প্রথম দেখা

মিথুন ১৯ জুন ২০১৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:৩৩:৪৭পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৪০ মন্তব্য

ট্রেন চলছে, একটু কি বেশিই ধিরে চলছে? একই সাথে পিছিয়ে যাচ্ছে, আবার এগিয়ে আসছে। অনেক দিন ধরে দেখা স্বপ্নটায় বাস্তবতার উদ্বেগ ছিলো অনেক, ভয় ছিলো, দ্বিধাও ছিলো । সেগুলো একটু একটু করে পেছন সরে যাচ্ছে, ফেরার পথে আবার দেখা হবে এমন একটা অভয় দিয়ে আমি ট্রেনের সাথে এগিয়ে যাচ্ছি। এগিয়ে আসছে আনন্দ, উত্তেজনা, আর কি একটা অনুভূতি, অনেকটা নাম ছাড়া।
কথা হচ্ছে স্বপ্নের সাথে, কোথায় যাচ্ছে, কি করছে। ভাগ্যিস এই নেট ছিলো, স্বপ্ন যেনো হাতের নাগালের মধ্যে  🙂
একটু একটু করে স্টেশন এগিয়ে আসছে, আর আমার অস্থিরতা বাড়ছে। একটু মেয়েলি অভ্যস্ততায় সাজিয়ে নিচ্ছি নিজেকে, লিপস্টিক আর চিরুনি । আমাকে দেখতে আজ এতো বিশ্রি কেনো লাগছে কে জানে, কেনো যে একটু নেইল পালিশ দিলাম না । এসমস্ত ছেলেমানুষি চিন্তাভাবনায় নিজেই মনে মনে হাসছি। আমাকে চিনতে পারবে তো স্বপ্ন? আর আমি কি তাকে চিনতে পারবো? চিঠি কিংবা মোবাইল যুগে একজন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করতো, তুমি কি রঙ এর ড্রেস পড়ে আসবে, এখন তো সেই প্রয়োজনও নেই। ও কি ঠিক সময়ে স্টেশনে পৌছাতে পারবে? কতো যে অদ্ভুত চিন্তা হচ্ছে ।
ট্রেন টা এসে থামলো স্টেশনে, ধুক ধুক করছে ভেতরে। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার, বাহিরের কোন শব্দ এমনকি একটু আগের বিকট ট্রেনের শব্দও এতো জোরে ছিলোনা।

স্টেশন টা একদম খালি, কেউ নেই কোথাও, আমার জন্য নয়, এমনকি কারো জন্য কেউ অপেক্ষায় নেই আজ। মেইন গেট টা পার হই, হয়তো সে আছে ওপাশে, হয়তো নয়, আছেইইই। যেতে যেতে সিক্সথ সেন্স বলছে, কোন পাজি দুস্ট এক জোড়া চোখ আমার পিছু নিয়েছে। একটু উপরে বাঁ দিকে তাকাতেই দেখি, এক জোড়া নয়, তিনটি চোখ। সেই দুস্ট লোক আর তার ক্যামেরা।

হাসি। একবার সিটি স্ক্যান করিয়েছিলাম, শিরা দিয়ে যখন ডাই পুশ করা হয়, ক্যামেরা তে দেখা যায় কেমন করে ডাই/ রঙ টা রক্তের মধ্যে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আমার ভেতরে ঠিক তেমন একটা আনন্দ যেনো ছড়িয়ে গেলো তার সেই হাসিটা দেখে। মেইন গেট টা মনে হয় লাফ দিয়ে পেরিয়ে গেলাম, বের হয়ে এক সেকেন্ড ও দেরি করিনি তার হাত ধরে ফেলতে। নির্লজ্জ ভাবলে ভাবুক, আমার কি? আমার হাতের মধ্যে স্বপ্নের হাত, আমাকে এখন এক স্বপ্নসাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী বলতেই পারেন।

৬৩৫জন ৬৩৫জন
0 Shares

৪০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