হাসনাহেনার সৌরভে গভীর রাত আরও গভীরতর হয়ে এলে
এলে হয়ে, শেয়ালের ডাকে কেঁপে উঠে শ্মশানের পাড়।
উঠে বারবার। ইথারে ভেসে এলে সেই স্বর, এলে ভেসে
নীরবতা ভাঙে, ভাঙে আমার। ইদানিং এভাবেই ফেরে সম্বিত।
কুয়াশার চাঁদর জড়িয়ে আসা শীতের ঠোঁট চুইয়ে তাকিয়ে দ্যাখি,
দ্যাখি ঝরছে ফোঁটা ফোঁটা শিশির। দ্যাখি, যাই দ্যাখে দ্যাখে!
ইদানীং এভাবেই কেটে যাচ্ছে, কেটে যাচ্ছে বিনিদ্র রাত সব
আমার, কেটে যাচ্ছে ফেলে আসা সেইসব দিনরাত্রি ভেবে ভেবে।
ভেবেছিলাম ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন শেষে উপকূলবাসী নেয় যেমন
মেরামত করে, নেয় বাড়িঘর তাঁদের, করে পুনর্বার যেভাবে
ফিরে এলে তুমিও তেমনি, এলে আমরাও মেরামত করে
নেবো তেমন, নেবো করে ভালোবাসার যৌথ খামার আমাদের।
গ্রীষ্মের প্রখর, বর্ষার অঝোর কিংবা রঙ ঝরা বসন্তেও প্রতীক্ষায়
ব্যাকুল থেকে থেকে অথচ, অথচ সয়ে নিলাম, নিলাম সয়ে
যতসব দুঃখ আর দুঃসময়! সয়ে নিলাম, নিলাম কেবলই সয়ে!
পাথর চাপা কষ্টগুলো গলে গলে সব জল হলে অতঃপর কতবার-,
কতবার চাইলাম, চাইলাম পাড়ি দিতে ব্যাবধানের আটলান্টিক!
চাইলাম, চাইলাম কেবলই, অথচ ফিরলে না, ফিরলে না আর…
কতটা অভিমানে নিজেকে রাঙালে, এলো শুধুই দুঃখ আর দুঃসময়!
আমার সব উত্তলতা স্থির হয়ে এলে, হলে স্থির অদৃশ্য যাদুমন্ত্রবলে
এখনো কেবলই, কেবলই দ্যাখে যাই, যাই দ্যাখে দ্যাখে কিভাবে
ঝরে যায় ফোঁটা ফোঁটা শিশির, যায় ক্রিউলেস্ট শীতে জুড়ে ঝরে।
কেবলই দ্যাখে যাই আমি, যাই দ্যাখে বুকের পুরোটা জুড়ে, অথচ
ব্যাবধানের আটলান্টিক পেরিয়ে জানি ফিরবেনা; ফিরবেনা কখনোই!
১৬ অক্টোবর ২০১০
মধ্যরাত্রি, বরগুনা।
২০টি মন্তব্য
বনলতা সেন
আপনার জন্য কেউ ফিরে না এলেও আপনি এখানে আবার এতদিন পর এসেছেন
তা দেখে আমাদের ভাল বৈ মন্দ লাগছে না ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ বনলতা। ফিরতে পেরে ভালো লাগছে আমারও।
জিসান শা ইকরাম
স্মৃতিরা এমনই হয়
দগ্ধ করে আগুন হয়ে ।
অনেক দিন পর প্রিয় কবিকে দেখে ভালো লাগছে খুব ।
শুভ কামনা সব সময়ের জন্য -{@
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ ভাইয়া। আশা করি ঈদের পর থেকে সোনেলায় আবার নিয়মিত হতে পারবো আপনাদের সাথে।
নীলকন্ঠ জয়
অনেক ভালো লাগল “স্মৃতির নীলাভ আগুনে”।
এমন সুন্দর লেখা আরো চাই।
শুভেচ্ছা।
মর্তুজা হাসান সৈকত
জি ভাই আরও পাবেন ইনশাল্লাহ, ঈদের পর থেকে আবারো নিয়মিত হচ্ছি সোনেলায়।
আদিব আদ্নান
মেরামত নয় পুনঃ নির্মাণ করুন ।
অনেক কদিন পরে লিখলেন ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
কবিতায় সবসময় আমাকে মেলানো ঠিক হবেনা, আমি নিজে লিখলেও লিখা সবসময় আমার কথা বলেনা।
