আগেই বলে রাখছি দেশের নানা হটকেট ইস্যুর মধ্যে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরে নির্যাতন নিয়ে লিখা ম্যাড়ম্যাড়ে পোস্টের বেইল নাই। তবুও সবাইকে জানানোর জন্যই এই লেখাটি। আরো একটি উদ্দেশ্য আছে এই লিখার। বাংলাদেশে একটা মিথ প্রচলিত আছে হিন্দুদের দেশপ্রেম নেই। বাংলাদেশকে তারা কখনোই নিজেদের দেশ ভাবেনা। কেন এবং কোন পরিস্থিতে পড়ে একটা হিন্দু মানুষ নিজের ভিটেমাটি জন্মভূমি ছেড়ে পালায় সেটা জানানোরও ইচ্ছে থেকে এই লেখাটি লিখা।
বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার পালপাড়ার মালাউন শ্যামপদ পালের দুই মেয়ে কলেজে পড়ত। একদিন ছোট মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে ২লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে সন্ত্রাসী মোরশেদ। একদিন পর পুলিশ ঐ মেয়েকে উদ্ধার করলেও সন্ত্রাসী মোরশেদকে গ্রেপ্তার করেনি। একদিন মালাউনের মেয়ে সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি ছিল আর তার সাথে একটু আর ধর্ষন করা হয়নি এটা ভাববেন না।
পরে দুই মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে সপরিবারে ভারত পালিয়ে যান শ্যামপদ পাল। ভারতের দালাল মালাউনের বাইচ্চাটির এতটুকু দেশপ্রেম নেই। বেঈমানি করে ভারত চলে গেল। দেশে থাকলে না হয় একটু বউ আর মেয়েকে তুলে যাওয়া হতো! কি আর হতো! এই মালাউনগুলোর একদম দেশপ্রেম নেই।
তারপর পালপাড়ার ডাবলু পালের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করে মোরশেদ। সাত দিনের মধ্যে টাকা না পেলে উনার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। ভারতের দালাল ডাবলু পালও দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। দেশপ্রেম দেখিয়ে সোনার বাংলায় পড়ে থেকে নিজের বউটাকে একটু তুলেও দিতে পারল না মালাউনটা! বেঈমান বেঈমান ভারতের দালাল সব। একটুতেই ভারত পালায়।
গত ২৭ এপ্রিল উৎপল চন্দ্র দাসের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মাটির তৈরী জিনিসপত্র ভাঙচুর করে মোরশেদ বাহিনী। উৎপলের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেছিল। তিনি ৩০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২০ হাজার টাকা দিতে দেরি হওয়ায় ভাঙচুর করা হলো।
২০০৩ সাল থেকে ঐ এলাকায় এইসব নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে মোরশেদ। তার কার্যালয়ে একটি শক্তিশালী সাইনবোর্ড আছে। সেটি হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামিলীগের একটি সাইনবোর্ড। মোরশেদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা আছে, মাদক ব্যবসার মামলা আছে। তবুও মোরশেদকে ১২ বছরেও গ্রেফতার করা যায় না। আওয়ামিলীগের সাইনবোর্ডের একটা হেঁডম আছে তো ভাই!
#নোট- মালাউন হিন্দুদের থেকে জিজিয়া কর নেওয়া, নারী ধর্ষন, দেশত্যাগে বাধ্য করা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অপরাধ নয়। তাই আমি এসবকে অপরাধ বলছি না।
সাংবাদিকেরা ঐ গ্রামে গেলা দেখা যায় একটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। সবার চোখেমুখে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। সাংবাদিক এসেছে জেনে এক গৃহবধূ কেঁদে বলেন;-
“দাদা হামাকেরে ইজ্জত বাঁচান, সম্ভ্রম বাঁচান, এতগুলো লোকের প্রাণ বাঁচান।”
বাংলাস্তানে মালাউন হিন্দু হয়ে জন্মাইছে তাদের আবার ইজ্জত!
