সাত সকালে বগা লেক থেকে হাটা দিলাম আমরা ১০ জন । চিঙরি ঝরনা দেখে সাজু আর যাকি ভাই ফিরতি পথে চলে গেল ।
৮ জন সামনে এগিয়ে চললাম । দারজিলিং পাড়ায় এসে বসে পরলাম ক্লান্ত হয়ে । দোকানের মালিক বল্ল কেওকারাডাং না উঠে পাস দিয়ে নেমে গেলে অনেক সুন্দর এক্টা পাড়া আছে লুংথাউছি নামে । অই দিকে অনেক ঝরনা আছে সুন্দর সুন্দর । যেই কথা সেই কাজ, রওনা দিলাম । কিছুদুর নেমে মাথা নষ্ট । পুরা খাঁড়া রাস্তা । এক পাথর থেকে অন্য পাথর ৫ ফিট নিচে। কিছুক্ষণ দাড়িয়ে ভাবতে হয় পরবর্তী পা কোথায় ফেলব ।
যখন অনেক হয়রান হয়ে যাই তখন পেছনে তাকিয়ে আসিফের দিকে তাকাই । ছোটখাট হাতির ছানার মতন শরীরটা নিয়ে ও যখন পাহাড় বেয়ে নামছে তখন শরীরে এক্সটা শক্তি পাই ঐ দৃশ্য দেখে । ৩ টা পাহাড় পার হয়ে গেলাম তাও লুংথাউছি’র দেখা নাই । গাইড কবির আশ্বস্ত করলো আর মাত্র একটা পাহাড় । আরও দুইটা পাহাড় পার হয়ে দেখা মিল্ল লুংথাউছি পাড়ার,
সূর্য মামা ও বিদায় নিলো পাড়ায় ঢুকার সময় । শিমুল ভাইয়ের কাছ থেকে একটা তাবু নিয়ে এসেছিলাম । রাতে ৪ টা তাবু টানানোর পর শুরু হল বৃষ্টি ।
গিয়ে ঢুকলাম কারবাড়ির বাড়িতে। জুনায়েদ তার সুমিষ্ট কন্ঠে গান ধরলো, ইনডোর স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ ততক্ষনে । অবশেষে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে দুই বাসায় রাত্রি যাপন । সকালে আবার যাত্রা শুরু । আসিস এইবার আগে আগে হাঁটা দিলো গাইডের সাথে । রাতের বৃষ্টিতে পথ পুরো পিচ্ছিল । আসিফ নেমেই ধপাস করে পরে গেলো। দুইটা কচি বাঁশ আত্নরক্ষায় ধরলো, ঐ দুইটাও হুরমুর করে ভেঙ্গে গেলো ।
প্রায় ১৫ ফিট রাস্তা স্লাইডিং হয়ে গেলো । নামা মুস্কিল হয়ে পরলো । ওরে রিকোয়েষ্ট করলাম ভাই তুমি পিছে থাকো । তুমি আগে থাকলে আম্রা নামার জন্য রাস্তা খুঁজে পাবো না । বেচারা রিকোয়েষ্ট শুনে কিছুক্ষন ঝিম মেরে বসে রইলো, সেই সুযোগে আম্রা পার হয়ে গেলাম ওরে পেছনে রেখে ।
পাহাড়ের নীচে এসে দেখা মিল্লো ঝিরির ।
লালমিং হেসে হেসে বল্লো সাবধানে দেখে-শুনে হাঁটেন, ঝিরিতে সাপ থাকতে পারে ।
ঐ কথা শুনার পর কলিজাতে পানি যা ছিলো তা বাস্প হয়ে উড়ে গেলো নিমিষের মধ্যে । প্রায় ঘন্টা তিনেক হাঁটার পর পৌছে গেলাম জিংসাম সেইতার ঝর্ণাতে । অদ্ভুত এক দৃশ্য, উপর থেকে পানির ধারা এসে মাঝখানে দুভাগ হয়ে দুপাশে পরছে ।
আমি ক্যামেরাতে বন্দি করার নিস্ফল প্রচেষ্ঠায় মগ্ন সেই সৌন্দর্য আর অন্য দিকে সবাই ঝাপিয়ে পরেছে ঝর্ণার শীতল জলে । অপু ভাইকে বলে আমিও ব্যাস্ত হয়ে পরলাম প্রোফাইল পিকচার তুলার প্রবাহে তারপর সবাই মিলে ঝাপিয়ে পরলাম ঐ পানির ধারায়………
