আমাদের মৃত্যু আসে-মাঠে ঘাটে পাট ক্ষেতে আলে,,,
আমাদের মৃত্যু আসে-ঢাকা কুমিল্লা সিলেট বরিশালে,,,
আমাদের মৃত্যু আসে –ঝোপে ঝাড়ে নদী নালা খালে,,,
আমাদের মৃত্যু আসে-ফিলিস্তিনের গাজাতে বারুদের স্তুপে,,,
আমাদের মৃত্যু আসে-সুডৌল ট্রাফিক আইল্যান্ডে ধুধু চরে,,,
আমাদের মৃত্যু আসে-দাউ দাউ জ্বলন্ত অগ্নির নিষ্ঠুর ছোবলে,,,
আমাদের মৃত্যু আসে-জাহাজ বোঝাই করে, কখনো বা প্লেনে চেপে,,,
আমাদের মৃত্যু আসে-শত গ্লানি লজ্জায়, অপবাদ, অপমানে নিজ হাতে,,,
আমাদের মৃত্যু আসে-সুপরিকল্পিত নকশারুপে,,,
আমাদের মৃত্যু বিউগলে বিউগলে যায় ডেকে……
কতো ভাবে যে আসে আমাদের মৃত্যু?—মৃত্যু নিয়ে লেখাটা অনেক আগে লিখেছিলাম—
মৃত্যু খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার—জন্মিলেই মরিতে হবে—এটা সবাই জানে, আমিও জানি—অথচো এই স্বাভাবিক জিনিসটা কেনো আমরা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারি না?—এই স্বাভাবিক জিনিসটা কেনো আমাদের কাছে স্বাভাবিকভাবে এসে ধরা দেয় না?—একটা মানুষ হঠাৎ করে অল্প সময়ের মাঝে মারা গেলে সে শুধু নিজে একা মরে না, আরো কিছু আপন মানুষকে সে জীবন্ত লাশ বানিয়ে যায়—একটা মৃত্যু কেড়ে নেয় ভালোবাসাকে, আদরের ভাইকে, মাথার উপর বট বৃক্ষের মতো ছায়া দেওয়া বাবাকে, কেড়ে নেয় অতি আপনজনকে—তাহলে মৃত্যু কিভাবে স্বাভাবিক হয়?—একটা মৃত্যু তিলতিল করে গড়ে তোলা স্বপ্নসৌধকে ভেঙে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয়, বিধ্বস্ত বিমর্ষ করে যায় অনেকগুলো আপনজনকে—তাহলে মৃত্যু কিভাবে স্বাভাবিক হয়?—একটা ছোট ছেলে বাবার সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবে বলে সবার অজান্তে যখন কবরস্থানে গিয়ে কবর খোঁড়া শুরু করে, তখন কিভাবে বলি যে মৃত্যু খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার—একটা মৃত্যু যখন আনন্দ আর ভালোবাসায় আলোকিত পরিবারটাকে স্তব্দতার কালো বেদনায় থমথমে করে দেয়, তখন কিভাবে মেনে নিই আমাদের অপেক্ষা শুধু এই মৃত্যুর জন্যই……….
তাহলে কি ওমর খাইয়াম ই যথার্থ বলেছেন যে, মৃত্যুই জীবনের অপরিহার্য পরিণাম-বৃথা সে শক্তির নিকট কাতর প্রার্থনা, বৃথা তার নিকট সুখের আকুল প্রার্থনা, বৃথা পুণ্যের পুরষ্কার ও অত্যাচারের প্রতিকার ভিক্ষা—সবকিছুই মিথ্যা, শুধু মৃত্যুই সত্য…………
(খেয়ালী মেয়ে)
২৯টি মন্তব্য
লীলাবতী
মৃত্যুকে আমরা ভয় পাই।এর কারন হচ্ছে মায়া।মায়ার জগতে থাকতে চাই আমরা।
খেয়ালী মেয়ে
মায়া কখনো পিছু ছাড়ে না আপু……..
লীলাবতী
মায়া পিছে না থাকলে আমরা মরে যেতাম।অনেক মায়ায় জড়িয়ে আছি,থাকতে চাই।
খেয়ালী মেয়ে
এই মায়া যে অনেক কষ্ট দেয়…..