এই লোকগুলো সবাই দরিদ্র মৃৎশিল্পী। মাটির তৈরি জিনিসপত্র কিংবা প্রতিমা তৈরি করে এদের জীবন জীবিকা চলে।
অতএব আমি মডরেট মুসলমান বান্দা ঢাকা চিটাগাং শহরে বসবাস করি। আমি বছরে একবার পূজায় গিয়ে সেলফি আপলোড দিই এবং স্ট্যাটাস দিই;-
“ধর্ম যার যার এবং রাষ্ট্র সবার।”
তাই বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। আর টুকটাক সংখ্যালঘু নির্যাতন সব দেশেই হয়। দেখেন না ভারতে এবং মিয়ানমারে আমার মুসলমান ভাইয়েরা কত কষ্টে আছে! সেই তুলনায় বাংলাদেশের হিন্দুরা ভালোই আছে। শালারা একটুতেই ভারত পালায়।
জয় বাংলা বলে আগে বাড়েন। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে! আর অবশ্যই এটা একটা সাম্প্রদায়িক এবং ইসলাম বিদ্বেষী পোস্ট। ন্যাকামি দেখাতে না পারা এবং দুই সাইড ব্যালেন্স করে লিখতে না পারার জন্য আমি অবশ্যই একজন সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি।
তথ্যসূত্র-
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/529117/%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A7%9C%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%BE%E0%A7%9C%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A7%87-%E0%A6%8F%E0%A6%95-%E0%A6%B8%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%80
২০টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
বলার কিছুই নাই আমরা বিবেকহীন। আমরা মনুষ্য হীন বেমানুস।
ক্ষমা কর মা তোমার বঙ্গ সন্তানদের।
জুলিয়াস সিজার
ধন্যবাদ।
সঞ্জয় কুমার
দাদা একদম সঠিক বলেছেন । সম্পূর্ণ সহমত
জুলিয়াস সিজার
হতাশা থেকে লিখা।
স্বদেশী যোদ্ধা
দাদা ঠিক বলেছেন। আমারা মালাওন পরিচয়ে আছি । আমরা শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি । খারাপ না , চলতে দিন ।চলতে চলতে যতদূর যায়
জুলিয়াস সিজার
আফগানিস্তান পর্যন্ত যাবে।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
চমৎকার যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন।ধর্ম যার যার দেশ সবার।ঘরের কর্তা যদি বাঘ হয় তবে মুরগীর দশাতো কাইত হবেই।আগে রাষ্ট্রের ক্ষমতাবানদের সঠিক পথে চলতে এবং চালাতে হবে।
জুলিয়াস সিজার
বাংলাদেশ অমুসলিমদের জন্য কখনোই নয়। শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্যি।
কৃন্তনিকা
আপনি যে ঘটনা গুলো উল্লেখ করলেন এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনা আমি দেখেছি নিজ চোখে। সেগুলাও পত্র-পত্রিকায় আসে নি। এসব ঘটনা আরো সংকুচিত হয়ে যায় জীবন। মুক্তভাবে চিন্তা করতেও ভয় লাগে।
ভালো লিখেছেন। আপনার সাথে সম্পূর্ণ সহমত।
জুলিয়াস সিজার
চট্টগ্রামের বাঁশ খালিতে এক পরিবারের যে ১১ জন হিন্দু পুড়িয়ে মারা হয়েছিল সেটা আমার নিজের চোখে দেখা।
আশা জাগানিয়া
অনেক কিছুই থেকে যায় জানার বাইরে। হতাশ হই এসব ঘটনা জেনে,কিছু করতে পারিনা।
জুলিয়াস সিজার
হুম। 🙁
সঞ্জয় কুমার
আমার পরিবারের 80% বাংলাদেশ ছেড়েছে জানিনা আমি কেন আজও আছি । প্রতিনিয়ত হুমকি গালি উপহার পাই
জুলিয়াস সিজার
আগে আমি মালাউন একটা গালি। পরে জানলাম মালাউন শব্দের বাংলা অর্থ অভিশপ্ত। তাই আমি এটাকে এখন আর গালি ভাবি না। অভিশপ্ত না হলে এদেশে কেউ সংখ্যালঘু না হয়ে জন্মায় না।
খেয়ালী মেয়ে
“ধর্ম যার যার এবং রাষ্ট্র সবার।”—শুধুই একটা বাক্য….বাস্তবতা অন্যকিছু বলে….
জুলিয়াস সিজার
যে রাষ্ট্রে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সে রাষ্ট্র সবার কি করে হয়?
জিসান শা ইকরাম
এই অবস্থা থেকে আর ফিরে আসা সম্ভবনা এ দেশে
বাস্তবতা এটাই।
জুলিয়াস সিজার
হুম। দেখা যাক ১০০% মুসলিম হলে তারা কতটুকু সুখে থাকে।
শুন্য শুন্যালয়
অত্যাচারের মাত্রা যেখানে বিষের মতো সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে, কেউ নিরাপদ নয়, সেখানে ১০০% মুসলিমের দেশে সুখ দেখতে চাস? কিছু বলার মতো মুখ আমাদের আসলেই নেই। অসাম্প্রদায়িক (?) বাংলাদেশের সমস্ত নির্যাতনের ভার আমাদের উপরেই বর্তায়। দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়াও অপরাধ।
জুলিয়াস সিজার
No comment.