ট্রেন চলছে, একটু কি বেশিই ধিরে চলছে? একই সাথে পিছিয়ে যাচ্ছে, আবার এগিয়ে আসছে। অনেক দিন ধরে দেখা স্বপ্নটায় বাস্তবতার উদ্বেগ ছিলো অনেক, ভয় ছিলো, দ্বিধাও ছিলো । সেগুলো একটু একটু করে পেছন সরে যাচ্ছে, ফেরার পথে আবার দেখা হবে এমন একটা অভয় দিয়ে আমি ট্রেনের সাথে এগিয়ে যাচ্ছি। এগিয়ে আসছে আনন্দ, উত্তেজনা, আর কি একটা অনুভূতি, অনেকটা নাম ছাড়া।
কথা হচ্ছে স্বপ্নের সাথে, কোথায় যাচ্ছে, কি করছে। ভাগ্যিস এই নেট ছিলো, স্বপ্ন যেনো হাতের নাগালের মধ্যে 🙂
একটু একটু করে স্টেশন এগিয়ে আসছে, আর আমার অস্থিরতা বাড়ছে। একটু মেয়েলি অভ্যস্ততায় সাজিয়ে নিচ্ছি নিজেকে, লিপস্টিক আর চিরুনি । আমাকে দেখতে আজ এতো বিশ্রি কেনো লাগছে কে জানে, কেনো যে একটু নেইল পালিশ দিলাম না । এসমস্ত ছেলেমানুষি চিন্তাভাবনায় নিজেই মনে মনে হাসছি। আমাকে চিনতে পারবে তো স্বপ্ন? আর আমি কি তাকে চিনতে পারবো? চিঠি কিংবা মোবাইল যুগে একজন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করতো, তুমি কি রঙ এর ড্রেস পড়ে আসবে, এখন তো সেই প্রয়োজনও নেই। ও কি ঠিক সময়ে স্টেশনে পৌছাতে পারবে? কতো যে অদ্ভুত চিন্তা হচ্ছে ।
ট্রেন টা এসে থামলো স্টেশনে, ধুক ধুক করছে ভেতরে। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার, বাহিরের কোন শব্দ এমনকি একটু আগের বিকট ট্রেনের শব্দও এতো জোরে ছিলোনা।
স্টেশন টা একদম খালি, কেউ নেই কোথাও, আমার জন্য নয়, এমনকি কারো জন্য কেউ অপেক্ষায় নেই আজ। মেইন গেট টা পার হই, হয়তো সে আছে ওপাশে, হয়তো নয়, আছেইইই। যেতে যেতে সিক্সথ সেন্স বলছে, কোন পাজি দুস্ট এক জোড়া চোখ আমার পিছু নিয়েছে। একটু উপরে বাঁ দিকে তাকাতেই দেখি, এক জোড়া নয়, তিনটি চোখ। সেই দুস্ট লোক আর তার ক্যামেরা।
হাসি। একবার সিটি স্ক্যান করিয়েছিলাম, শিরা দিয়ে যখন ডাই পুশ করা হয়, ক্যামেরা তে দেখা যায় কেমন করে ডাই/ রঙ টা রক্তের মধ্যে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আমার ভেতরে ঠিক তেমন একটা আনন্দ যেনো ছড়িয়ে গেলো তার সেই হাসিটা দেখে। মেইন গেট টা মনে হয় লাফ দিয়ে পেরিয়ে গেলাম, বের হয়ে এক সেকেন্ড ও দেরি করিনি তার হাত ধরে ফেলতে। নির্লজ্জ ভাবলে ভাবুক, আমার কি? আমার হাতের মধ্যে স্বপ্নের হাত, আমাকে এখন এক স্বপ্নসাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী বলতেই পারেন।
৪০টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
স্বপ্নসাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী কে অভিনন্দন , এই স্বপ্নপুরীতে ও ।
অভিনন্দন তিন চোখাকেও একই সাথে ।
নিয়মিত লেখা চাই ।
মিথুন
আমি কিন্তু একটু অনিয়ম ভাবে নিয়মিত লিখি ভাইয়া, পড়েছেন বলে খুশি হয়েছি, অনেক ধন্যবাদ।
মশাই
Ki hocche asob akbar shopno akbar Mithun dujoner lekhar kendro bindu aki… Ishh amiki sarajibon amoni boka theke jabo?
