ইসলাম ও তথ্য সন্ত্রাস
কয়েকদিন আগে “ ইসলাম ও আধুনিক ইসলাম বিদ্বেষী” শিরনামে একটা লিখা আমি লিখেছিলাম। এবার আমার আলোচনার বিষয় ইসলাম সম্পর্কে এই “আধুনিক ইসলাম বিদ্বেষীরা” কে কি ভাবে তথ্য বিকৃত করে তথ্য সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে তা দেখব। তাঁর আগে আসুন নিচের কোরআন এবং হাদিসের বানী গুলি পড়ে নিই—–
ණঃ সূরা বাকারাহ;৪২নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন।
“তোমরা সত্যকে মিথ্যা দিয়ে আড়াল করো না এবং জেনেশুনে সত্য গোপন করো না।” (২:৪২)
ණঃ মিথ্যাবাদীদের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ বলেন,‘আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা সত্যবাদী এবং নিশ্চয়ই জেনে নিবেন মিথ্যুকদেরকে। যারা মন্দ কাজ করে, তারা কি মনে করে যে, তারা আমার হাত থেকে বেঁচে যাবে? তাদের ফায়ছালা খুবই মন্দ’ {আনকাবূত ৩–৪}।
ණঃ ”আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে বিবেক দিয়েছেন; কু প্রবৃত্তি দেন নি। পশুদেরকে কু প্রবৃত্তি দিয়েছেন; বিবেক দেন নি।আর মানুষকে কু প্রবৃত্তি ও বিবেক উভয়টি দিয়েছেন।
সুতরাং মানুষের বিবেক যখন কু প্রবৃত্তির উপর প্রাধান্য পায় তখন সে ফেরেশতাদের সমপর্যায়ে পৌঁছে যায়। আর যখন তার কু প্রবৃত্তি বিবেকের উপর প্রাধান্য পায় তখন সে পশুর স্তরে নেমে যায়।”
– আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা🙂
ණঃ হাদীসশরীফেআছে, রাসূল (সঃ) বলেছেন, ”তোমরাসর্বদাসত্যআঁকড়েধরবে।কারণসত্য (মানুষকে) পুণ্যেরদিকেধাবিতকরেআরপুণ্য (মানুষকে) জান্নাতেনিয়েযায়।একজনমানুষযখনসর্বদাসত্যবলতেথাকেএবংসত্যবলারজন্যআপ্রাণচেষ্টাকরে, তখনসেএকপর্যায়েমহানআল্লাহ্ তায়ালারকাছে ‘সিদ্দিক‘ বামহাসত্যবাদীবলেলিখিতহয়েযায়।
আরতোমরামিথ্যাসর্বোতভাবেবর্জনকরবে।কারণমিথ্যা (মানুষকে) পাপেরপথেপরিচালিতকরেএবংপাপ (মানুষকে) জাহান্নামেনিয়েযায়।একজনমানুষযখনমিথ্যাবলেএবংমিথ্যাবলারসুযোগখোঁজেবেড়ায়, তখনসেএকপর্যায়েমহানআল্লাহ্ তায়ালারকাছে ‘কাজ্জাব‘ বামহামিথ্যাবাদীবলেলিখিতহয়েযায়।” (সহীহবুখারী, হাদীসনং– ৫/২২৬১; সহীহমুসলিম, হাদীসনং– ৪/২০১২–২০১৩; সুনানেতিরমিযী, হাদীসনং– ৪/৩৪৭)
হাদিস দুটি দ্বারা প্রমানিত হল মানুষ তাঁর কু প্রবৃত্তি দ্বারা পরিচালিত হয়ে সত্য কে মিথ্য মিথ্যকে সত্য বানিয়ে প্রচার প্রচারনা করবে এবং জাহান্নামের দিকে ধাবিত হবে।
তাহলে আধুনিক এই সব “ইসলাম বিদ্বেষীরা” নিঃসন্দেহে খতিগ্রস্থ এবং জাহান্নামী।
