ধর্ষণের নাম শুনলেই এক শ্রেণীর লোকের গা ঘিনঘিন কর, এক শ্রেণী সকালের পত্রিকায় এই মুখরোচক নিউজটা পারলে অনুবীক্ষণ যন্ত্র নিয়ে খোঁজ়ে, এক শ্রেণী সমাজে এটার বিরুদ্ধে কাজ করে, এক শ্রেণী এটা করে, এক শ্রেণী এটার ভুক্তভোগী, এক শ্রেণী এটার ভয়ে বেছে নেই সুইসাইড নামক কালো ঘরটা।
যারা ভুক্তভোগী তাদের বলি, ধর্ষণ মানেই কি জীবনের শেষ? তুমি যদি কারো পশুত্বের শিকার হও তাই বলে কি নিজেকে দোষী, পাপী ভেবে চার দেয়ালের ঘরে আটকে রাখবে? কেন সুইসাইড করতে হবে? যে বাবা মা এতো কষ্ট করে তোমার সুখের জন্য তাদের কথা একবার ও ভাববেনা? সমাজ কি করলো, লোকে কি বললো সেটা ভেবে জীবন সংগ্রাম থেকে নিজেকে সরিয়ে নিবে? ঐ পশুটা হয়তো তোমার শরীর টাকে ছুঁতে পেরেছে তোমার মনকে কি পেরেছে? মনের পবিত্রতা বড় পবিত্রতা। মহান আল্লাহ ও সব দেখছেন। অন্যের দোষের জন্য অবশ্যই তুমি দোষী হতে পারোনা।
এবার আসি সেই শ্রেণীর লোকের প্রতি যারা প্রতি সকালের পেপারে এই নিউজ টা খুঁজেন। আপনি যেটা পড়ে অদ্ভুত শব্দ করে মজা নিচ্ছেন জানেন কি একটা মেয়ের কতোটা কষ্ট হয়? আপনি তার কষ্ট টা যখন বুঝার চেষ্টা করছেননা আপনাকে তার কষ্টে মজা নেওয়ার অধিকার কে দিয়েছে?
এবার আম জানতাকে বলি, ধরুন আজ আমার কিংবা আপনার প্রিয়, অতি আদরের কোনো মুখের ধর্ষণ হয়েছে। কি করবেন? অন্যের বেলায় তো আমরা বলি “মেয়েটার স্বভাব ভালোছিলোনা তাই এমন হয়েছে ” কিন্তু নিজের বেলায় কি পারবেন এই কথাটা বলতে? আসলে অন্য কেউ না ওদেরকে সুইসাইডের জন্য আমরা বাধ্য করি। আমরা ভেবেই নিয়েছি কোনো ধর্ষিতার বাঁচার অধিকার নেই।
এবার আসি এর বিরুদ্ধে স্লোগান তোলা মানুষগুলোর প্রতি। আপনি নিজে কি পারবেন একটা ধর্ষিতাকে পুরো সম্মানের সাথে ঘরের বৌ করে আনতে কিংবা নিজের প্রতিষ্ঠিত ছেলের সাথে একটা ধর্ষিতার বিয়ে দিতে?
