আগামীকাল ভোর হলেই সবাই গোসল করে নামাজের প্রস্তুতি নেবেন, এরি মধ্যে মসজিদের মাইকে বারে বারে শুনা যাবে, ঈদ মুবারক, ঈদ মুবারক, নামাজের জন্য তৈয়ার হোন।
দলে দলে মানুষ যাবেন মসজিদের উদ্দেশ্যে, এই করোনাকালে মসজিদের কাতারে একটু দুরুত্ব বজায় রেখে সবাই বসবেন নামাজের অপেক্ষায়, এ সময় অনেকেই রোজাদার ব্যক্তি হবেন, যারা গরু জবাইয়ের পর প্রথম রান্নার মাংসের টুকরা দিয়ে রোজা ভাঙ্গবেন।
এই ঈদুল আজহা সম্পর্কে কিছু বলি, মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম, এটি ঈদ আল-কুরবান বা ঈদ আল-নাহ্র নামেও অভিহিত হয়, বাংলাদেশে এটি কুরবানীর ঈদ নামে পরিচিত।
ঈদ ও আযহা দুটিই আরবী শব্দ, ঈদ এর অর্থ উৎসব বা আনন্দ।
আযহার অর্থ কুরবানী বা উৎসর্গ করা, হযরত ইবরাহীম (আ.) আল্লাহ তা’লার আদেশ পালনের উদ্দেশ্যে প্রাণপ্রিয় জ্যেষ্ঠ পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ.)-কে তাঁর (হযরত ইসমাঈলের) পূর্ণ সম্মতিতে কুরবানী করতে উদ্যত হন (৩৭ঃ ১০২, ১০৭)। মক্কার নিকটস্থ ‘‘মীনা’’ নামক স্থানে ৩৮০০ (সৌর) বছর পূর্বে এ মহান কুরবানীর উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাঁর ঐকান্তিক নিষ্ঠায় সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ হযরত ইবরাহীম (আ.)-কে তাঁর পুত্রের স্থলে একটি পশু কুরবানী করতে আদেশ দেন। আল্লাহর প্রতি অবিচল আনুগত্য ও নজিরবিহীন নিষ্ঠার এ মহান ঘটনা অনুক্রমে আজও মীনায় এবং মুসলিম জগতের সর্বত্র আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে পশু কুরবানীর রীতি প্রচলিত রয়েছে।
উৎসর্গকৃত পশু, যা’ এক আল্লাহর উদ্দেশ্যে যবেহ করা হয়, আত্মীয়-স্বজন বিশেষত দুঃস্থ দরিদ্রজনের মধ্যে যা বিতরণ করে আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক তাঁর সান্নিধ্য লাভ করার চেষ্টা চালান হয়, সে সার্থক প্রচেষ্টার যে আত্মিক আনন্দ তাই ঈদুল আযহা নামে অভিহিত হয়। এ দিনে মীনায় হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর অনুপম কুরবানীর অনুসরণে কেবল হাজীদের জন্য নয়, বরং মুসলিম জগতের সর্বত্র সকল সক্ষম মুসলমানদের জন্য এ কুরবানী করা ওয়াজিব (মতান্তরে সুন্নাঃ মুআক্কাদা)।
ঈদুল আযহা ১০ই যু’ল-হিজ্জা, যে দিন পবিত্র হজ্জব্রত পালনকালে হাজীরা মীনা প্রান্তরে কুরবানী করেন এবং তৎপরবর্তী দুই দিনে, মতান্তরে তিন দিনও (আয়্যাম-আল-তাশরীকে) অনুষ্ঠিত হয়। (সূত্রঃ গুগল)
