বয়সের সাথে সাথে মানুষের বই পড়ার ধরন পাল্টায়। এটা আমার একান্ত অভিজ্ঞতা। নিজেকে দিয়ে বলছি। সর্বপ্রথম বই পড়া আমার,’লিও তলস্তয়ের বই। তারপর গোয়েন্দা কাহিনী। আহ! দিনরাতের ঠিক নেই। শার্লক হোমস্। জুলভার্ন সমগ্র, ভূত সমগ্র, ফেলুদা সমগ্র, মার্ক টোয়েন, প্রতিমাসে রহস্যপত্রিকা,
এসব ছিলো কৈশর বয়সের পড়ার আকর্ষনীয় বই।
তারপরের আকর্ষনীয় বই ছিলো, সমরেশের বই, বুদ্ধদেবের বই, শীর্ষেন্দু, রবিন্দ্রনাথ, নজরুলের সব রোমান্টিক উপন্যাস।
এখন এই মধ্যবয়সে এসে পড়তে শুরু করেছি সব ভিন্ন ধরনের বই। যেমনঃ #শংকরের কতো অজানারে।
#জরাসন্দের লৌহকপাট অসাধারন একটা বই আমার কাছে। এ বইটার শব্দের কাজ মনের ভিতরে ছাপ ফেলে। এ বইটা বার বার পড়ি আমি।
#রাহুল সাংস্কৃতায়নের ভলগা থেকে গঙ্গা। বইটা বুঝে পড়তে হয়। চমৎকার একটা বই।
#জেরুজালেম ইতিহাস আমার আর একটা প্রিয় বই।
#মোস্তফা কামাল ভাইয়ার সমসাময়িক বাস্তবমুখি লেখা বইগুলো ভাল লাগে।
যে কোনো ইতিহাসের বই আমার ভিষণ প্রিয়।
#আশরাফুল ফয়েজের ক্রীতদাস ইতিহাস, অটোমান হারেমের নারীরা।
# সাহাদত হোসেনের মোঘল সম্রাজ্যের সোনালি আর পতন বইটা দারুন।
#রাজিব আহমেদ সম্পাদিত সুন্দরবনের ইতিহাস বইটা চমৎকার।
# প্রবির ঘোষের অলৌকিক নয় লৌকিক বইটা অসাধারণ। বইটার বিষয়বস্তু হিসেবে, যদিও কিছু কথা থেকে যায়। সব যুক্তির খন্ডন আসলে আদৌ হয় না।
#আনা ফ্রাঙ্কের ডায়রি বইটার কথা বলে সব বিশেষণ কম হবে। ভাল লাগার একটা বই।
#ভারতবর্ষের ইতিহাস বইটা আমার হাতের কাছেই থাকে।
#জওহরাল নেহরুর অটোবায়োগ্রাফি, দ্য ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া, গিম্পসেস অব ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রি। এ বই তিনটা খুব পছন্দের একটা বই। সাধারনত লেখকরা তাদের মনের কল্পনায় আঁকা শব্দগুলোকে শব্দের অলঙ্কার দিয়ে সাজিয়ে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে খুব যত্ন করে। সেখানে তথ্য হয়তো কম থাকে। পড়লাম এবং পড়া পর্যন্তই তার রেশ থাকে। জওহরাল নেহরু লেখক ছিলেন না। তিনি একজন আদর্শ বাবা হিসেবে তার মেয়েকে খুব সহজ ভাষায় পৃথিবীটাকে দেখানোর চেষ্টা করেছেন।পৃথিবীর সৃষ্টি শুরু থেকে পৃথিবীর বুকে মানবের আগমন, সমাজ গঠন, ইতিহাসের সেই নানান জাতি গোষ্ঠির উত্থান পতন সমস্ত খুব সাবলিল ভাষায় তার মেয়ের কাছে চিঠির মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। আমরাও জানতে পারলাম খুব সহজভাবে। তাকে একজন আদর্শ বাবা অবশ্যই বলব। সেই সাথে একজন চমৎকার লেখক। এমন সব লেখকদের বইএ শতকরা আশিভাগ থাকে তথ্যসমৃদ্ধ, বাকি বিশভাগ শব্দের অলঙ্কার,সেই ঘটনা ও বিষয়বস্তু তখন ফুটে ওঠে পাঠকের সামনে অপরুপ হয়ে। আর সে সৌন্দর্যের রেশ থাকে সব সময়। কেমন যেনো একটা স্নিগ্ধ ভাব। যদি নারীর সাথে তুলনা করো তবে, খুব সুন্দরি না কিন্তু কোমল শ্যামল বরন মেয়ের মতো।
#বাংলা পিডিয়া আছে তবে তা শুধু তথ্য জানার জন্যই রেখেছি। খুব প্রয়োজনিয় একটা বই কিন্তু যখন তথ্য দরকার তখনই বের করি।
আর কবিতা! সে তো আমার অক্সিজেন।
ছোট্ট লাইব্রেরী রুমটা আমার জীবনের একটা বড় অংশ। আজ নেপথলি গুড়া করে দিলাম। যখন যেটুকু সামর্থ হয়েছে অল্প অল্প করে কিনেছি। একদিন একে অনেক বড় করার ইচ্ছে আছে।
১৭টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
প্রচুর বই পড়ো তুমি, যা তোমার লেখা পড়লেই বুঝা যায়,
