১৯৭১ :
২৯ মার্চ আরমানীটোলার এক বাড়িতে দশ এগারো বছরের একটি মেয়ের লাশ । মেয়েটির সমস্ত শরীর ক্ষতবিক্ষত,জমাট বাঁধা ছোপ ছোপ রক্ত সারা গায়ে,এবং তার দেহের বিভিন্ন স্থানের মাংস তুলে ফেলা হয়েছিল।ধর্ষণ শেষে মেয়েটির দুই পা দু’দিক থেকে টেনে ধরে নাভি পর্যন্ত ছিড়ে ফেলা হয়েছিল।
২০১৩ :
এগারো বছরের একটি মেয়েকে ৫৫ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়েছে ।
১৯৭১ এর মেয়েটি মরে গিয়ে বেঁচে গিয়েছে । ২০১৩ এর মেয়েটি বেঁচে গিয়ে তিলে তিলে মারা যাবে।
কেনো এই পাশবিক নির্যাতন মেয়ে শিশু এবং নারীর উপর ? নারী সবসময়ই উপস্থাপিত হয়েছে ভোগ্য পণ্য হিসেবে । কখনোই তাঁকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। তাঁকে মৃদু প্রহার করা যাবে , বাবার সম্পদে নারীর অধিকার পুরুষের অর্ধেক বা শুন্য , অধিকৃত এলাকার নারী গন গনিমতের মাল হিসেবে নির্ধারিত হওয়া , পুন্য করলে বেহেশতে ৭০ জন অপরুপা হুর পাওয়া , অজন্তা ইলোরায় নারীর বেশ ভূষণ , এবং বর্তমানে যত ভাবে সম্ভব নারীকে আবেদনময়ী করে তোলার চেষ্টা সবকিছুই নারীকে পন্য ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে সাহায্য করে না।
যুদ্ধ বা যে কোন জাতীগত দাঙ্গায় এই নারীরাই নির্যাতিত হয় সবচেয়ে বেশী এবং তা শুধুমাত্র এই নারীত্ব নামক পন্য বস্তুর কারনে।
দেশ দখল করার সাথে সাথে রাজার স্ত্রীকেও দখল করেছে বীরেরা ।
২য় বিশ্ব যুদ্ধে ধর্ষিতা হয়েছে কোরিয় নারীরা জাপানীদের কাছে ,
১৯৭১ এ আমাদের দেশের নারীরা ধর্ষিতা হয়েছে পাকিস্তানী সেনা এবং তাদের দোসর রাজাকারদের হাতে ।
বসনিয়ায় ছোট ভাইয়ের বন্ধু , যাকে ছোট ভাইয়ের মতই আদর শ্নেহ দিয়ে বড় করেছে , তার কাছে ধর্ষিতা হতে হয় বড় বোনকে , ছেলের বন্ধুর কাছে ধর্ষিতা হতে হয় মাকে।
নারী তোর মুক্তি নেই , এভাবেই বেঁচে থাকবি তুই । আমরা তোর নিয়ন্ত্রক । আমরা তোকে পণ্য বানিয়েছে , ভোগ্য পন্য । কিভাবে খাবো তোকে তা আমরা নির্ধারণ করবো।
ঘুরে দাঁড়া নারী , হাতে নে ধারাল ছুরি । এরপর বিদ্ধ কর আমাদের বুকের বাম দিকে । যেখানে থাকে হৃদপিণ্ড ।
১৬টি মন্তব্য
যাযাবর
এত বড় একটি জঘন্য ঘটনা ঘটে গেলো দেশে অথচ আমাদের মিডিয়ায় নেই এটা ! একজন পুরুষ হিসেবে পরিচয় দিতে ঘৃণা হচ্ছে ।
জিসান শা ইকরাম
আমাদের দেশের মিডিয়া এমনই
রাজনৈতিক ফায়দা নাই , সুতরাং চুপ সবাই।
আদিব আদ্নান
আমি হতাশ নই কোটি অসচ্ছ অনিশ্চয়তার মাঝেও ।
মুক্তি আমরা পাবই , আজ কিংবা কাল বা পরশুও হতে পারে ।
জিসান শা ইকরাম
সব কিছু দেখে আশাবাদী হতে ভয় লাগে
বনলতা সেন
এই নর পশুদের কি বিচার হবে না ?
জিসান শা ইকরাম
আইনের ফাক দিয়ে এরা অনেক সময় বেড়িয়ে যায় । কিছু করার হয়ত নেই।
হতভাগ্য কবি
এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে। আইনের গুষ্টি কিলাই । :@ :@
জিসান শা ইকরাম
আমার বর্তমান মানসিক অবস্থাও এমন ।
ছাইরাছ হেলাল
সকল পক্ষের অনেক একান্ত সচেতনতাই সমস্যা উৎরানোর একমাত্র পথ ।
জিসান শা ইকরাম
সচেতনতা যে কবে আসবে তাই বুঝতে পারছি না ।
"বাইরনিক শুভ্র"
পরুষ হিসাবে বার বার লজ্জিত হই ।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা , এই লজ্জা আমাকেও বিদ্ধ করে ।
জবরুল আলম সুমন
বর্ণিত এসব ঘটনা খুবই দুঃখজনক… আপনার সাথে সুর মিলিয়ে আমিও বলছি… “ঘুরে দাঁড়া নারী , হাতে নে ধারাল ছুরি । এরপর বিদ্ধ কর আমাদের বুকের বাম দিকে । যেখানে থাকে হৃদপিণ্ড ।”
জিসান শা ইকরাম
এ ছাড়া নারীদের মুক্তি মিলবে না ।
প্রজন্ম ৭১
নারীদের প্রতি এই অন্যায় আচরন কমবে বলে মনে হয় না ।
জিসান শা ইকরাম
এই আচরন এর জন্য অনেক কিছু দায়ী ।
সেগুলো নির্মূল করা না গেলে , এভাবে চলতেই থাকবে ।