আকাশকে বলেছিলাম, আমার দুঃখ গুলি তোমার কাছে বিক্রি করবো কিছু উজ্জ্বল জোছনার বিনিময়ে। তুমি আমার দুঃখ গুলি তোমার আকাশে মেঘ করে ভাসিয়ে নিয়ে যেও। দূরে কোন আগ্নেয়গিরির উপর সেই মেঘের বর্ষণ রূপে ঝড়িয়ে দিও।
সে আমার কথা শুনে পাগলের প্রলাপ মনে করেছিল। ভুল বুঝে দূর থেকে দূরে অবস্থান নিয়েছিল। এতটা দূরে যে এখন তার প্রকৃত অবস্থান নিয়ে মনে সংশয় কাজ করে। তার মেঘ গুলিকে এত দূরত্বে নিয়ে গিয়েছিল যে এখন উঁচু কোন ইমারতের উপর দাড়িয়েও তাদের পরশ পাওয়া যায় না।
কিন্তু এখনো তার কান্না দিয়ে আমাকে ভিজিয়ে দিতে ঠিকই বর্ষণ ঘটায় করে সে। আমি তার কান্না গুলি এড়িয়ে যাবার জন্যে ছাতা মাথায় বের হয়ে যাই। তার অভিমান থেকে আমার অভিমানই বা কম কিসে? আমি এড়িয়ে যাই তার কান্না তার সামনে দিয়েই। হেটে বেড়াই তার কান্নায় ভেজা রাজপথ।
এরপর কোন এক এক ঝলমলে জোছনা রাতে আমাকে অবাক করার জন্যেই দৃষ্টির পুরো আকাশটা আলোকিত করে দিল। আমি বিস্ময় আর আক্ষেপ মিশ্রিত এক দৃষ্টি নিয়ে সেই জোছনা উপভোগ করতে লাগলাম। যদিও মনে মনে পুলকিত হচ্ছিলাম এই ভেবে যে, আমার কষ্ট গুলি না নিয়ে কেন সে এই জোছনা আমায় দিলো।
তখনই সে ঐ দূর থেকে আমাকে এর উত্তর দিল। বলল, তোমার দুঃখ সত্যিই কি আমি নিয়ে যাই নি? ভালো করে তোমার দুঃখের ভাণ্ডার একটু হাতরে বলতো, সেখানে কি সেই একই পরিমাণে দুঃখ রয়েছে যতটা ছিল ঐ সময়টাতে?
আমি আমার দুঃখ বোঝাই মলিন ব্যাগ হাতড়াতে শুরু করলাম। সত্যিই সেখানে সেই পুরনো দুঃখ গুলি নেই। বেশ কিছু নতুন অভিমান দিয়ে সেটা ভরাট করা আছে, কিন্তু দুঃখ গুলির কানাকড়িও খুঁজে পেলাম না। অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, আমার দুঃখ গুলি সে কখন এভাবে নিয়ে নিলো???
উত্তরে জানালো, তুমি যেদিন প্রথম আমায় তোমার দুঃখ বয়ে নেবার আহবান জানালে, আমি সেই দিনটা থেকে অল্প অল্প করে তোমার দুঃখ তোমার অগোচরেই নিয়ে নিয়েছি ঐ ব্যাগটা থেকে। কিন্তু তোমার থেকে দূরে গিয়েই করতে হয়েছে আমাকে ঐ কাজটুকু। না হয় তোমার থলে ঐ সব অভিমান দিয়ে ভরে উঠত না। আর শূন্য থলে নিয়ে ঘুরে বেড়ালে কেউ তোমাকে অতটুকু দাম পর্যন্ত দিতো না।
এরপর তোমার শহরের উত্তপ্ত রাস্তায় আমি সেই কষ্টগুলিকে বর্ষণ করেছি। তুমি তোমার কষ্ট মাড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছ নতুন শতাব্দীতে, পিছনে শুধু তোমার কষ্ট গুলি ফেলে গিয়েছ আর নিয়ে গেছো অভিমান আমাকে ঘিরে।
না, সেই অভিমান আমি আর ধরে রাখতে পারি নি। শুধু অবাক আর বিস্ময় নিয়ে সেই রাতটা কাটিয়ে দিয়েছি জোছনার পিছনের ঐ শূন্য আকাশটা দেখতে দেখতে……
১৪টি মন্তব্য
আদিব আদ্নান
জ্যোৎস্নার সাথে থেকে আমাদের জন্য লিখতে থাকুন ।
অলিভার
ধন্যবাদ 🙂 চেষ্টা করবো।
শুভ কামনা থাকলো 🙂
বনলতা সেন
পশ্চিম ছাড়াও আপনি লিখছেন দেখে আনন্দিত ।
ভাল ।
অলিভার
পশ্চিম নিয়ে লেখাটা একটা এক্সপেরিমেন্ট ছিল।
ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত বোধ করছি।
শুভ কামনা থাকলো 🙂
জিসান শা ইকরাম
দুঃখ শুন্য হবার অনুভুতিটা ভালো লেগেছে ।
লেখক তো বেশ শব্দ গুছিয়ে লিখতে পারেন 🙂
বিভাগ নির্বাচনটা মনে হয় সঠিক হয়নি ।
বিবিধ না হয়ে এটি ‘ একান্ত অনুভুতি ‘ বিভাগে প্রকাশ করলে ভালো হতো ।
শুভ কামনা -{@
অলিভার
ধন্যবাদ ভাইয়া।
বিভাগ নির্বাচন নিয়ে আমিও একটু সন্দিহান ছিলাম। পরামর্শের জন্যে আবারো ধন্যবাদ। ঠিক করে দিয়েছি 🙂
আপনার জন্যেও শুভ কামনা থাকলো -{@
ছাইরাছ হেলাল
বেশ সুন্দর হচ্ছে ।
আরও লিখতে হবে ।
অলিভার
চেষ্টা থাকবে 🙂
মা মাটি দেশ
পশ্চিমা ভাইয়া এটাও ভাল হয়েছে। -{@
অলিভার
:D)
ভাইয়া আমি পশ্চিমা নই। আমি বাংলাদেশি পরিচয়েই অনেক ভালো আছি।
শুভ কামনা থাকলো ভাইয়া -{@
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
সোনেলায় নুতন লিখছেন । আপনার লেখার হাত বেশ ভালো । আর লিখছেন কোথায় ? শিরোনাম , ছবি , লেখা সব পারফেক্ট (y) -{@
অলিভার
আগে ঠিক ঐভাবে লিখতাম না। তবে সামহোয়্যার-ইন-ব্লগে অনেকদিন ধরে অনেকের লেখা পড়ছি। মাঝে মাঝে টুকিটাকি লিখেছিলামও তবে ঐভাবে কিছুই না।
প্রশংসার জন্যে ধন্যবাদ -{@
শুন্য শুন্যালয়
বেশ সুন্দর গোছালো লেখা। এরকম চুপিচুপি কথাবার্তা কি আরো চলে? নিজের দুঃখ মাড়িয়ে সামনে এগিইয়ে যাওয়া। সত্যিই সুইট লেখা।
অলিভার
ধন্যবাদ।
চুপিচুপি চলে কিনা জানি না। তবে মাঝে মাঝে হয়। কিছু কথা শব্দে পরিণত হয় মাঝে মাঝে আর অনেক কথাই হয় না।
শুভ কামনা জানবেন 🙂