
স্ট্যাটাস আমার সিঙ্গেল দেখে প্রেমের ছড়াছড়ি,,,কাকে আমি ইয়েস বলি যে কাকে বলি সরি,,,, হায়রে! কি যে করি,,,,আমি ডানাকাটা পরী- বহুল জনপ্রিয় এ গানটি প্রায়ই শোনা যায়। অস্থায়ী বিক্রেতা বা হকারদের মাইকে। ভালো কোন প্রোগ্রাম বা মানুষ শুনতে পছন্দ করে কিনা সন্দেহ! হ্যাঁ, তবুও তিনি আমাদের মোষ্ট সিনেমা সেলিব্রেটি পরী মনি।
কোথা থেকে, কেমন করে, কার কার হাত ধরে, কতবার বিয়ে করে সেলিব্রিটি হয়েছেন তা আমার আলোচ্য বিষয় নয়। কারণ ‘ জন্ম হোক যথা তথা, কর্ম হোক ভালো।’
তো তার কর্মের কথায় আসি- মধ্যরাতে তিনি অজ্ঞান অবস্থায় একটা নাইট ক্লাব কিংবা বার থেকে বের হয়েছেন। এ নিয়ে চারদিন ধরে থানায় থানায় ঘুরেছেন কোন বিচার পাননি। অবশেষে তো আমরা জানি তার কান্না দেখতে দেখতে কতবার যে অঝোরে কাঁদলাম তার ইয়ত্তা নেই! আহারে! একটা মানুষ কতটা কষ্ট পেলে এমন করে কাঁদে। কথা বলেন এখনো জীহ্বার ডগা দিয়ে আলতো, অস্ফুষ্ট! সেই মানুষটা কেন এমন হেনস্তার শিকার হলেন?
দরদী পুরুষ আর স্বাধীন নারী সমাজ ছি! ছি! দিয়ে নিজের স্ট্যাটাস ভরিয়ে ফেলেছে। নাসির মিয়া ধরা পড়ায় তারা বেশ খুশি! কতটা ডিম গ্যাছে আর কতটুকু গোলগাল আছে তা নিয়ে আলোচনাও বিশদ।
রাত বারোটা বা মধ্যরাত। পুরুষ বা নারী কারো জন্যই অকাজে বাইরে থাকার কথা নয়। এতরাতে তিনি বারে কি করছিলেন? যদি নাসির মিয়া তার অপরিচিত তাহলে তিনি সেখানে গেলেন কেন? তার মতো মানুষকে কি জোর করে নিয়ে যাওয়া যায়? কিংবা একজন সেলিব্রিটি বলেই যখন তখন যেখানে সেখানে যাবেন, এমনটা কি ঠিক? এসবের উত্তর আমার জানা নেই।
আমরা জানি ৯০% নারী কোন না কোন ভাবে ধর্ষিত বা হেনস্তার শিকার। এটি কমাতে গেলে মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। শুধু একা পুরুষ মানসিকতার পরিবর্তন করবে, নাকি নারীদেরও করতে হবে? আমরা সবসময়ই বলি পুরুষের করতে হবে? পুরুষ সব নারীদের মা- বোনের চোখে দেখবে। তাদের সর্ব অবস্থায় সংযমের সাথে থাকতে হবে। নারীরা যত্র- তত্র যাতায়াত করবে, যেমন তেমন পোশাকে ঘুরবে, মন যা চায় তাই করবে তবুও পুরুষের কোন সমস্যা হবে না এটা হলো মানসিকতার পরিবর্তন।
আসলে কি এমন পুরুষ আছেন? যাদের কাছে সব নারীরা মা- বোন। নারীদের বেহাল দশাতেও আপনি চরম সংযমী। তাহলে এটা ডেফিনেটলি আপনার অসুস্থতার লক্ষণ।
পরীমনির অনেক গুলো ভিডিওতেই দেখা গেলো তিনি ক্লাবে ছেলেবন্ধুদের সাথে যেতে বেশ পছন্দ করেন তাও নতুন নতুন বন্ধু। নাসির মিয়াও তার বেশ পরিচিত। তাহলে ঘটনা কি? তেমন কিছুই না! স্বগোত্রীয় দুজনের বনিবনার কমতি পড়েছে। বুঝলেন না?
