গল্প নয় সত্যি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের নেপথ্য নায়ক,একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা—-
শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ছেলে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রুমিদের ক্র্যাক প্লাটুনের কথা সবারই জানা। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার স্পেশাল কে-ফোর্স, দুই নাম্বার সেক্টর এই নামগুলোও হয়তো সবার জানা। কিন্তু এইসব বিখ্যাত নামগুলোর আড়ালে যিনি আছে পিছনের সেই মানুষটার নাম খুব কম মানুষই জানেন।
তিনি খালেদ মোশাররফ, সেক্টর কমান্ডার ২ নাম্বার সেক্টর, কে-ফোর্সের দুর্ধর্ষ অধিনায়ক, হাজারো গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের তিনি তৈরী করেছিলেন নিজের হাতে। শহীদ রূমিদের ক্র্যাক প্লাটুনও উনার নিজের হাতে গড়া। ঢাকা-কুমিল্লা-নোয়াখালী এবং ফরিদপুরের একাংশ নিয়ে গঠিত ২ নাম্বার সেক্টরের গুরত্ব ছিল ভিন্ন মাত্রার। রাজধানী ঢাকা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও ঢাকা-সিলেট রেলপথ ছিল এই সেক্টরের অধীনে। গোটা মুক্তিযুদ্ধের উত্তপ্ত রণাঙ্গন সালদা নদী ও বিলোনিয়া ছিল এই সেক্টরেরই অন্তর্ভুক্ত।
মুক্তিযুদ্ধ শুরুর একদম শুরুর দিকে,তখনো সেক্টর গঠিত হয়নি। চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে মেজর খালেদ মোশাররফ তখন ত্রিপুরা রাজ্যের মতিনগরে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেছেন। বিদ্রোহ করে যুদ্ধ শুরু করেছেন পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। ঢাকা, কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং ফরিদপুর থেকে হাজার হাজার মুক্তিপাগল ছাত্র-জনতা মতিনগরে উপস্থিত। মেজর খালেদ এক বক্তৃতায় তাঁদের উদ্দেশ্যে বললেন,
” আমি তোমাদের দেশপ্রেম শেখাব না। দেশপ্রেম না থাকলে তোমরা এখানে আসতে না। আমার কাজ তোমাদের যুদ্ধ শেখানো। আর যেভাবে যুদ্ধ শেখানো উচিত তার সময় এবং সুযোগ এখানে নেই। তোমরা যুদ্ধ করেই যুদ্ধ শিখবে। যুদ্ধের মাঠই হবে তোমাদের প্রশিক্ষন একাডেমী”।
গেরিলারা অপারেশন চালানোর জন্য বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের আগে তিনি বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসা একমুঠো মাটি যোদ্ধাদের হাতে দিয়ে শপথ করাতেন। বলতেন,” তোমাদের হাতে একমুঠো বাংলাদেশের মাটি। এই একমুঠো মাটি যথেষ্ট নয়। আমাদের দরকার গোটা বাংলদেশের মাটি”।
তিনি খালেদ মোশাররফ, দেশপ্রেম উজ্জীবিত করার এক অনন্য জাদুকর।
মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়া একটি মুক্তিযুদ্ধের বই লিখেছেন, নাম “খালেদের কথা”। বইটি তিনি উৎসর্গ করেছেন খালেদ মোশাররফকে।
উৎসর্গে তিনি লিখেছেন,” একাত্তরের খালেদকে। কখনো বন্ধু, কখনো অভিবাবক, কখনো কমান্ডার”।
এই লেখার উৎস- বইয়ের নাম “খালেদের কথা (লিখেছেন-মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া)
১৮টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
সোনেলায় স্বাগতম -{@
মহান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেদ মোশাররফ কে স্যাল্যুট জানাই।
এই স্বাধীন দেশের জন্য তাঁর অবদান জাতি কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করবে।
বিজয় মাসে একজন বীর কে নিয়ে প্রথম পোস্ট দেয়ায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে।
শুভ কামনা
শুভ ব্লগিং ।
জুলিয়াস সিজার
ধন্যবাদ দাদা।
তন্দ্রা
তাঁকে লাল স্যালুট।
খালেদ মশাররফ একজন বীর তাঁর তুলনা তিনিই, তিনি রেসকোর্স ময়দানে পাক সেনার নতি স্বীকার অবস্থানে বীরদর্পে এগিয়ে যাওয়ার ছবি দেখেছি বিভিন্ন পোষ্টারে ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ব বইয়ে।
আল্লাহ তাঁকে বেহেস্তে রাখুন ও সেই সাথে সকল বীর যোদ্বাদের।
জুলিয়াস সিজার
ভাইয়া,ছবিগুলো কিভাবে পেতে পারি? বইগুলোর নামগুলো বলেন,প্লিজ।
ছন্নছাড়া
” আমি তোমাদের দেশপ্রেম শেখাব না। দেশপ্রেম না থাকলে তোমরা এখানে আসতে না। আমার কাজ তোমাদের যুদ্ধ শেখানো। আর যেভাবে যুদ্ধ শেখানো উচিত তার সময় এবং সুযোগ এখানে নেই। তোমরা যুদ্ধ করেই যুদ্ধ শিখবে।
অসাধারণ …………।।
কিন্তু দুঃখের কথা হইতেছে আমারা এখনো জুদ্ধুপারাধির বিচার করতে পারছি না ………।।
খসড়া
এই বইটা কোথায় পাব? আমার অবশ্যই পেতে হবে।
জুলিয়াস সিজার
দুইটা বই আছে। “খালেদের কথা” এবং “২ নাম্বার সেক্টর ও কে-Force”.
লীলাবতী
শ্রদ্ধা জানাই বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেদ মোশাররফকে । শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ ।
নীলকন্ঠ জয়
বইটির সব লেখা প্রকাশ করুন একটু একটু করে। শুভেচ্ছা। -{@
জুলিয়াস সিজার
সেটাই করব। পড়ার জন্য অনুরোধ রাখলাম।
শুন্য শুন্যালয়
তোমরা যুদ্ধ করেই যুদ্ধ শিখবে… কতো সুন্দর একটা কথা ..
আরোও জানতে চাই এই বীরের কথা.
সোনেলায় তোমাকে স্বাগতম -{@
এতো সুন্দর একটা পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ.
জুলিয়াস সিজার
ধন্যবাদ দিদি।
তার ছেঁড়া
” তোমাদের হাতে একমুঠো বাংলাদেশের মাটি। এই একমুঠো মাটি যথেষ্ট নয়। আমাদের দরকার গোটা বাংলদেশের মাটি ।”
কথাগুলো শুনেই নিজের ভিতর উন্মাদনা সৃষ্টি হয় । স্যালুট হে বীর । কিন্তু আফসোস , এত কষ্টের স্বাধীন করা দেশের মানুষ আজ পরাধীন !
জুলিয়াস সিজার
বীর খালেদ অমর।
ব্লগার সজীব
শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি জাতীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেদ মোশাররফকে । যিনি অপপ্রচারের স্বীকার হয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এই লেখা শেয়ারের জন্য। এমন লেখা আরো চাই।
জুলিয়াস সিজার
উনাকে নিয়ে ধারাবাহিক লেখা লিখব।
স্বপ্ন নীলা
শেয়ার করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ,,,,,,,,,,,আরো লিখুন
জুলিয়াস সিজার
উনাকে এবং আরো অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধেদের নিয়ে লিখব।