অনেকেই সামাজিক এবং পারিবারিক সম্পর্কগুলোকে আমরা কাষ্টমাইজড করে নিয়েছি নিজেদের মতন করে। সম্পর্কগুলি এখন আর মামা, খালা, চাচা, শ্বশুর, শাশুড়ি, বন্ধু ভেদে হয়না; হয় সামাজিক অবস্থানের ভিত্তিতে। অথচ মানুষ ভুলে যায় তার পূর্বের অবস্থান। একদিন সে নিজেও কোন জায়গায় ছিলো। আবার যে সেখানে যাবেননা তার গ্যারান্টি কে দিয়েছে আপনাদের?
যারা এভাবে সম্পর্ক মেইনটেইন করে চলছেন তারা হচ্ছেন বোকার হদ্দ। নিজেরা মিথ্যে আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন অথচ বুঝতেই পারছেননা আপনাকে সাড়ে তিনহাত মাটিতে শায়িত করতে এইসব মানুষজনই আগে এগিয়ে আসবে। কাফনের কাপড়ে দুই চারটা পকেট বানিয়ে টাকাকড়ি আর বাড়ি গাড়ির কাগজপত্র কবরে সাথে করে নিয়ে যায়েন ক্যামন?
সম্পর্কের বন্ধন গুল্লি মার, নিজে বাঁচলে বাপের নাম। তাই আপনারা একটা কাজ করতে পারেন – মিশরীয় ফেরাউনের মত আলিশান কবরে নিজের প্রাসাদতম অট্টালিকার বাগিচায় দোল খাবেন আর মুনকার নকীরের সাথে পাশা খেলবেন। কি খেলবেন না?
আমি আমরা, যারা আপনাদের মত এরকম করে ভাবতে পারিনা তারা অসামাজিকই রয়ে গেলাম। দু’একটি পারিবারিক বন্ধন যা টিকিয়ে রেখেছি তা আত্মার সম্পর্ক দিয়েই; সামাজিক অবস্থানের ভিত্তিতে নয়। এতেই পরম সুখ অনুভব করি। রাতে অন্ততপক্ষে টেনশন ফ্রী ঘুমাতে পারি। কারন বিবেকের গ্লানিবোধ কুঁকড়ে কুঁকড়ে আমাদের নরম মন আর বিবেককে কঠিন শিলায় রুপান্তরিত করেনি, করতে দেইনি।
মানছি, অনেক কষ্ট আর পরিশ্রম করে আজকের অবস্থান তৈরী করেছেন। আঙুল ফুলে কলাগাছের রূপ নিয়েছে আপনার। তাই বলে কি করে ভুলে যান শেকড়ের কথা? অর্থ প্রতিপত্তি এসব আপনাকে জীবিত সম্মান দিয়েছে। আল্লাহ না করুন এখনি মরে যান যারা আপনাকে সম্মান করছে আপনার অর্থ সম্পদ দেখে, বিশ্বাস করেন আপনার বৌ বাচ্চাকে তারা জিজ্ঞেস পর্যন্ত করবেনা কেমন আছে। একমাত্র তারাই পাশে থাকবেন যাদের সাথে আপনার সম্পর্কের কোন দাম্ভিকতা ছিলোনা কখনো।
অতি জ্ঞানী, পারিবারিক কিছু দো-পেয়ে বুদ্ধিজীবী আমার এই লেখাকে আখ্যায়িত করবেন বেশী বোঝার ফসল হিসেবে। তাদের ধারনা ঈর্ষা অথবা হিংসে করে এসব বলি আমি। আর মানুষ নাকি যখন যুক্তিতে হেরে যায় তখন ধর্মের দোহাই দিয়ে অন্যকে চুপ করাতে চায়। কি অদ্ভুত ভাবনা!! একমাত্র মৃত্যু ছাড়া মানুষের জীবনে অমোঘ সত্যি বলে আর কিছুই নেই, কিচ্ছু না।
আদতে সত্যকথন সবসময় তেঁতোই হয়। কারন দিনশেষে আমি আর আমার লেখাই সঠিক তা আপনারাও জানেন। ক’দিন আর বাঁচবেন বলুন? রাত পর্যন্ত পৃথিবীর আলো বাতাস আপনার কপালে লেখা আছে কিনা কে জানে! তাই এতটুকু সময়েই সম্পর্কগুলি ঝালাই করে নিন।
“মিছে অহংকারে কেটে গেলো জীবন অথচ দিন শেষে আমি একাই রয়ে গেলাম।”
একটি মাত্র সম্পর্কই পৃথিবীতে সত্য সুন্দর, নিষ্কলুষ আর স্বার্থহীন – “মা”। এছাড়া বাকি সব সম্পর্কই লোকদেখানো মিথ্যে, মিথ্যে এবং মিথ্যে।
২০টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
প্রথম 😊😊
তৌহিদ
প্রথম দেখে ভালো লাগলো আপু। পরে আসছি🌹
সাবিনা ইয়াসমিন
