একজন সম্রাট

নীলাঞ্জনা নীলা ২ অক্টোবর ২০১৫, শুক্রবার, ০৬:৩৭:৫১পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি, বিবিধ ৫২ মন্তব্য
হৈমন্তিকার আগমন...
হৈমন্তিকার আগমন…

প্রারম্ভিক –

লেখা বানাতে চাও?
উগড়ে ঢেলে দিয়েছি অপরিপুষ্ট অক্ষরগুলো ওই আবর্জনায়। আরে কবিতা খাওয়া অত্তো সোজা নয় হে বাপু!
প্রথমে গরুর মতো জাবর কাটা এবং পরিশেষে হজম। তাছাড়া কবিতার ভেতরে রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়ার
যৌথ অনেক প্রচেষ্টা লাগে;
সাথে বেশ কিছু ফাঁপা এবং ফাঁকা বুলি যোগ করে ঐকিক নিয়মে ধারাপাত। শুনেছো কখনো? শোনার কথা নয়।
এ বড়ো আজব জগৎ গো মা। পুরোই পাগলামোর দুনিয়া। বিসর্গ-চন্দ্রবিন্দু শেষের দিকে এসে ব্যঞ্জনবর্ণকে ব্যঞ্জন করে তারপর ফুরায়। কিছু বুঝেছো মাথা-মুন্ডু। আরে বোকা আমি নিজেই তো বুঝিনি। বোঝার কি কোনো প্রয়োজন আছে?
নেই তো!

মধ্যম ভাগ –

এক সম্রাটের গল্প বলি। ব্যাবিলন সাম্রাজ্য ধ্বংস করে, তারপর মুক্তি দিয়েছিলেন মানুষকে। ওই যে দাসবৃত্তি! ধ্বংসের খবর ঠিকই রাখি, কিন্তু সৃষ্টি যে করেছেন সে খবর রাখি কই? কবিতায় সম্রাটের কথা কেন? আরে জানো না? কবিরা কিন্তু পাগল হয়? আর তাই ভালোবাসতে জানে। অকাতরে বিলিয়ে দিতে পারে ভালোবাসা। জাগতিক নিয়মকে পাশ কাটিয়ে একটি ভূবন থাকে তার। লেখা বানানো অত্তো সহজ নয়। সকলে পারেনা।

**তবে সে পারে। উনি কবি, উনি পারেন। উনি কে? উনার পরিচয় জানতে ইচ্ছে করছে বুঝি? আর তাঁকে নিয়েই কেন লেখা?

একটি সকাল-সন্ধ্যার গল্প বলি। আমার যখন সকাল তখন নানার সন্ধ্যা। আজ বিকেলে ম্যাসেজ করলাম ও নানা কি করো? নানা বললো “লিখি”। বেশ রাগ করে বললাম এতো রাতে লেখো? বললো “ব্লগে লেখাটা দিয়েই ঘুমাতে যাবো। রাগ করিস না।” লেখার কথা বললে আমি বড়ো দূর্বল হয়ে পড়ি। কেউ যদি আমার মনের মতো করে লেখে আমি তার ভক্ত হয়ে যাই। নানাকে বললাম লেখা দিয়েই কিন্তু ঘুমিও। বললো “আচ্ছা নাত্নী”। যাক আবার ডিউটিতে যাচ্ছি রাস্তায় হঠাৎ নানার ম্যাসেজ “ও নাত্নী লেখা দিয়েছি, যা দেখ।” বললাম ক্লায়েন্টে পৌঁছে গেছি। কথা দিলাম ঘুম থেকে উঠে মন্তব্যও দেখতে পাবে। নানা শুভরাত্রি জানিয়ে শুয়ে পড়লো। যাক কাজ থেকে ফিরছি হেঁটে হেঁটে। নানার লেখাটা পড়লাম। আজকাল আবার ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। ব্লগে যাওয়াই হচ্ছেনা। পড়ার পর মনটা ভালো হয়ে গেলো। আজ যে আমারও বন্ধুর জন্মদিন। ভুলেই বসেছিলাম তার কথা। নানা আবারও আমায় সাহায্য করলো। আমার বন্ধুটি আবার এ দেশের নয়। পারস্য সম্রাটের নামে নাম। যদিও উনাকে আমি কবিভাই বলেই ডাকি। অনেক মজা করি, দুষ্টুমীও কম না। তবে খুব সত্যি এর চেয়ে অনেক বেশী সম্মান করি উনাকে। যাক কবে জানি বললাম, জানেন কবিভাই আপনার নামের ইংরেজী উচ্চারণে একজন সম্রাটের নাম আসে কিন্ত। পারস্য মানে ইরানের সম্রাট সাইরাস। সবই জানেন, কিন্তু ভাব নিলেন এমন যেনো জানেনই না!

