বিষয় ঃস্বাস্থ্যকর খাবার (কালিজিরা)
নিজেকে ভালো রাখতে সবাই চাই।
সুস্থ শরীর সুস্থ মন
সুখী থাকে গৃহকোণ।
পরিবারের প্রতিটি সদস্য সুস্থতা আমাদের কাম্য।আমাদের খাদ্যাভ্যাস এমন হওয়া উচিত যেনো সকল রকম পুষ্টি এবং ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে।
কালিজিরা এমন একটি খাবার, যার গুনাগুন বলতে গেলে লেখা শেষ হবেনা।করোনাকালীন সময়ে মানুষ বোঝেছে কালিজিরা কতটা উপকার করে।
আমি ছোটবেলা থেকেই আমার আম্মাকে দেখেছি খাবারে কালিজিরা ভর্তা সব সময় মেনুতে রেখেছেন।সাথে ঘরে বানানো। তরকারি কম থাকলেও ঘি এবং কালিজিরা ভর্তা হলে সেই বেলা চালিয়ে নিতেন। আমাদের নিজেদেরকে সুস্থ রাখার জন্য এই ছিল পদক্ষেপ। তবে এখন খালিপেটে প্রতিদিন অল্প কিছু কালিজিরা খাই ।মৃত্যু ছাড়া সব রোগের ঔষধ এই কালিজিরা।
আজ আমি তাই এই কালিজিরা নিয়েই কিছু বলার চেষ্টা করছি। কালিজিরা সহজলব্য এবং পুষ্টি গুণে ভরপুর। আমার মনে হয় কম বেশী সবাই জানেন।সেই নবীদের আমল থেকেই কালিজিরার ব্যবহার হয়ে এসেছে। পবিত্র কুরআন শরীফেও এর কথা উল্লেখ আছে।বিজ্ঞ গুনীজনেরা হয়তো আরও ভাল জানবেন এবং বলতেও পারবেন।
যদি কেও ওজন কমাতে চান,কিংবা নিজেকে ফিট রাখতে চান,,,
প্রতিদিন খালিপেট এক গ্লাস গরম পানিতে, কালিজিরা এবং লেবুর রস সাথে মেথি গুড়ো দিয়ে খেয়ে অভ্যাস করুন, দেখবেন অল্প কদিনেই আপনার ওজন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।
অবশ্য আমি এটা করিনা।
কালিজিরা সাথে মধু,
রোগ সমাধানে যাদু।
ছোট-বড় নানাবিধ অসুখ-বিসুখ এখন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গিয়েছে। তাতে কি? সব রোগের ওষুধ তো হাতের কাছেই পাওয়া যায়। তাই এসব নিয়ে মাথা ব্যাথা কম করলেও চলবে। এমনটাই ভেবে প্রতিদিনের খাবারের সাথে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার অভ্যাসটা হাসি মুখেই মেনে নিয়েছি আমরা।
আমি অবশ্য কালিজিরা পাটায় মিহি করে বেটে ছোট ছোট করে রোদে ভাল করে শুকিয়ে এয়ার টাইট কৌটায় রেখেছি,এবং প্রতিদিন একটি করে খেয়ে নেই চায়ের চামচের এক চামচ মধু দিয়ে। ছেলেকে খাওয়ানোর জন্য এই পদ্ধতি গ্রহন করতে হয়েছে। সব সময় বাচ্চারা খেতে চায়না। মেডিসিন বানিয়ে বলেছি তোমার কালিজিরা খেতে হবেনা। মেডিসিন মনে করে খেয়ে নাও।এখন ঠিক খেয়ে নেয়। মায়েদের কখনও সুপার মম এর ভূমিকায় থাকতে হয়।
বিজ্ঞান যা গবেষণা করে বের করেন,তা সব কিছুই পবিত্র কুরআনে উল্লেখ আছে আমাদের নবীজির বানীতে।