স্বামী বৌ ঝগড়া – মারামারী হয়না এমন ঘটনা বিরল।এমন ঝগড়ার একপর্যায়ে জামাইয়ের সাথে তুমুল হাতাহাতি। মাশাআল্লাহ কিল-ঘুষি সব হয়ে গেলো। বোনাস হিসেবে মোবাইল ফোন,ল্যাপটপ আশেপাশের সব ভেঙ্গে বারোটা। একসময় সেও ক্ষেপে গিয়ে যখনি পুরুষ স্টাইলে চড়াও হলো। তখুনি নারী দেখলো আর পেরে উঠছে না। এবার হাতিয়ার ‘ আর একবার হাত তোল দিবো এক চিৎকার। ওরে বাবা,মেরে ফেললো কে কোথায় বাঁচাও!
বেচারা পুরুষের তখন জীবন নিয়ে টানাটানি। চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে কিন্তু কিছুই দেখবে না, ভাববে না। কারণ পুরুষ সবসময়ই দায়ী এবং দোষী।ছি! ছি! পড়ে যাবে। এমন ছি! ছি! আর সম্মানের ভয়ে পুরুষরা নারীদের হাজারো অত্যাচার, অন্যায়- নির্যাতন সহ্য করে যায়।কারণ পুরুষদের নালিশ কিংবা কান্না কোনটাই যে মানায় না।
এদেশে মদ খাওয়ার লাইসেন্স দেয়া হয়েছিলো বহিরাগতদের জন্য। যাদের কালচারের সাথে যায়। আমাদের ধর্ম ও কালচার কোনটিতেই নেই। আদতে দেখা যায় এসব অনুমোদনের নামে অধিকাংশ মুসলিম নারী- পুরুষ বিশেষ করে সেলিব্রিটিরা সেখানে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়। যার কোন সঠিক তদন্ত বা সুরাহা নেই। তবে এবার যেহেতু আগুন লেগেছে তখন কিছুতো পুড়বেই। লাভবান কিছুটা আমরা হবো বোঝা যাচ্ছে। অনেকটা কেচো খুঁড়তে সাপ বেডিয়ে আসার অপেক্ষা।
মুসলিম দেশ হিসেবে এবং একজন নারী হিসেবে আমাদের কি কি করা উচিত? কিভাবে চলা উচিত সেটাও বিবেচ্য বিষয়! নারী ও স্বাধীনতার নামে বার, ডিস্কো, জুয়া, ছেলেবন্ধুদের সাথে নিয়ে আড্ডা এসব কতটা সমীচীন? আর সেটা আমাদের ভবিষ্যত প্রদন্মকে কি শিক্ষা দেয়?
নারীরা তোমরা স্বাধীন, এমন পরীমনিরা তোমাদের উদাহরণ! এভাবেই তোমরা চলো? কখোনোই না, অন্তত আমি এটা সাপোর্ট করি না।
সামনে আমরা কোথায় যাবো, কি হবে দিকনির্দেশনা কিংবা আমাদের সন্তানরা সমাজের কোন দিকটি ধারন করবে সেটা সত্যিই শঙ্কার বিষয়। শিশু কিশোরদের মন- মানসিকতার যথেষ্ট অবনতি হচ্ছে। যা সামনে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। তাই আমরা সন্তানদের উৎসাহিত করবো যেটা উৎসাহিত করার মতো সেটাতে।
আমরা মেয়ে সন্তানদের শিক্ষা দেব ইসলামের বিখ্যাত নারীদের উদাহরণ দিয়ে। তাও যদি না পারি তাহলে বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল, তারামন বিবি, জাহানরা ইমাম, নুরজাহান বেগম এসব উদাহরণ দিতে পারি। যাঁদের জীবনের সাথে ‘চরিত্র’ শব্দটা ছিলো। যাঁরা স্বাধীনতার অর্থ বুঝেছিলেন। যাঁরা স্বাধীনতার অবাধ ও নোংরা ব্যবহার কখনোই করেননি কিন্তু তাঁরা যথেষ্ঠ স্বাধীন ছিলেন।
ছবি- নেটের
২৪টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
চমৎকার উপস্থাপনায় লেখাটি তুলে ধরলেন। ভালো লাগলো প্রতিটা কথা। ভালো থাকুন নিরাপদে থাকুন শুভকামনা অবিরাম
রোকসানা খন্দকার রুকু
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ দিদিভাই। ভালো থাকবেন।
রেজওয়ানা কবির
আপু সবার একমত নাও হতে পারে, মানুষভেদে আমরা সবাই আলাদা তাই আমাদের মতের অমিল ও হতে পারে। ধর্ষন তাকেই বলে যখন তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে করা হয়, পরিমনি ব্যক্তিগত জীবনে কেমন কি? সেসবই নাই গেলাম। যার যার জায়গা থেকে সে সে আসলে বোঝে। অনেকসময় আমরাও সাধারণ মানুষ হয়েও বুঝি না যে আমরা কোন পপরিস্থিতিতে পরব? তবে হ্যা তবে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত সব মেয়েদের। কোন মেয়েই তাকে এইজন্য হাইলাইট করে না, এটা আমার ধারণা। তাই সববিষয়ে একমত হতে পারলাম না। আমি শুধু সেইসময়টা চোখ বন্ধ করে দেখতে পাচ্ছিলাম পরিমনির ঘটনা।।।।