ঈদের নামাজের শেষে সবাই তাড়াতাড়ি কুরবানি দেওয়ার উছিলায় কুরবানি স্থলে পোঁছে যাবেন, উপস্থিত হাজিরানা মসলিসের সামনে মওলানা তার ধারালো ছুরি বা কিরিচ নিয়ে তৈয়ার হবেন কুরবানি দেওয়ার জন্য, কুরবানি দাতার গরু হলে পরিবারের সাত জনের নাম, ছাগল বা ভেড়া হলে একজনের নাম বলবেন মওলানাকে, মওলানা আল্লাহ্ রাসুলের নামে সুরা পাঠ পূর্বক জবেহ সম্পাদন করবেন।
কুরবানি দেওয়া পশুর সব স্থানের মাংস নিয়ে মাংস রান্না করাকে সিন্নি বলা হয়, যাহা ফাতিহা পাঠ পূর্বক তা উপস্থিত মসলিশ, গরীবদের মাঝে দেওয়া হয় আটার রুটি, চালের রুটি, পরোটা সহযোগে খাওয়ার জন্য।
মনে রাখতে হবে, গরুর রক্ত এবং বর্জ্য সঠিক ভাবে পরিস্কার করে হয় মাটিচাপা দিন, নাহয় নির্ধারিত ডাস্টবিনে ফেলার ব্যবস্থা করুন, সাথে কুরবানি দেওয়া স্থানে ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
আসুন সবাই মিলে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি যেন উনি আমাদের এই কুরবানি কবুল করেন এবং যেন বর্তমানের করোনাকাল যেন দূর হয়ে যায় তার জন্য দোয়া কবুল করেন, আমীন।
সোনেলার সকল ব্লগার ও পাঠককে সোনেলার ব্লগ কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে ঈদুল আজহা মুবারক।
ঈদ মুবারক।
২০টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
ঈদ মুবারক ভাইজান।
পরপর দুই ঈদ এলো এই মহামারী পরিস্থিতির মাঝে।
ঈদুল ফিতর যতটা সীমিত পরিসরে পালিত করা গেছে ঈদুল আযহার ব্যাপারে হয়তো কিছুটা ব্যাঘাত ঘটবে। এই ঈদে পশু কুরবানী হয় যাতে বহু মানুষের একই স্থানে থাকা লাগে। জবাই, মাংস কাটাকাটি, ভাগাভাগি,আত্মীয়-প্রতিবেশীদের কাছে কুরবানীর মাংস পৌঁছে দেয়া, সবই বাইরের কাজ। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। খুব সুন্দর আহ্বান জানিয়েছেন। সকলেরই উচিৎ যথাযথ নিয়মে পবিত্র ঈদুল আযহার দিনটি উদযাপন করা। তাহলেই নিজে সুস্থ থাকা যাবে সাথে পরিবারের সুস্থতা রক্ষায় ভুমিকা রাখা যাবে। একদিনের আনন্দ যেন পরের দিনের কান্নার কারন না হয়।
ভালো থাকুন ভাইজান, ঈদের শুভেচ্ছা রইলো 🌹🌹
ইঞ্জা
সম্পূর্ণ একমত আপু, ভয় লাগছে করোনা না আবার বুম করে, কারণ এ সময় সতর্কতা মেনে চলার মানুষ দেশে খুবই অল্প, এমনিতেই তো কেউ ডিস্টেন্স মেন্টেইন করছেনা।
আপনিও ভালো থাকবেন আপু, ঈদ মুবারক।
ফয়জুল মহী
সুন্দর উপস্থাপন । ভালো লাগা অবিরাম ।
ইঞ্জা
ঈদ মুবারক ভাই
সুপর্ণা ফাল্গুনী
নিয়ম মেনে ঈদের কার্যক্রম চলুক, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুক। আপনার লেখাতে ঈদ নিয়ে বিস্তারিত জানা হলো। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। ঈদের শুভেচ্ছা রইলো। সাবধানে থাকবেন
ইঞ্জা
