ভাত বাঙালীর প্রধান খাদ্য। অন্য অনেককিছু না হলেও চলে কিন্তু ভাত না হলে বাঙালীর চলেই না। একথালা ভাত হলে নুন-কাঁচামরিচ দিয়েও খাওয়া যায়।
মনে আছে, শেখ হাসিনা যখন প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন, তখন একবার রমজানের শুরুতে বাজারে পেয়াজের ক্রাইসিস তৈরি হয়েছিলো। তখনকার সময়ে বাজারে পেয়াজের স্বাভাবিক মূল্য ছিলো ১০/১২ টাকা কেজি কিন্তু গুদামজাতকারীরা বাজারে কৃত্তিম সংকট তৈরি করে পেয়াজের দাম উঠিয়েছিলো ৬০/৬৫ পর্যন্ত। চৌকশ শেখ হাসিনা খবর নিয়ে জানতে পারেন দেশে প্রচুর পেয়াজ গুদামজাত আছে কিন্তু খবিস কিছু ব্যবসায়ী রমজান মাসের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কৃত্তিম সংকট তৈরি করে রেখেছে।
সেসময় কোন এক ভাষণে জনগণের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বললেন, আপনারা আর মাত্র দুটো দিন কষ্ট করুন, পেয়াজ বহনকারী জাহাজ আমাদের বন্দরে নোঙর করেছে, শীঘ্রই বাজারে চলে আসবে। তাঁর ঘোষনার পর পেয়াজের দাম এতো দ্রুত নামতে শুরু করেছিলো যে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তা মোটামুটি আগের জায়গায় পৌঁছেছিলো এবং পেয়াজের যোগানও অনেক বেড়ে গিয়েছিলো।
যদিও পরে জানা গিয়েছিলো, পেয়াজের জাহাজ যেদিন বিদেশের বন্দর থেকে রওয়ানা করেছিলো সেদিন তিনি জানিয়েছিলেন বন্দরে এসে পৌঁছে গেছে অর্থাৎ ঘোষনার মাত্র দুটো দিন নয়, কম করে হলেও ২০/২৫ দিন পর সে পেয়াজ বাজারে আসতো। সেসময় রাষ্টপ্রধানের এই তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তার কারনে সাধারণ জনতা রমজান মাসের অতি প্রয়োজনীয় এবং সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ভোগ্যপণ্যটি নায্য দামে সারামাস খেতে পেরেছিলো।
যাহোক, এতোকিছু বললাম একটা কারনে, আজ টেলিভিশনে দেখলাম, বাজারে চালের কৃত্তিম সংকট চলছে। আমরা জানি, ব্যবসায়ীরা এখন সিন্ডিকেটে ব্যবসা করেন। এই সিন্ডিকেট প্রথা কবে থেকে জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে কমবেশি আমরা যারা খবরাখবর রাখি, তারা সকলেই জানি। আমরা মাঝেমধ্যেই এমনও দেখি সরকার দেশে উৎপাদিত হওয়া সত্ত্বেও বিদেশ থেকে নানা পণ্য আমদানি করছেন। দেশব্যপী তখন সরগোল উঠে বিদেশ থেকে আমদানির কারণে প্রান্তিক চাষীরা উৎপাদনের নায্যমূল্য পাচ্ছেন না।
কিন্তু কেনো দেশে উৎপাদিত হওয়া সত্ত্বেও আমদানি করতে হয়? হয়তো এই হচ্ছে সেই কারণ। বর্তমানে দেশে প্রচুর ধান গুদামজাত আছে কিন্তু বাজারে চালের কৃত্তিম সংকট চলছে। এবং সিণ্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারণে সব জায়গায় একযোগে এর প্রভাব পড়ছে। এর ফলে ভূক্তভোগী হচ্ছে কেবল নিম্ন আয়ের লোকেরা যারা অতিরিক্ত দামের কারণে চাল কিনে খেতে হিমশিম খাচ্ছে।
পত্রিকাসূত্রে জানা গিয়েছে, মিল মালিকদের কারসাজিতেই এই সংকট তৈরি হয়েছে।
পেটে টান পড়লে মাথায় রক্ত উঠে! তাই নিম্ন আয়ের লোকদের সহজে ক্ষ্যাপানোর একমাত্র পথ হচ্ছে চাল-ডালের ক্রাইসিস তৈরি করা।
যেখানে বাংলাদেশ এখন কেবল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণই নয়, উদ্বৃত্তও। সেখানে তাহলে ক্রাইসিস হবে কেনো?
