“যুদ্ধে না গিয়ে কোন পথ ছিল না। কৈশোরের উন্মাদনায় যুদ্ধে যেতে বাধ্য
হয়েছিলাম। যুদ্ধ করেছিলাম মেজর জিয়াউদ্দিনের (অব.) নেতৃত্বে।
তিনি তখন ৯নং সেক্টরের
সাব- সেক্টর কমান্ডার। দেশ স্বাধীন হলো। দেখতে দেখতে কেটে গেল ৪৩টি বছর। কিন্তু আমার ভাগ্যের পরিবর্তন হলো না।”
“বদলে গেলাম আমি। বেঁচে থাকার জন্যই মানুষের কাছে হাত বাড়িয়ে টাকা আর চাল খুঁজে ফিরি। দেহ আর চলে না। হয়তো যে কোনদিন পথে পড়ে থাকবো লাশ হয়ে।”
এভাবেই নিজের কষ্টের কথা বললেন মুক্তিযোদ্ধা আমির ফকির। বাড়ি পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার নিলতী গ্রামে । বর্তমান
বয়সতার ৭৫ বছর।
তিনি ৯ নম্বর সেক্টরে মেজর জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধে অংশগ্রহনের স্বীকৃতিস্বরুপ মুক্তিযুদ্দের সর্বাধিনায়ক আতাউল গনি ওসমানী কতৃক স্বাক্ষরিত মুক্তিযুদ্ধা সনদপত্র পেয়েছেন তিনি।বর্তমানে সেই সনদপত্র নিয়ে ভূমিহীন হিসেবে কাউখালীর চিরাপাড়া গুচ্ছগ্রামে বসবাস করছেন।
তিনি বলেন, “যুদ্ধ করি দ্যাশ স্বাধীন করসি।কিন্তু মুক্তিযুদ্ধার সনদপত্র পাইয়াও আমি মুক্তিযুদ্ধা না।পাই না কুনু ভাতা না কুনু সাহায্য সহায়তা।বড়ো কস্টে আসি।শইলটা যে আর চইলবার চায় না!!! আমার ট্যাকার জোর নাই,শিক্ষার জোর নাই,নাই কুনু উপরের লুক।আমারে কে সাহায্য করিবে???
কাদতে কাদতে আমির ফকির বলেন,আর বেশিদিন হয়তো বাঁচুম না। মরার আগে কি আমি আমার মুক্তিযুদ্দা নামটা কাগজে দেইখা যাইতে পারুম না??আমার ছেলেমেয়েরা কি কৈতে পারবো না যে আমাগো বাজান মুক্তিযোদ্ধা ছিলো????
১৮টি মন্তব্য
মা মাটি দেশ
বিস্বাস করেন লেখাটি পড়ে আমার শরীরের সমস্ত পশম দাড়িয়ে গেছে সত্যি কি অভাগা আমার দেশের মু্ক্তিবাহিনী…..মহান এই ব্যক্তিকে স্যলুট আর বিস্তারিত জানানোর অনুরোধ করছি।ধন্যবাদ আপনাকে। -{@ (y)
হোমায়রা জাহান হিমু
বর্তমানে তিনি পিরোজপুরের কাউখালী ইউনিয়নের চিরাপাড়া ভুমিহীন গুচ্ছগ্রামে আছেন। স্ত্রী আর চার ছেলেমেয়ে নিয়ে কোনরকমে দিনাতিপাত করছেন।
জিসান শা ইকরাম
স্যাল্যুট বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির ফকির ।
একজন মুক্তিযোদ্ধা কাঁদে ।
আর রাজাকাররা আজকাল বুক ফুলিয়ে চলে ,
গাড়ীতে জাতীয় পতাকা নিয়ে চলে।
এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু নেই ।
মুক্তিযোদ্ধাদের এই আহাজারি সহ্য করা কঠিন ।
এনাদের কান্নাই আজ অভিশাপ হয়ে দেশে লেগেছে । আল্লাহ অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না । অকৃতজ্ঞ জাতিকে আল্লাহ শাস্তি দিচ্ছেন ।
