কৃষ্ণভক্ত কবি জয়দেব এর এক অমর ও অতুলনীয় সৃষ্টি গীতগোবিন্দ ।। এই গীতগোবিন্দের দশম সর্গের নবম পদটি রচনাকালে জয়দেব “স্মরগরলং – খন্ডনং মমশিরসিমন্ডনম “— এ পর্যন্ত লেখার পর পরের পদটি আর লিখতে পারছিলেননা । কারন এরপর তিঁনি লিখতে চাচ্ছিলেন “শ্রীকৃষ্ণ রাধার চরণ ধরতে চাইবেন। ” অথচ তাঁর মনে হচ্ছিল সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড যাঁর পদতলে লুটায়— তিনি কি করে তাঁর প্রনয়িনীর চরণ ধরতে চাইবেন ? — তাই পদটি তাঁর মনে এলেও কিছুতেই সেটা লিখতে পারছিলেননা ।
একদিন দুপুরবেলা তাঁর স্ত্রী পদ্মাবতী তাঁর খাবার প্রস্তুত করে তাঁকে স্নান সেরে আসতে বললেন । কবি গেলেন পাশের অজয় নদে স্নান করতে। পদ্মাবতী আহারের আয়োজন সম্পন্ন করে দেখলেন স্বামী স্নান সেরে এসেছেন। তিনি তাঁকে তাড়াতাড়ি খেতে দিলেন ।
খাওয়া শেষে কবি পদ্মাবতীকে পুঁথিখানা আনতে বললেন ।
পদ্মাবতী পুঁথি এনে দিলে তিনি লিখলেন — “দেহিপদপল্লবমুদারং ” ।।
এরপরে তিনি বিশ্রাম নিতে ভিতরের কক্ষে চলে গেলেন ।
তখন পদ্মাবতী স্বামীর ভুক্তাবশিষ্ট থালায় নিজে খেতে বসলেন।
এমন সময় দেখেন তাঁর স্বামী কবি জয়দেব স্নান সেরে ভেজা কাপড়ে ঘরে ফিরছেন ।। পদ্মাবতী বিমূঢ় হয়ে মূর্ছা গেলেন। পরে একথা তার স্বামীকে জানালে জয়দেব ভিতরের কক্ষে গিয়ে কাউকেই পেলেননা ।।
তারপর গীতগোবিন্দ খানি হাতে নিয়ে দেখলেন তাঁর দীর্ঘদিনের অসমাপ্ত পদখানি লেখা হয়ে গেছে ।।
তখন তাঁরা দুজনই বুঝতে পারলেন যে ভক্তবৎসল শ্রীকৃষ্ণ তাঁর প্রিয় কবির মর্মবেদনা সইতে না পেরে নিজেই কবির রুপ ধারন করে এসে নিজের হাতেই লিখে দিয়েছেন কবি জয়দেবের সেই কথা যা লিখতে তাঁর ভক্তের হৃদয় ব্যথিত হয়ে উঠেছিলো ।।
★★ সহৃদয় পাঠক, এটা অত্যন্ত প্রাচীন শ্রুতি, দয়া করে যুক্তির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে আমাকে বিপদে ফেলবেন না ।।
৮টি মন্তব্য
আদিব আদ্নান
তেমন জানা নেই ।
আপনার কাছে জানতে পারলাম ।
জিসান শা ইকরাম
জানতামনা বিষয়টি । তবে বেশ মজার । শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ।
এমন লেখা লিখবেন আরো ।
স্বপন দাস
ধন্যবাদ জিসান ভাই ।।
ব্লগার সজীব
কেউ কারো চেয়ে কম প্রেমিক নন । এমন লেখা আরো দিন ।
স্বপন দাস
অবশ্যই সজীব ভাই । ধন্যবাদ ।।
মিসু
দারুন তো । আপনার লেখা গুলো থেকে সব সময়ই নতুন কিছু জানতে পারি । আরো লিখবেন ।
যাযাবর
কৃষ্ণ প্রেমিক কে কৃষ্ণের উপহার , সুন্দর ।
লীলাবতী
(y) (y)