আর সেইসব মহান ধর্ষকদের বলছি, কতোটা শান্তি পান ধর্ষণ করে? মেয়েটার চিৎকার, কান্না, অনুনয় গুলো শুনতে খুব ভালোলাগে তাইনা? নিজের চাহিদা যদি সামলাতেই না পারেন তাহলে পতিতালয় গুলোতে গেলেও তো পারেন। আমাদের দেশে এমনতো নয় যে পতিতালয় নেই। কিছু টাকা খরচ করলেই ওরা নিজ ইচ্ছায় আপনাকে তুষ্ট করবে। তাতে করে আপনার অধিক জোর প্রয়োগের ও প্রয়োজন হবেনা ধর্ষণের মতো। বরং বাকি শক্তিটুকু আপনি কোনো কাজ করে পরবর্তী দিন পতিতালয়ে যাওয়ার মতো টাকাও ইনকাম করতে পারবেন। আর আপনার চাহিদা পূরনের সাথে সাথে পতিতালয়ের একটা নারীর ও একবেলার খাবারের যোগান হবে।।
১৬টি মন্তব্য
রিমি রুম্মান
আমাদের সমাজ ব্যবস্থাটা এমন যে… ধর্ষিতা পরবর্তীতে বেঁচে থেকেও পদে পদে অগনিত বার মৃত্যুবরণ করেন। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার… খুব দরকার
ইয়াগনিন সুলতানা
আসলেই দরকার
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
যে দেশে মুক্তিযুদ্ধের বীরাঙ্গনাদের মর্যদা দিতে ৪৩টি বছর পার হয়ে যাচ্ছে সে দেশে এমন ধর্ষণের মর্যাদা কিংবা প্রতিকার আশা করাই বৃথা।ভাল লিখেছেন।
ইয়াগনিন সুলতানা
ধন্যবাদ
জিসান শা ইকরাম
অত্যন্ত ভালো লেখেন আপনি–
মানসিকতার পরিবর্তন জরুরী খুব।
পরিবার থেকে ছোট বেলা থেকে মা এসব বিষয়ে শিখাতে পারেন।
ইয়াগনিন সুলতানা
ধন্যবাদ ভাইয়া
মোঃ মজিবর রহমান
দুর্বলের কেউ নেই। আইন, বিচার কুছুই নেই।
বিচার পাবে কোথায়।
ইয়াগনিন সুলতানা
আমরা আওয়াজ তুললেই সম্ভব।কিন্তু আওয়াজ টা তুলবে কে প্রথমে
কৃষ্ণমানব
বর্তমান বাস্তবতা মুক্তির স্লোগান ভেসে উঠে আপনার লেখায় ।
প্রত্যাশা করি এরকম কিছু সবসময় লেখেন
ইয়াগনিন সুলতানা
অবশ্যই চেষ্টা থাকবে
অলিভার
দোষটা সত্যিই আমাদের, দোষীকে দোষারোপ না করে ভুক্তভোগীকে নিয়ে টানা হ্যাচড়া করছি।
কিন্তু এতকিছুর মধ্যে আপনি একটা দলকে ছেড়ে কথা বলেছেন। যারা এইসব খবরকে মুখরোচক করে পরিবেন করে তাদের নিয়ে কিছুই বললেন না। তারা যদিও একটা ধর্ষণের ঘটনা জানাবার জন্যে লিখে কিন্তু আপাত দৃষ্টিতে লিখে ধর্ষণের স্বীকার ভিকটিমকে আরও ছোট করে দেবার জন্যে। পত্রিকা গুলির নিউজ পড়লেই বুঝতে পারবেন। সেখানে ধর্ষণকারীকে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যায় না, রগরগে আলোচনা থাকে ধর্ষণের ঘটনা আর ভিটকিমের। তাতেও ক্ষান্ত হয় না, পরিবার আর সামাজিক ভাবে তার অবস্থান বলতে গিয়ে সেখানেও ছোট করে ফেলে ভিকটিম সহ পুরো পরিবারটাকে।
ইয়াগনিন সুলতানা
হুমম,একটু ভুল হয়ে গেছে
প্রজন্ম ৭১
ভালো লিখেছেন আপু। পোষ্ট দিয়ে এমন ভাবে চলে গেলে একসময় আপনার লেখা আর কেউ পড়বেন না, লেখা যতই ভালো হোকনা কেনো ।
ইয়াগনিন সুলতানা
এটাই তো আমার সমস্যা ।ফেবুতে রেগুলার বসা হয় কিন্তু এখানে খুব কম 🙁
বন্য
যতদিন এই কিছিমের মানুষগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তিত না হবে ততদিন এই কলংক ভারী হতে থাকবে। এর পরিবর্তন অবিলম্বে দরকার!
ইয়াগনিন সুলতানা
দেখা যাক পরিবর্তন টা ঠিক কবে নাগাদ হয়