হোমায়রা জাহান হিমু
হয়তো আপনার কথাটাই ঠিক জিশান।
শুন্য শুন্যালয়
মুক্তিযুদ্ধের একটা ডকুমেন্টারি দেখছিলাম, আর ভাবছিলাম, এই হা ভাতে লোকগুলো, কেনো নেমেছিলো সেদিন যুদ্ধে? কি পেতে? কিছুই না, কোন লাভ হয়নি তাদের।। মা যেমন সন্তানের জন্য কোন আশা না রেখেই আত্মত্যাগ করে এরাও তেমনি নেমেছিলো, আর আমরা এমনই নির্লজ্জ জাতি, তাদের সে আত্মত্যাগের কোনই মূল্য দেইনি।।
জিসান ভাই ঠিকই বলেছেন,
এনাদের কান্নাই আজ অভিশাপ হয়ে দেশে লেগেছে । আল্লাহ অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না । অকৃতজ্ঞ জাতিকে আল্লাহ শাস্তি দিচ্ছেন ।
হোমায়রা জাহান হিমু
আমরা যে বড় অকৃতজ্ঞ জাতি,
ব্লগার সজীব
এসব দেখে হতাশাই বারে শুধু । কি দেশের মানুষ আমরা ! যারা নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশটা স্বাধীন করলো , তাঁরাই আজ না খেয়ে থাকে ।
হোমায়রা জাহান হিমু
সজীব@হতাশা কেন!!আমরা চাইলে অনেক কিছু করতে পারি।
আজিম
আপাতত: কেউ একটা, হতে পারে ব্লগ সঞ্চালকের অথবা এই পোষ্টদানকারীর, ব্যাংক একাউন্ট নম্বর দিয়ে সেই একাউন্টে সকলে মিলে এই মহান ব্যক্তিকে কিছু সহযোগিতা করা যায় কি-না, ভেবে দেখা যায় কি ? অথবা ইনার মেইলিং ঠিকানা যদি পোষ্টকারী দিয়ে দেন , তবেও হয় ।
হোমায়রা জাহান হিমু
ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা চলছে।জানাব।
খসড়া
কি আর বলব। এখানে শহরের প্রধান সড়কের নাম শহিদ জিকরুলহক রোড। এই ব্যাক্তির ছেলেরা আজ পর্যন্ত একটা সার্টিফিকেট পাইলো না।বাপের জন্য।:(
হোমায়রা জাহান হিমু
উত্তর দেওয়ার মত ভাষা আমার নেই ভাই।
আজিজুল ইসলাম
আসলেই আমরা অকৃতঘ্ন জাতি, আমি সকলের সাথে একমত । আগামীতে আসছে আবার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন। কী জবাব দিব আমরা এই প্রবীণ অতি সন্মানীয় মুক্তিযোদ্ধাকে ?
লেখককে ধন্যবাদ এবং শুভকামনা ।
স্বপ্ন
এই চোখের পানির শেষ নেই । আমরাও বোবা কান্নায় কিছু করতে না পেরে একদিন অনুভূতিশুন্য হয়ে যাবো ।
হোমায়রা জাহান হিমু
ধন্যবাদ
লীলাবতী
এমনি কত বীর মুক্তিযোদ্ধার কান্নায় দেশ ভেসে যাচ্ছে এখন। (y)
পুষ্পবতী
লেখাটি পড়ে আমার খুব খারাপ লেগেছে। এতো কষ্টের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করেছেন কিন্ত এখনো সেই মর্যাদা পান নাই ।আমি সেলুট জানাই মুক্তিযুদ্ধা আমির ফকির কে আর প্রার্থনা করি মহান আল্লাহর নিকট মৃতুর আগে তুমি তার যুগ্য সম্মান পাওয়ার সুযোগ করে দিও ।
ছাইরাছ হেলাল
একটি লজ্জা আমাদের চোখে মরিচ লাগিয়ে দেখালেন ।
আমরা দেখতেই থাকব !