আমার জীবনে ঘটেছে এমন কিছু কিছু ঘটনা আছে, যা বলতে গেলে এখনো আমার শরীরের লোম শিউরে ওঠে! ছোট থেকে এই পর্যন্ত হঠাৎ হঠাতই মাঝে মাঝে কিছু অদ্ভুত ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। অপ্রত্যাশিত ভাবেই যা ঘটেছে, তা মোকাবেলা করার জন্য সে মুহূর্ত গুলোতে আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না! জানিনা এগুলো কারো সাথে হয়েছে কিনা! নাকি শুধু আমার সাথেই ঘটেছে? অনেকের সাথে মিল থাকতেও পারে। জানিনা কিছুটা ভ্রম নাকি অন্য কিছু? আমাদের সবারই লাইফে এমন এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা আমরা চাইলেও সেগুলি এড়াতে পারিনা। আবার ভুলতেও পারিনা। এমনকি পরবর্তীতে এগুলো নিয়ে চিন্তা করলেও তখন সেরকম কোন যুক্তি যুক্ত উত্তর খুজে পাইনা! এটা ঠিক যে কিছু কিছু ঘটনা মনে না রাখায় ভালো। ভ্রম মনে করে ভুলে যাওয়ায় উত্তম। যে সব চিন্তা বা ভয় মনে ধরে গেলে লাইফে যে কোন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেড়ে যায় সেগুলি চিন্তার মস্তিষ্ক থেকে যতটা দ্রুত সম্ভব ঝেড়ে ফেলায় বাঞ্ছনীয় হবে। তবে সব কিছু কি চাইলেও ভোলা যায়?? কিছু কিছু সময়, একাকীত্বের মাঝে বেশী হঠাৎ করেই মনে পড়ে যেতে পারে, আসলেই সেটা কি ছিলো? কিছুক্ষন ভাবনার জগতে হারাবেন, কিছু প্রশ্নের উত্তর মেলাতে মস্তিস্কে সিগন্যাল পাঠাবেন তবুও এটা অধরা থেকে যাবে। এমনকি পরক্ষনেই আপনি সেটা ভুলে যাবেন। এই পৃথিবীটা রহস্যে ঘেরা। এখানে সব স্বাভাবিকতার মাঝেও কিছু একটা রহস্য থেকেই যাবে, যা আপনার চোখ এড়িয়ে যাবে। হঠাৎ ধরা দেবে আবার দেবেনা! “সৃষ্টি কর্তার” সৃষ্টির মধ্যে যেমন আছে অসম্ভব সুন্দর সব সৃষ্টি! তেমনি আছে লুকানো সব রহস্য! অনেক কিছুই আছে যা আমরা খালি চোখে মেলাতে পারিনা। সৃষ্টির রহস্য উদঘাটনের পেছনে আজো সব বড় বড় বিজ্ঞানিরা রিসার্চের পর রিসার্চ করে চলেছে। কিছু কিছু ছোট ছোট বিষয় ছাড়া পৃথিবীর অনেক বড় অংশের রহস্য কিন্ত তাঁরা আজো পর্যন্ত উদঘাটন করতে পারে নাই! এবং সব কিছু বের করা তাদের পক্ষে এক কথায় অসম্ভবই বলা যায়! মহান “আল্লাহ পাক” তাঁর কুরআনে স্পষ্ট বলেই দিয়েছেন।
“মানব জাতি তাঁর সিমারেখার ভেতর বন্দী! সে চাইলেও তাঁর সীমা অতিক্রম করতে পারবেনা।
বিজ্ঞানীরা কতই তো রিসার্চ করে, তাঁরা কি আজ পর্যন্ত আকাশের সীমানা কতদূর পর্যন্ত বেষ্টিত বের করতে পেরেছে? আকাশের সিমান্ত খুজে পেয়েছে? পাবেনা। অনেক কিছুই আমাদের অজানা আছে এবং অজানা থেকে যাবে। “বারমুডা ট্রায়েঙ্গেলের” কথায় ধরা যাক, আজ পর্যন্ত কত প্লেন কত জাহাজ সেখান থেকে হাওয়া হয়ে গেলো! এসব কোথায় গেলো, কিভাবে গেলো উত্তর খুজে পাওয়া গেলো কি? যায়নি। এরকমই রহস্যে ঘেরা এই পৃথিবীটা। ছোট্ট জীবন কিন্ত রহস্যের শেষ নেই!
