তথ্যের এই বিশাল পৃথিবীতে বাস করে আমরা আজ সবচেয়ে আধুনিক জাতি। মোবাইলটা খুললেই কত কি,ভাবতেই বেশ অবাক লাগে। কিন্তু আমরা জানি না আসলে হচ্ছে কি। প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ তো ঠিকি ডাউনলোড দেই,কিন্তু তার আগে সবকিছু এলাউ এলাউ করে যাই, কেন করি? ভাবছেন কি? ভাবেন নি। কারন যদি ভাবতেন তাহলে এখন আপনাদের সাইবার যুদ্ধ করতে হইতো না। যুদ্ধ করার জন্য এখন মাঠ বা অস্ত্র বা সৈন্য কোনটাই লাগে না, একটা ডিসপ্লেই যথেষ্ট।
গোপন ছবি থেকে শুরু করে গোপন কথা সব সামাজিক যোগাযোগে কিছু না ভেবেই বলে যান সবাইকে,কখনো কি ভাবছেন কিভাবে এই কাজটা সম্পূর্ন হচ্ছে? গোপন ছবি বা তথ্য পাঠানোর পর তা যায় মেইন সার্ভারে,সেখানে এলাউ করলেই তারপর এই মেসেজ আরেকজনের কাছে যায়,তার মানে আপনার কোন কিছুই গোপন নয়। সবকিছু কেউ না কেউ দেখতেছে, পরে কিছু হলে আমি কিছু করিনি তাই না।
গেমে ঢুকার আগে তারা বললো স্টোরেজ পারমিশন লাগবে,আপনি একসেপ্ট করে দিলেন,গেম শুরু হলো,সুন্দর খেলছেন,কখনো কি ভাবছেন,আপনার স্টোরেজে কি কি আছে? ফোন খুললেই এই অফার,ঐ অফার, লটারি ড্র, বিদেশে যাওয়ার সুযোগ অনেক অফার। কিন্তু কখনো ভাবছেন এইসব কোম্পানি আপনাদের খবর কিভাবে পাচ্ছে?
কোন কিছু রেজিষ্ট্রেশন করতে নিজের ই মেইল,নাম্বার সব তো বিনা দিধায় দিয়ে দেন,কখনো কি ভাবছেন এগুলো কেউ জানলে কি হতে পারে? ফেসবুকের সাথে গেম একাউন্ট এড করে গেম খেলা শুরু করলেন। খুব সুন্দর চলছে,কিন্তু একবারও ভাবছেন কি আপনি এলাউ না করা সত্যেও কিভাবে আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ডরা গেমে আপনার এড হয়ে যাচ্ছে? কিভাবে তাদের নাম অটো গেমে আসছে? তার মানে তারা আপনার ফ্রেন্ডলিস্ট চেক করতে পারে। ফ্রেন্ডলিস্ট অনলিমি বা ফোনে পাসওয়ার্ড দিলেই তথ্যের এই যুগে নিরাপত্তা পাওয়া যাবে না।
তথ্যের এই শহরে আমরা কাপড় ছাড়া এক ঘরে বন্দি,যেখানে আমরা ভাবছি ঘরের ভিতরে আমি কাপড় ছাড়া আছি,কেউ দেখতে পাচ্ছে না,কিন্তু আমরা ভুলে গেছি ঘরে তো সিসি ক্যামেরা আছে। সিসি ক্যামেরা আমার কাছে আছে,সেটা অন্য কেউ জানবে না,কিন্তু আমরা এটাও ভুলে যাই যে,সিসি ক্যামেরার যে বারকোড আছে তা দিয়ে তার চৌদ্দ গুষ্টির খবর নেওয়া যাবে।
তথ্যের এই যুগে আমরা যত কিছু জানি তার সম্পর্কে, তার থেকে ৩ গুন বেশি জানে সে আমাদের সম্পর্কে। তাই সচেতন হোন, তথ্যের দরকার আছে,তবে এভাবে নয়,নিজেদেরকে একটু ছোট্ট পর্দার স্ক্রিন থেকে বের করে নিয়ে আসেন ৷ দেখেন চারদিকটা,স্ক্রিনে দেখা সবুজ মাঠটা স্ক্রিনের বাইরে আরও কতটা সুন্দর!
৯টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
আমরা কেউই নিরাপদ নই,
প্লে স্টোর থেকে যে এপ্লিকেশন ই ইনস্টল করিনা কেন, আমরা সবাইকে আমাদের মোবাইল সেটটাও তাদেরকে দিয়ে দেই,
উবার হচ্ছে গাড়ি ভাড়ার এপ্লিকেশন। তাদের মোবাইলের গ্যালারীতে এক্সেস কেন লাগবে? আমরা তাও তাদের দিয়ে দিচ্ছি।
এরা সব দেখতে পায়, অর্থাৎ মোবাইল সুধু আমি একা ব্যবহার করছি না, ততগুলো এপ্লিকেশন ব্যবহার করছি, সবাইকেই আমরা মোবাইল সেটটা দিয়ে দিচ্ছি।
ভালো লেখা,
শুভ কামনা।
রাফি আরাফাত
অসংখ্য ধন্যবাদ
ছাইরাছ হেলাল
বিনা মূল্যে সব কিছু পাচ্ছি! মোটেই না!
আমার তথ্য উপাত্ত আমার অজান্তে বিকিকিনি হচ্ছে।
সুন্দর বিশ্লেষণ।
রাফি আরাফাত
ধন্যবাদ ভাই
এস.জেড বাবু
নিজের তথ্য বেঁচে এপস ইউজ করা হচ্ছে। আকর্ষনীয় যত এপস নিজেরা কেড়ে নিচ্ছে মোবাইলে থাকা সব তথ্য।
এ থেকে মুক্তি হয়ত আসবে না সবার। তবে অপ্রয়োজনীয় এপস শৌখিনতা এড়িয়ে যারা চলেন- হয়ত তারা অনেকটাই নিরাপদ।
অতন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট।
চমৎকার লিখেছেন।
রাফি আরাফাত
জি ভাই,ভাবতে হবে আমাদের
সুরাইয়া পারভিন
চমৎকার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সত্যিই তো এভাবে কখনো ভেবে দেখা হয়নি।
ভেবে দেখা উচিত
আকবর হোসেন রবিন
তথ্য চুরির এই ব্যাপার গুলো নিয়ে সাউথ ইন্ডিয়ানরা একটা সিনেমা বানিয়েছে। দেখছিলাম। খুব দারুণ ছিলো। কিন্তু, নামটা এই মুহূর্তে মনে পড়ছেনা।
আপনার কথা গুলো খুব কাজে আসবে যদি মানুষ এটা পড়ে একটু সচেতন হয়। শুভকামনা ভাই।
নিতাই বাবু
আমরা একটুও ভাবছি না, কী হচ্ছে আর কী হতে পারে। আমরা মনে করছি আমিই সেরা! আসলে সেরা এই যুগের নেটওয়ার্ক সার্ভার। কীবোর্ড-এ লিখছি! মনের আনন্দে লিখছি! কত কী লিখে যাচ্ছি! যেই কীবোর্ড ব্যবহার করে লিখছি, সেই কীবোর্ড অ্যাপ্লিকেশনে সবকিছু রেকর্ড হয়ে থাকছে। আমার কিছুই গোপন থাকছে না। যদি বেশি খারাপ হয়ে যাই, তো একসময় এই খারাপের ফল বেরিয়ে যাবে।
আপনার এরকম গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট প্রশংসার দাবি রাখে নিশ্চয়ই! শুভেচ্ছা জানবেন।