মিথুন
ইশ বোকা রে যে কেনো এতো বোকা হয়? 🙂
মা মাটি দেশ
;? খুবই চিন্তার বিষয়। -{@ (y)
মিথুন
চিন্তাভাবনা নিয়ে ব্যস্ত থাকা ভালো। 🙂
মোঃ মজিবর রহমান
অনেক ভাল লেগেছে চালিয়ে জান, ধন্যবাদ।
মিথুন
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
জিসান শা ইকরাম
যাক অবশেষে দেখা হলো তাহলে 🙂
স্বপ্নের শত অভিমানের সমাপ্তি হলো ।
একই ষ্টেশন , একই সময় , একই শিরোনাম –
আমাদের তো ধূম্রজালে ফেলে দিবেন দেখছি আপনারা দুজনে ।
কার পোষ্টে মন্তব্য করছি – পোষ্ট পড়ে বুঝতে হবে ।
আবেগকে সুন্দর ভাবেই উপস্থাপন করলেন ।
লেখা চলুক এ নিয়ে — অপেক্ষা করবো আমরা ।
মিথুন আর স্বপ্নের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা ।
মিথুন
হ্যাঁ অবশেষে দেখা হয়েছে। দুজনই প্রথম দেখার অনুভূতি লিখছি আবার দেখাও হলো একই জায়গায়, তাই শিরোনাম ছবি এক। মাঝে মাঝে ধুম্রজালে আটকে যাওয়া ভালো, নইলে দুইদিন পর বলতে পারেন, লাইফটা একদম ডাল 🙂
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
মানে ? এটি সত্যি কাহিনী ? নাকি ধারাবাহিক গল্প , দুজনে লিখছেন ? লেখার আবেগ দেখেতে তো সত্যিই বলে মনে হয় । আপনাদের দুজনার পুর্বের লেখা গুলো পড়তে হবে । এমন ভাবে লিখলেন যেন মনে হচ্ছে আমারই ঘটনা এটি । তা বিশ্রী মিথুনকে চিনতে নিশ্চয়ই সমস্যা হয়নি স্বপ্নের ? 🙂 আপনাদের দুজনার জন্য অজস্র রজনীগন্ধার শুভেচ্ছা । আরো লেখার অপেক্ষায় থাকবো ।
জিসান শা ইকরাম
আম্মা , মিথুন আর স্বপ্নের লেখা অবশ্যই পড়বে ।
মায়ায় পরে যাবে এদের ।
এত্ত কিউট দুজনেই 🙂
দুজন দুজনকে নিয়েই লেখে শুধু ।
মশাই
আমারও এমন করে খুব লিখতে ইচ্ছে করে। ইশ !আমার যদি এমনএকজন……………
জিসান শা ইকরাম
আমারো এমন লিখতে ইচ্ছে করে 🙂
মিথুন
কাকে নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করে ভাইয়া? ভাবিকে নিয়ে? আমি কিন্তু অপেক্ষা করবো আপনার লেখার. @জিসান ভাই
মিথুন
এমন একজন কি? নেই বলছেন? বিশ্বাস করলাম না। লিখে ফেলুন মশাই। আপনার লেখা পড়ে সেও নিশ্চয়ই লিখবে।
মিথুন
আপনার মধ্যে অনেক মায়া ভাইয়া, তাই সবাইকে মায়ায় জড়াতে পারেন।
মিথুন
আমার মনেহয় এটা সত্যি কাহিনী 🙂
মিথুন
অভি আপু বিশ্রী মিথুনকে সে চিনে ফেলেছে, আর আমার সাথে ঝগড়া ঝাটি করেছে আমাকে নাকি মোটেও বিশ্রী লাগেনি 🙂
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
স্বপ্ন একা দেখবে কেনো সুশ্রী মিথুনকে ? আমরা কি কম ভালোবাসি ? :p (3
মিথুন
আরে আপু প্রেমের পেত্নীও সুন্দর জানেন না? 😛
শুন্য শুন্যালয়
আমারও এমন লিখতে হচ্ছে করে, ইশ কেউ যদি থাকতো! !!