বিবরন লম্বা করবো না। সংক্ষেপে শেষ করতে চাই।
এই পৃথিবীতে শুধু মানুষই কিন্ত বাস করেনা। জীনেরাও এই পৃথিবীর একটা বিরাট অংশ নিয়ে আছে। আমাদের মত তাঁরাও পৃথিবীতে বাস করে। এমনকি তাঁরা সংখ্যাতে আমাদের থেকে দিগুন! আমরা শুধু মানুষদেরই দেখতে পায়। কিন্ত জীনদের দেখতে পাইনা! আর খালি চোখে তাদের দেখাও সম্ভব না! যারা মুসলমান তাদের অবশ্যই “জীনদের” অস্তিত্ব মনে প্রানে বিশ্বাস করা উচিৎ। আর এটা বিশ্বাস করা “ঈমানের” একটা অঙ্গ। যেহেতু “মহান আল্লাহ” কুরআনে স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন জীনদের সম্পর্কে। মানুষের পাশাপাশি জীনদের কথাও কুরআনে বার বার পৃথক পৃথক ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেহেতু সবথেকে বড় প্রমান হলো “শয়তান”
এই শয়তান ছিলো আগুনের তৈরি। মানে জীনদের বংশধর। এটা নিয়েও কুরআনে অনেক বড় ঘটনার আলোচনা করা হয়েছে। এই মুহূর্তে সেসব আলোচনায় যেতে চাচ্ছিনা। আজকে ছোট ছোট কিছু ঘটনা বলবো আপনাদের। যে গুলো আমি নিজে উপলব্ধি করেছি।
চলুন শুরু করা যাক।
এটা আমার জীবনের একেবারে ফার্স্ট ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা। যেটা এখনো আমার কাছে জীবন্ত লাগে।
ছোট ছিলাম। বয়স ১২ কি তেরো হবে। আমরা তিন ভাই বোন। বড় বোনের আলাদা রুম ছিলো। আমি আর আমার ছোট বোন এক রুমে ঘুমাতাম। শীতের রাত ছিলো। লেপ মুড়ি দিয়ে ছাড়া আমার ঘুম আসতো না। বরাবরের মত লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুমালাম। মাঝ রাতে হঠাৎ করে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। প্রচণ্ড গরম লাগছিলো। গা ঘেমে যাচ্ছে গরমে। শরীর থেকে লেপ ফেলে দিলাম। অন্ধকার রুম শুধু একটা ডিম লাইট জ্বলছে। এদিক সেদিক মাথা ঘোরাতে ঘোরাতে মশারীর বাইরের দিকে চোখ গেলো। সাথে সাথেই আমি স্থির হয়ে গেলাম। মশারীর বাইরেই আমার চোখ স্থির হয়ে আছে। শরীরের মধ্যে একটা ঝাঁকুনি অনুভব করলাম। ভয়ে পুরো শরীর টা জমে গেলো। আমার চোখের সামনে, মশারীর ঠিক বাইরে খাটের কোনা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে একটা অশরীরী! যার সারা অঙ্গ পা থেকে মাথা পর্যন্ত সাদা কাফনের কাপড় দিয়ে মোড়ানো! তাঁর শরীর ভেদ করে নজর চলে যাচ্ছে। গলা শুকিয়ে আমার কাঠ হয়ে গেলো। আমার পাশেই আমার ছোট বোন শুয়ে ছিলো। ওকে ডাকার মত অবস্থা আমার ছিলোনা। আমার গলা দিয়ে কোন স্বর বের হচ্ছিলোনা। অন্যদিকে ফিরবার মত শক্তিও আমি পাচ্ছিলাম না! অনেকটা জোর নিয়েই কোন মতে বুকের কাছ থেকে লেপ টান দিয়ে আবার মাথা ঢুকিয়ে ফেললাম লেপের ভেতরে। মনে মনে ভাবতে লাগ্লাম এটা আমার ভুল ধারনা হতে পারে? সাহস পাচ্ছিলাম না আরেকবার দেখার। তবুও ভয় দূর করার জন্য সাহস সঞ্চয় করে দ্বিতীয়বার ঐ ছায়ামূর্তির অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য মুখ থেকে হালকা একটু লেপ সরিয়ে