জানি না কেমন পারিপার্শ্বিকতা নিয়ে, কতটা মানসিক জোড় নিয়ে, কতটা ধৈর্য্য নিয়ে এগিয়েছেন এই ভাইটি।

পরপর তিনবার ব্যার্থতা!  😮
আমার চারপাশের সকলকে যদি নিজের মনের কাছে সত্য বলতে বলি, তবে কেউ কি এমন আছে যে এটা মেনে নেবে? যার ব্যার্থতা তার চেয়ে বেশি সমস্যা হবে ব্যার্থ ব্যাক্তির চারপাশের লোকজনের। তারা ১ বার ব্যার্থতা তো দূরে থাক, চেষ্টা করার আগেই সেই ব্যাক্তিকে ব্যার্থ বানিয়ে দেবে!

একজন ছাত্র/ছাত্রী অনার্স পাশ করার পরই তার জন্যে কেউ চাকরির দুয়ার খুলে বসে থাকে না। অনার্স শেষ হবার পর অপেক্ষা শুরু হয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির জন্য। বিজ্ঞপ্তি এলে আবেদন, আবেদন করার পর আবার অপেক্ষা পরীক্ষা কবে হবে তার জন্য।

তার ওপর রয়েছে প্রতিযোগিতা। ১ টা আসনের পরিবর্তে পরীক্ষা দেয় প্রায় ১০০০ পরীক্ষার্থী! ভাবা যায়? তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করে ১মবারই কৃতকার্য হতে পারে কজন? খুব কম! কিন্তু যারা একটা পরীক্ষা দিয়েই হতাশ, চারপাশের লোকজন তাদেরকে বলবে, “তুমি আজ পর্যন্ত কৃতকার্য হতে পারো নি।” কিংবা “আজ পর্যন্ত কি পেরেছো ইনকাম করতে?” তাদের জন্য একবালতি সমবেদনা।

আর প্রস্তূতিপর্ব? সেটাও জানেনতো খুব সোজা। অ,অা এগুলো লিখতে জানলেই চাকরী আর ঠেকায় কে? চাকরীতো ছেলের হাতের মোয়া! ৪ আনা হাতে নিয়া বাজারে গেলেই চাকরী খরিদ করা যায়!

হাহাহাঃ আপনি ব্যার্থ হওয়াতে যতটা না কষ্ট আপনার হয়েছে তারচেয়ে আরো বেশি কষ্ট হবে মাছের মায়ের, কিংবা কুমিরের। বিশ্বাস করুন, মাছের মা এমন শোক করবে, যেন তার পুত্র হারিয়েছে, আর কুমিরতো জুড়ে দেবে মায়াকান্না! তারা এমন সুন্দর সুন্দর প্রহসন করবে আপনাকে নিয়ে, যেন আপনি একটা আসামী। চাকরী প্রত্যাশা করে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছেন! অনার্স শেষ হয়ে গেছে ৭/৮ মাস হয়ে গেল, এখনো চাকরী হলো না কেন? তাহলে চাকরীর চেষ্টা করে এহেন অন্যায় করার আপনার কী দরকার ছিল? কেন আপনার চারপাশের লোকজনের এতবড় ক্ষতি করলেন আপনি?

আর আপনি যদি মেয়ে হোন,তাহলেতো কথাই নাই! পৃথিবীতে আপনার জন্ম হয়েছে শুধু মাত্র বিবাহ করে সংসার করার জন্য! তা না করে আপনি চাকরী খুঁজছেন? সৎপথে রোজগার করার কথা ভাবছেন? এতো ফাঁসি যোগ্য অপরাধ! আপনার কেন বিয়ে হয়না এই নিয়ে সমাজের কত মাথাব্যথা, তা কি আপনি জানেন? প্রতিদিন তাদের কত টাকার ঝান্ডু বাম কিনে মাথায় লাগাতে হয় আপনার সংসার নেই বলে, সে খবর কি আপনি রাখেন? শীঘ্রই চোখের সামনে যাকে পান, চোখ বন্ধ করে মালা পরিয়ে বলুন কবুল!!!

ওহ, সমাজের চাপে অতিষ্ঠ হয়ে আপনি অবশেষে বিবাহ করে ফেলেছেন? তাহলে বাপের বাড়িতে কি বসে কিসব পড়াশোনা করছেন? জানেন না, বিয়ে হয়ে গেলে বাপের বাড়ি হারাম! আপনি কেন শশুড় বাড়ি যান না, এই নিয়া দুঃশ্চিন্তা করতে করতে আপনার আত্নীয় স্বজনরা দুচোখের পাতা এক করতে পারে না! তাদের ঘুম কি আপনি ঘুমাই দিবেন?

বিয়ে হইছে, বেবী কেন হয় না? একটা বেবী হইছে, তো আরো ১০ টা কেন হয় না?…………….

সমাজের মানুষের এসব চাহিদা চলতেই থাকবে। আপনি তাদেরটা খান না, পরেন ও না, তবু তাদের অনেক চাহিদা আপনাকে নিয়ে- আপনি জন্মের পরই বিবাহ করে ফেলবেন, রান্না বান্না এবং কান্না ইত্যাদি করবেন। এতগুলা ছেলেপুলে জন্ম দিবেন এবং পরিশেষে এহেন উপায়ে সমাজকে উদ্ধার করে ফেলবেন!

যাদের আর কোন কাজ নেই, তাদেরই একমাত্র কাজ, অন্যের হাঁড়ির খবর নিয়া খোঁচাখুঁচি করা।কেউ এগুতে চাইলে যত পারা যায়,তাকে টেনে পিছিয়ে রাখা!

এসব লোকের কথাতে আজকাল বড় প্রেরণা খুঁজে পাই। বুঝতে পারি, আমি এখনই অন্যের চোখে উন্নততর কিছু! প্রেরণা যদি নিতে হয়, এমন কটাক্ষ থেকেই নিতে হবে!

সবশেষে অভিনন্দন ভাই।

১জন ১জন
0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