জিসান শা ইকরাম
এত ভাবে মৃত্যু আসে!!
সব জানা তারপরেও এমন করে ভেবে দেখিনি কখনো।
অনেক ভাবো তুমি বুঝা যাচ্ছে।
মৃত্যুই একমাত্র সত্যি যা কেউ এড়াতে পারেনা।
এটি আসবেই।
তারপরেও আমরা মৃত্যুকে এড়াতে চাই…… কারন মৃত্যু পরবর্তী জীবন সম্পর্কে কিছুই জানিনা না।
লীলাবতী বলেছে……… মায়ার বাধনে আমরা বাঁধা পরে আছি।
খেয়ালী মেয়ে
এই মৃত্যুকে আমি অনেক ঘৃনা করি ভাইয়া……
ব্লগার সজীব
স্বাভাবিক বলতে এখানে বুঝায় সত্য।এটি হবেই।মৃত্যুকে ভয় পাই আপু।এই চেনা জগত হতে চলে যেতে হবে,এটি ভাবতে পারিনা।
খেয়ালী মেয়ে
প্রিয়মানুষগুলো আমাদের একা রেখে এক এক করে চলে যাবে ভাবতেই বুক ভেঙে কান্না আসে…..
স্বদেশী যোদ্ধা
মৃত্যু অখন্ডনীয় আর মৃত্যুই মানুষের সর্বশেষ ভবিষ্যৎ।
খেয়ালী মেয়ে
সবকিছুই নাকি মিছে, শুধু মৃত্যুই সত্য…….
শুন্য শুন্যালয়
মৃত্যু শব্দটাই শুধু স্বাভাবিক, এর সাথে জুড়ে থাকা সবকিছু অস্বাভাবিক। তবু দেখো আমরা সবাই কিছুদিন পর চলতে শুরু করি, স্থবিরতা আমাদের স্থবির করে দিতে পারেনা। আমার পরী আপুটাকেও এই ভাবনায় পেয়েছে!! আমিও যে বের হতে পারছিনা।
কবিতা তোমার ভাবনা সুন্দর ভাবে ফুটিয়েছ আপু। -{@
খেয়ালী মেয়ে
কোনকিছুই থেমে নেই আপু, সবকিছুই চলছে———শুধু ভিতরটায় প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে……….
ছাইরাছ হেলাল
একজন লিখছে আজরাঈলকে নিয়ে, আপনি মৃত্যুকে নিয়ে, ঘটনা কী?
আমিও বিশ্বাস করি আমাদের জীবনে মৃত্যুই একমাত্র সত্যি।
নিয়মিত লেখা চাই।
খেয়ালী মেয়ে
কে লিখেছে আজরাঈলকে নিয়ে?……..
লিখতে চাই নিয়মিত…..
সীমান্ত উন্মাদ
মৃত্যু অনিবার্য এবং আমার কাছে সহস্র শব্দের পরিসংখ্যান মাত্র।
আর বাংলাদেশে মৃত্যুঃ স্বাভাবিকের চেয়ে অকালে মৃত্যু এখানে অহরহ। কারন একটাইঃ বাংলাদেশ হুমকিই যেখানে আশ্বাস, বেঁচে থাকাটা সেখানে বোনাস।!!
যাই হোক মৃত্যু চিন্তা আত্মাকে শুদ্ধ করতে সাহায্য করে।
ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, এবং বেঁচে থাকুন। শুভকামনা নিরন্তর।
খেয়ালী মেয়ে
বাংলাদেশ হুমকিই যেখানে আশ্বাস, বেঁচে থাকাটা সেখানে বোনাস।!! (y)
শুভকামনা রইলো আপনার জন্যও……
নীলাঞ্জনা নীলা
এই শব্দটা নিয়ে ভাবিনা। যেদিন আসার আসবে।
জীবনের শেষ পরিক্রমা…(প্রিয় এক দাদুর যাকে আমি কলকাতার দাদু ডাকতাম, তার চলে যাবার খবর শোনার পর)
মৃত্যু : তোমার দেহ অদৃশ্য
বিচ্ছেদ : আর তোমায় ফিরে না পাওয়া
প্রিয় মুখ , প্রিয়তর কথা
ক্যামেরা থেকে ফ্রেমবন্দী
সে কখনো বলেনা :
“কতোদিন পরে দেখা হলো ।”
আদর – স্পর্শ , কোমল অনুভূতি স্মৃতির পিঠে
যাত্রা : তারপর শ্মশান কিংবা কবরে
গন্তব্য : না – ফেরার দেশে
হায় , নির্ভেজাল ভালোবাসা কেবল হারিয়ে যায় !