১৮টি মন্তব্য
নিহারীকা জান্নাত
সবাই নিজের ধান্ধায় ব্যাস্ত। ব্যবসায় কি করে লাভ হবে সে প্ল্যান চলে এদের মাথায়। তাতে গরীব মরুক, বাঁচুক কার কি তাতে?
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধান্ধামিরও তো একটা সীমা থাকে! ফড়িয়াবাজদের সিন্ডিকেটবদ্ধভাবে সীমাহীন ধান্ধামির খেসারত দিতে হয় খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে।
শুন্য শুন্যালয়
ক্রাইসিস আসবে, ভুগে ভুগে চলেও যাবে। এক শ্রেণী গরীব হবে, আরেক শ্রেণী ধনবান। ঘটনা চলমান।
প্রশ্নের উত্তর — নেই।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
পুঁজিবাদ সমাজব্যবস্থার ফল!
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এখন কেবল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণই নয়, উদ্বৃত্তও। সেখানে তাহলে ক্রাইসিস হবে কেনো?
এক শ্রেনী সিন্ডিকেট যাদের কাছ থেকে কোন সরকারই রেহাই পায় নি।সুন্দর পর্যবেক্ষণ মুলক লেখা। -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
দেশটাকে গরীবের মজুরের সকলের করতে হলে সরকারের পরবর্তী কাজ হতে হবে সিন্ডিকেট প্রথাকে ভাঙা।
জিসান শা ইকরাম
এভাবেই চলবে দেশ, সিন্ডিকেট বড়ই খারাপ জিনিস।
এদের চরম ক্ষমতা, নেত্রীর কাছে এসব সংবাদ যাতে না যায় তার ব্যবস্থা এরা করে রাখে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ন্যায়ের প্রতি কমিটেড লোকের সংখ্যা শূন্যের কোটায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে। একা এক শেখ হাসিনা কতোদিকে নজর দিবেন।
নীলাঞ্জনা নীলা
আমি নিশ্চিত ইচ্ছে করে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরী করা হয়েছে। আর এই কথা প্রধানমন্ত্রীর কানে যাবেও না বলেই মনে হচ্ছে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সব যে চলে গেছে নষ্টদের দখলে!
নীলাঞ্জনা নীলা
রুবা’পু সে আর বলতে!
বসন্তের শুভেচ্ছা। ভালো থেকো। -{@
মোঃ মজিবর রহমান
যেখানে বাংলাদেশ এখন কেবল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণই নয়, উদ্বৃত্তও। সেখানে তাহলে ক্রাইসিস হবে কেনো?
এই প্রশ্ন কাকে করব এখন সেই সরকার ক্ষমতায় নিশ্চয় একটা বিহিত করা দরকার।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
চারদিক থেকে অক্টোপাসের মতো ঘিরে ধরেছে সরকার প্রধানকে। কোনটা থুয়ে কোনটা বিহিত করবেন তিনি!
ইঞ্জা
সিন্ডিকেশন শুধু চাল ডাল তেলে নয় সব জায়গাতেই এখন সিন্ডিকেশন চলছে আর একি কারণে নতুন কেউ এই ব্যবসায় আসতেই পারছেনা কারণ একটাই সিন্ডিকেইটের সামনে ঠিকতে পারবেনা, এতে আসলেই ধনি আরো ধনি আর গরীব আরো গরীব হচ্ছে।
আমার মতে সরকার আর তার আইন আরো কঠিন হওয়া উচিত আর এইসব সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়া উচিত।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
শেখ হাসিনা থাকলে কোন এক সময় এরও সমাধান আসবে।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
কৃত্রিম ক্রাইসিসের জবাবে সরকার যদি ব্যবস্থা নিত তাহলে সমাধান হতে সময় লাগত না।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
সরকার নয়, বলুন সরকারপ্রধান। সরকারে একজনই আছেন যার উপর পূর্ণমাত্রায় ভরসা করা যায় কিন্তু তিনি কদিক নজরে রাখবেন?
তবে নিশ্চয় এদিকটাও একসময় সামলে উঠবেন।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
এদের শাস্তি দেওয়া দর্কার।
অবশ্য বিজনেস বলে কথা।
সরকার চলে যাদের কান্ধে ভর করে তাদের নিশ্চয়ই ক্ষেপাবে না। আবার আমজনতা ক্ষেপলে কোন পক্ষই রেহাই পাবে না।