নার্গিস রশিদ
এতো রাতে সে একজন মেয়ে হয়ে কোন সাহসে যায় সেটা আমিও ভাবছি। মেয়ে তো দুরের কোথা পুরুষ মানুষকেও এসব জায়গাতে জাওয়া মানে সে কেমন তা ফুটে উঠে। লেখাটা যেন আমার মনের কথা । সাবধানতা অবলম্বন নিজেকেই তো করতে হবে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ম্যাম। আপনি ঠিকই বলেছেন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ছুরির নিচে পরে তরমুজ বলে আমাকে কেটেছে ঘটনা এমন। এদের জন্যই নারী সমাজ খারাপ।
বুঝবে আরও দেরী। ভালো থেক।
নাজমুল আহসান
আপনার লেখাটা পড়ে তাজ্জব হয়েছি। সোনেলাতে এজাতীয় লেখা আসে না। তাও একজন নারী লিখেছেন! তথাকথিত নারীবাদীরা আপনাকে কী বলবে সেটাই ভাবছি।
এই ঘটনার যে স্থান, সেটা আপনি চেনেন কিনা জানি না। এই বোটক্লাব আর উত্তরা ক্লাব (নাসির সাহেব যেটার সভাপতি ছিলেন) দুটোই আমার বাসার কাছে। এই জায়গাগুলোতে যাদের আনাগোনা, তাদের একনজর দেখলেই আপনি আমাদের ধর্মবোধ, সমাজ আর সংস্কার কোন তলানীতে পৌছে গেছে সেটা বুঝতে পারবেন।
বোটক্লাবের অবস্থানটা নির্জন এলাকায়। পরীমনি হোক আর জনৈক আব্দুল কুদ্দুস হোক, মাঝরাতে ওখানে কী করতে গিয়েছিল – এই প্রশ্ন কেউ করছে না। বুদ্ধিজীবী মহল, যাঁরা নারী স্বাধীনতার নামে তেতে ওঠেন, তাঁরা কোনোদিন বলেন না এই সব জায়গায় ক্লাবের নামে কী হচ্ছে? নাকি নিজেরা এই ফলের রস খান বলে বলতে লজ্জা করে?
ভেবে দেখেছেন- এদের নষ্টামি, লেনদেন আর ভাগবাটোয়ারার মনোমালিন্যকে ধর্ষন স্বীকৃতি দিয়ে আমরা সত্যিকারের ধর্ষিতা মা-বোনদের অপমান করছি কিনা?
রোকসানা খন্দকার রুকু
তিনটি মূল্যবান কথা বললেন আমাদের দেশে ধর্ম নেই, ধর্মীয় বোধও নেই।
নারী স্বাধীনতার নামে তেতে ওঠেন কারন তারা স্বাধীনতার নামে বেলেল্লা নারীদের ছাড়া চলতে পারেন না।
আর পরীমনি ধর্ষনের সংগা পাল্টাতে বসেছিলো কিন্তু ১০ ভাগ লোকও তার কান্নায় ভন্জামী , ভাগাভাগী ছাড়া কিছুই দ্যাখেননি।
অনেক ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্য দেবার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময়।
আলমগীর সরকার লিটন
বিশ্লেষনের অবকেশ থাকে না রুকু আপু
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ভাই।
আরজু মুক্তা
আমি কি কঠিন মন্তব্য করবো? তবে, পরিবেশ বা পরিস্থিতি কোনটায় মেয়েদের অনুকুল নয়। আপনি চাকুরীজীবী। আপনার মেয়ে নামাজি। তবুও কিন্তু পুরুষের নজর এড়ায় না বা ছেলেদের হাত অবলীলায় চলে আসে মেয়েদের গায়ে। আপনি যাদের উদাহরণ দিলেন, এখনকার পরিস্থিতি বা রাস্তাঘাটে তাদের এনে ভাবেন। বুঝবেন। আমি নিজেও আশ্চর্য হই যে আমাকেও চলতে ফিরতে এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই প্রশ্নটি অবশ্য আপনার কাছেও থাকলো।
এবার অবশ্য আমি আশা করবো তনু বা নুসরাতকে নিয়ে লিখবেন। হিউম্যানিটি নিয়ে লিখবেন।
আমি একজন পতিতা কিন্তু রাত দুইটায় পায়জামা খুলে বসে থাকবো? এই প্রশ্নও থাকলো।
এমন লেখা লিখে সাড়া ফেলবেন; না এমন মেয়ের পাশে দাঁড়াবেন?