ল্যুভেন – লা – ন্যুউভ , বেলজিয়াম
২৪ জানুয়ারী, ২০১০ ইং।
অরণ্য
নীলা আপু, লেখাটা ভাল লাগল বেশ।
খেয়ালী মেয়ে
নীলা আপু খুব ভালো বলেছো——-শব্দটা নিয়ে ভাবতে চাই না, কিন্তু এই মৃত্যুকে যে খুব কাছ থেকে দেখেছি, কিভাবে এড়িয়ে যাই বলো—-
অনিকেত নন্দিনী
মৃত্যু আমাদের অপরিহার্য নিয়তি তবুও আমরা মরতে চাইনা, ভয় পাই। দুনিয়ার লক্ষ হাজার কাজের মাঝে ব্যস্ত থেকে মৃত্যুকে ভুলে থাকার চেষ্টা করি অথচ নির্মম সত্যি এই যে যেখানেই যাই না কেন যত ব্যাস্ততায়ই থাকিনা কেন নির্ধারিত সময়ে মৃত্যু আমাদের ঠিকই গ্রাস করবে।
খেয়ালী মেয়ে
হুমমম মৃত্যুই সত্যি—তারপরও মেনে নিতে পারি না…….
প্রজন্ম ৭১
মৃত্যু স্বাভাবিক তারপরেও এটি ভয়ংকর অন্ধকার ময় একটি জগৎ।
খেয়ালী মেয়ে
মৃত্যু খুব নিষ্ঠুর-কেড়ে নেয় অতি আপনজনকে………
অরণ্য
“শুধু মৃত্যুই সত্য।” ইহাকে আমি মানিয়া লইয়া ব্রত লইয়াছি “রানিং টুয়ার্ডস আ সাকসেসফুল ডেথ”।
জন্মিলে মরিতে হবে – ইহার ব্যত্যয় কেহ দেখিবে না; কিন্তু কিছু মৃত্যুকে আমরা “অস্বাভাবিক মৃত্যু”ও বলিয়া থাকি। মৃত্যুর সহিত আলিঙ্গনের পূর্ব পর্যন্তও আমরা কিছু করিয়া চলিব; তাহাও সত্য বলিয়া ভাবিতে হইবে। অন্যথায় মৃত্যুর লাগিয়া আমাদিগকে আলস্যে প্রতীক্ষার প্রহর গুনিতে হইবে। তাহা আরও ভয়ানক হইবে।
খেয়ালী মেয়ে, মৃত্যুকে সত্য জেনেও মুখে হাসি রাখতেই হবে। জীবনেরও কিছু মানে আছে যদি তা আমরা করতে পারি। হয়তো তা এমন হতে পারে যেন অন্য কাউকে আর এভাবে না দেখতে হয় জীবন এবং মৃত্যুকে।
ভালো থাকবেন।
খেয়ালী মেয়ে
ধন্যবাদ এতো সুন্দর করে ব্যাখ্যা করার জন্য…….
ভালো থাকবেন আপনিও………
তামিম রুহুল
মৃত্যু সকল ভাবেই আসে,যার নির্দিষ্ট কোন রুপ নেই
খেয়ালী মেয়ে
বিবর্ণ নিষ্ঠুর মৃত্যু…….
আশা জাগানিয়া
মৃত্যু আসে প্রেমিকের অবহেলা,উপেক্ষা,প্রত্যাক্ষানে। লেখা ভালো লেগেছে আপু।
খেয়ালী মেয়ে
ভালো বলেছো আপু, মৃত্যু আসে প্রেমিকের অবহেলা,উপেক্ষা,প্রত্যাক্ষানেও….