কি অস্থিরতা কাজ করতো জানতে,
কেমন তোমার দৈনন্দিন জীবন।
কেমন তোমার রাত্রি থেকে সকাল?
যে আয়না প্রথম সকালে তোমার মুখ দেখে গর্বিত হয়,
যে হেয়ার ব্রাশে তোমার এক/দুটো চুল গেঁথে থাকে।
যে টুথব্রাশটা তোমার ঠোঁট-মুখ ছোঁয়।
স্নানের সময় জলের ধারায় তোমার চোখের পলক কিভাবে নাচে;
সকালে কফির কাপে চুমুক দিতে গিয়ে ওই ঠোঁট কতোটুকু সঙ্কুচিত হয়।
যে হ্যাঙ্গারে ঝুলে থাকে তোমার পোষাক,
আলমারি জুড়ে তোমার শরীরের গন্ধ,
অনুভব করার কতো ইচ্ছে ছিলো।
জুতোর র্যাকে সাজিয়ে রাখা হরেক রকম ফ্যাশন,
রেডি হয়ে আঙুলগুলো ঘুরিয়ে দরোজার যে লক খুলে বের হও,
তখন তোমার কেমন থাকে মুখটা?
সারাটি দিনের ছুটোছুটির পর সন্ধ্যের সময় যখন একান্ত নীড়ে ফিরে আসো,
এসে ক্লান্তি দূর করতে পা ছড়িয়ে, শরীর এলিয়ে দাও সোফায় কিংবা রকিং চেয়ারে;
তারপর উঠে মুখে জলের ঝাপটা দাও,
তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মুখ মুঁছে রাতের পোষাক পড়ে
খাবার টেবিলে এসে বসো।
তিনটি আঙুল নাকি কাঁটাচামচ(জানিনা সেও, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব)
কিভাবে খাবারগুলোকে গুছিয়ে এনে তোমার ক্ষুধার্ত পাকস্থলীকে শান্ত করে,
হায়রে পাগলামী।
শয্যাকে আলিঙ্গন করার আগে ব্যালকনিতে গিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে আমায় ভেবে
তোমার আবেগের স্পন্দন কতোটা ওঠানামা করে,
এসব দেখার জন্যে কতো কতো স্বপ্নর জন্ম যে হয়েছিলো।
আহা কিসব পাগলামী চাওয়া!
এসব জানতে-দেখতে ঠিকানা লাগে।
অস্থিরভাবে খুঁজেছি তোমার ঠিকানা, ফোন নাম্বার।
আজ ওসব সবই আছে,
তোমার ঠিকানার দরোজায় আজ আমার প্রবেশ নিষেধ,
তোমার ফোনে এখন সীমাবদ্ধতার কথোপকথন।
কি অদ্ভূত এক জীবন আমার!
সব পেয়েও কিছুই নেই,
তোমার স্পন্দনে আমি নেই,
তোমার আবেগে কেবল মানবিকতা কাজ করে আমার জন্যে।
তবুও জানো কিছু একটা আছে এখনও, যার কোনো নাম আমার জানা নেই।
হ্যামিল্টন, কানাডা
২৬ মে, ২০১৫ ইং।
৩৫টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
অপেক্ষা মধুরতর থেকে মধুরতম হয় যখন সত্যি সত্যি কবিতাকে স্পর্শ করা যায়।
বা কবিতা নিজেই স্পর্শ দেয়। বলছি না, এটি আপনার শ্রেষ্ঠতর বা শ্রেষ্ঠতম লেখা।
তবুও ভালোলাগাটুকুকে অস্বীকারের উপায় পাচ্ছি না।
আপনার তুমিময় কবিতায় ‘কিছু একটি যে আছে’ তা আমিও মেনে নিচ্ছি ।
পরে আর একবার লিখব।
নীলাঞ্জনা নীলা
প্রেম এই একটিই সম্পর্ক আছে পৃথিবীতে যা চিরন্তন সত্য।
চেষ্টা নয়, চলে আসে লেখায়-ভাবনায়। হয়তো তাই পারিনা এড়িয়ে যেতে নিজেকে।
বারবার আত্মসমর্পণ করি দূর্বল কিংবা সবল এই আবেগের কাছে।
আপনার মন্তব্য আমাকে লিখতে ভাবায়, তাহলেই বুঝুন আপনার মন্তব্য কতোখানি ভারী!
আবারও ধন্যবাদ। -{@
ছাইরাছ হেলাল
বলছি না
এমন করে কাউকে খুঁজিনি/খুঁজছিনা,
বলছি না
এমন কাউকে পেয়েছি/পাইনি/পাবনা।
পরিব্রাজক ভালোবাসা ভালোবেসেই ভালোবাসে।
♣আপনি একটু বাড়িয়েই বলেন!!