মিথুন
কেউ একজন নিশ্চয়ই আছে, শুধু আমাদের সাথে শেয়ার করতে চাননা হয়তো।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালোবাসা কি চোখে দেখা যায় ? আমি যেন দেখতে পাচ্ছি আপনার লেখায় অত্যন্ত আন্তরিকতায় পরিপুর্ন এক ভালোবাসাকে । 3D মুভির মত লাগছে আপনার / আপনাদের প্রথম দেখার স্মৃতি । এমন ভালোবাসা বেঁচে থাক যুগের পর যুগ ।
আচ্ছা , স্টেশনের কোন শপ থেকে এই গানটা তখন ভেসে আসলে কেমন হতো ? 🙂 https://www.youtube.com/watch?v=76JddvZ11ng
‘ ফেরার পথে আবার দেখা হবে এমন একটা অভয় দিয়ে আমি ট্রেনের সাথে এগিয়ে যাচ্ছি ‘ , মানে কি ? এত আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নকে রেখে ফিরে যাবার চিন্তা কেনো মিথুন আপু ?
মিথুন
কি দারুণ বললেন আপু!! অসাধারণ হতো গানটি যদি বাজতো তখনই। পোষ্ট প্রসেসিং এর ব্যাপার থাকলে এড করে দিতাম। 🙂
পেছনে ফেলে আসা অই উদ্বেগ, ভয় আবার যে ফিরে আসবেই আপু, বাস্তবতার অংশ কে বাদ যে দেয়া যাবেনা। আপনাকে এই পোস্টে পেয়ে খুব ভালো লাগলো, ভালো থাকবেন আপু।
মিথুন
অনেক ধন্যবাদ লীলাবতী আপু। আপনার চুপিচুপি দেখার ইচ্ছে জানলে কিন্তু আপনাকে জানাতাম 🙂
লেখা থামবে না, সময় পেলেই চলে আসবো। আপনার লেখাও তো দেখিনা অনেকদিন।
মিসু
প্রথম দেখার অনুভুতিকে ভালোভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন । মুগ্ধ পাঠ ।
মিথুন
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
মিথুন
অনেক ধন্যবাদ। আবেগ প্রকাশ করা কঠিন মনে হয়।
স্বপ্ন
মিস করছি খুব। নতুন লেখা কি আর আসবে না?
মিথুন
লিখতে পারিনা, জানেন আপনি। ছাইপাশ দিলাম একটা। 🙂
খেয়ালী মেয়ে
স্বপ্নসাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী আপনাদের প্রথম দেখার স্মৃতিচারণ অসাধারন হয়েছে….ভালো থাকুন আপনারা দুজন সবসময়…শুভকামনা রইলো -{@
মিথুন
এতো পুরনো লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপু। স্মৃতিটা স্মৃতিচারনের চাইতেও অসাধারন ছিল যে………
তানজির খান
সুন্দর।ভাল লেগেছে।
মিথুন
ধন্যবাদ ভাইয়া …….
শিশির কনা
এত সুন্দর আবেগ দিয়ে লেখা,স্বপ্ন-মিথুনের প্রথম দেখা হবার অনুভুতির পোষ্ট মিস করে ফেললাম কিভাবে?ভালো থাকুন আপনারা দুজনে।আন্তরিক শুভ কামনা।
মিথুন
অনেক ধন্যবাদ আপু। মিস হয়ে গেলেও যেতে দেবনা…..:)
অনিকেত নন্দিনী
অনেকখানিই মিলে গেলো যে!
তা, প্রথম দেখার পর তো প্রায় এক বছর কেটে গেলো। প্রথম দেখার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে নতুন লেখা হয়ে যাক না! অপেক্ষায় রইলাম।
মিথুন
তা দেখতে হলে সেই দুস্টু লোককেই ধরতে হবে…….. 🙂
মিথুন
যদিও অপ্রকাশ্য ছিল, “একটি দিন” সেদিন টিকে ঘিরেই আপু। অনেক ধন্যবাদ জানবেন ……..