কালিজিরা এবং মধুর ব্যবহার আদিকাল থেকে হয়ে আসছে। যার বিকল্প কিছু আজও পাননি বিশেষজ্ঞরা৷ ১৪৫০ বছর আগেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যার প্রমাণ স্বরূপ বলেছেন- “কালিজিরা সকল রোগের ওষুধ কেবল বিষ ছাড়া। ” তিনি (আয়েশা) বললেন ‘বিষ’ কী? জবাবে নবী (সা.) বললেন, “মৃত্যু”। (সহিহ বুখারি ৫৩৬৩) আর মধুর কার্যকরীতর কথা তো মহাগ্রন্থ আল কোরআনেও বলা আছে।
তবে আশ্চর্য্যকর প্রমাণ হয়তো এই ১৪৫০ বছর পরই পাওয়া গেলো! সৌদি গবেষকদের মতে কালিজিরা, ক্যামোমিল ও প্রাকৃতিক মধু দ্বারা তৈরিকৃত এক ওষুধ দ্বারাই মিলবে করোনার প্রতিষেধক। হাদিসের বাণীর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘তাইবুভিড’ নামে একটি ওষুধ তৈরি করেছে মদিনার ‘তাইবাহ ইউনিভার্সিটির অ্যান্টি-কোভিড ট্রিটমেন্ট’ গবেষক দল।
করোনাভাইরাস এর এই মহামারী সময়ে কালিজিরা একটা উপকারি টনিক হিসেবে কাজ করেছে।
কালিজিরাকে বলা হয় ‘সকল রোগের মহৌষধ’। রান্নাঘরের দরকারি মসলা ও ফোড়নের অন্যতম উপাদান এটি। সেইসঙ্গে কালিজিরার রয়েছে অসাধারণ ঔষধি ক্ষমতা।
পুষ্টিবিদ ও খাদ্যবিজ্ঞানীদের মতে, শুধু রান্নায় স্বাদ যোগ করাই কালিজিরার একমাত্র কাজ নয়; বরং প্রতিদিনের একটুখানি কালিজিরা শরীরকে নানা অসুখের সঙ্গে লড়তেও সাহায্য করে।
১. সর্দি-কাশি রুখতে কালিজিরা দিয়ে ঘরোয়া চিকিৎসা নতুন কিছু নয়। একটি পরিষ্কার কাপড়ে কালিজিরা জড়িয়ে তা নাকের কাছে নিয়ে বড় করে শ্বাস টানুন কিছুক্ষণ ধরে। এর ঝাঁজ বুকে জমে থাকা কফ টেনে বের করতে সাহায্য করে। নাক বন্ধের সমস্যায়ও ঘরোয়া এই উপায়ের জুড়ি মেলা ভার।
২. কালিজিরায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফসফরাস। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়াতে সাহায্য করে ফসফরাস। তাই জীবাণুর সংক্রমণ ঠেকাতে কালিজিরাকে অবহেলা করলে চলবে না।
৩. উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগলে সপ্তাহে একদিন কালিজিরার ভর্তা রাখুন ডায়েটে। কালিজিরার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। রক্তচাপের ওষুধের সঙ্গে এই পথ্য বিশেষ কার্যকর।
৪. পেটের সমস্যায়ও কাজে আসে এই মসলা। কালিজিরা ভেজে গুঁড়া করে নিন। এবার আধা-কাপ ঠাণ্ডা করা দুধে এই কালিজিরা এক চিমটে মিশিয়ে খালি পেটে প্রতিদিন খান। পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
৫. শ্বাসকষ্টের সমস্যা হঠাৎ মুশকিলে ফেললে সব সময় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার অবস্থা থাকে না। অনেক সময় হাতের কাছে দরকারি ওষুধও থাকে না। কালিজিরা কাপড়ে জড়িয়ে রাখুন। এ বার নাকের কাছে নিয়ে এর গন্ধ শুঁকুন। শ্বাসকষ্টের কষ্ট থেকে সাময়িক মুক্তি দিতে পারে এই ঘরোয়া উপায়।