সাম্নের দিকে তাকালাম। একি? আমার চোখ মিথ্যা দেখতে পারেনা! আমি সে জিনিসটা আবারো আবিস্কার করলাম সেম জায়গাতে সেম অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে! ভয়ে আমার শরীরে কাঁপ উঠে গেলো। আমি আবারো লেপ মুড়ি দিলাম। কিছুক্ষন পর আবারো লেপ নামিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম। আমি অবাক হলাম! পর পর দুইবার যে জিনিসটা আমার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো দেখলাম, তৃতীয়বার তাঁর কোন অস্তিত্ব আমি সেখানে পেলাম না!
পরদিন সকাল থেকে আমার জ্বরে সারা শরীর পুড়ে যাচ্ছিলো। আব্বু-আম্মু এবং সবাইকে ঘটনা বলেছিলাম সকালে। তারপর বাসার পাশের মাদ্রাসা থেকে কারী হুজুরের কাছ থেকে পানি পড়া, তাবিজ আরো কত কি এনে দিছিলো খেয়াল নাই। আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠেছিলাম। ঐ যাত্রায় বেঁচে গেলাম। তেমন কোন বড় সমস্যা “আল্লাহর” রহমতে হয়নাই।
সুলতান চাচার মারা যাওয়াঃ
শুনেছি এসব ঘটনা যাদের সাথে ঘটে তাঁরা যদি অতিরিক্ত ভয় পেয়ে যায় তবে তাঁরা বেশীদিন বেঁচে থাকেনা!
এর প্রমানও আমি পেয়েছি। আমাদের বাসার পাশে এক লোক মারা গিয়েছিলো এরকম একটা ঘটনার কারনে। খুব সাহসী লোক ছিলো তিনি। নাম ছিলো “সুলতান মোল্লা” প্রতিবেশি হিসেবে অনেকটা আত্মীয়ের মতন ছিলেন। আমাদের বাসায় আসা যাওয়া ছিলো। আমি ছোট ছিলাম তখন তিনি আমাকে কাধে করে নিয়ে সারা মহল্লা ঘুরে বেড়াতেন। আমার অল্প বয়স থাকতে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর কারন ছিলো এরকম.
এক রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি বের হন ঘর থেকে বাহিরে বাথরুমে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। তাদের টয়লেট টা ছিলো বাসার বাইরে। ঘর থেকে একটু দূরে ছিলো। টয়লেটের পেছন দিক টা থেকে ছিলো অনেক বড় একটা বাঁশ বাগান। তো তিনি টয়লেট সেরে বের হয়ে যখন ঘরের দিকে যাচ্ছে, তখন বুঝতে পারলো তাঁর পেছন পেছন কেউ একজন হাঁটছে! উনি দাঁড়িয়ে গেলো। এবং দেখার জন্য পিছে ফিরে তাকালো। পিছে তাকাতেই দেখতে পেলো সাদা শাড়ি পরা চুল গুলো উস্ক খুস্ক ভাবে ছেড়ে দেওয়া লম্বা একটা মহিলা তাঁর ঠিক পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। তাঁকে দেখে দাঁত বের করে হাসছে। এটা দেখে বিন্দু পরিমান ভয় পেলোনা তিনি। উল্টো গালিগালাজ করা শুরু করলো। গালি শুনেও সেই অদ্ভুত প্রেতাত্মা তাঁর পিছ থেকে সরলো না! তিনি এসব গ্রাহ্য না করে আবার হাঁটা শুরু করতে যাবেন ঠিক সেই মুহূর্তে লম্বা একটা বাঁশ এসে তাঁর পায়ের সামনে পড়লো! এবার উনি গেলেন আরো ক্ষেপে। পেছন ফিরে উল্টে তাড়া করতে গেলেন সেই পেত্নি টাইপের মহিলাকে। তাড়া দেবার আগেই এক লাফে মহিলা বাঁশ গাছে চড়ে বসলেন! উনি এবার বাঁশ গাছে ইট, খোয়া মারা শুরু করলেন। এবার প্রতিউত্তর পেলেন, সুলতান! তুই শেষ!
