♪♪__তিতা কথা-৩__♪♪
===>>>^^^^<<<===
দুই বন্ধুর আলাপ হচ্ছিল। আক্কেল আলী বলল, লোকেরা বলে, হুসে-জ্ঞানে মানুষ। অর্থাৎ যার হুস মান-সম্মত তিনিই মানুষ।
সবজান্তাঃ ঠিকই তো আছে, তুই কি এর উল্টা বলিস নাকি?
আক্কেল আলীঃ অথচ দেখ, অনেক মানুষ আছে যারা হুসে ষোল আনা হলেও জ্ঞানে মাতাল।
সবজান্তাঃ বুঝিয়ে বল!
আক্কেল আলীঃ ধর, পার্শ্ববর্তী পড়শির সাথে ঝামেলা হল, টাকা-পয়সা, জায়গা-জমি, ব্যবসা-বাণিজ্য অথবা সন্তানদের ঝগড়ার কারণেও হতে পারে। হতে পারে হাঁস-মুরগী, গরু-ছাগলের কারণে। কিন্তু ঘটনাগুলো রাগের মাথায় টানতে টানতে এতদুর নিয়ে যাওয়া হয় যে, মূল ঘটনার ফেসভ্যালুর ১৫/২০ গুণ এমনকি তারও বেশী টাকা খরচ করে ফেলে উভয় পক্ষ অথচ কোন সমাধানে পৌছতে পারে না।
সবজান্তাঃ ঠিক বলেছিস, এ ব্যাপারে আমি তোর সাথে একমত। অনেক সময় এমনও দেখা যায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে পরিমাণ অর্থ রাগের মাথায় অপচয় করা হয় তা দিয়ে পল্লীগ্রামে একটি কালবার্ট, একটি স্কুল কিংবা মাদ্রাসা অথবা একটি হাসপাতাল হতে পারতো। কিন্তু রাগে মানেনা আপনে মোড়ল. . .
আক্কেল আলীঃ দোস্ত রাগে মানে না আপনে মোড়ল মানে কি? এতদিন তো জানতাম অন্যরকম!
সবজান্তাঃ আরে, সব সময় সব কথার মানে খোঁজা ঠিক না। আসল কথায় আয়।
আক্কেল আলীঃ আচ্ছা বাদ দে, আসল কথা হচ্ছে আমরা যদি রাগটাকে ফিল্টারিং করতে পারি তাহলে আমাদের অপচয়টা অনেকাংশে কমে যেতে পারে।
সবজান্তাঃ ফিল্টারিংটা কি রকম?
আক্কেল আলীঃ ধর, রাগ, অভিমান, মারামারি সব হল। কিন্তু সেটার প্রতিক্রিয়া বা প্রতিশোধ নিতে গিয়ে আমরা যদি ঘটনার ভেল্যুয়েশন করে আগ বাড়াই তাহলে হিসেবে লজ হবে না।
সবজান্তাঃ যেমন?
আক্কেল আলীঃ একজনের ছেলে খেলতে গিয়ে পাড়ার অন্য ছেলের সাথে মারামারি করে কানের পাশে সামান্য কেটে রক্ত বের হয়। এতে যদি আহত ছেলেটির বাবা ১ হাজার টাকা খরচ করে মেডিকেল সার্টিফিকেট যোগাড় করে আরো হাজার টাকা থানায় খরচ করে ‘এটেম টু মার্ডার’ কেস করে তাহলে প্রতিপক্ষ তো আর বসে থাকবে না? অথচ বড়জোর ২০০ টাকার ওষুধ খেলে কাটা ঘা শুকিয়ে যেত। সামাজিক ভাবে মিমাংশায় আসা যেত। কিন্তু আমরা ব্যাঙ কে টানতে টানতে সাপ বানিয়ে ফেলাতে ওস্তাদ।
সবজান্তাঃ শেষ কথা কি ?