নীলাঞ্জনা নীলা
মন্তব্য করাও শিখতে হবে। এতো চমৎকার আর্ট মন্তব্যের ভেতরে।
বাড়িয়ে বলবো কি করে?
ওটা পারিনা বলেই তো পদার্থ বিজ্ঞানের স্যার প্র্যাক্টিকেল পরীক্ষায় প্রায় ফেল করিয়ে দিচ্ছিলেন।
তবে পরিব্রাজক ভালোবাসা ভালোবেসেই যে অসাধারণ মন্তব্য করে, সে তো দেখছি। 🙂
মিথুন
এই এতো করে ভাবনাগুলো সেই সময়ের জন্য সত্যি ছিল। এখনকার এই সীমাবদ্ধতাও এই সময়ের জন্য সত্যি। এটুকুই জানি কিছু একটা থেকেই যায়, যার কাছে সময় কোন ব্যাপারই নয়। অনুভূতির আগে কম বা বেশি শব্দ লাগানো যায়না। অনুভূতি অনুভূতিই। কবিতা ভালো লেগেছে বলছিনা, কবিতা বেশিইইইই ভালো লেগেছে……
নীলাঞ্জনা নীলা
মাথা-মুন্ডু কি যে ছাই লিখি, আর সেটাই ভালো লেগে যায়। ভালোবাসা যে মারাত্মক স্বজনপ্রীতি, এটা এখন মানছি। -{@ (3
অরণ্য
আমি তার নাম দিলে চাই পোড়া কয়লা – ভালোবাসার র্যাপিং পেপারে।
আমি তার নাম দিতে চাই দীর্ঘশ্বাস – দারুন অনিয়ন যার আনাগোনায়।
অরণ্য
আমি তার নাম দিলে চাই পোড়া কয়লা – ভালোবাসার র্যাপিং পেপারে।
আমি তার নাম দিতে চাই দীর্ঘশ্বাস – দারুন অনিয়ম যার আনাগোনায়।
নীলাঞ্জনা নীলা
যা খুশী নাম দিন। অরণ্য বলে কথা, সবুজ তো ঢাকবেই তার ছায়ায়, তাই না? -{@
জিসান শা ইকরাম
অদ্ভুত সুন্দর একটা লেখা
কিছু একটা আছের নাম তোমার জানা না থাকলেও
আমার জানা আছে 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
জানা থাকলে এখুনি বলো নানা। এটা ঠিক না জানা আছে বলে না জানানো। :@
ব্লগার সজীব
একেই সম্পর্কের ব্যবচ্ছেদ বলে 🙂 ভাল লেগেছে আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
তাইতো মনে হয়। যদিও এখন পর্যন্ত এই প্রাক্টিক্যাল করা হয়নি। বায়োলজির স্যার পাইনি, এমন ব্যবচ্ছেদ করলে পুলিশের উত্তম-মধ্যম যে কনফার্ম। :p
স্বপ্ন নীলা
অসাধারণ গোছানো একটি লেখা, শব্দ আর বাক্যের লুকোচুরি খেলা ———–মন মেতে গেল
নীলাঞ্জনা নীলা
‘মন মেতেছে মন ময়ূরীর কোন খেলায়
নাম-না-জানা ফুল ফোঁটানোর এই বেলায়।’
গানটা শুনে মনকে আরোও নাচতে দিন। -{@ \|/
https://www.youtube.com/watch?v=yBtulDjiLAU
সীমান্ত উন্মাদ
অপেক্ষা আমার জীবনের সাথী চিরটাকালের। তবুও কেন জানি মধুর থেকে মধুরতর হচ্ছে প্রতিদিন।
আপু আপনার গদ্য কবিতায় অনেক অনেক ভালোলাগা। শুভকামনা জানিবেন নিরন্তর।
নীলাঞ্জনা নীলা
অপেক্ষা মধুরতর হবার কারণ কি? আমিও শিখতে চাই। আমাকে শিখিয়ে দিতে হবেই হবে। নইলে ;(
অফুরান ভালোবাসা ভাইয়া। -{@
সীমান্ত উন্মাদ
অপেক্ষা শব্দটা এবং ব্যাপারটা না থাকলে, যার জন্য অপেক্ষা তাকে পেলে(হতে পারে মনে মনে, হতে পারে মৃদু স্পর্শে, হতে পারে বাস্তবে, যেভাবেই পাওয়া হোক না কেন)। যে আনন্দের মধুরতা সেটার আবেশ পাওয়া যেত না অনুভবেও।
আপনার জন্য চলমান শুভকামনা এবং ভালবাসা আপু। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালোবাসায় ভালোবাসা বেড়েই চলছে। সযত্নে রক্ষিত হলো। -{@
তানজির খান
তোমার স্পন্দনে আমি নেই — (y)
ভাল লাগলো
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়া ভালো লাগা সযত্নে রক্ষিত হলো। -{@
স্বপ্ন
কত কিছুর মাঝে একজনের স্মৃতি থাকে।আমি দুইদিন লিস্ট করেও এসবের তালিকা করতে পারতাম না।খুবই ভালো লেগেছে দিদি।
নীলাঞ্জনা নীলা
আরোও তো থেকে গেছে। নেইলকাটার, শেভার, রুমাল, মোজার বাজে গন্ধ(জানিনা আছে কিনা?) ^:^ , এবং মানিব্যাগ :p
কবিতা যদি জানতো তাকে লেখা হয় গভীর আবেগে, তাহলে কি হতো!
