কারাংছড়ি নামটা একেবারেই নতুন লাগছে? অস্বাভাবিক কিছু না। মেঘালয়ের পশ্চিম জৈন্তিয়া পাহাড় জেলার ভেতরে অবস্থিত চমৎকার এই নীল জলের ঝর্ণা। খুব বেশীদিন হয়নি এই ঝর্ণাটা আবিস্কৃত হয়েছে। তাই আগে মেঘালয়ে গেলেও এটার নাম শুনিনি। আর কিছুদিন আগে মেঘালয়ে যাওয়া আমাদের ভ্রমণ বাংলাদেশ টিমের কাছে নাম শুনে ও ছবি দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি ওখানে যেতেই হবে।
মেঘালয়ের পাহাড়ের উপর দিয়া যাওয়ার সময় সব সময়ই আমার কাছে ওয়েষ্টার্ণ মুভিতে দেখা এলাকার মতো লাগে। তো বাংলাদেশের তামাবিল বা ভারতের ডাউকি বর্ডার পার হয়ে জৈন্তিয়া পাহাড়ের উপর দিয়া এমন ওয়েষ্টার্ণ এলাকা দিয়ে ঘন্টাখানেক পাড়ি দিয়ে পৌছতে হয় কারাংছড়ি ক্যাম্প সাইটে। ওখান থেকে বেশ কিছুদূর পাহাড়ি সরু রাস্তায় হেটে তবেই পৌছতে হয় কারাংছড়ি ঝর্ণায়। এবার আসুন দেখে নেওয়া যাক আমার ক্যামেরায় কারাংছড়িকে………..
(২/৩) কারাংছড়ি ক্যাম্প সাইট, এখানে অতি সম্প্রতি নির্মিত কয়েকটি ছোট টিন সেড দালান ও নারকেল বা তাল পাতায় ছাওয়া কিছু কূড়ে বিদ্যমান। এখান থেকে হেটে নেমে যেতে হয় কারাংছড়ি ঝর্ণার দিকে।
(৪) পাহাড়ি জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে এমন সরু ইট বিছানো পথ ধরে এগিয়ে যেতে হয় ঝর্ণার দিকে।
(৫) কিছু দূর নামার পর ডান হাতে পরা ভিউ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে দেখা যাবে দুই পাহাড়ের মধ্যিখানে সরু একটা নদী, নদীরে শেষ মাথার জল আছড়ে পড়ছে একটা গিরিখাদে, এটাই আমাদের কাংখিত কারাংছড়ি ঝর্ণা।
(৬) ভিউ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ক্যমেরায় জুম টানলে ঝর্ণাটা যেমন দেখায়।
(৭) ভিউ পয়েন্টে আমাদের ভ্রমণ বাংলাদেশ টিম।
(৮) ঝর্ণায় পৌছতে এমন আরো কিছুটা পথ পাড়ি দিতে হয়, ঝর্ণার জল এই ভাঙ্গাচোড়া ব্রীজের নিচ দিয়ে কলকল ধ্বনিতে ছুটে চলছে অজানা কোন গন্তব্যে।
(৯) এখান থেকে টিকেট কেটেই ঝর্ণার জলে ঝাপানো যায়।
(১০) উপর থেকে দেখা দুই পাহাড়ের মাঝখানের নদী এটা। এখানে বোটে চড়ে ঘোরা যায়।
(১১) লাইফ জ্যাকেট পড়ে বোট রাইডিংএ কিছু পর্যটক।
(১২) নদীটার শেষ প্রান্তে এবং ঝর্ণাটার শ’খানেক গজ আগে সিমেন্ট দিয়ে একটা বাধ দেওয়া, বাধের কারণে নদীর নাব্যতা সব সময় অটুট থাকে। আর বাধ উপচে পড়া পানিটুকু ঝর্ণার দিকে ছুটে যায়।
(১৩/১৪) আরো একটা মজার বিষয় হলো ইচ্ছে হলে এই ঝর্ণার পাশে পাহাড়ি জঙ্গলে তাবুতে বসবাস করতে পারেন।
(১৫) কাছ থেকে তোলা ঝর্ণার ছবি। তবে এই শীতে পানি অতি সামান্য, ভেবে রেখেছি আগামী জুলাই বা আগষ্টে ওর পূর্ণ যৌবন দেখতে যাবো।
(১৬) এই হিম শীতল জলেও কোন কোন পর্যটকের জল কেলীতে কোন কার্পণ্য নেই।
(১৭) ঝর্ণার নীল জল দেখার জন্য এখানে রয়েছে আরো একটা সুন্দর ভিউ পয়েন্ট।
(১৮) পাহাড়ি পথে নীল জলের ঝর্ণা দেখে ফিরে এসে ক্ষুধা লাগাটাই স্বাভাবিক, ক্যাম্প সাইটের তাল পাতার কুটিরে তাই সবাই খেতে বসে গেলাম।
(১৯) খাবারে বিশেষ কিছু ছিল না, তবে খাবার ছিল অমৃত।