@@তথ্য সন্ত্রাসঃ এবার আমরা দেখি এরা কি ভাবে অতি সরল কথার মাধ্যমে তথ্য সন্ত্রাস করছে। এই সব আধুনিক ইসলাম বিদ্বেষীরা মানবতার ধারক বাহক সেজে তাদের লিখার ও বক্তব্যের মাধ্যমে এত সুন্দর কৌশলে ইসলাম ও ইসলামি আকিদার বিভিন্ন বিষয়ে এত সুখ্য ভাবে ব্যবহার করবে যে একটু সচেতন ভাবে না পড়লে আপনার মনে হবে না কথাটি বা তথ্যটি দ্বারা ইসলামের বিরুদ্ধাচারন করা হয়েছে। এদের কৌশল হল মানবতার কথা বলে তাদের লিখায় কোন না কোন ভাবে ইসলামকে জড়িয়ে ফেলা। পড়লে মনে করবেন আহা ঠিক তো, ভাল কথা তো। কিন্তু একটু গভির ভাবে ভাবলে দেখবেন এরা উপরে যাহা বলতে চাচ্ছে তাহা ইহাদের মূল বক্তব্য নহে। ইসলামি বিভিন্ন কথা যেমন বেহেস্ত, দোজখ, নামাজ রোজা ইত্যাদি বিষয়ে এমন সুন্দর ভাবে অবতারণা করবে মনে হবে এই তো বা তাই তো ঠিক।
@@প্রথম চরিত্রঃ আর বাংলা ভাষায় এই মহান কাজটি সবচেয়ে ভাল করেছেন জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ন আহম্মেদ। এনার লিখা পড়ে আমিও খুব আনন্দ পাই এটি সত্যি। তাঁর বিভিন্ন উপন্যাসে একটু খেয়াল করে পড়লে দেখবেন হুর, বেহেস্ত ………………………………… নবী মুহাম্মদ (সঃ) সম্পর্কে বিভিন্ন কথা তিনি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছে। এবার তাঁর উপন্যাস গুলি যে সব যায়গায় এই সব তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে সে সব জায়গা এবার একবার পড়ে দেখুন। কি সুন্দর ভাবে কি সুখ্য ভাবে ইসলামকে হেয় করা হয়েছে।
@@দ্বিতীয় চরিত্রঃ তসলিমা নাসরিন কি ভুলে গেছেন? এই নারীবাদী লেখিকা তো একে বারে খোলা খুলি ভাবে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে (খ) কুরআন এবং হাদিসের অপবেখ্যা করে বিতর্ক তৈরি করেছে( খ“ ইসলাম ও আধুনিক ইসলাম বিদ্বেষী” তে দেখুন )।
@@ তৃতীয় চরিত্রঃ বাংলা বিভিন্ন সিনেমাতে আপনারা ইসলাম সম্পর্কে বিভ্রান্ত তথ্য পরিবেশন করতে দেখবেন। কি সুন্দর ভাবে মাজার পুজার প্রচারনা করছে এই বাংলা সিনেমা গুলি। আর এগুলি দেখে ইসলামি মূল স্রোত হতে মাজার পুজাকেই সাধারণ মানুষ ইসলাম বলে মনে করছে।
@@ ইংরেজি ও ভারতীয় সিনেমাঃ বর্তমান আধুনিক যুগে ইহুদী নিয়ন্ত্রিত বিশ্ব মিডিয়া বাংলাদেশও এর বাহিরে নয়। হলিওডের বিভিন্ন সিনামায় একটু খেয়াল করলে দেখবেন আমরা মুসলিমরা সন্ত্রাসী এবং আমাদের বিভিন্ন ইসলামি আকিদাকে এরা বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করছে। বলিউডের একটা সিনেমার কথা মনে পড়ছে, মাই নেম ইজ খান। এই সিনেমা দেখে আমরা কত ভাবে খান কে ধন্যবাদ দিয়েছি। ও বাবা একটু খেয়াল করে দেখলে দেখবেন ইসলামি আকিদা কে কি নগ্ন ভাবে হেয় করা হয়েছে। স্বামী মুসলিম আর স্ত্রী হিন্দু কি সুন্দর ভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে।