সবাই সতর্কতা মেনে চলা আবশ্যকীয় কিন্তু মানবে বলে মনে হয়না।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, আপনিও ভালো থাকবেন।
ছাইরাছ হেলাল
অবশ্যই বিধাতার কাছে প্রার্থনা আমাদের এই কুরবানী কবুল করে আমাদের মাফ করে দিন।
ইদ মুবারক, ভাই।
ইঞ্জা
আমীন।
ঈদ মুবারক ভাইজান।
সুপায়ন বড়ুয়া
পরপর দুই ঈদ এলো এই মহামারী করোনা কালে তার উপর বানভাষি মানুষ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। সবার উচিৎ যথাযথ নিয়মে পবিত্র ঈদুল আযহার দিনটি উদযাপন করা। তাহলেই নিজে সুস্থ থাকা যাবে সাথে পরিবারের সুস্থতা রক্ষায় ভুমিকা রাখা যাবে।
আপনার সুন্দর মতামত প্রশংশনীয়।
ঈদ মুবারক।
সুপায়ন বড়ুয়া
প্রশংসনীয়।
ইঞ্জা
😊
ইঞ্জা
সম্পূর্ণ একমত দাদা, কিন্তু এদেশের মানুষ প্রচন্ড রকমের অসতর্ক বলেই করোনা এসেছে, বাকিটা ইতিহাস।
ধন্যবাদ দাদা, ঈদ মুবারক।
নিতাই বাবু
সারাবিশ্বে যেসময় যেই অবস্থাই থাকুক-না-কেন ধর্মীয় উৎসব পালিত হবেই। তা ছোট পরিসরে হোক আর বৃহৎ পরিসরেই হোক হবেই। তাই এই মহামারিকালেও পরপর দুটো ঈদ গতে হতে লাগলো। যেভাবেই হোক হয়েছে। তবে পশুর হাটের সামনে দিয়েই প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা হেঁটেছি, দেখেছিও স্বাস্থ্যবিধি মানা আর না মানার বিষয়টি। আসলে স্বাস্থ্যবিধি যে কী এবং কীভাবে তা মনে হয় বিশ্বের মধ্যে আমরা বাঙালিরাই জানি না, মানিও না। যাক, তবুও ধর্মীয় উৎসব থেকে থাকেনি, হয়েছেই।
আপনার সময়োপযোগী লেখাগুলো সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। তাই পবিত্র ঈদ-উল-আজহা’র প্রীতি ও শুভেচ্ছা।
ইঞ্জা
সত্যি দুঃখজনক দাদা, এদেশের মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেনা বলেই আজকের এই দূর্ভোগ, যদি মেনে চলতো, এই দেশ অনেক দূর এগিয়ে যেতো।
অনিঃশেষ ধন্যবাদ দাদা, আমার সমসাময়িক লেখা গুলো পড়ে প্রশংসা করেন এ আমার পরম প্রাপ্তি।
ঈদ মুবারক।
প্রদীপ চক্রবর্তী
পবিত্র ঈদ সম্পর্কে অনেককিছু জানলাম।
ভালো লাগলো।
ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিতা হোক সকলের ঈদ আনন্দ।
সৃষ্টিকর্তা ও প্রকৃতি সহায় হোক।
প্রার্থনা পৃথিবী সুস্থ হয়ে উঠুক।
শুভকামনা, দাদা।
ইঞ্জা
আমীন।
ত্যাগই পারে জীবনকে মহিমান্বিত করতে।
ঈদ মুবারক দাদা।
সাদিয়া শারমীন
তথ্য সমৃদ্ধ লেখা ভাইয়া। ইসলাম ধর্মেঈদুল আযহার গুরুত্ব ও তাৎপর্য চমৎকার ভাবে তুলে ধরলেন। আপনাকে এবং সোনেলার সকল ব্লগার কে ঈদ মুবারক।
ইঞ্জা
আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে।
ঈদ মুবারক।
আরজু মুক্তা
মনের পশু কোরবানি হলো কিনা, সেটাই বড়
ইঞ্জা
সত্যি তাই আপু, মনের পশুর কুরবানি না দিলে কুরবানি হবেনা।