রোকসানা খন্দকার রুকু
পরিস্থিতি কারও জন্যই, কখনোই অনুকূল নয় বা থাকে না।এটি তৈরি করে নেবার দায়িত্ব নিজের। আমার নিজস্বতা আমাকে শেখায় আমার কি করা উচিত! সেটা যার থাকে না সে কখনোই অনূকরনীয় হতে পারে না।
সারা ফেলবার জন্য লেখা নয় এ আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আমি কেন অন্যকারও জন্য একই পাল্লায় কেন পডবো? সে কেন আমার উদাহরণ হবে? আর তাকে তো জোর করে নিয়ে যায়নি। এমন নাকি কান্না যেন জীবনে মদ কি জিনিস চেনেই না। ফাজলামী।
একজন বেগম রোকেয়া নারী শিক্ষার মাধ্যমে স্বাধীনতার কথা বলে বলেছেন। কিন্তু মদ্যপ অবস্থায় এক নারীর কাছে আমি কি শিখবো। পুরুষের কাছে শুনতে হয় এরা তো এমনই মানে গোটা নারী জাতিকে অপমান করা হয়।
পতিতাবৃত্তি না করেও বাঁচা যায়। এসব উচ্চবিত্তরাই বড় পতিতা। বছরের পর বছর যাদের টাকায় স্ট্যাটাস মেইনটেইন করে আবার ফাঁক পেলে ছোবল মারে। দুপক্ষই নোংরা!!
মোঃ মজিবর রহমান
সঠিক লিখেছেন তবে আমি কোন মন্তব্য যাব না। শুধুই এই টুকুই বলব আমাদের সন্তানের আদর্শ কে বা কারা? এই সব ধরণের যারা রাত্রে ঘুরে বেড়ায় তারা কখনই আদর্শবান হতে পারে না।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন।
ছাইরাছ হেলাল
এই ই তো আমাদের আসল রুকু।
আমরা সব কিছু জানি বুঝি দেখি, আর শুধু দূরে বসে মজা নেই।
পরিত্রাণ কোথায় কীভাবে জানি না, তবে হতাশ- ও হই না।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ভাইয়া। ভালো থাকবেন।
হালিমা আক্তার
বিনা কারণে গভীর রাতে বাইরে থাকা। মেয়ের জন্য যেমন অশোভন পুরুষের জন্য শোভনীয় নয়। তবে খারাপ লাগে আমাদের সমাজের অধঃপতন দেখে। শুভ কামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
সেটাই। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো আপু। ভালো থাকবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
অতিরিক্ত সব কিছুই সমাজ এবং ব্যক্তি জীবনে কুফল বয়ে আনে। হতে পারে প্রভাব,প্রতিপত্তি, সম্পদ অথবা স্বাধীনতা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
হালিম নজরুল
তিনদিন আগে পড়েছিলাম। মন্তব্য করতে পারিনি। আসলেই চমৎকার লিখেছেন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ভাইয়া।
সঞ্জয় কুমার
আপনার লেখার সবকিছুর সাথে একমত নই।
নাইট ক্লাবে মনেহয় সবাই নাইটেই যায়।
কি করতে যায়? কেন যায়? কারা যায়?
এগুলো মোটামুটি আমরা সবাই জানি।
রাত বা দিন, নারী, পুরুষ সবার পথচলা নিরাপদ হোক,
এই কামনা করি।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমি নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেছি। তবে সবসময় সব জায়গা সবার জন্য নিরাপদ নয়। এটা কখনো হতে পারে না।