কখনও ভাবনায় পড়ে যাই-
পছন্দ শব্দটার উপর আপেক্ষিক প্রভাব আসলে কিসের ?
চোখের ?
না মনের ?
প্রশ্নগুলো মাথায় ঘুরপাক খায়, ঘুরে ফিরে প্রশ্নগুলো আবারও সেই একই প্রশ্ন করে, আমি সময় পেলে ঠান্ডা মাথায় যোগ বিয়োগ মিলাই, পছন্দ কাকে বলে!
গুণ ভাগ সরল অংক শেষেও- সে প্রশ্নের সঠিক জবাব খুঁজে পাইনা। তবে আশাহত নই, জীবনে একবার অন্তত “পছন্দ” শব্দটার সমার্থক অনুভূতি উপভোগ করার ইচ্ছে জাগ্রত থাকে হৃদয়ের প্রতিটি সূর্যোদয়ে।
যদিও সে সময় টি-শার্ট থেকে শুরু করে পেন্ট পিস পর্যন্ত মা কিনে আনতেন, ফিরোজা রংয়ের ডোরাকাটা লুঙ্গি মায়ের পছন্দ- হাতের তালুয় সরিষার তেল নিয়ে চিকচিক করে চুলে মাখিয়ে, বাম পাশে সিতা করে, কপালের উপর তেলে ভেজা হাতে চুলগুলো চাপড়ে দিয়ে, আয়নাটার সামনে দাড় করিয়ে বলতেন- দেখ ! এইবার আমার ছেলেকে সবাই পছন্দ করবে, আয় আয়, একটু থুথু দিয়ে দিই। এমন করে এটা করবি, এমনি করে দাড়াবি- আমার সব কিছু মায়ের পছন্দের-
তবুও নিজে থেকে পাত্রি পছন্দ করার মতো সৌভাগ্য/ সাংবিধানিকে অধিকার বা সুযোগ দুইবার পেয়েছিলাম-
একবার আমার বন্ধুর জন্য-
আর একবার আমার নিজের-
সেই প্রাইমারী জীবনের বন্ধু সজল, ওর সবকিছুতেই আমার পছন্দ হওয়া / পছন্দ করা জিনিষ লাগতো। খাতার কভার, কলমের রং, পেন্সিল বক্স থেকে শুরু করে শার্ট, পেন্ট, লুঙ্গি, পড়ার টেবিল সব আমার মতো, আমার পছন্দের। স্কুল, কলেজ পেড়িয়ে ইউনিভার্সিটিতে একই বিষয়ে পড়াশোনা। ওর হাতের লিখা হুবাহু আমার মতো, এতটাই অবিকল যে আমার মা ও সে লিখা দেখে বুঝতে পারতো না। ব্যাবধান বলতে আমি আমার পরিবারের একমাত্র সন্তান, আর সে চার বোনের একমাত্র বড় ভাই। তখন বিকম প্রথমবর্ষের ছাত্র আমরা। স্বাভাবিক ভাবেই সজলের পরিবার থেক ওর বিয়ের জন্য চাপ দেয়া শুরু হয়। মাত্র এগারো মাস বয়সের ব্যাবধানে ওর ইমিডিয়েট ছোট বোন কল্পনা দেখতে শুনতে অধিকতর সুশ্রী। দেহের গঠন আট দশজনের চেয়ে ভালো এবং এইচ এসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ায় তেমন বয়সের একটি সনাতন ধর্মের বিবাহ্যোগ্য মেয়ে যে কোন পরিবারের নিত্য চিন্তার বিষয়। সব বুঝে শুনে সজল তার মায়ের কথায় রাজি হলো এক শর্তে। “মেয়ে অবশ্যই অরণ্য (আমি) পছন্দ করে দিতে হবে।
আমি সব শুনে অবাক হলেও বিষয়টি সহজ ভাবেই মেনে নিই। সজলের পরিবারের পক্ষ থেকে শুরু হয় পাত্রি দেখা। জাত কুল / বংশ মর্যাদা মিলিয়ে সজলের মামা পাত্রি দেখে প্রাথমিক ভাবে “ওকে” বললেই আমি আর সজল ফাইনালি মেয়ে দেখতে যাবো।
ভাবছো এতকথা লিখে লিখে তোমাকে কেন বলছি ?
তুমি গল্প দুটো শুনলে হাসবে তাই, এই মুহুর্তে যেন তোমার হাসি মুখটা দেখতে পাচ্ছি। তোমার হাসি- আমার মায়ের পছন্দ আর আমার লোভ, তোমার চোখ- আমার মায়ের পছন্দ আর আমার তৃষ্ণা, সবটুকু তুমি- আমার মায়ের পছন্দ ছিলে-
আর আমার ?