৬. শুধু কালিজিরাই নয়, এর তেলও শারীরিক নানা সমস্যা সমাধানে কাজে আসে। দীর্ঘমেয়াদি মাথার যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে কালিজিরা তেল কপালে মালিশ করলে আরাম পাওয়া যায়।
৭. চুল পড়া রুখতেও কালিজিরার তেল উপকারী। এক চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে সমপরিমাণ কালিজিরার তেল মিশিয়ে গরম করে নিন। মাথায় ত্বকে এই তেল কুসুম গরম অবস্থায় মালিশ করুন। এক সপ্তাহ টানা এমন করলে চুল পড়ার সমস্যা মিটবে অনেকটাই।
৮. স্থূলতা রুখতে গ্রিন টির সঙ্গে মিশিয়ে নিন কালিজিরার গুঁড়া। মেটাবলিজম বাড়িয়ে শরীরের মেদ ঝরাতে বিশেষ কাজে আসে এই ঘরোয়া কৌশল।
৯. বৃষ্টি ভেজার ফলে সর্দি-কাশি থেকে বুকে চাপ লাগলে কালিজিরা তেল গরম করে বুকে ও পিঠে মালিশ করে চাদর গায়ে থাকুন কিছুক্ষণ। বার কয়েক করলেই কষ্ট কমবে। কাশির প্রকোপ থেকেও রক্ষা পাবেন অনেকটাই।
১০. কালিজিরা ব্যথা সারানোর অন্যতম দাওয়াই। দীর্ঘদিনের পুরোনো ব্যথা বা বাতের ব্যথায় কালিজিরার তেল মালিশ করলে কিছুটা স্বস্তি মেলে।
১১. কালিজিরা ফসফেট, ফসফরাস ও লৌহের উপস্থিতি বেশি পরিমাণে থাকায় রক্তস্বল্পতার রোগীরাও এ থেকে উপকার পেয়ে থাকেন। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যারোটিন থাকায় তা অ্যান্টিক্যানসার হিসেবেও খাদ্যমহলে জনপ্রিয়।
নিজের সামান্য জ্ঞান,ও কিছু করনীয় কাজ এবং বিভিন্ন হেলথ কেয়ার থেকে সাহায্য নিয়েই আজকের পরিবেশনা। আমার শারীরিক সুস্থতার সহায়তা করার একটি অংশ কালিজিরা। আপনিও বেছে নিতে পারেন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই কালিজিরা।এই বিষয় নিয়ে অনেকেই অনেক ভাল লিখেছেন। নতুন কিছু ছেলে মেয়েরা উদ্যোক্তা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে তারা সবাই এ নিজে কাজ করছে, সেটাও একটি সম্ভাবনার দিক।
২৬টি মন্তব্য
ইঞ্জা
বাহ চমৎকার বিষয়ে নিয়ে লিখলেন দেখে আনন্দিত হলাম আপু, তাও কালিজিরা নিয়ে, খুব ভালো লিখেছেন আপু।
যুগে যুগে এই কালিজিরা এই ভারতবর্ষে চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে যা সত্যি উল্লেখযোগ্য।
ধন্যবাদ সুন্দর এবং চিকিৎসা সহায়ক লেখাটি দেওয়ার জন্য।
উর্বশী
ইঞ্জা ভাইয়া,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সময়পোযোগী লেখা হবে যদিও কম বেশী সবাই জানেন।তবুও লেখাটি দিলাম।খুব ভাল থাকুন, অফুরান শুভ কামনা।
ইঞ্জা
খুব ভালো লিখেছেন আপু।
নিতাই বাবু
খাবারের সাথে কালিজিরা আমার প্রিয় খাদ্য। আর তা যদি হয় কালিজিরার সাথে কিছু ধনিয়াপাতা আর কাঁচামরিচ বেঁটে বর্তা বানানো যায়, তাহলে তো আর কথাই নে!
