বিয়ে পরবর্তী পারিবারিক সম্পর্ক!
বিয়ের পরই একজন পুরুষের প্রাত্যহিক জীবনে দ্বিতীয় নারীর আবির্ভাব ঘটে। জন্ম থেকে সে একটিমাত্র নারী সম্পর্ককে কেন্দ্র করেই বড় হয়। সে সম্পর্কটি হচ্ছে ‘মা’। আর বিয়ের পর বউ হয়ে আরো একজন নারী তার প্রাত্যহিক জীবনে প্রবেশ করে, যাকে ঘিরে জীবনের বাকী দিনগুলো আবর্তিত হয়। হ্যাঁ, কেবল পুরুষের জীবনেই নয়, নারীর জীবনেও বিয়ে পরবর্তী অন্য একজন পুরুষের দেখা মিলে। তফাৎ এটুকুই, নারীর বেলায় ওই দুজন পুরুষের সহাবস্থান নেই, কিন্তু পুরুষের বেলায় সামাজিক নিয়মের অংশ হিসেবেই বিয়ে পরবর্তী জীবনে তাকে দুজনকে একত্রে নিয়েই চলতে হয়। আর ব্যালেন্সিং এর ব্যাপারটা আসে মূলত তখনই।
পূর্ববর্তী নারীর (মা) সম্পর্কটি নাড়ীর (শেকড়) সম্পর্ক। সম্পর্কটি আগে যেমনতেমনই হোক না কেনো, বিয়ের পর তা অন্যমাত্রায় রুপ নেয়। তখন সম্পর্কটায় নিবিড়তার ব্যাপারটির পাশাপাশি মর্যাদার ব্যাপারটিও প্রাধান্য পায়। বলতে হয়, সঙ্গত কারণেই প্রাধান্যটা অনিবার্য হয়ে উঠে। এজন্য বিয়ে পরবর্তী এ (মা) সম্পর্কটায় আরেকটু বেশি মনযোগী হতে হয়।
আর নতুন সম্পর্কটি তো কেবল শুরু। একটা চুক্তির মাধ্যমে শুরু। জানা কথা, চুক্তি চুক্তিই। চুক্তিতে বিধিবদ্ধ কিছু নিয়মকানুন, হিসাবনিকাশ থাকে। কাজেই হেলাফেলার বিষয় নেই। এর সাথে যোগ হয় মনের লেনাদেনার বিষয়টিও। ফলে টানাপোড়ন এখানেও।
এককথায় দুটো সম্পর্কই তখন স্পর্শকাতর। আর এ স্পর্শকাতর দুটো সম্পর্ককে ঘিরে আনন্দময় সংসার যাপনে প্রয়োজন পারফেক্ট ব্যালেন্সিং এর মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রন। সংসারের বউ-শ্বাশুড়ী সম্পর্কটির সহাবস্থান এই ব্যালেন্সিং এর উপর নির্ভর করেই সুন্দরভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। এক্ষেত্রে মধ্যবর্তী মানুষটির চৌকশতার উপরই নির্ভর করে পরিবারকে একসূতোয় ধরে রাখার কৌশল।
এহেন পরিস্থিতিতে তাকে কিছুটা কৌশলী হতেই হয়। দুজনেই ভিন্নভিন্ন চরিত্রে অবস্থান করছেন। প্রত্যককেই মর্যাদা অনুযায়ী গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। একজন ডানে, একজন বামে। দুজনের সাথে সম্পর্ক দুরকম, মর্যাদাও দুজনের দুরকম।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, দুটো সম্পর্কের কেন্দ্রীয় চরিত্র কিন্তু মধ্যবর্তী মানুষটি। মধ্যবর্তী মানুষটির দুপাশের দুজন আলাদাভাবে কেউ কারো সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। কাজেই তাদের একের প্রতি অন্যের দায় বর্তায় মধ্যবর্তী মানুষটিকে কেন্দ্র করেই। সে হিসেবে মধ্যবর্তী মানুষটির উপরই নির্ভর করে সম্পর্কদুটোকে বেধে রাখার। কাজেই কোনদিকেই বেশি হেলে পড়া যাবে না। একতরফা হেলে পড়লেই বিপদ। তখন দু’য়ের সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠে। সেটা প্রকাশ্যেই হোক বা অন্তরালে।
আর যদি মধ্যবর্তী মানুষটি পারফেক্ট ব্যালেন্স করতে পারেন, তবে সে সংসারে বউ-শ্বাশুড়ী সহাবস্থানটি হয় আনন্দময়। আর আনন্দময় সংসার হলে প্রতিকূল পরিবেশেও তা রঙধনু রাঙা হয়েই থাকে।
কাজেই হেলে পড়া নয়, ভারসাম্য বজায় রেখেই পারিবারিক জীবন যাপন করুন।
১০টি মন্তব্য
শিরিন হক
ব্যালেন্স সবার করা উচিৎ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
কীরকম?
