সকালে ন্যাশনাল প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছে গেলাম আমি আর ব্লগার ছন্নছাড়া । কিছুক্ষণ পরে আমাদের সাথে স্বপরিবারে যোগ দিলেন ব্লগার তন্দ্রা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব পতাকা গড়ার লক্ষ্যে মূল কর্মসূচী দূপুর একটার পর শুরু হবে। তার আগে চলছিলো কনসার্ট। তাই আমরা সময় নষ্ট না করে চলে গেলাম নিকটেই মিরপুরের “বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরে।” পথিমধ্যে দেখা হলো ব্লগার এবং বিবিসি সংলাপের অন্যতম বক্তা, সংগঠক, কবি ও লেখিকা আইরিন সুলতানা আপুর সাথে। উনার সাথে ছিলো আরেকজন পূর্বপরিচিত ইন্ডিয়ান ভদ্রলোক (নামটা ভুলে গেছি)।
সবাই মিলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরে বিজ্ঞানের কারুকার্য দেখে মুগ্ধ হলাম। অনেকটা সময় সেখানেই পার করলাম। তারপর রওনা হলাম সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে। উদ্দেশ্য আরেকটি বিশ্ব রেকর্ডে সামিল হওয়া। সবয়েচে বেশি মানুষ একসাথে গাইবে জাতীয় সংগীত। ভীড় ঠেলে এগিয়ে গেলাম মঞ্চের কাছাকাছি একটা যায়গায়। লাখো মানুষের জয় বাংলা শ্লোগানে গলা মেলালাম। এ যেনো পূর্ণ আবেগের জোয়ার বয়ে গেলো ধমনী,শিরা-উপশিরা জুড়ে।
বিকাল ৪টা ৩১ মিনিটের (ঠিক যে সময়ে আত্মসমার্পন করেছিলো পাকিস্থান বাহিনী মিত্রবাহিনীর কাছে) কয়েক মিনিট পূর্বে আত্মসমার্পন দৃশ্য মঞ্চায়িত হলো। এর ঠিক পরেই বক্তব্য দিলেন গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বায়ক ইমরান এইচ সরকার। নির্ধারিত সময়ে শুরু হলো লক্ষ্ লক্ষ মানুষের কন্ঠে সমবেত জাতীয় সংগীত। গলা ছেড়ে মনের আবেগে প্রায় তিন লক্ষ মানুষ একসাথে গাইলাম,“আমার সোনার বাংলা , আমি তোমায় ভালোবাসি।”
জাতীয় সংগীতের পর মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার, বর্তমান সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা একে খন্দকার সমবেত জনতাকে পড়ালেন রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার শপথ বাক্য।
সন্ধ্যায় প্রায় ৩০ মিনিট ব্যাপী রঙিন আতোশবাজির আলোক উৎসব উপভোগ করলাম। আতশবাজির উৎসব আমাদের বিজয়ের আনন্দ একধাপ বাড়িয়ে দিলো। আলোক উৎসবের পর শুরু হলো “কনসার্ট ফর ফ্রিডম।” বাংলাদেশের নামকরা কয়েকটি ব্যান্ডের মনমাতানো আয়োজন ছিলো এটি।
রাত ৮টা পর্যন্ত ছিলাম আমি আর ছন্নছাড়া। এরপর বের হলাম দুজনে। কিন্তু একজন আরেকজনকে হারিয়ে ফেললাম। পাক্কা দেড় ঘন্টা পর জনতার ভীড় উপেক্ষা করে মূল সড়কে আসতে পেরেছিলাম। মানুষের এই আগমন আমাদের স্মরণ করিয়ে দিলো স্বাধীনতা মানুষের কাছে কতোখানি মূল্যবান একটা উপহার (কিছু কুজাত ছাড়া)।
বাসায় ফিরে ফেইসবুকের ইনবক্সে একটি ম্যাসেজ পেলাম আমার গুরু কবি ও সাহিত্যিক,জলছবি প্রকাশনের প্রধান এবং জলছবি বাতায়ন সাহিত্য মঞ্চের সম্পাদক এ কে এম নাসির আহমেদ কাবুলের । এই ম্যাসেজটিতে একটি সুসংবাদ অপেক্ষা করছিলো আমার জন্য প্রথমে খেয়াল করিনি। ম্যাসেজটি ছিলো এরকম,” কবি নীলকন্ঠ জয়কে বিজয় দিবসের উপহার হিসেবে “জলছবি বাতায়ন সাহিত্য মঞ্চের” প্রধান সঞ্চালক ঘোষণা করা হলো।”
বিজয়ের দিনে এমন একটা উপহার পেয়ে আমি কিছুক্ষণ বাকহারা হয়ে ছিলাম। সম্বিত ফিরে পেয়ে গুরুকে জানালাম, “এই দ্বায়িত্ব আমার মতো অল্প বয়সী একটা ছেলের পক্ষে পালন করা কি সম্ভব হবে গুরু?” উনি আমাকে আশান্বিত করলেন,সাহস দিলেন।বললেন, “তারুণ্যের হাতে শপে দিলাম এ তরীর ভার। এগিয়ে যাও।”
