প্রথম প্যাঁচাল

আবির ৬ ডিসেম্বর ২০১৪, শনিবার, ১১:০৫:৫৬অপরাহ্ন বিবিধ ২০ মন্তব্য

পাবলিক বসে ঝুলতে ঝুলতে ভাবছিলাম সোনেলায় নিজের নাম লেখালাম দু’দিন হলো, একটু গপসপ মারা দরকার, কিন্তু কিভাবে? বাসের চাপাচাপিতে প্রাণ যখন উষ্ঠাগত তখন সেই আত্মজিজ্ঞাসার উপর ওহী না আসাটাই স্বাভাবিক। যদি থাকে নসিবে- আপনি আপনি আসিবে এই তত্বে ভেজালাম মনকে। শান্ত হয়ে ঝুলতে থাকলাম হঠাৎ চমকে উঠলো পিলে। পিলে কিভাবে চমকায় তা কোনদিন না দেখলেও অনুভব করে নিলাম যখন বাসের এই চাপাচাপির মাঝে বগলে রাখা ছাতা খুলে দিলো নাম না জানা একই বাসেরই আরেক ঝুলন্ত সহযাত্রী। তবে পিলে যে আমারই চমকেছে তা না চমকেছে ঝুলন্ত সবার।

আরে ভাই বিবেক বলে কি কিছু আছে আপনার? বসে এমনিতেই পিঁপড়া হাঁটার স্থানটুকু নেই সেখানে আপনি খুলে দিলেন ছাতা, প্রায় মারমুখী ভঙ্গিতেই একজন তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো।

নিশ্চুপ! কোন জবাব দিলো না লোকটি তখন কিন্তু আরো বেশ কয়েকজন যখন এগিয়ে আসলো তখন ছাতা বন্ধ করে মাথা তুলতেই দেখা গেলো এক-রাজ্যের সকল বিরক্তি তার মুখে লেপ্টে আছে।

খানিকবাদে তার মুখ থেকে বের হলো, ওই ভাই পাবলিক বসে চড়তে বিবেকরে কোনদিন কি দেখেছেন? সে’তো থাকে টিভির পর্দায়, বলিউডের নামকরা সব অভিনেত্রীর সাথেই হরেকরকম অভিনয়ে মত্ত, এই পাবলিক বসে তাকে কেন খুজেন? কাজীর গাই কিতাবে আছে- গোয়ালে নাই। আমার কাছে বিবেক কে এবং কি তা’তো বললাম এবার আপনার বিবেকরে আমাকে একটু দেখানতো!

আমার পিলে চমকানোর মাত্রা যেন ধীরে ধীরে বাড়তেই থাকলো ওই লোকের কথা শুনে, এরই মধ্যে দু’জনকে পিছনে ঠেলে তাজা এক ভুরিওয়ালা এসে সেই লোকটিকে বললো কি ভাই আমার পাওনা টাকাগুলো কখন দিবেন?

ওই লোকের মুখে কথাশুনে বাসের ভেতর ছাতা খোলার কারণ আমার কাছে স্পষ্ট, পেট মোটা সবাইকে এখন চেয়ারম্যান মনে হয়।

বাস থেকে নেমে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি কারণ সামনেই বাস স্টপ কিন্তু তার আগে আরেকবার পিলেটা চমকে উঠলো বাস যখন পেট্রোল পাম্পে ঢুকলো আর বাসের হেল্পার জিজ্ঞাসা করলো ড্রাইভারকে “ওস্তাদ তেল কোনডা লমু ফরমালিনওয়ালা নাকি ফরমালিন ছাড়া?

থাক প্রথম দিন প্যাঁচাল বেশি পাইরা লাভ নাই, দুই চার লাইন লেখা শেষ কাঁক-ডাকা ভোরের চিন্তা করতে করতে এখন ঘুমাতে যাই। ও কাঁক-ডাকা ভোরের কথা একটু বলেই যাই। চোখ বন্ধ হতে না হতেই কাঁক-ডাকা ভোর যখন ঘুম থেকে ডেকে তুলে টিপ টিপ করে সূর্যটাও হাসে, এই হাসি দেখে মনে হয় পাশের বাড়ির ময়নার হাসি, দেখলেই গা জ্বালা করে। ঘর পোড়া গরু সিদুরে মেঘ দেখলে যেমন ভয় পায় তেমন ভোর দেখলে আমারও এমনি মনে হয় কারণ বাড়িওয়ালা যে এই সময়টাতেই আসে, তিন মাসের বাড়ি ভাড়া জমেছে, বেকার হয়ে বাঁচার কোন উপায় ছিলো না যদি না ইনিয়ে বিনিয়ে কঠিন মন গলানোর তত্ত্ব লব্ধ করতে না পারতাম। শুনেছি সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে তাই আর ব্যাচলর সংসারে সুখ নাই। রমনীর অবর্তমানে ঘুম থেকে ডেকে তোলার ভার এখন কাঁকের, সে আসলে কাঁকের দ্বায়িত্ব তাকে বুঝিয়ে দেয়া হবে যাইহোক এখন থাক এসব কথা, পোলা যখন এখনও হয়নি হাজামের সাথেও দোস্তির দরকার পরে না আপাতত একটু দরকার ঘুমানোর।

৫৪৬জন ৫৪৬জন
0 Shares

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