তা যাই হোক একটু খেয়াল করি এবং একটু গভির ভাবে ভেবে দেখি এই সব বিষয়ে।
আজ এই লিখা যে জন্য মাথায় আসল তা স্ব-ঘোষিত নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দিন এর একটা লিখা পড়ে। লিখাটা পড়ে খুব ভাল লাগল ফেসবুকে দিলাম শেয়ার করে। সত্যি বলছি। আমি ফেসবুকে ভাল যে কোন লিখা দেখলে শেয়ার করে দিই, এটি কে লিখল তা দেখি না। সে কোন দলের তা ভাবি না। ভাবি ভাল একটা লিখা সবার পড়া উচিত।
তো সুন্দর মানবীয় লিখার মাঝে আসিফ কি সুন্দর ভাবে ইসলামের নামে বিষ বৃক্ষ ঢুকিয়ে দিয়েছেন। লিখাটা গোটা পড়ে এসে দেখুন কি চমৎকার ভাবে ইসলামের নামে তথ্য সন্ত্রাস করেছে আসিফ।
https://www.facebook.com/atheist.asif/posts/598926033488162
( ছেলেটার বয়স খুব বেশি হলে এগারো বারো বছর হবে। জিজ্ঞেস করতেই বললো কেরানীগঞ্জের কোন এক মাদ্রাসায় পড়ে। বাবা মা মাদ্রাসায় দিয়ে চলে গেছে, আর বিশেষ খোঁজ খবর নেয় না। সে মাঝে মাঝেই চুরি করে, তাদের একটা চুরি করার দলও আছে। সেই দলের বন্ধুবান্ধব মিলে চুরি করার পরে সেই টাকা দিয়ে সিনেমা দেখে, সন্ধ্যার সময় ভালমন্দ খাওয়া দাওয়া করে এবং টাকার একটা বড় অংশ তাদের পরিবারকেও পাঠায়।)
@@@মাদ্রাসাতে কি চুরি করা শিক্ষা দেওয়া হয়?
দেখুন মাদ্রাসার আড়ালে কি সুন্দর ভাবে কি সুখ্য ভাবে ইসলাম কে হেয় করা হয়েছে। কি সুন্দর ভাবে প্রথম ছেলেটার ক্ষেত্রে মাদ্রাসাকে জড়িয়ে মিথ্যা একটা তথ্য পরিবেশন করেছে।
তো এই ভাবেই এরা তথ্য সন্ত্রাস করতে থাকবে এবং আমরা এর প্রতিবাদ করতে থাকব। https://www.facebook.com/golammaula.akas/posts/615836475150948
৬টি মন্তব্য
আবু জাঈদ
আপনার লেখা পড়ে আমার খুব ভাল লাগল। নিজের বক্তব্য কে সু-প্রমাণ করতে আপনি লেখার শুরুতেই কিছু তথ্য উপাথ্য দিয়েছেন, তাও ভাল লাগল।
কিন্তু এর মাঝে হুমায়ুন আহমেদ কে কেন টানলেন ? উনি যা বলেছেন তা ইসলাম কে ছোট করে বলেন নি, তিনি ইসলাম নিয়ে সরাসরিও লিখেন নি কখনো, তার উপন্যাসের চরিত্র বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তাকে ওভাবে বলতে হয়েছে।
বাকি গুলো ঠিক আছে।
এবার আসুন মৃত আসিফ মহিউদ্দিনের কথায়। নিজের বক্তব্য কে সমর্থন দিতে আপনি কৌশলে তার সুনাম ও করলেন। সব ঠিক আছে। আমার প্রশ্ন হল মাদ্রাসার ছাত্র চুরি করে তাতে অবাক হবার কি আছে ? আপনি কি বলতে চাইছেন যে মাদ্রাসার সব ছাত্রই ফেরেশতাদের মত পবিত্র ? তা কি সম্ভব ? ভুল তো তাদের ও হতে পারে, নাকি পারে না ?
