এবারে আপনাকে একটি সামান্য অসামান্য ছোট কিন্তু হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার ঘটনা বলব …………বহুকাল আগের ,
যে জায়গায় যে সময় নির্দিষ্ট দিনে বসলে ওদের দেখা যায় কাকতালীয় ভাবে তা আবিষ্কার করার পর অনেক কটি দিন প্রবল ঔৎসুক্য নিয়ে অপেক্ষা করে দেখেছি , দেখেছি অভিভূত হয়েই। কোচিং সেন্টার বা এ জাতীয় কিছু । কুট্টি কুট্টি মেয়ে শিশু পড়তে আসে , সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে কখন আসে বা যায় অদ্দুর জানি না । ওরা ছোট ছোট ঝাঁক বেধে আসে আবার এমন ঝাঁক বেধেই চলে যায় । হঠাৎ এমন একটি পাঁচ – ছ’জনের বা সাত আট জনের একটি দল আমার নজর কেড়ে নেয় । অনুমান এরা তৃতীয় বা বড়জোর চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া । বড়ই বেমানান হড়বড়ে ঢ্যাঙা হোঁৎকা হাবড়া হেঁড়েল উদ্ভট অলম্বুষ টাইপের বুইড়া (আমার মত) হার-কাঠি হয়ে দূর থেকে অনুসরণ করে ওদের নিয়ে আসত আবার নিয়েও যেত প্রায় প্রায় । লক্ষ্য করি এঁদের মধ্যে একটি লম্বা স্বল্পভাষী মেয়ে (হংস মাঝে বক সম) ওদের মধ্যমণি , সবাই যখন ওকে ঘিরে কল কল ছল ছল হাসি চিৎকার করে তখন ওকে শুধু মিটি মিটি হেসে ঠোঁট নাড়িয়ে দু’একটি কথা বলে সে সামান্য উত্তর দেয় বলে মনে হয় । এমন চলমান আসা-যাওয়ার সময় দু’দিনের দু’টি দৃশ্য আমার হৃদয় ছুঁয়েছে। পড়া শেষে ফিরে যাওয়ার সময় বক শিশুটির হাতগুলো কে কোন্টি ধরবে তা নিয়ে মৃদু প্রতিযোগিতা , দু’টি হাতের মুঠো দু’টি শিশু দখল করে নিলে অন্যরা একটুও দমে না গিয়ে কেউ কব্জি কেউ কনুই ধরে নিবির উচ্ছলতায় হেঁটে যাবে । আবার কখনও কখনও টোলটিতে ঐ শিশুটি সামান্য দেরিতে পৌঁছুলে গেটের কাছে সবাই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকবে , এরপর ও পৌছুলে অপেক্ষমাণরা সবাই ওর মাথায় হাতে মুখে পিঠে হাত বুলিয়ে আদর করে দেবে ; উত্তরে শুধুই নিঃশব্দ মিটি মিটি হাসি । দূর থেকে দেখা , শিশুদের প্রতি শিশুর অকৃত্রিম মায়া মমতা ভালোবাসার এ স্বর্গীয় দৃশ্যের অনুভবের অনুভব এখনও জীবন্ত । ভাবছি আমরা কেন শিশু নই ! ঔ ওদের মত , প্রায় ।
১৯টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
মধ্যমনিকে নিয়ে এমন প্রতিযোগিতা হবেই
সে ছিল সবার আনন্দ প্রেরনার উৎস
আমরা শিশু না হলেও শিশুদের মন কিন্তু আছে আমাদের প্রায় 🙂
ছাইরাছ হেলাল
হা হা…দারুন বলেছেন । তবে একেবারে হ্যাপাও কম নয় শিশু মনের ।
শিশির কনা
লেখা বুঝতে কয়েকবার পড়তে হয় 🙁 । কত ভাবে জীবনকে দেখেন তাই ভাবছি ।
ছাইরাছ হেলাল
কঠিন করে লিখিনি কিন্তু । চোখ খোলা রেখে শিশু মন নিয়ে তাকালে অনেক অনেক
কিছু সহজেই দেখতে বা শুনতে পারব আমরা সবাই অবশ্যই ।
"বাইরনিক শুভ্র"
গভীর পর্জবেক্ষন । আমি নিজে ঝাকে ঝাকে কিশোর/কিশোরীদের পড়াই । কিন্তু এভাবে কোন দিন খেয়াল করে দেখিনি । হয়ত দেখার চোখ নেই । তাই মেঘ দেখলে মেঘই দেখি । কারো চুলের গোছা মনে হয় না । লেখার গাঁথুনিটা ভালো লেগেছে ।
ছাইরাছ হেলাল
আপনিও অবশ্যই দেখতে পাবেন , মেঘ কে মেঘ দেখাই ভাল ।
সর্প ভ্রমে রজ্জু বা রজ্জু ভ্রমে সর্প দেখে তেমন কী লাভ ?
চুল-টুল না দেখাই মঙ্গল ।
বনলতা সেন
আমাদের শিশু মনটা হাড়িয়ে যাচ্ছে দিন দিন । তবে মাখে মাঝে খুব মিস করি ।
ছাইরাছ হেলাল
কিছুতেই শিশু মন হারিয়ে জেতে দেওয়া যাবে না ।
ওদের মাঝেই বেঁচে থাকতে চা ।
যাযাবর
জীবনে কত কিছুই উপলব্দির বিষয় আছে । ভালো লেগেছে ছাইরাছ ভাই।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই অনেক উপলব্ধির বিষয় আছে ।
যা নিয়ে আমারা বেঁচে থাকি ।
লীলাবতী
আমি কিন্তু এখনো শিশু , বল হইনি 🙂 এত চমৎকার লিখেন কিভাবে ?
ছাইরাছ হেলাল
চমৎকার কীনা জানিনে বা হয়ত আপনারা অনুগ্রহ করে পড়েন বলেই
হয়ত এমন লেখা ।
শিশু হয়েই কাটান আপনার বাকী সময়টুকু ।
আদিব আদ্নান
এমন নিবির নিরব পর্যবেক্ষনের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি ।
ছাইরাছ হেলাল
এ পর্যবেক্ষন এমন কিছু নয় । আপনাকেও ধন্যবাদ ।
সোনিয়া হক
অতৃপ্তি থাকবেই মানুষের।
ছাইরাছ হেলাল
হ্যা , আমার তা আছে ।
আপনার সাইটটি দেখলাম , বেশ উপকারী ।
অরুনি মায়া
যে মানুষ টি শিশুদের এত ভালবাসেন তিনিও শিশুর চেয়ে কম নিষ্পাপ নন |
আপনি সত্যি একজন শিশু প্রেমিক |
ছাইরাছ হেলাল
এ শিশুটি আমার প্রাণের কন্যা,
এখনও ও একই দৃশ্য চলমান।
অরুনি মায়া
ও আচ্ছা শিশুটি আমাদের আদিবা মামনি 😀 |
অনেক গুলো আদর ওর জন্য |