দেখিয়া জটলা, নামাইলাম পোটলা-১

আবির ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪, বুধবার, ০৮:১৭:০২পূর্বাহ্ন রম্য ২৪ মন্তব্য

ঘটনা: এক

বড়দিনের ছুটি সাথে সাপ্তাহিক কয়েকটা ছুটি পাইলাম, ভাবলাম ঘুরে আসি একটু কাছের দূর-দুরান্ত থেকে। ভাবের-সাথে টাব না মিশাইয়া লাইনে গিয়া দাড়াইলাম, ট্রেনের টিকেট কাটবো বলে। মুরুব্বীর কথা বাসি হলেও ফলে তাই বলে মুরুববীদের কথা শুনতে হবে সেই বোকা আমি না, শেয়ালের লেজ কাটা গল্প জীবনের শুরুতেই পড়েছি আর তাই মুরুব্বীরা ক্যামনে জ্বলতে জ্বলতে তামা হইছে বুঝতে পারি। যাকগা আসল কথায় আসি, কোন মুরুব্বী একবার বলেছে যে “মিঠা কথায় চিড়া ভেজে না” আর সবাই এখন এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে, মিঠা কথায় চিড়া ভিজাইতে না পাইরা জোর কইরা জলে চুবাইয়া চিড়া ভেজানোর প্রথা লক্ষনীয়। মাঝে মাঝে এই চিড়া ভেজাতে অস্ত্র-সস্ত্রের প্রয়োজন পরে আর তাই আমি এইডা মানি না। আজকা মিঠা কথাতেই চিড়া ভেজাবো, আর সেই চিড়া ভেজাতে ভেজাতেই লাইনের শেষজন থেকে চলে এসেছি লাইনের মাঝখানে। লাইনে যাদের দাড়ানোর অভ্যাস আছে তারা নিশ্চই জানেন তা কত সাফল্যের। ঠিক মাঝখানটাতে এসেই দেখা পেলাম সেই মহান ব্যক্তির যিনিই কিনা একমাত্র বললেন, “আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনার খুব তাড়া, আপনি আমার সামনে এসে দাড়ান”, কিছুটা অবাক হলেও কোনো কথা না বাড়িয়ে পিছনে ঠেলে তার সামনে এসেই দাড়ালাম আর ভাবছিলাম “ইশ এমন যদি সবাই হতো তাহলে আমাকে আর লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজনই পরত না। পিছনে তাকিয়ে দু-একবার তার মুখের দিকে লক্ষ্য করে বুঝতে পারলাম বেচারা খুব সহজ সরল, আমার আবার এমন মানুষ দেখলে আড্ডা জমানোর এক আকাংখা কাজ করে, তাই সামনে আর আগানোর চিন্তা না করে লাইনে দাঁড়িয়ে তার সাথে গল্প জমানোর চেষ্টা শুরু কিন্তু সে বড়ই বেরসিক, বেহিসাবী শব্দ মুখ দিয়ে বের করতে যেন বড্ড মানা। মুখ দিয়ে যেন তার কোন কথাই আসে না। যাইহোক কিছুক্ষণ পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকার পর উনি তার পিছনের জনকেও সামনে নিয়ে এসেছেন। আহ! কি মানুষ। এই মহান ব্যক্তির কথা ভাবতে ভাবতে দীর্ঘ ২৫ মিনিট পর টিকিট কাউন্টারে পৌঁছে গেলাম, বিপত্তি বাধে সেখানেই যখন বুঝতে পারি পিছনের পকেটে কেটে সাবাড় করে দিয়েছেন সেই মহান ব্যক্তিটি। তার মহত্ত্বের কবলে আমি সহ আরো তিন জন।

ঘটনা: দুই

পকেট মারের কবলে পরে সারাটা দিন যেন নিজেকেই নিজে দোষারোপ করছিলাম, ইশ! মুরুব্বীদের কথা বাসী হলেও ফলে আগে যদি বুঝতাম তাহলে এমনটি আর হতো না। মন খারাপ করেই লগইন করলাম সোনেলাতে, স্টিকি পোষ্টে ঝুলছে ব্লগ সঞ্চালকের একটি পোষ্ট। দুদিন ধরেই ঝুলছে কিন্তু এটা আমার কোন সমস্যা না, বর্তমানের যুগ বিজ্ঞানের যুগ আর ই বিজ্ঞানের যুগে অসম্ভব শব্দটিকে অভিধান থেকে তুলে দেয়ার তুমুল প্রয়াস চলছে, এখন আমার মনে ভাবনা জন্মালো এই ব্লগ সঞ্চালকটা কে? মানুষ নাকি বিজ্ঞানেরই এক সফলতা রোবট ! কেউ দেখেছে কি না এই ব্লগ সঞ্চালককে, কারো পোষ্টে মন্তব্য নেই, গম্ভীর এক ভাব বজায় রাখেন সবসময়, কথা কম বলাতো দূরের কথা বলতে জানেন কি না তাতেও সন্দেহ জেগে উঠলো হঠাৎ করে, আজকাল বিজ্ঞান কি’বা না পারে!, সবচেয়ে আশ্চর্যজনক হলো ব্লগ সঞ্চালকের সজোরে নিশ্চুপ অবস্থান (সোজা করে যাকে বলে ঘাপটি মারা), অনাকাংখিত যে কোন কিছুতেই অবিলম্বে তার উপস্থিতি টের পাওয়া যায়, এখন মনে প্রশ্ন জাগা কি স্বাভাবিক নয় যে এইভাবে গম্ভীর হয়ে নিশ্চুপ থাকা একজন মানুষের পক্ষে কতটুকু সম্ভব? এইবার আমার ইচ্ছা এই ব্লগ সঞ্চালক যিনি তাকে একবার দেখার! আর কেউ যদি দেখে থাকেন অনুরোধ থাকবে উনার বর্ণনা বর্ণনা করার জন্য।

লেখা শেষ করে বুঝতে পারলাম উপরোক্ত দুটি ঘটনায় একটা বিষয়ের বেশ মিল আছে তা হলো দুটো ঘটনাতেই তারা কথার চেয়ে কাজকে বেশি মূল্য দিয়েছেন অথবা দিয়ে থাকেন।

অবশেষে মুরুব্বীদের সাথে ঠোটে ঠোট মিলিয়ে আজকের মতো বলতে চাই: কথার চেয়ে কাজ বেশি *******************

১জন ১জন
0 Shares

২৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