আপনি কি আল কুরআনের হারুত মারুত ফেরেশতাদের ঘটনা টা জানেন ? না জনালে এবার জেনে নেবেন, তারা ফেরেশতা হয়ে ও পৃথিবী তে এসে ভুল করেছেন এবং এখনো তার শাশ্তি ভোগ করছেন।
আসিফ মহিউদ্দিন এখানে সমাজের চিত্র তুলে ধরেছেন, আর কিছু নয়, আপনি বাকা চোখে লেখাটা পড়ায় আপনার কাছে তা বাকা মনে হয়েছে, কিন্তু আমার মনে হয়েছে এখানে জাস্ট একটা সমাজের সামাজিক ব্যার্থতা তুলে ধরা হয়েছে। আর কিছুই নয়।
ভাল থাকবেন।
তন্দ্রা
ভাই মওলা, ইসলাম একটি ধর্ম গ্রন্থ। এটা অনেকে অনেক ভাবে ব্যাবহার করে। আমি কোন বাগ-বিতন্তায় যাব না।
ණঃ ”আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে বিবেক দিয়েছেন; কু প্রবৃত্তি দেন নি। পশুদেরকে কু প্রবৃত্তি দিয়েছেন; বিবেক দেন নি।আর মানুষকে কু প্রবৃত্তি ও বিবেক উভয়টি দিয়েছেন।”
নিজের লাইনটি পড়ে আপনি দেখুন্ত এখানে মানুষ কথাটি উল্লেখ তাই আমি বলব মানুষ যেখানেই থাকুন কু প্রবৃত্তি ও বিবেক উভয়টি দিয়েছেন সুতরাং মানুষ মাদ্রাসা ও সাধারন যেখানেই থাকুন ভালো ও মন্দ কাজে জড়িত হতে পারে, তাই নয় কি? আপনি নিচশিত করে বলতে পারবেন না মাদ্রাসায় পড়লে সব মানুষ সত্য ও সুবিবেকবান হবে। যদি তাই হতো আমার এক ফ্রেন্ড আছে তাঁর মামা একজন মাওলানা গ্রামে গ্রামে মিলাদ করে বেরান কিন্তু সে তাঁর বাবার জমি জোর করে লিখে নিয়েছে এবং বাবা মার খাবার বা কোন খোঁজ খবর নেন্না। এখানে কি আপনি ইসলামের দোহায় দিয়ে তাঁকে সৎ বলবেন না ইসলাম কে ঘাট করবেন। নিশ্চয় ইসলাম দায়ী নয়। এখানে মানুষ যেখানেই থাকুন তাঁরা জেকন ভালো ও মন্দ কর্ম সাধন করতে পারে, এটা সঠিক কিনা।
এমন কিছু দোয়া আছে যেগুলো ব্যাবহার করে ভালো মন্দ কাজ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে আপনার ব্যাক্তি উপর নির্ভর করবে আপনি কি করবেন।
ধন্যবাদ ভাই।
শিশির কনা
পড়লাম , ‘ সূরা বাকারাহ;৪২নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন।
“তোমরা সত্যকে মিথ্যা দিয়ে আড়াল করো না এবং জেনেশুনে সত্য গোপন করো না।” (২:৪২) । আপনি এ আয়াত এর সাথে জামায়াত ইসলাম কে উদাহারন হিসেবে দেন নি। আপনি জেনে শুনে এই তথ্য গোপন করেছেন এবং পবিত্র কুরআন এর এই নির্দেশ অমান্য করেছেন।
জিসান শা ইকরাম
ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু যারা ইসলামকে পন্য বানিয়ে রাজনীতি করছে । যারা উগ্র , মৌলবাদী এবং সন্ত্রাসী। নাস্তিকদের পরিমান এত সামান্য যে তাদের কথা সাধারন মানুষের উপর কোন প্রভাব ফেলেনা।
আপনি উদাহারন হিসেবে জামাত ইসলাম , শিবির , বাশেরকেল্লা এসবের উল্লেখ করলে , আপনার বর্নিত কুরআন এবং হাদিসের কথার সাথে মিলে যেতো বেশী।
খসড়া
মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
স্বপ্ন নীলা
তন্দ্রা,,,,,,,ইসলাম একটি ধর্ম গ্রন্থ নয়,,,,,,,,,,,ইসলাম একটি জীবন ব্যবস্থা।
ভাইয়া তোমাকে অনুরোধ করছি আরো তথ্য প্রমান দিয়ে লিখো,,,,,,,,,,,,ভাল লাগলো লিখা,,,,,,,,,,