আমার তুমি পছন্দ ছিলে না, ছিলে বুকের বামপাশে হৃৎপিন্ডের গতি, রকেট গতির সে নিঃশ্বাসে- তুমিহীনা আজকাল মোমবাতিটাও নিভেনা ভালোমতো।
চলবে-
১৯টি মন্তব্য
সুপায়ন বড়ুয়া
“আমার তুমি পছন্দ ছিলে না, ছিলে বুকের বামপাশে হৃৎপিন্ডের গতি, রকেট গতির সে নিঃশ্বাসে- তুমিহীনা আজকাল মোমবাতিটাও নিভেনা ভালোমতো।”
এই রোমান্টিক উক্তিটিই সেরা
শুভ কামনা।
এস.জেড বাবু
অনেক কৃতজ্ঞতা
বিচার শতভাগ সঠিক মেনে নিলাম-
মন ভরে গেল সেরা শব্দটা দেখে।
অনেক ভালো থাকবেন দাদা-
তৌহিদ
চিঠিতে মনের আবেগতাড়িত কথা চমৎকারভাবে লিখছেন বাবুভাই। পড়তে ভালোই লাগছে। ভালোবাসার মানুষ পাশে না থাকলে অর্থহীন লাগে সবকিছু।
ভালো থাকবেন ভাই।
এস.জেড বাবু
ভালোবাসার মানুষ দুরে থাকলে কলম রোমান্টিক আঁকে।
সত্যি তাই ভাইজান-
তবে আরও সত্যি হলো, তেমন ভাবনায় লিখতে চেষ্টা করা আরও কঠিন- যখন করোনার ছুটিতে পূর্বের তুলনায় চারগুণ সময় কাটাচ্ছি পরিবারের সাথে।
অনেক ভালো থাকবেন ভাইজান- সামনের পর্বগুলো পড়বেন আশা রাখি।
তৌহিদ
আসলে এত এত লেখা আসছে সকালে দেখিতো সেইলেখা বিকেলেই পরের পাতায় চলে যায়। তবু চেষ্টা করি পড়তে ভাই।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
তোমার হাসি- আমার মায়ের পছন্দ আর আমার লোভ, তোমার চোখ- আমার মায়ের পছন্দ আর আমার তৃষ্ণা, সবটুকু তুমি- আমার মায়ের পছন্দ ছিলে-
আর আমার ?
আমার তুমি পছন্দ ছিলে না, ছিলে বুকের বামপাশে হৃৎপিন্ডের গতি, রকেট গতির সে নিঃশ্বাসে- তুমিহীনা আজকাল মোমবাতিটাও নিভেনা ভালোমতো। –ভাইয়া কি লিখলেন!!!! অসাধারণ চমৎকার
এস.জেড বাবু
আপু
প্রতি বারের মতো এইবার ও কিন্তু উৎসাহ বাড়িয়ে দিলেন।
ইচ্ছে করছে টেনে নিয়ে যাই আরও কয়েক পর্ব।
অনেক খুশি হলাম আপু।
দোয়া ও শুভকামনা নিরন্তর
নৃ মাসুদ রানা
আমার তুমি পছন্দ ছিলে না, ছিলে বুকের বামপাশে হৃৎপিন্ডের গতি, রকেট গতির সে নিঃশ্বাসে- তুমিহীনা আজকাল মোমবাতিটাও নিভেনা ভালোমতো।
এস.জেড বাবু
শুভেচ্ছা রইলো প্রিয় লিখক / ভাইজান
ভালো থাকবেন
দোয়া করবেন সবার জন্য
নিরব সাগর
চমৎকার !
এস.জেড বাবু
কৃতার্থ হলাম।
শুভেচ্ছা রইলো ভাইজান
সুস্থ থাকবেন, নিরাপদ থাকবেন।
ফয়জুল মহী
সুকোমল ভাবনার অসাধারণ লেখা।
ছাইরাছ হেলাল
আগে, আগের চিঠির উত্তর দিন।
এস.জেড বাবু
মিসটেক হয়ে গেছে ভাই
নটিফিকেশন চোখে পড়েনি-
আসছি
সুরাইয়া পারভীন
আমার তুমি পছন্দ ছিলে না, ছিলে বুকের বামপাশে হৃৎপিন্ডের গতি, রকেট গতির সে নিঃশ্বাসে-
ছিলো কেনো?এখন নেই কেনো?
প্রথম দিকে ভালো লাগলেও শেষের দিকে কেমন যেনো বিষণ্ণ। মন খারাপ করে দেওয়া চিঠি
এস.জেড বাবু
কি জানি কি হয়-
দেখা যাক শেষ পর্যন্ত এ চিঠি কোথায় গিয়ে থামে।
আপু – প্রশ্নগুলোর জবাব পেয়ে যাবেন নিশ্চই।
অনেক ভালো থাকবেন-
দোয়া করবেন
জিসান শা ইকরাম
গল্প শুনে আমরাও হাসতে চাই,
অতি দ্রুত হাসির ব্যাবস্থা করেন।
শুভ কামনা
এস.জেড বাবু
ইনশাআল্লাহ ভাইজান-
হাসাতে পারা সৌভাগ্যের বিষয়- হাতছাড়া করা যাবে না।
দ্রুততম সময়ে পরের পর্ব পোষ্ট হবে।
ভালো থাকবেন/ দোয়া করবেন।
ফজলে রাব্বী সোয়েব
মনোমুগ্ধকর প্রিয় ভাই।