বন্ধু মানেই এলিয়ে দেয়া নিরাপত্তার নিঃশ্বাস…

তেতাল্লিশ – তিরির প্রতি

মারকাট বললো “তোমার বন্ধুকে বলো , সামনের মাসে অফিসের কাজে তুমি যে যাচ্ছো ।” আমি অবাক হলাম , এমন তো কোনো কাজের কথা নেই ওখানে ! এমনকি আমায় কোনো কাগজ-পত্র , কোনো ফাইল কিচ্ছু দেয়নি । জিজ্ঞাসা করলাম ঘটনা কি ? মারকাট বলে , “বেশী বুঝতে যেওনা । বলেছি অফিসের কাজে যাচ্ছো , এটুকু জানলেই হবে । ঠিক আছে ? এখন যাও নিজের টেবিলে ।” আরে আমার কি ? তবে যা-ই হোক সবকিছু এলোমেলো । তোর এতো ভালো আর আদুরে ব্যবহারে অভ্যস্ত নই তো !

শুধু এটুকুই বলতে পারি , আসছি আমি । উফ আমার ফুলকুঁড়িটাকে দেখবো ।

তোর অহম

 

চৌচাল্লিশ – অহমের প্রতি

সত্যিইইইইইইইই তুই আসছিস ? জানিস আজ একটা ঘটনা ঘটলো । চিঠিটা হাতে আসতেই কেমন জানি লাগলো । সেদিন প্রিয় অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ফিরেছিলো , আমার চিৎকারে দৌঁড়ে এলো । আমি পেটে হাত দিয়ে বসে পড়লাম । এক হাতে তোর চিঠি , অন্যদিকে তোর ফুলটুসীর নাচ । প্রিয় বললো , “এ তো দেখি চৌম্বকীয় টানের মতো অবস্থা !” বেশ কিছুক্ষণ পর তোর চিঠিটা খুলে পড়লাম । তখন বুঝেছি কেন সেদিনই প্রথম এমন নেচেছিলো ? হুম তুই এসে ওর নাচ দেখবি । শোন তুই ফুলটুসী বলেই ডাকিস ।

এখন আসি অন্য কথায় । তোর মারকাটের ভালো নামটা জানি কি বলেছিলি ? নাকি বলিসনি ? ওকে আর মারকাট ডাকিস না । দেখ কত্তো ভালো ! কি মিথ্যে বলে তোকে পাঠাচ্ছে । এভাবে তো এ দেশেও এমন করবে না রে । দেখ তো ভেবে , তুই তো চাকরী ছেড়ে দিচ্ছিলি ।

তবে আমার মাথায় আগুণ জ্বলছে । এসব কি পাঠিয়েছিস ? যদিও অনেক আগেই এসব পেয়েছি । কিন্তু বলিনি যা সব কান্ড করে যাচ্ছিলি । ছাগল পাগলামী কর , তা বলে এসব না । রিনী এসেছিলো , হাসতে হাসতে শেষ । বললো আমায় একটা দোকান খুলতে । নয়তো পথে পথে ফেরি করতে । আর কতো যে মেজাজকে অসহ্য করাবি , কে জানে !

তোর তিরি

 

পঁয়তাল্লিশ – তিরির প্রতি

মা জননী রক্ষা করো । মারকাটের নাম আর বদল করা যাবেনা । সে যতোই ভালো কিছু করুক । শুনুন জননী এ দেশে ভালো কাজ করতে না পারলে কেউ পাত্তা দেয়না । ওর আমায় দিয়ে স্বার্থ আছে । হুম জানি আমাকে মারকাট পছন্দ করে । কাজের থেকেও বেশী । কিন্তু প্রথম কাজের জন্যেই ।

এরপর আসি ফুলের জন্যে জামা-কাপড় যা সব কিছু পাঠিয়েছি , সেটায় তোর অধিকার নেই কিছু বলার । ঠিক আছে ? আমার আর ফুলটুসীর ব্যাপার । ওখানে যদি তোমার আর নাকও দেখি গলাতে , আমি কিন্তু লক্ষ্মণ হয়ে যাবো । তোর নাকের অবস্থা সূর্পণখার মতো হবে , আগেই বলে রাখলাম । একশ হাত দূরে থাকিস । আর রিনীকে বলিস ওসব বলার জন্যে আমি কি করি ওর । আসছি তো ।

ফুলটুসীটাই বুঝলো আমায় । কবে আসবে রে ? আর কতোদিন ? আমি যে ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলছি ।

 

তোর অহম

 

ছেচল্লিশ – অহমের প্রতি

চিঠিটা যখন পাবি , তখন তোর আসার সময় হয়ে যাবে । প্রিয় কি করেছে জানিস ? তুই আসবি বলে তোর জন্যে রুমটা দারুণ করে গুছিয়েছে । আর বলেছে এবার যেনো কিছুতেই তুই হোটেলে না থাকিস । প্রতিবার বলার পরেও তুই শুনিস না কথা । এবার তোর ফুলটুসীর জন্যে এখানে এসে যেনো থাকিস ।

তোর তিরি

 

ক্রমশ প্রকাশ্য

হ্যামিল্টন , কানাডা

১৬ আগষ্ট , ২০১৪ ইং ।

৪৩৪জন ৪৩৪জন
0 Shares

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