(২০) সব শেষে এক কাপ র চা খেয়ে শরীরটাকে পুরোপুরি চাঙ্গা করে উঠে গেলাম আমাদের সুমু টাটায় এবং ছুটে চললাম পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।
২৪টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি
সবগুলো ছবিই চমৎকার।বর্ননায় দারুণ উপস্থাপনা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ মমি ভাই, শুভ কামনা জানবেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ওয়াও! কি দেখালেন ভাইয়া । প্রেমে পড়ে গেলাম। এতো সুন্দর। কিন্তু ছবি দেখে এটাকে জলপ্রপাত এর মতো লাগছে। ঝর্ণা আর জলপ্রপাতে কিছুটা অমিল আছে। ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভ ছবি ব্লগ
কামাল উদ্দিন
ঝর্ণা আর জল প্রপাতের পার্থক্যটা আমার জানা নাই আপু, যদি একটু বলতেন…..শুভ সকাল।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
জলপ্রপাত এর পার্থক্য : হাঠাৎ খাড়া ঢাল থেকে নদীর জল যদি নিচে পতিত হয়, তাকে জলপ্রপাত বলা হয়।
ঝর্ণার পার্থক্য: ভূপৃষ্টের উপরিভাগ তল থেকে নিচের দিকে নামতে থাকা অথবা কোন খাড়া অংশ ফুঁড়ে বেরিয়ে আসলে ঝর্ণার সৃষ্টি হয়।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
৫নং ছবিটা বলছে এটা জলপ্রপাত
ফয়জুল মহী
অনুপম, প্রিয় শুভ কামনা অহর্নিশি। ♥♥।
কামাল উদ্দিন
হুমম, ধন্যবাদ।
ছাইরাছ হেলাল
দশ আর পনের আমার পছন্দের ছবি।
সীমান্তের বেশ নিকটে এমন ঝর্ণা!
কত-ই না অজানা।
কামাল উদ্দিন
হুমম, এতো এতো সৌন্দর্য্য বিভিন্ন স্থানে রয়ে গেছে তার কতোটাই বা আমরা জানি ভাই……..শুভ সকাল।
সুপায়ন বড়ুয়া
ভারী সুন্দর তো
নীল পানির ঝর্নাটা
সাঁতার কাটতে ইচ্ছে করছে।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
আমারও সাতার কাটতে ইচ্ছে করছিল, কিন্তু প্রস্তুতি ছিল না, ধন্যবাদ দাদা।
তৌহিদ
মেঘালয় যে কত সুন্দর তা আপনার লেখা আর ছবিতে আরো একবার প্রকাশ পেলো। পোস্ট ভালো লেগেছে ভাই।
শুভকামনা রইলো।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই, আপনিও ভালো থাকুন সব সময়।
জিসান শা ইকরাম
হা নামটি নতুনই লাগলো।
ডাউকি দিয়ে একবারই মাত্র শিলং গিয়েছিলাম। পাহাড়ের খাদ দেখে ভয়ই পেয়েছিলাম।
আগামী জুলাই বা আগষ্টে যাবার আগে একটু জানিয়েন।
ইচ্ছে আছে যাবার।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
দেখা যাক সময় সুযোগ কতোটা মিলে ভাইজান।
সঞ্জয় মালাকার
দাদা খুব পরিচিত জায়গা মনে হচ্ছে, নামটা আগেও শুনেছি, মানে হয় ওখানে গিয়েছি, তবে মনে নেই কোন জেলায়, আমাদের সিলেট মৌলভীবাজার জেলায় এমন ঝর্ণা দেখেছি।
ধন্যবাদ দাদা ছবি গুলো দারুণ।
ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
মৌলভী বাজার পাহাড়ি এলাকা নানা রকম ঝর্ণা থাকতেই পারে, তবে সেটা এখনো আমার দেখা হয়ে উঠেনি। শুভেচ্ছা জানবেন দাদা।
সঞ্জয় মালাকার
ধন্যবাদ দাদা শুভেচ্ছা অফুরন্ত, ভালো থাকুন সবসময় শুভ কামনা /
নিরব সাগর
আপনি একজন ইতিমত পরিব্রাজক ।
কামাল উদ্দিন
মোটামুটি বলতে পারেন ভাই।
নিরব সাগর
হ্যাঁ
নাজিয়া তাসনিম
বাহ। খুব সুন্দর তো জায়গাটি।
কামাল উদ্দিন
সত্যিই অসাধারণ সুন্দর জায়গা আপু, শুভ কামনা জানবেন।