দিন শেষে যে সম্পর্ক গুলো নিয়ে আত্মগ্লানিতে ভুগতে ,সে সম্পর্ক না রাখলে ক্ষতি কি ! অবস্থান ভেদে তৈরি করা সম্পর্ক কতটুকু কাজে আসে নিজ অবস্থান যখন টালমাটাল হতে থাকে ? কোনো কাজেই আসেনা। মৃত্যুর পর দেহ পঁচে-গলে একাকার হবেই, হোক তা সমাধিতে অথবা পিরামিডের অন্ধকার গুহায়। সমাজ তৈরি হয় মানুষের কল্যানে। মানুষ কেন নিজেকে সমাজের নিয়মে চালিত করে ? দ্বাম্ভিকতা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
সুন্দর ভাবনার বহিপ্রকাশ করেছেন। নির্ভেজাল সম্পর্কগুলো নিয়ে ভালো থাকুন সব সময়। শুভ কামনা। 🌹🌹
তৌহিদ
এসব সম্পর্ক আমি এড়িয়েই যাই। যারা নিজেদের স্বার্থে নিয়মকানুন তৈরি করেছে তাদের আশেপাশে না থাকাই শ্রেয়।
আপনিও ভালো থাকবেন আপু।
সঞ্জয় মালাকার
মায়ের সম্পর্ক থিবীতে সত্য সুন্দর, নিষ্কলুষ আর স্বার্থহীন – “মা”। এছাড়া বাকি সব সম্পর্কই লোকদেখানো মিথ্যে, মিথ্যে এবং মিথ্যে।
অনেক ভালো লাগলো ভাই।
সকল মায়ের জন্য শুভ কামনা 🌹🌹
তৌহিদ
শুভকামনা রইলো দাদা।ভালো থাকবেন।
রেহানা বীথি
কেমন যেন সব, সম্পর্কগুলোও তৈরি হয় টাকা আর সামাজিক মাপকাঠি অনুযায়ী।
বড় ভালো লিখলেন
তৌহিদ
পড়েছেন দেখে ভালো লাগলো আপু। আমি এসব সম্পর্ক এড়িয়ে চলি সবসময়। সে নিজের মানুষ হলেও।
শুভকামনা জানবেন।
জিসান শা ইকরাম
সামাজিক সম্পর্ক গুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তৈরী হয় কোনো না কোনো স্বার্থের কারণে।
কিছু ব্যাতিক্রম আছে অবশ্যই।
দিন শেষে পারিবারিক সম্পর্ক গুলোই টিকে থাকে স্বার্থ হীনতার কারণে।
বাস্তব বা কঠিন সত্য কথা আমাদের তেমন ভালো লাগেনা,
সত্য সব সময়ই তেতো হয়।
মা আর সন্তানের সম্পর্ক সব কিছুর উর্ধ্বে, এর সাথে অন্য কোন সম্পর্কের তুলনা হয় না।
ভালো একটি লেখা দিলেন।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
পারিবারিক সম্পর্কগুলোও আজকাল অর্থের কাছে জিম্মি হয়ে আছে ভাই। ভাইবোনরাও অনেক সময় আড়ালে আবডালে অবহেলা করে। দেখেছি অনেক।
সকল মায়ের জন্য অনেক ভালোবাসা।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
শামীম চৌধুরী
মিথ্যে তো মিথ্যেই। তবে মিথ্যের দাম্ভিকতাই আমরা বেশী দেখাই। তবে সেটা ক্ষণস্থায়ী।
তৌহিদ
অথচ এই ক্ষণস্থায়ী সম্পর্ক নিয়েই আমরা গর্ব করে বেড়াই মিছেমিছি। শুভেচ্ছা জানবেন ভাইয়া।
আরজু মুক্তা
মা,এবং তার সাথে কোন সম্পর্কই মিলানো যায় না।।
তবুও জীবন চলে,চলে যায়।।
তৌহিদ
মায়ের সাথে আসলেও কারও তুলনা নেই। আমাদের সুখই তার কাম্য থাকে সবসময়।
শুভেচ্ছা জানবেন আপু।
ছাইরাছ হেলাল
সত্য আর মিথ্যের মিশেলে গড়া এ জীবনে কঠিন সত্যের মুখে
সবাই দাঁড়াতে পারে-না/দাঁড়ায় না। আমরা জানি মিথ্যে ক্ষণস্থায়ী, তাও ঝুলে থাকি, ইচ্ছে করেই।
মা, অবশ্যই ব্যতিক্রম!!
তবে বর্তমান সময়ের নিরিখে প্রশ্নাতীত নয়, আশে-পাশে তাকিয়ে দেখুন।
তৌহিদ
তবুও কেন যে এই মিথ্যে অহংকার নিয়ে বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে সবার এর উত্তর কার কাছে পাবো বলতে পারেন?
আশেপাশে আর তাকাতে ইচ্ছে করেনা। চোখ জ্বালা করে এসব দেখলে।
ধন্যবাদ জানবেন ভাই।
প্রদীপ চক্রবর্তী
ভালো লেখনী।
তৌহিদ
শুভেচ্ছা রইলো দাদা।
মনির হোসেন মমি
মা ই সেরা।তবুও সম্পর্ক বেচে থাকে পৃথিবীর নিয়মে।
তৌহিদ
ধিক্কার জানাই সুন্দর পৃথিবীকে দূষিত করা এমন মানুষকে।
সকল মায়ের জন্য অনেক ভালোবাসা।
শুভকামনা জানবেন ভাই।