছড়াছড়ি দিচ্ছেন॥ তাই আমি আবেগেই সাড়া দিলাম।
বন্যা লিপি
আবেগ নিয়ে আমি বোধহয় আমার মতো করে লিখেছিলাম আমার ফেসবুক পেজে দুবছর আগে…..তার শেষ লাইনটা ছিলো এরকম-রাইজিং ফর দ্যা ট্রান্সফর্মেসন….এখনকার সময় আবেগের ধরন বদলাতে দেখছি আমাদের উত্তরসূরিদের মধ্যে। তথ্য উপাত্ত এবং মোটিভেসনাল লেখা। শুভ কামনা।
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ আপু।
ফজলে রাব্বী সোয়েব
চমৎকার লিখা। এরকম লিখা আরও আশা করছি। ধন্যবাদ।
রেজওয়ানা কবির
আপনাকেও ধন্যবাদ। ইনশাল্লাহ।
সাবিনা ইয়াসমিন
আবেগ যেনো কখনোই বিবেককে অতিক্রম না করে সেদিকটা খেয়াল রাখা জরুরী। আর নিজের আবেগ যেন কারো উপর চাপিয়ে দেয়া নাহয়, এইজন্য আবেগের বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে বৈকি।
খুব সুন্দর করে লিখেছেন। ভালো লাগলো 🙂
শুভ কামনা নিরন্তর 🌹🌹
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ আপু।ভালো থাকবেন।
ফয়জুল মহী
উৎকর্ষ চিন্তায় মহনীয় প্রকাশ।
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ ভাইয়া।
রোকসানা খন্দকার রুকু।
আবেগের উপর সুন্দর লেখা পড়ে নিজের কিছু কথা মনে পড়ে গেল। কিছু সময় ক্ষতিই হয়ে যায়॥
এখন আমি অবশ্য অত আবেগী না।বয়স আর ধাক্কায় বোধহয় কমে গ্যাছে।
লিখতে থাক আপু। শুভ কামনা।
রেজওয়ানা কবির
আমিও এখন আবেগকে কন্ট্রোল করতে পারি আপু।ভালো থাকো।
আলমগীর সরকার লিটন
আপু কি আপনি মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশনা করেছেন নাকি
আসলে আবেগ ধরে রাখা যায় না তবুও চেষ্টা করতে হয়———————
রেজওয়ানা কবির
ভাইয়া, এইস এস সি তে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করেছিলাম,আর অনার্স, মাস্টার্স ফুড এন্ড নিউট্রিশন।তবে এখানেও মনোবিজ্ঞান ছিল,তাই একটু জানি আর কি😋😋😋
শামীম চৌধুরী
দারুন লিখেছেন। আবেগ দিয়ে কোন কাজই সফলতার মুখ দেখে না। ভাল থাকবেন।
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ ভাইয়া।
ছাইরাছ হেলাল
জীবন কী ঘড়ির কাটা
থাকেবে দম দেয়া/নেয়া?
রেজওয়ানা কবির
আমাদের সময়তো বাঁধা।
তৌহিদ
আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন তবে অসম্ভব নয়। আবেগের নদীতে গা না ভাসানোই উত্তম।
শিক্ষণীয় পোষ্ট। শুভকামনা আপু।
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ ভাইয়া।
সৌবর্ণ বাঁধন
সুন্দর। পজিটিভ বা নেগেটিভ ইমোশন দুইয়ে মিলেই মানুষ।
রেজওয়ানা কবির
হুম ধন্যবাদ ভাইয়া।
খাদিজাতুল কুবরা
আবেগ বিবেক দুইয়ের সমন্বয়ে মানব জীবন। কোনো একটির ঘাটতি অনর্থ ডেকে আনে বলে আমি বিশ্বাস করি।
সুন্দর মোটিভেশনাল লেখা।
ভালো লেগেছে আপু
রেজওয়ানা কবির
ঠিক বলেছেন আপু।ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
আরজু মুক্তা
বড় বড় মানুষের আবেগ। গরীবদের আবেগ নাই। ওদের শুধু ক্ষিধা।
শুভকামনা
উর্বশী
বিবেক মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে আবেগ তখন কাজ করেনা বললেই চলে, অন্তত নিজের বেলায় সেটা উপস্থাপন হয়।অন্যের ব্যাপার তো তাদের সীমানায়। খুব ভাল লিখেছেন।ভাল মন্দ, বিবেক,বোধশক্তি নিয়েই তো জীবন।কিছু হেরফের হতেই পারে সেটাও দেখার বিষয়।