আজ থেকে সেই দ্বায়িত্ব পালন শুরু হলো। এতবড় দ্বায়িত্ব আগে কখনো পালন করিনি। তাই শুরুটা হলো একটু ভয়ে নিয়েই।
আমি সোনেলার সব ব্লগারকে জলছবি বাতায়নে আশা করবো। সবাই সোনেলার পাশাপাশি জলছবিতেও লিখুন। আর সোনেলা পরিবারে আমি যেমন ছিলাম তেমনই থাকবো। তাই নীলকন্ঠের বাড়তি দ্বায়িত্ব সোনেলাকে বঞ্চিত করবে না কথা দিলাম।
২৪টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
বিশ্ব রেকর্ডের একজন অংশিদার হিসেবে থাকার সুযোগ সবার হয়না , নীলের হয়েছে । এটা আমাদের সবার গর্বের ।
অভিনন্দন নতুন দায়িতব নেয়ার । দোয়া করি সফলতার ।
নীলকন্ঠ জয়
ধন্যবাদ ভাইয়া। আমি চাইবো সোনেলার পাশাপাশি মাঝে মাঝে আপনি জলছবিতেও লিখবেন ভাইয়া। জলছবি ছোট ভাই চালাই মানে হলো আপনারও তাই না? সুতরাং আপনাকে যেনো পাই ভাইয়া। 🙂
জিসান শা ইকরাম
আচ্ছা , চেষ্টামু 🙂
নীলকন্ঠ জয়
😀 ধন্যবাদ। -{@
শুন্য শুন্যালয়
অনেক দারুন একটি খবর, অভিনন্দন নীলকণ্ঠ … -{@
এখন থেকে আপনার দায়িত্ব কিন্তু আরো বেড়ে গেলো, জলছবি বাতায়নের সবাইকে সোনেলায় লেখার জন্য অনুরোধ করবেন। বাবার বাড়ি শ্বশুর বাড়ি দুটোই কিন্তু সমান ভাবে মানিয়ে চলতে হবে 🙂
নীলকণ্ঠ কে যেনো আমরা কোনভাবেই না হারাই, অনেক অনেক শুভকামনা রইলো …
নীলকন্ঠ জয়
কোটঃ
“নীলকণ্ঠ কে যেনো আমরা কোনভাবেই না হারাই”
শুন্য আপনি নীলকন্ঠকে চিনতে পারেন নি। নীলকন্ঠ কখনো ভালোবাসার প্রতিদানে আঘাত দিতে জানে না। হ্যাঁ সবাইকে বলবো। আপনিও জলছবিতে চলে আসুন। ভালো লাগবে আশা করি। 🙂
মোঃ মজিবর রহমান
জয় কি নামে ডাকব তোমাই,
সামনে তোমার এগিয়ে জাবার পালা,
তোমার বেহুশ হতচ্ছাড়া তোমার সঙ্গে।
থাকবে সাধ্যমত কথা দিলাম।
নীলকন্ঠ জয়
আলাদা কোন নামের দরকার নেই। আমাকে যেমন ডাকতেন তেমনি ডাকবেন। 🙂 🙂
আমি জানি আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা সাথেই থাকবেন সর্বদা।
শুভ কামনা।
স্বপ্ন নীলা
আমি সেখানে শারিরীকভাবে উপস্থিত ছিলাম না,,,,,,,,,,,,কিন্তু মনে ছিলাম,,,,,,,,,,,,,,
নীলকন্ঠ জয়
এটাইতো অনেক স্বপ্ন নীলা। সারা বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষ ছিলো সাথে এমনই ভাবে।
শুভেচ্ছা।
তন্দ্রা
হুম
নীলকন্ঠ জয়
🙂
মিথুন
অনেক অভিনন্দন নীলকন্ঠ ভাইয়া।
-{@
ব্লগটি ঘুরে দেখে আসলাম, সুন্দর।
নীলকন্ঠ জয়
ধন্যবাদ মিথুন আপনাকে। সোনেলার পাশাপাশি জলছবিতেও লিখুন।
শুভেচ্ছা। -{@
ছাইরাছ হেলাল
আপনার সাফল্য কামনা করি ।
আরও বেশি করে লেখালেখি করুণ ।
নীলকন্ঠ জয়
ধন্যবাদ ভাইয়াকে। লেখালেখি বেশি না করতে পারলেও লেখা পড়বো বেশি বেশি। সোনেলার পাশাপাশি জলছবিতে ঘুরে আসার আমন্ত্রণ রইলো।
শুভেচ্ছা। -{@
বনলতা সেন
আপনার সাফল্যে আমরাও হব সরব ।
নীলকন্ঠ জয়
অবশ্যয়ই। জলছবি বাতায়নে ঘুরে আসার আমন্ত্রণ রইলো।
শুভ কামনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
টভিতে দেখে কেঁদে ফেলেছি আমি । আমাদের দেশের পতাকা আর জাতীয় সংগীত আজ বিশ্ব রেকর্ডের অধিকারী ।
নীলকন্ঠ জয়
হুম সারাবিশ্বের সকল বাঙালীর হৃদয় যে পড়েছিলো এই দুইটি ইভেন্টের মাঝেই। আপনার মতো অনেকেই আবেগে ভেসেছে দূর প্রবাস বাসে থেকেও।
শুভেচ্ছা দিদি।
প্রিন্স মাহমুদ
শুভেচ্ছা ও শুভকামনা
নীলকন্ঠ জয়
অনেক ধন্যবাদ প্রিন্স ভাইয়া। 🙂
খসড়া
আপনার সৌভাগ্যে আমি ঈর্ষান্বিত।
নীলকন্ঠ জয়
প্রতি-মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য। -{@