অনেক ভালোবাসা। -{@
খেয়ালী মেয়ে
চমৎকার (y)
কিছু একটা তো অবশ্যই আছে যা আজো ভাবায়………
নীলাঞ্জনা নীলা
সেটাই, কিছু থেকেই যায় ভাবনায়।
আমরা মানুষ যে! -{@ (3
রিমি রুম্মান
দু’বার পড়লাম। সুন্দর লেখা। “কি অদ্ভূত এক জীবন আমার!
সব পেয়েও কিছুই নেই”___ এটি কিন্তু কম বেশি আমাদের সবার বাস্তবতা। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
এমন লেখা যে দু’বার পড়ার মতো যোগ্যতা রাখে সেজন্য আমি কি বলবো বুঝে উঠতে পারছিনা।
কিন্তু কৃতজ্ঞ এভাবে প্রতিনিয়ত প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন বলে। -{@
শুন্য শুন্যালয়
সব ভালোবাসারই বুঝি এক্সপায়ার্ড ডেট থাকে। এই কিছুর নাম পুরনো ব্যবহৃত কিছু অনুভূতি।
প্রশংসা আর কত্তো করবো? এ লাইনটিই না হয় দিলাম, এ তুমি কেমন তুমি? চোখের তারায় আয়না ধরো।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালোবাসার এক্সপায়ার্ড ডেট!!!
ওয়াও। এ নিয়ে লেখা হোক। না লিখলে আমি-ই কিন্তু চুরী করে নিয়ে লিখবো। অনন্য মন্তব্য। (y)
ভালোবাসা অনন্ত অপরিসীম -{@ (3
শুন্য শুন্যালয়
লেখা হোক এবং অবশ্যই তা নীলা আপুর লেখা হোক। অপেক্ষায় এই যে ঘড়িতে এলার্ম দিলাম।
অরণ্য
ইন্টেরেস্টিং হবে লেখাটা। আমিও লিখে ফেলতে পারি। আমার মাথায় ধাক্কা লাগলো একটা “ভালোবাসার এক্সপাইরি”। চালু টপিক। প্লিজ, গো এহেড। (y) নীলা আপু, লিখে ফেলুন।
নীলাঞ্জনা নীলা
ওমা অবশ্যই লিখতে পারেন। অনেক ভালো লাগবে আমার অরণ্য ভাইয়া। লিখে ফেলুন। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
রাত একটা বাজছে। অনুমতি পেলাম, তাহলে লিখবো। তবে সময় কিন্তু নির্দিষ্ট নয়। :p
অনেক ভালোবাসা শুন্য শুন্যালয় আপুনি। (3
ইমন
ফিলিং আনডিফাইন। জীবন চলার পথে আমাদের চিরচেনা জানা সম্পরর্ক গুলা রঙ রূপ পাল্টে এমন অবস্থায় পৌছায় যে, তখন সেটার পরিচয় সংকটে ভুগে।
আমি ঠিক জানিনা, তবে একজন লেখকের প্রতিটা নিশ্বাস তার জীবন থেকে নেয়া, যেমন তার প্রতিটা অক্ষর।
আপনার জন্য শুভকামনা রইলো। -{@ পরামরর্শ দেয়ার দুহসাসস নাই দেখালাম। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
এতো অনিন্দ্য মন্তব্যে কি লেখা উচিৎ সেটা তো আমিও জানিনা ইমন ভাইয়া।
অফুরান ভালোবাসা রইলো। -{@