ফটো বড় করে দেখতে চাইলে, ফটোর উপরে ক্লিক করুন
২৪টি মন্তব্য
খেয়ালী মেয়ে
পাহাড়ী কন্যার নীরব আর্তনাদ সেই জিংসাম সেইতার (y)
বোহেমিয়ান ভবঘুরে
হুম…ঐটাই… 🙂
সোনিয়া হক
ঝরনায় এত পানি প্রবাহ আছে দেশে? অনেক সুন্দর একটি স্থানের বর্ননা দিলেন ভাইয়া। আপনি মনে হয় পাহাড়ে ঘুরতে পছন্দ করেন 🙂 এমন লেখার জন্য ধন্যবাদ -{@
বোহেমিয়ান ভবঘুরে
ধন্যবাদ সোনিয়া হক…পাহাড়ে ঘুরাটা অনেকটা নেশা বলা যায়… 🙂
জিসান শা ইকরাম
পোষ্ট দেখে জায়গার প্রেমে পরে গেলাম 🙂
লেখাকে আকর্ষনীয় ভাবে উপস্থান করা শিখতে হবে বোহেমিয়ান এর কাছে।
দারুন ভালো লাগা এক পোষ্ট।
পাহাড়ের উপর নিঃসঙ্গ বাড়িটায় যাবার খুব ইচ্ছে ।
লীলাবতী
জিসান ভাইয়া ভবঘুরেকে চেনা চেনা লাগছে, আপনি চেনেন নাকি?
জিসান শা ইকরাম
একে বোহেমিয়ান, তারপরে আবার ভবঘুরে, কেমনে চিনবো আমি?
লীলাবতী
তাহলে একে ধরিয়ে দিন লিখে বিজ্ঞাপন দেবো নাকি? :p
বোহেমিয়ান ভবঘুরে
আপনের একবার নিয়ে যাওয়ার খুব ইচ্ছে আমার জিসান ভাই…
লীলাবতী
এমন পোষ্ট ভালো না লেগে পারেনা। কয়েকটা ছবি ছোট। বড় করা যায়না ?
জিসান শা ইকরাম
ছোট ছবি গুলোর উপরে ক্লিক করুন। বড় হয়ে যাবে। পোষ্ট দিয়ে কোথায় চলে গেছে ঠিক নেই 🙂
লীলাবতী
🙂 (y)
বোহেমিয়ান ভবঘুরে
https://www.facebook.com/ssweet.pain/media_set?set=a.10151151260369726.470746.777614725&type=3
ছাইরাছ হেলাল
আপনার বর্ণনা খুব সুন্দর, অল্প কথায় গুছিয়ে বলতে পারেন।
এদেশে এমন ঝর্ণা আছে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।
বোহেমিয়ান ভবঘুরে
দেশে যা ঝর্ণা আছে আমি তার ৫% ও দেখি নাই হেলাল ভাই 🙁
মরুভূমির জলদস্যু
আমি রুমা থেকে হেঁটে হেঁটে কেউকারাডং পর্যন্ত গিয়েছিরাম অনেক বছর আগে।
বোহেমিয়ান ভবঘুরে
পাইরেটস ভাই ব্যাপুক মিস করছেন…আর মাত্র ৩ গন্টা হাঁটলেই জাদিপাই ঝর্ণা দেখতে পারতেন…
শুন্য শুন্যালয়
এই পোলারে দেখলে আর তার বর্ননা শুনলে আমি বরাবরই হিংসিত হই, কপাল একটা।
পাহাড়ি কন্যার নীরব আর্তনাদ কেনো? আনন্দ উচ্ছ্বাসও হতে পারে। ভালো থাইকো।
বোহেমিয়ান ভবঘুরে
😀
মামুন
চিত্র সমৃদ্ধ পোষ্টটিতে অনেক ভালো লাগা রইলো।
শুভসকাল।
বোহেমিয়ান ভবঘুরে
ধন্যবাদ মামুন ভাই
ব্লগার সজীব
আচ্ছা এই ছোট ছোট তাবুতে ঘুম আসে রাতে?শিয়াল এসে তাবুতে আচর দেয়না? 🙂
বোহেমিয়ান ভবঘুরে
এখনো দেয় নাই…অদূর ভবিষ্যতের কথা জানি না…
কামাল উদ্দিন
দেখতে হবে এগুলো, কয়েকটি ছবি মিসিং