“Life is not a bed of roses”—প্রবাদটি সেই স্কুল জীবন থেকেই শুনে এসেছি আমি। মানে জানতাম, কিন্তু বুঝতাম না। এই জানা এবং বোঝা দুটো শব্দই মারাত্মক ভয়ঙ্কর। কোনো জানা জিনিস বুঝিয়ে দেয়া যেমন সহজ নয়, তেমনি বুঝেও অনেক কিছুই জানানো যায়না। জীবন তাই যেমন সহজ, তেমনই কঠিন। কেউ কেউ বলে কান্না করলে কষ্ট কমে, আর এই কান্না দেখেই অনেকে বলে “কী বিরক্তিকর!” কারো কারো মুখটাই হাসি হাসি, তাদের মনের ভেতরে যন্ত্রণায় দগ্ধ হয়ে গেলেও কেউ সেটা বুঝতে পারেনা। আবার সেই হাসির কারণেই ক্ষতিগ্রস্থ হয় সেই হাসি হাসি মানুষগুলো। আসলে আমরা মানুষেরা কারোর কোনোকিছুতেই সন্তুষ্ট নই। নিজের কাজে নিজেরাই কি পরিতৃপ্ত হই? নাহ!
এসব বিভিন্ন ভাবনা কিংবা ঝামেলা আমাদেরকে সবসময় এলোমেলো করে রাখে। প্রচুর পরিশ্রম, “ইস রে কখন যে বিশ্রাম পাবো!” চাকরী নেই, অফুরান সময়, “হায়রে এমন বিশ্রাম তো চাইনি।” আসলে “নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস” এই লাইনটি রবীন্দ্রনাথ সেই কবে লিখে গিয়েছিলেন, এই ২০১৭ সালে এসেও সেটা পুরোনো হয়নি। আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকমের চাপের ভেতর থাকি। যেমন আর্থিক, সামাজিক, সন্তান-সংসার, কর্মস্থল ইত্যাদি বহুকিছু। এসব থেকেও একধরণের স্ট্রেস সৃষ্টি হয়। কিন্তু এসব স্ট্রেস আছে বলেই আমরা কিন্তু ভালো থাকি। এসব স্ট্রেস আমাদেরকে প্রেরণা জোগায়, আমাদেরকে বিভিন্ন বিপদ সম্পর্কে সতর্কও করে দেয়। Stress অর্থাৎ কঠিন চাপ, যার সঠিক বাংলা অর্থ নেই। এই স্ট্রেস যখন পুরোপুরি আক্রান্ত করে ফেলে, তখন সেটা ভয়ঙ্কর ডিপ্রেশনে চলে যায়।
বিষণ্ণতা ভয়ঙ্কর রোগ, যা সহজে সারে না। আমি চেষ্টা করবো সেই স্ট্রেস এবং ডিপ্রেশন নিয়ে বলতে। যদিও সেসব আমার নিজেরই কথা। নিজের জীবন থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি কিনা! সেগুলোই সবার সামনে তুলে ধরবো। অন্তত কেউ যদি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়, কীভাবে তার থেকে মুক্ত হওয়া যাবে সেই পথ দেখানোর চেষ্টা করবো আমি। আশা করি এ পোষ্টের পাশে থাকবেন সবাই।
হ্যামিল্টন, কানাডা
১৭ নভেম্বর, ২০১৭ ইং।
১৪টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
কোনো জানা জিনিস বুঝিয়ে দেয়া যেমন সহজ নয়, তেমনি বুঝেও অনেক কিছুই জানানো যায়না। যথার্থ কথা।
আমরা কি চাই তাইতো জানিনা, জানি কী???