আক্কেল আলীঃ শেষ কথা হচ্ছে, মাথা ঠান্ডা রেখে শান্ত মেজাজে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়া। রাগের মাথায় সিদ্ধান্ত না নেয়া এবং কিছু স্থুল বুদ্ধির স্বঘোষিত বিচক্ষণ(পন্ডিত) বন্ধু বা পড়শির কথা বা পরামর্শ এড়িয়ে চলা।
সবজান্তাঃ অতএব মানুষ হতে হলে হুসটা মানসম্মত হতে হবে, এইতো?
আক্কেল আলীঃ একজেক্টলী তাই!
১০টি মন্তব্য
বন্যা লিপি
হিসেবে লস্ তো হবারই কথা রাগের মাথায় কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া।
আপনার হিসেবেও গোঁজামিল আছে দেখছি।
এধরনের জ্ঞানমূলক অথবা বলা যেতে পারে শিক্ষামূলক পোস্ট রম্য বিভাগে যেতে পারে না।
রম্য ব্যাপারটাই হাসি মজার লেখা।
আশা করি পরবর্তিতে বিষয়টা খেয়াল রাখবেন।
এবং লেখা বিষয়ে মতামত প্রদান নেতিবাচক না দেখলেই কৃতজ্ঞ হবো।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
“আপনার হিসেবেও গোঁজামিল আছে দেখছি।”
গোঁজামিল কথাটি না বলেও পারতেন!
‘তিতা কথা’ সিরিজটি আমার অভিজ্ঞতালদ্ধ এমন কিছু বিষয় যেগুলো এমন কথা সত্য হলেও শুনতে তিতা লাগে। এগুলো বিভাগ নির্বাচন করতে গিয়ে আমি হয়তো ভুল করেছি। আপনি পরামর্শ দিতে পারতেন!
যাই হোক এটাকে আমি একান্ত অনুভূতি বিভাগে এড দিচ্ছি।
আর,
‘‘এবং লেখা বিষয়ে মতামত প্রদান নেতিবাচক না দেখলেই কৃতজ্ঞ হবো।’’
আমি অবশ্যই নেতিবাচক নই আপু, সমালোচনা আমি আশা করি।
তবে গোঁজামিল বলাটা সমালোচনা নয়। ভুল আছে বললে হয়তো সমালোচনা হতো।
যাই হোক, আপনার জন্য শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
কথায় আছেনা? রেগে গেলেন, হেরে গেলেন।
এটা রম্য না হয়ে শিক্ষামূলক হলে ভালো হতো।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন এটা রেগে গিয়ে হেরে যাবার মতই। আমি দেখেছি গ্রামাঞ্চলে একটি মামলা ৫০/৬০ থেকে এখনও চলছে। যে জায়গার জন্য মামলা চলছে সে জায়গা ৫ বার বিক্রি করলেও মামলার খরচ উঠবে না।
শিক্ষামূলক নামে কোন বিভাগ নেই। তাই এটাকে একান্ত অনুভূতিতে রেখেছি।
পরামর্শ দেয়ার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
ছাইরাছ হেলাল
‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন’
লেখায় এ কথাটি সুন্দর করে ফুটে উঠেছে।
চালু থাকুক তিতা।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
পড়ে সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
তিতা কথা মাঝে মাঝেই লিখার ইচ্ছা আছে।
নিতাই বাবু
দশ কথার এক কথা।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
আন্তরিক ধন্যবাদ দাদা।
সাবিনা ইয়াসমিন
অন্যপক্ষকে বিপাকে রাখার জন্য অনেক সময় মানুষ নিজের বিপদ টেনে আনে। আর এতে অসুস্থ মনের লোকেরাও ইন্ধন যোগায়। যেকোনো পরিস্থিতিতে সময় নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে পদক্ষেপ নিলে, অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা এড়ানো সম্ভব। কিন্ত এত সময় কজনই নেয়!
সত্যি কথাগুলো তিতাই হয়। উপকারী খাবারের স্বাদও অনেক সময় তিক্ত হয়। যে/ যারা এগুলো গ্রহন করতে পারে, উপকৃত তারাই হয়।
চলুক তিতা কথা :
শুভ কামনা 🌹🌹
চাটিগাঁ থেকে বাহার
দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আপু।
ভালো থাকবেন।