একটা সময় ছিল, যখন মানব চরিত্রের বৈশিষ্ট্য ছিল জানের থেকেও মান বড় (গুরুত্বপূর্ণ)। সেসময়টায় এই ওএসডি নামের শাস্তিটা ছিল রীতিমতো অপমানজনক। পদ আছে কিন্তু পদের ব্যবহার নাই! কী লজ্জা, কী লজ্জা! ওএসডি হওয়া লোকটি তখন নিজেকে অপাংক্তেয় ভাবতেন। ভেবে ভেবেই মরমে মরে যেতেন। সরকারি চাকুরেদের জন্য সেসময় ওএসডিটা ছিল চরম রকমের এক মনস্তাত্ত্বিক শাস্তি। ব্যক্তির ব্যক্তিত্বে আঘাত। কঠিন আঘাত। গ্লাণিকর এ অপমান থেকে বাঁচতে তাই তাঁরা সর্বদা দায়িত্বের ব্যাপারে সজাগ থাকতেন। অবশ্য তাঁরা সে মাপের কমিটেড লোকও ছিলেন। আর এখন?
এখন বরং এই পদ পদবী আঁকড়ে থাকা মানহীনদের বেলায় এটা একপ্রকার পুরষ্কারই বলা চলে।
পদের অবমূল্যায়ন ঘটিয়ে যাঁরা চক্ষুলজ্জাহীনভাবে চুরি চামারিতে যুক্ত হয়ে যান, তাঁদের আবার লজ্জা! নিজেকে যাঁরা লোভের তরে নামিয়ে আনেন তাঁদের আবার মান বোধ! পদ পদবীর মর্যাদাই যাঁরা বুঝেন না, তাঁদের আবার ওএসডি! ওএসডি হয়ে বিনা পরিশ্রমে বেতন-ভাতাদি ভোগ করা বরং এনাদের জন্য একধরনের পুরষ্কারই।
যাঁদের মর্যাদাবোধই নাই, যাঁরা পদ-পদবীর গুরুত্ব সম্বন্ধে ওয়াকিবহালই নন, যাঁদের কাছে মানের থেকেও যেকোনো প্রকারে অর্থ কামাইটাই গুরুত্বপূর্ণ, তাঁদের বেলায় চাকরী হারানোর ভয় জারি না করলে এ ধরণের অনিয়ম প্রতিরোধ করা কোনোভাবেই সম্ভবপর নয়। যতো শিক্ষিতই হোন না কেন মান বোধটা কাজ না করলে ওএসডি এনাদের বেলায় সাপেবর।
এখন বরং দরকার তাঁদের উপার্জনের হিসাব থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা এবং দায়িত্বে অবহেলাজনিত কারণে পদচ্যুত করা। এটা এখন সময়ের প্রয়োজন।
সরকারি বেতন বাড়িয়ে ১৬ হাজার কোটি থেকে ৭০ হাজার কোটির উপরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এই আমপাবলিকের উপর ট্যাক্সের স্টিমরোলার চাপিয়েই। অথচ ট্যাক্সের টাকায় বেতনভুক্ত তাঁরা কাজে দায়িত্বশীল হবেন না, স্বভাব পরিবর্তন হবেনা, তা কী করে হয়? এবার তবে দুরমুজ দেয়ার ব্যবস্থা নিন। তাঁদেরকে সাপোর্ট দিতে যদি ১৬ থেকে ৭০ এ যেতে পারেন, তবে শাস্তি দিতেও ওএসডি থেকে দুরমুজে যেতে পারবেন।
যেতে যে হবেই। আমরা আমাদের ট্যাক্সের টাকায় কোনো চোর পালতে চাইনা।
ছবিটি হস্তান্তরের আগেই ভেঙে পড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর।
৭টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
দায়িত্বশীল হতে হলে শ্রম দিতে হয়, নিজের মেধা খরচ করা লাগে। এখনকার সময়ে এত কষ্ট কে করে! ইমেজ নস্ট হলে সরকারের হবে, জবাবদিহি করতে হলে সরকার করবে। ঘুস দিয়ে যারা সরকারি চাকুরের খাতায় নিজেদের নাম লেখান তাদের কাছে পদ পদবীর গুরুত্ব নির্ভর করে ইনকাম কত করা যাবে তার উপর।
গোটা দেশটাই এখন চোরের খামার হয়ে গেছে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ও এস ডির আসলে কি যথোপযুক্ত ব্যবহার হয়? আমার জানামতে জনগনের উপর কোন অন্যায় করার জন্য কমই হয় বরং দলীয় ইসু কাজ করে বেশি।
সরকারী চাকুরে সবাই এক নয়, কিছু কিছু যাঁদের বসবাস ছত্রছায়ায় তাই তারা সবসময় বিচারবহিভূত। লজ্জাহীন লোকদের আসলে সরকারী/ বেসরকারী বলে কথা নয় সব জায়গাতেই তারা সমান।
আর যার এরকম ভেঙ্গে পরা কনস্ট্রাকশনের জন্মদাতা তাঁরাই ঘুরে ফিরে এই কাজে বহাল থাকেন। এটা বদলানো জরুরী।
শুভ কামনা সবসময়।
জিসান শা ইকরাম
এদের ওএসডি করে কোনোই লাভ নেই, শাস্তির আওতায় আনা দরকার এই সব সরকারী কর্মকর্তাদের।
কিন্তু তা সম্ভব না, কারন দেশের সবচেয়ে বড় সংগঠিত শক্তি হচ্ছে আমলা তন্ত্র। এরা কখনোই তাদের একজনকে বিচারের আওতায় আনবে না। সুকৌশলে এরা সমস্ত দুর্নীতিতে রাজনীতিবিদদের জড়িয়ে দেয়, আর এরা থাকে ধোঁয়া তুলসি পাতা।
কখনো এইসব কর্মকর্তারা ডিম থেরাপি পায়নি বলেই এমন দুর্বিনীত এরা।
ভালো পোষ্ট,
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
একদম। এদের উপর শাস্তি আনয়ন জরুরি।
কলম চলুক সাবলীল গতিতে।
শুভ কামনা
সুপর্ণা ফাল্গুনী
এসব কর্মকর্তাদের বদলী বা সাময়িক বরখাস্ত বা পদ বদলী করে কোনো লাভ হয় না। এদের কঠোর বিচারের আওতায় আনতে হবে। তবে শুধু সরকারী নয় বেসরকারি খাতেও অনিয়ম হচ্ছে তুলনামূলক কম বেশি। যারা পদের মর্যাদা বুঝেনা, ঘুষ দিয়ে চাকরিতে ঢুকে এদের কাছে এসব সততার বুলি ছোড়া মানে উলুবনে মুক্তো ছড়ানোর মতো ই। অবিরাম শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো
হালিমা আক্তার
মান থাকলে তো সম্মান যাবে। ওএসডি করলে তাদের হয় পোয়াবারো। একসময় ওএসডি অসম্মানজনক মনে করা হতো। ওএসডি নয় তাদেরকে কঠোর আইনের আওতায় আনা উচিত। শুভ কামনা।
মনির হোসেন মমি
ওএসডি এসব অন্যায় দূর্ণীতির সঠিক বিচার নয়।মুল উপড়ে ফেলতে হবে নতুবা ওরা পার পেয়ে যাবে বার বার।