পরিচয়//

বন্যা লিপি ২৮ জুন ২০২০, রবিবার, ১২:৫৮:০৭পূর্বাহ্ন অন্যান্য ২৫ মন্তব্য

প্রায় ৩২ বছর আগেও কেউ কেউ ছোটোখাটো বিতর্ক করতেন আমার লেখা নিয়ে। তখন বুঝতাম না মানেটা কি? ২৭/২৮ বছর পরে যখন ফেসবুকিয় মাধ্যমে লিখতে শুরু করলাম আবার নতুন করে! মন্তব্যে এখনো অনেকের প্রশ্ন বা ইনবক্সে লেখার অর্থ জানতে চান অনেকেই। আমার সাধ্যমতো অনেকের জবাব দেই আমি আমার স্ট্যান্ট বজায় রেখে।

ক্রমশঃ অনেক সাহিত্য লিখালিখি গ্রুপের দাওয়াত/ ইনভিটিসন পেয়ে, পড়া এবং আরো বিষদ জানার মনোবাঞ্ছায় জয়েন করেছি বা আছি সেসব গ্রুপের সাথে। দু একটা লেখা পড়লে চক্ষু চড়ক গাছ থেকে নামতেই চায়না সহজে!

একটা ছোট্ট কথপকথনের গল্পে পুরো বিষয়টা বলতে ইচ্ছে করছে।

একজন উদীয়মান কবি তিনি। পরিচয় হলো মাত্র কয়েকদিন।

কবি: কেমন আছেন? আপনার লেখা কেমন চলছে?

– ভালো আছি, চলছে….

কবি: আপনার বই বের হয়েছে?

— না

কবি: কেন?

– আগ্রহ নেই

কবি: কেন?

— এমনি

কবি: ওওও, সত্যি বলতে আপনি ভালো লেখেন। এ জন্য বইএর কথা বলেছি। অথচ এমন লেখক আছেন, যাদের বই বের করাই উচিত নয়, তবুও তারা বই বের করে বসে আছে।

— সত্যি বলতে, যারা আমাকে বলছেন, তাঁদের কাছে আমার লেখা ভালো লাগছে! তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

আমি জানি না, কেমন লিখি?

কবি: আমি না বুঝে বলিনা।  আমি নিজেও লিখি। সো… এটা ভালো বুঝি ভালো আর খারাপ।

— মন যখন যেমন চায়, তেমন তেমন লিখি। বইএর ব্যাপারে এজন্যই আগ্রহ নেই।

কবি: হুমম- যারা লেখে তারা  এমনি,মন যখন যেমন চায় তেমনই লেখে।

— হুম, আমি ঠিক নিয়মিত বা প্রফেসনাল নই।

কবি: লেখকদের প্রফেসনাল হতে হয়না।

— একদম ঠিক। কিন্তু কি চলছে এখন?

কবি: চলছে তেলবাজী!

— এসবের ধারে কাছেও নেই আমি।

কবি: সবাই কি আর তেলবাজী করে? আপনি আপনার মতো লিখবেন।

— হুমম

কবি: আর লিখলে দায়বদ্ধতা থেকেই বই প্রকাশ করতে হয়।

— ওইটা আমার জন্য কঠিন। কিছু করার নেই। ক’জন এখন বই কেনায় আগ্রহ দেখায়?

কবি: কেনা নিয়ে ভাবলে কবি বা লেখক বই প্রকাশ করতো না।

— আমার মতো কেউ না। আমি আমার মত।

কবি: সবাই সবার মত।

— জি, সেটাই- বই নিয়ে ভাবনা তাই আসে না।

কবি: আসবে। আমি চলে এসেছি, এখন আসবে।

— আসবে না

কবি: সেটা না হয় পরে দেখা যাবে। রাগ হচ্ছে নাতো আমার ওপরে?

— এখনো হচ্ছে না

কবি: এমনভাবে বললেন যেন হওয়ার সম্ভবনা আছে?

— জি

কবি: ওওও, বাট আমার ওপরে কেন রাগ করবেন?  বুঝতে পারলাম না।

— বললাম তো! হলে বুঝবেন, বলা লাগবে না।

কবি: বুঝতে পারছি। সে সুযোগ আর সময় দিতে চাইনা আমি।

— ধন্যবাদ আপনাকে।

কবি: কথা বলতে বলতে কবিতা লিখে ফেললাম, পড়বেন?

— পড়বো

পক্ষপাতিত্ব★★

ঢের ঘুমে থাকি, কামারশালার ধ্বনি তবুও আমার মগজে ছড়িয়ে পড়ে।হাতুড়িপেটা হাতের রেখায় কোনো বসন্ত আসেনা।

তারপরও এই হাত ছুঁয়ে দিলে পৃথিবী গর্ভবতী হয়।  পৃথিবীর ব্যাপক গভীরে আমরা ট্যুরিস্ট হিসেবে ভ্রমন করি। ডানে সাগর বামে কুমোড়পাড়া- এইসব দেখতে দেখতে ভুলে যাই, কান্নানদীর কলতান! ভুলে যাই অনাহারী পেটে বসে ঠোঁকড়াচ্ছে একদল কাঠঠোকরা,  যে ঘর দরজা খুলে বসে আছে তাঁদের ক্ষুধাগুলো জাদুঘরে রক্ষিত করে রাখবো।কম্পাসের কাটা ঘুরিয়ে দেখিয়ে দিবো ঈশ্বরও পপক্ষপাতিত্ব করেন।

— ওয়াও….বোধ! অসামান্য।

কবি: ধন্যবাদ

— ওয়েলকাম

কবি: আরেকটা কবিতা লিখেছি গতকাল পরশু।চাইলে দেখাতে পারি।

আচ্ছা, দেখি

কুকুর জীবন★★*

(দুঃখিত, এই শিরোনামের কবিতা এখানে উপস্থাপন করার রুচি আমার নেই)

— লেখায় অশ্লীলতা ব্যাবহার না করে কি লেখা সম্ভব না? সম্পূর্ণ হয়না লেখা?