সময়োপযোগী বিষয় নিয়ে লেখা পোস্টের জন্য অজস্র ধন্যবাদ-সহ শুভকামনা থাকলো।
উর্বশী
নিতাই বাবু দাদা,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। খুব ভাল থাকুন, অফুরান শুভ কামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু।
অসাধারণ একটি শিশিক্ষনীয় লেখা।
শুভ কামনা।
উর্বশী
রোকসানা খন্দকার রুকু আপু,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সঠিক বলেছেন।তবে কম বেশী সবাই জানেন হয়তো।খুব ভাল থাকুন,অফুরান শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
স্বাস্থ্যসম্মত ও উপকারি পোস্ট দেবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই সময়ে কালোজিরার উপকারিতা অনেক। খুব ভালো লেগেছে এর বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরে। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা অবিরাম
উর্বশী
সুপর্নাফাল্গুনী আপু,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সময়পোযোগী লেখা, যদিও কম বেশী সবাই জানেন হয়তো। খুব ভাল থাকুন, অফুরান ভালোবাসা রইলো।
রেজওয়ানা কবির
কালিজিরা সত্যি অনেক উপকারী।অনেক কিছু জানলাম।
উর্বশী
রেজওয়ানা কবির আপু,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। খুব ভাল থাকুন ,অফুরান ভালোবাসা রইলো।
সুপায়ন বড়ুয়া
কালোজিরা বহুবিধ রোগের মহাঔষদ।
খুব ভালো লেগেছে এর বিস্তারিত তুলে ধরার জন্য। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা
উর্বশী
সুপায়ন বড়ুয়া দাদা,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। খুব ভাল থাকুন অফুরান শুভ কামনা।
সুপায়ন বড়ুয়া
আপনাকে ও ধন্যবাদ। শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
খুব সুন্দর উপস্থাপন,
এটি আমাদের পরিবারের সবার প্রিয়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ,
এমন করে বিষয়ান্তরে গিয়ে লিখুন।
উর্বশী
ছাইরাছ হেলাল ভাইয়া,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। চেষ্টা করবো। খুব ভাল থাকুন,অফুরান শুভ কামনা।
তৌহিদ
কালিজিরার অনেক উপকার কিন্তু! আপনার লেখা পড়ে বিস্তারিত জানলাম।
শুভকামনা আপু।
উর্বশী
তৌহিদ ভাইয়া,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। ভাল থাকবেন,অফুরান শুভ কামনা।
ফয়জুল মহী
জনগুরুত্বপূর্ণ একটি বিয়ষ লিখলেন । আপনি একজন ডাক্তারও জানা হল। তবে কালো জিরায় আমি উপকার পেয়েছি
উর্বশী
ফয়জুল মহী ,
আন্তরিক ধন্যবাদও কৃতজ্ঞতা। হুম, এই ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন নেই। আসলেই খুব উপকারী জিনিস। ভাল থেকো শুভ কামনা।
খাদিজাতুল কুবরা
কালিজিরার মতো দরকারি একটি মশলার এতোগুন।
অনেক কিছু জানা হলো।
অনেক ধন্যবাদ বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য।
উর্বশী
খাদিজাতুল কুবরা আপু,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সময় নিয়ে পড়ার জন্য অফুরান ভালোবাসা। জিনিস ছোট হলে গুনাবলী তার বিশাল।
আরজু মুক্তা
আমরা প্রতিদিন কালোজিরা খাই। আর আপনার লেখা পড়ে অনেককিছু জানলাম। ধন্যবাদ
উর্বশী
আরজু মুক্তা আপু,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। অনেক গুনাবলীর জিনিস। সবাই এর সঠিক ব্যবহার করছেন এবং ভাল থাকছেন। অফুরান ভালোবাসা রইল।
সাবিনা ইয়াসমিন
দেখতে কালো,
কিন্তু গুনমুগ্ধ সকলেই তারে বাসিয়াছে ভালো 🙂
কালোজিরা আমার খুবই প্রিয়।
বিশেষ করে এর ভর্তা।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর গোছানো উপকারী এক পোস্ট দেয়ার জন্য। ভালো থাকুন আপু।
শুভ কামনা অবারিত 🌹🌹
উর্বশী
সাবিনা ইয়াসমিন আপু,
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সময় নিয়ে পড়েছেন অনেক ভালোবাসা আপু। খুব ই উপকারী জিনিস। যদিও কম বেশী সবাই জানেন,সময়পোযোগী বলেই একটু লিখলাম। ভাল থাকুন বিউটিফুলআপু।