কবিভাইকে দেখেছি সামহোয়্যারইন ব্লগে। মন্তব্য করতেন, তখন মন্তব্যে ধন্যবাদই শুধু। কি যে লেখা, ভয় পেতাম খুব। যেমন লেখাকে, তেমনি মানুষটাকেও। ঠিক ভয় না, আসলে ব্লগটাকে তখনও বাড়ীর উঠোন মনে হয়নি। যেই সোনেলায় এলাম, বেশ মিশতে শুরু করলাম। মন্তব্য, প্রতি-মন্তব্য মনে হলো এই তো আমার ঘর। আনন্দ-উচ্ছ্বলতা মানুষকে অনেক কাছে টেনে নেয়। আমার জন্মদিনে আবদার করলাম আমায় নিয়ে লিখতেই হবে। উফ মন্তব্যে পাগল করে দিয়েছিলাম। বাধ্য হয়ে লিখেছিলেন। কিন্তু আজ যে উনার জন্মদিন একটিবারও বলেননি তাঁকে নিয়ে লিখতে। আসলে কি লিখবো? উনার জন্যে কবিতা? সাহস নেই। গান গাইবো? মা গো সেও তো গলা বসে আছে। কি করবো তাহলে?

সমাপ্তি পর্বের সূচনা –

~আনন্দের বর্ষায় ভিঁজে ভিঁজে কি কবিতা লেখা যায়? কবিতার জন্যে শোক লাগে। কোথায় পাবো শোক?
#তাহলে হেমন্তে লেখা হোক! নবান্ন, সোনালী ধান, কৃষকের আনন্দ।
~আবহাওয়ার কি ঠিক-ঠিকানা আছে আর? এই মেঘ, এই রোদ্দুর, এই বৃষ্টি।
#বাহ, তাহলে কবিতা লেখা হবে না?
~তা কি বলেছি আমি? অবশ্যই হবে। আচ্ছা হঠাৎ হেমন্তই কেন!  ;?
#মেঘের কারুকাজ আকাশে এ সময়েই যে। আপনি তো কবি, জানেন না বুঝি?
~কে বলেছে আমি কবি?
#আমি বললাম। যদিও আমি খুবই সাধারণ।
~আপনি সাধারণ! আপনি তো মহাপন্ডিত।
#আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে হেমন্ত নিয়েই কবিতা হোক। আমি যখন মহাপন্ডিত।
~মহাপন্ডিতদের কথায় কিছু লিখিনা।
#তাহলে যান আপনাকে শুভেচ্ছাও জানাবো না।
~কিসের শুভেচ্ছা?
#আজব ভুলে গেছেন? ধ্যত্তেরি এভাবে ভুলে যেতে হয়! আপনার জন্মদিন আজ। বুঝেছেন?

কবিভাই শুভ জন্মদিন। মাথা-মুন্ডু যা এলো লিখে ফেললাম। আপনার মতো লিখতে এ জীবনেও পারবো না। অনেক আনন্দ করুন। আজ আপনার দিন।

 

মেঘের রঙে রঙে...
মেঘের রঙে রঙে…

https://www.youtube.com/watch?v=7X0IO8RnruQ

৪৭২জন ৪৭৩জন
0 Shares

৫২টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