নিতাই বাবু
শান্তি নীড় তৈরি করতে হলে এমনই হওয়া দরকার। গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ঘর শান্তি তো জীবনটাই শান্তিময়। জীবনকে সুন্দর রাখতে হলে ঘর হতে হবে শান্তির নীড়।
মনির হোসেন মমি
চমৎকার একটি লেখা যা বাস্তব জীবনকে উজ্জীবিত করে।ধন্যবাদ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ। বিয়ের প্রথমদিকে একটু সজাগ থেকে ব্যালেন্সিংটা করলে বছর ৩/৪ এর মধ্যেই ভালো একটা এডজাস্টমেন্ট তৈরি হয়ে যায়।
মনির হোসেন মমি
হুম আপু।এর প্রমানের জন্য বাহিরে কাউকে খুজতে হবে না। এর প্রমান আমি নিজেই…অবশেষে সফল হয়েছি। ধন্যবাদ এমন একটি লেখা সেয়ার করার জন্য।নিয়মিত না হলেও সপ্তাহে অন্তত একটি করে লেখা চাই যা আপনি ফেবুকে লিখেন তা মুডিফাই করে দিলে হলেও চলবে।আপনি এ ব্লগের সন্মানীত পুরাতন ব্লগার তাই আপনার কাছে আপনার লেখাগুলো পড়ার আমাদের অধিকার আছে।ধন্যবাদ আপু ভাল থাকবেন।
আরজু মুক্তা
ভারসাম্য দরকার। তবে এক্ষেত্রে ছেলেদেরকে এগিয়ে আসতে হবে প্রথমে। সে যদি বৌএর চাহিদা ঠিকঠাক পুরণ করে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
বউয়ের চাহিদা মায়ের সম্মান সম গুরুত্বপূর্ণ। একজনকে আইনগতভাবে অধিকার দিয়ে আনা হয়েছে। আর দ্বিতীয়জন তো লা-জওয়াব, তিনি তার অস্তিত্বকেই ধারণ করেছেন। টানা দশমাস নিজ শরীরে ধারণ করে জন্ম দিয়েছেন। তবে এ প্রক্রিয়ায় মাই ছেলেমেয়ে উভয়ের দায়কেই সমান বলে মনে করি, যে যেভাবে পারে। ছেলেরা আর্থিকভাবে, মেয়েরা সেবাশুশ্রূষার মাধ্যমে, দায় কিন্তু সমানই যেমন জন্মপ্রক্রিয়াটা একই।
যাহোক, বিয়ের পর মা’কে মূল্যায়নে বাড়তি নজর দেয়া আবশ্যক। কারণ বরের মূল্যায়নের উপরই বউয়ের আচরণ অনেকটাই নির্ভরশীল, এটা অনেক ছেলেই বুঝেনা, উদাসীন থাকে। ফলে ঝামেলা দানা বাধতে থাকে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
বউয়ের চাহিদা মায়ের সম্মান সম গুরুত্বপূর্ণ। একজনকে আইনগতভাবে অধিকার দিয়ে আনা হয়েছে। আর দ্বিতীয়জন তো লা-জওয়াব, তিনি তার অস্তিত্বকেই ধারণ করেছেন। টানা দশমাস নিজ শরীরে ধারণ করে জন্ম দিয়েছেন। তবে এ প্রক্রিয়ায় আমি ছেলেমেয়ে উভয়ের দায়কেই সমান বলে মনে করি, যে যেভাবে পারে। ছেলেরা আর্থিকভাবে, মেয়েরা সেবাশুশ্রূষার মাধ্যমে, দায় কিন্তু সমানই যেমন জন্মপ্রক্রিয়াটা একই।
যাহোক, বিয়ের পর মা’কে মূল্যায়নে বাড়তি নজর দেয়া আবশ্যক। কারণ বরের মূল্যায়নের উপর বউয়ের আচরণ অনেকটাই নির্ভরশীল, এটা অনেক ছেলেই বুঝেনা, উদাসীন থাকে। ফলে ঝামেলা দানা বাধতে থাকে।
একই মন্তব্য আবার প্রকাশ করলাম, একটু শব্দের হেরফেরজনিত ভুল ছিলো।