যে তালিকা দিয়েছ তার একটি বইও আমার পড়া নেই, অবশ্য পাঠ্য বই এসব।
কিছু বই ধার নিতে হবে তোমার কাছ হতে,
শুভ কামনা।
মৌনতা রিতু
বই ধার দিতাম না। 🙂 ইদানিং কম পড়া হচ্ছে। তবে পড়ি ভাইয়া। থ্যাংকু। (3
মোঃ মজিবর রহমান
ফেবুতে পড়ছিলাম। আপনার কালেশন উন্নতর। এর কিছুই পাঠ করিনি। চেস্ট করব। আপনাকে শুভেচ্ছা। -{@
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ মজিবর ভাই। চেষ্টা করি বেছে বেছে পড়ার। ভালো থাকবেন ভাই। শুভ কামনা রইলো।
মোঃ মজিবর রহমান
হ্যাঁ সংরহ করতে হবে। লিস্ট কপি করেছি।
নীলাঞ্জনা নীলা
শান্ত সুন্দরী আপু, তোমার তালিকার ইতিহাসের বেশ অনেকগুলো বই-ই পড়া হয়নি। তবে হ্যাঁ, খুব ছোটবেলা থেকে আমার দুটো বই খুবই পছন্দের ছিলো। ইংরেজী থেকে বাংলা অভিধান এবং ইংরেজী-ইংরেজী। আর পড়তাম সঞ্চয়িতা। গীতবিতানের বহু গানের সুর জানতাম না। তাই শুধু পড়তাম। বিদ্রোহী কবি’র “সঞ্চিতা”ও ছাড় যায়নি। তবে আমার লাইব্রেরী তৈরীর স্বপ্ন দেখা শুরু হলো বাপির থেকে পাওয়া প্রথম বই কালীপ্রসন্ন সিংহ’র “হুতোম প্যাঁচার নকশা” দিয়ে। তখন আমি মনে হয় তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি। কিছুই বুঝিনি। তবে মামনির লাইব্রেরীটা ছিলো বিশাল। কতো কতো যে বই! শঙ্করের(উনার আসল নাম মনি শংকর মুখোপাধ্যায়) বইয়ের(“কত অজানারে” দেশে আমার লাইব্রেরীতে আছে) কথা কী বলবো! শুরু করলে শেষ না করে উঠতে মন চায় না। এছাড়া মামনির লাইব্রেরীর মাধ্যমেই পরিচয় হয়েছিলো জীবনানন্দ দাশ থেকে বিমল মিত্র, শরদিন্দু, আশুতোষ, নীহাররঞ্জন রায়, নীহাররঞ্জন গুপ্ত, জরাসন্ধ প্রমুখ কবি-সাহিত্যিকদের সাথে। অনার্সে পড়ার সময় রাহুল সাংকৃত্যায়নের বেশ অনেকগুলো বই পড়া হয়েছিলো। তবে ভালো লেগেছিলো “কিন্নর দেশে” বইটা।
আজ এইটুকুই। এতো এতো বই। জানো আমার লাইব্রেরীর নাম কি? “গ্রন্থিকা” 🙂
আপু খুব ভালো লাগলো পড়ে। -{@
মৌনতা রিতু
বাহ! আমি তো জানি তুমিও অনেক বই পড়ো। বই পড়া আর জ্ঞান আহরন তা নিজের জন্য গর্বের।
ভালো থেকো আপু। তোমার লাইব্রেরীর নামটা দারুন। (3 -{@
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
“যতই পড়িবে ততই শিখিবে
হলে গত তুমি পড়িবে তখন আগতেরা”
এতো এতো বই পড়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।বইগুলো সংগ্রহের আগ্রহে কপি করে রাখলাম।
মৌনতা রিতু
রাখেন। বই পড়লে মনটা ভালো থাকে।
ধন্যবাদ মনির ভাই।
ছাইরাছ হেলাল
সব সব পড়ে ফেললে আমারা কি পড়মু!
আমাগোরে কিছু অক্সিজেন দিয়েন!
তামাকের পাতা কিন্তু খুব কার্যকারী।
মৌনতা রিতু
‘তোমরা কুঞ্জ সাজাও গো, সোনেলার আর এক অক্সিজেন এসে গেছো গো’
যাক! কবি তবু এতোবড় অপেক্ষার শেষ হলো।
হুম, তামাক পাতা চুরি করে আনবো কোনো কৃষাণীর কাছ থেকে।
তা, কেমন আছেন?
ছাইরাছ হেলাল
আপনার কাছে থেকেই শিখতে চাই এত্ত সুন্দর করে কথা বলা!
জ্বি আল্লাহ ভাল রেখেছেন, রাখছেন ও রাখবেন তা ও বলেছেন!!
মৌনতা রিতু
আমি সুন্দর করে কথা বলি! কি জানি, জানি নাতো!
কথা, সে তো অনেক কথা।
ভাল থাকুন কবি, ভাল রাখুন আপনার কবিতায় আমাদের।
নাসির সারওয়ার
ধুর, এইডা কিছু হইলো। উনার কাছে মাসুদ রানা নাই!!!!
তবে উপাস্থনা কিন্তু বেশ …।
নাসির সারওয়ার
“উপাস্থপনা” পড়তে হবে
মৌনতা রিতু
মাসুদ রানা কিন্তু আছে। কম। আমার ছেলের সংগ্রহে।
উপস্থাপন সুন্দর হইছে! ধন্যবাদ ভাই।
লেখা কৈ?
আকবর হোসেন রবিন
অনেক অজানা বইয়ের নাম জানতে পারলাম। আহমদ ছফার বই পড়েন না?