কবি: সময় বোঝাতে ব্যাবহার করতে হয়।প্রতিবাদ জানানো শব্দ। সবকিছুতে অশ্লীলতা খুঁজতে কেন যান? ভেতরে কি আছে সেটা বুঝতে চেষ্টা করুন!

— আমি পছন্দ করিনা এমন সব লেখা। যা বলি স্পষ্ট বলি।

কবি: সবার সব লেখা তো ভালো লাগবে না আপনার?

— জি।

বেশ কিছুদিন যাবার পরে আবারো কথপকথন।

কবি: আপনি আমার একটা লেখা পড়ে মনে খারাপ ধারনা পুষেছেন তাইনা? বাট এই কবিতাটি পড়ে দেখুন।

— দেখুন এসব ব্যাপারে বিশদ হয়তো বলে বোঝাতে পারবো না আমি। আপনার লেখা উঁচু মানের, তাতে সন্দেহ নেই। তবু অশ্লীল শব্দ ব্যাবহার আমার ঘোর অপছন্দের বিষয়।

কবি: আমার লেখা উঁচু মানের?  হাসালেন ম্যাডাম! আমি আপনার চেয়ে সাধারন।

— এমন ভাবার কারন নেই। আমি দেখেছি অনেক লেখকই আছেন, যারা তাঁদের লেখায় জৈবিক বিষয়াদি অতি অবলীলায় উপস্থাপন করে থাকেন। আমার একান্ত ব্যাক্তিগত মতামতে মেনে নিতে পারিনা। এটা একান্তই আমার বোধ।

কবি: আমার ওই কবিতায় আপনি গভীরে না প্রবেশ না করলে বুঝতে পারবেন না, আমি মিথ প্রয়োগ করে সেটা অদৃশ্য করে রাখি।

— সেটা বুঝি, কি দিয়ে কি বোঝাতে কে কি লিখছে?

কবি: তাহলে তো বেশ।

— কিন্তু আমার বোধে আসে না, এ ছাড়া বিকল্প শব্দ নেই দ্রোহ প্রতিবাদ বোঝাতে?

কবি: আছে, আমি কিন্তু নারী’র শরীর নিয়ে কবিতা লিখিনা, যা লিখি সেটা অবক্ষয়ের প্রতিবাদ। যেমন এইটা— হীনমন্য কমলা রোদ★★

********(আবারো দুঃখিত)

কবি: সমাজের চোখগুলো নারীকে কেমন দেখে সেটা বোঝাতে।

— ডিসকাস্টিং…. এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে সমাজে। বোধ শুদ্ধ হয়না। জাগ্রত হয়না শুদ্ধ বোধ। বরং এসবের কারনেই নারী নির্যাতিত, পণ্য হচ্ছে নিত্য।

কবি: নারী পণ্য হচ্ছে নারীর ইচ্ছাতেই। এতে কারো হাত নেই।

— দেখুন এইসব নিয়ে আপনার সাথে তর্ক করার মতো যথেষ্ঠ সময় নাই আমার।

কবি: হুমম….আসলেই আমরা জটিল করছি, বাট এটা ভালো হচ্ছে।

— ডিবেটিংএ আমি নাই।

কবি: ভালোই তো করলেন!

— ধুর

কবির প্রসঙ্গ বদলাতে সময় লাগেনা। বোঝা যায় চটকদার তকমা না থাকলে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়না। অনলাইন মাধ্যমে শুরু করে কবিতা* নামের পুঁজি নিয়ে এরাই শুরু করেন বই প্রকাশের রমরমা ব্যাবসা। কোনো এক কবি বলেছিলেন কবি*রা চরিত্রহীন হয়। চরিত্র বলতে যে কি বোঝায়? তাহাদের দু একখানা কবিতায় ফুটিয়ে তুলতে বড্ড নিপূণ।

কবি: একটা কথা বলি আপনাকে?

–বলেন

কবি: আপনার চুল লাল কেন?

— সাদা ভালো লাগেনা তাই।

কবি: আপনি লালেই অন্যরকম।চীর সবুজ।

–স্তুতিবাক্যে আনন্দ বা খুশি হবার কোনো কারন নেই।

কবি: সব বাক্য খুশি করানোর জন্য নয়।

–সব বাক্য সব জায়গায় বলাও উচিত নয়।

কবি: কিছু বাক্য তো তুলে ধরে অবস্থান, সময়, অনুভব।

— এবার বিরক্ত হলাম। টা টা……

 

বি.দ্র. লেখাটা আজ তৌহিদ ভাইর পোস্ট দেখে উৎসাহিত হলাম লিখতে।

লেখার বিষয়বস্তুর দিকে খেয়াল করুন পাঠকগণ। ব্যাক্তিগত ভাবনা থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন দয়া করে।

 

৮৬৬জন ৬৯৫জন
0 Shares

২৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