অসম্ভব ভাললাগলো লেখাটী।
শুভেচ্ছা অবিরত।
নীলাঞ্জনা নীলা
মজিবর ভাই জীবনে প্রচুর ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখীন হই আমরা সকলেই। তাইতো জীবন এতো রহস্যময়। আর রহস্যময়তায় ভরা বলেই জীবন এতো সুন্দর। আমরা যদি জানতাম আগামীকাল কি হতে যাচ্ছে, তাহলে কী একঘেঁয়েমি চলে আসতো না? এই যে রোজ অফিস যাঁরা যান, সবাই জানেন কি কাজ করতে হবে। তাইতো সপ্তাহের একটা দিন ছুটির এতোটা অপেক্ষায় থাকি আমরা সকলেই।
আশা করি লেখাটির শেষ পর্যন্ত থাকবেন।
ভালো থাকবেন।
মোঃ মজিবর রহমান
হ্যাঁ আপু আছি পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
নীলাঞ্জনা নীলা
মজিবর ভাই অনেক ভালো থাকুন।
মোঃ মজিবর রহমান
আপনার লেখার উপর পড়ে ছোট্ট মন্তব্য দিয়ে আবার কয়েকবার পড়লাম কিন্তু শেষ করতে পারছিনা এই ছোট্ট লেখার বিশালতা। পরে পর্বে আরো অনেক জানার অপেক্ষায় রইলাম।
নীলাঞ্জনা নীলা
মজিবর ভাই হুম পরের পর্ব দিয়ে দেবো। জানিনা কতোটা কাজে আসবে! তবে আমার চেষ্টা থাকবে কেউ একজনও যেনো নিজেকে ফিরে পায় আমার এই লেখা পড়ে।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
আপু নিয়মিত আসা চাই ব্লগে। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
মজিবর ভাই ব্লগে আসা মানে মনকে খুব স্থির-ধীর করে নিয়ে আসা। আর আজকাল আমার সেটাই হচ্ছেনা। ব্লগে মন্তব্য করিনা। কিন্তু আপনাদের প্রায় সকল লেখাই পড়ি মন দিয়ে।
প্রহেলিকা
খুব সুন্দর বলেছেন। ভুক্তভোগীরা উপকৃত হবেন নিশ্চত। লেখা যেন লেখা নয়; গভীর দর্শনের প্রতিবিম্ব।
অপেক্ষায় থাকছি তাহলে। আশা করছি ভালো কিছুই পেতে যাচ্ছি। সবুরে মেওয়া ফলে আবারও প্রমাণিত হোক।
নীলাঞ্জনা নীলা
অনেকদিন পর! “এতোদিন কোথায় ছিলেন!”— 🙂
সবুরে মেওয়া ফলবে কিনা, কে জানে! তবে আশা করছি এই লেখাটি শেষ করার।
লেখাটির পাশে থাকলে গড়গড়িয়ে চলবে, তা নইলে অন্য কোনো আশার পথ দেখছি না।
অনেক ভালো থাকবেন।
নীরা সাদীয়া
অনেকদিন পর ব্লগে এলাম। এসেই এমন একটা মনের মত বিষয় নিয়ে আলোচনা পেলাম। ভালো লাগলো।
যখন বেশি অবসর থাকে তখন মনে মনে ব্যস্ততাকে খুঁজি । আবার যখন বেশি স্ট্রেস যায়, তখন অবসর খুঁজি। “নদীর এপার কহে….” এরকমই আমাদের জীবন।
বেশি ব্যস্ত হবার জন্য আবার চাকরিও খুঁজি। জানিনা পাবো কিনা।
যাই হোক, আমি আপনার লিখার একজন ভক্ত পাঠক। এরকম সুন্দর সুন্দর বিষয়ের আলোচনা আরও হোক।
শুভকামনা রইল।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপুনি আমিও তোমার লেখার ভক্ত কিন্তু।
অনেক ভালো থেকো।
জিসান শা ইকরাম
বিষণ্ণতা যে কতটা মানসিক অশান্তির কারন হয়, তা কেবল ভুক্তভোগিই জানেন,
এ থেকে পরিত্রানের পথ জানি, তবে সে পথে হাঁটা হয়না আমার, এটিও নতুন এক স্ট্রেস।
ভিন্ন ধরনের লেখা শুরু করেছিস,
ভাল লাগছে।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা আমি জানি আমার উপর তোমার অভিমান জন্মেছে। কিন্তু কি অবস্থার মধ্য দিয়ে চলতে হচ্ছে আমাকে, মামনি-বাপি ছাড়া কেউই আর বোঝার নেই।
যাক চেষ্টায় থাকবে নিয়মিত না আসতে পারলেও সপ্তাহে অন্তত একটি দিন আসবার। একটা কথা বলবো? এই যে বসে বসে ব্লগে এসেছি, পা আরোও ফুলে ঢোল হয়ে গেছে।
ভালো থেকো অনেক। -{@