খসড়া
দ্যাখে দ্যাখে আমিও ক্লান্ত ভাই লিখে খুব খেয়াল করে বানান দেখুন। কবিতা ভাল হয়েছে।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ভুল ধরতে এসে নিজেই ভুল করা উচিত নয়। কবিতায় সাদা শব্দটি এভাবেও লিখা হয় (শাদা) । তেমনি দেখে শব্দটি কবিতায় ব্যাবহার করা হয় (দ্যাখে)। প্রচুর শব্দ কবিতায় স্বতন্ত্র বানানে লিখা হয়। বাংলা অভিধান দয়া করে বের করে দেখুন। আর আরেকটা কথা না বলে পারছি না বিভ্রান্ত না করে নিজে আগে ভালো করে জানুন, শিওর হোন তারপর অভিমত জানান, এভাবে বারবার ভুলভাবে নয়।
খসড়া
শাদা=সাদা জানা ছিল না। দু:খিত। আপনার কবিতার কোথাও আঞ্চলিক শব্দ ব্যাবহার নেই এই একটি শব্দ ছাড়া। দ্যাখে শব্দটি তাই বড় দৃষ্টি কটু লেগেছে। আমি আধুনিক কবিতার কিছু বুঝি না শুধু বুঝি গুরুচন্ডালি দোষ বড় দোষ। দু:খিত আমার ভুলের জন্য।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ব্যাবহার করা শব্দ ‘দ্যাখে’ আঞ্চলিক ভাষার শব্দ নয়, একদমই নয়। বাংলা একাডেমী প্রণয়ন করা অভিধানটার শেষ সংস্করণ একটু দয়া করে ঘেঁটে দেখবেন আশা করি বুঝতে পারবেন তাহলে কী লিখা উচিত ছিলো কিংবা লিখেছেন কী। শব্দটি আধুনিক বাংলা ভাষায় বহুল প্রচলিত শব্দ, চারপাশে একটু ভালোভাবে খেয়াল করুন, দেখতে পারেন।
মা মাটি দেশ
হুম !!ভালো লাগল।আশা করি নিয়মিত পাব।
মর্তুজা হাসান সৈকত
আমিতো এখানের পুরনো মানুষ। মাঝে মাঝে একটু আধটু ব্রেকে যাই আরকি!
ছাইরাছ হেলাল
কবিতায় ফিরে পাওয়ার ফিরিয়ে আনার প্রবল প্রচন্ড আকুতি
ভাল ভাবেই ফুটে উঠেছে ।
যাক একে বারে ভুলে যাননি দেখে ভালো লাগল ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ভুলে যাইনিতো ভাই ! খানিকটা ব্রেকে আছি। ফিরছি দ্রুতই খুব।
শিশির কনা
আপনার কবিতাগুলো বড় হলেও ভাব একই রকম থাকে , ভেঙ্গে যায়না বা কেটে যায়না । অসাধারণ লিখেন আপনি।
মর্তুজা হাসান সৈকত ভাই কেমন আছেন। বেশ কিছুদিন অনিয়মিত ছিলাম। আবার এসেছি ফুল স্পীডে 🙂
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ শিশির কনা অনুপ্রেরণাদায়ী অভিমতের জন্য। তবে হ্যাঁ আমি কিন্তু এখনো ব্রেকেই আছি আর স্পীডটা একটু আস্তে আস্তেই দেই কী বলেন! আপনি আছেন কেমন?
শিশির কনা
জি ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ । আপনি ভালো আছেন তো । থাকুন ব্রেক এ , আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত , একে শ্রদ্ধা জানাই আমি। তবে আমি আছি ফুল স্পীডে । তেমন লিখতে পারিনা , তবে লেখা পড়তে পারি 🙂
মর্তুজা হাসান সৈকত
আমি মূলত ঢাকায় ফিরেই নিয়মিত হবো। এখনো দেশের বাড়ি আছিতো তাই অনিচ্ছাকৃত ব্রেক। আপনিওতো ভালো লিখেন অনেক।