ওই রাতে উনি ঠিকই সুস্থ ভাবে ঘরে ফিরতে পেরেছিলেন, কিন্ত পরবর্তীতে তাঁর অবস্থা আশঙ্কা জনক হয়ে পড়লো। পরের দিন সকালে হঠাৎ করে তাঁর বাম সাইড পুরো অবাস হয়ে গেলো। তাঁর পরদিন পুরো শরীর ধরে অবাস হয়ে গেলো। তিনি সম্পূর্ণ বিছানায় পড়ে গেলেন। বেশীদিন বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়নি। এক সপ্তাহ বাদেই তিনি পরপারে চলে গেলেন!
ভুত বলি বা প্রেতাত্মা কিংবা জীন, এরা আপ্নাকে কিছুই করবেনা। এরা আপ্নাকে শুধু শুধু মেরে ফেল্বেনা যদি আপনি ওদের ক্ষতি না করেন! ওরা শুধু মানুষ কে ভয় দেই। তাও সবার সামনে এরা ধরা দেইনা। ভালো জীনেরা ক্ষতি করেনা। ক্ষতি করে খারাপ জীনেরা যদি তারা ক্ষতির শিকার হয়? তখন। এর আগে কিছু করবেনা। একটু ভয় দিতে পারে এটুকুই। আপনি জীবনে কখনো যদি! এদের মুখোমুখি হয়ে যান? তবে সাহসী পুরুষত্ব দেখাতে যেয়ে খবরদার এদের ডিস্টার্ব করতে যাবেন না! তাহলে কিন্ত আপনি শেষ।
এরকম আরেকটা উদাহরন পাইছিলাম যখন আমি মাদ্রাসায় ছিলাম তখন আমার ক্লাস মেট আলামিন ওর কাছ থেকে শোনা। ওর আপন বড় ভাই ছিলো যে হুবহু এরকম পরিস্থিতিতে পড়ে মারা গিয়েছিলো। ২২ বছর বয়সে মারা যায় আলামিনের বড় ভাই “এনামুল” ওরা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেছিলো। রাতে ঘর ছেড়ে বাইরে টয়লেটে গেছিলো এনামুল। ঘরে ফেরার পথে মুখোমুখি হয়ে যায় এক অশুভ প্রেতাত্মার। এনামুল কে দেখে ছোট নিম গাছে বসে হাসছিলো। এনামুল রাগ হয়ে নিম গাছে ঢিল ছুড়লো। সাথে সাথে এনামুলের সামনে এসে উপস্থিত হলো সেই বিদঘুটে চেহারার প্রেতাত্মা টি। এনামুল দেরী না করে গায়ের জোরে চড় বসিয়ে দিয়েছিলো তাঁর গালে! ঘটনার পুনরব্রিত্তি এখানেও সেদিন এনামুলের কিছু হলোনা কিন্ত তিন/চার দিনের মধ্যে সে মারা গেলো । একই ভাবে।
এরকম সেম কেইস দেখেছিলাম আরেক জায়গাতে। বাগেরহাটের রামপাল জেলায় বেড়াতে গেছিলাম এক বন্ধুর সাথে গ্রামে তাদের বাড়িতে। তাদের বাসার ঠিক উত্তর সাইডের বাড়িতে এক ছেলে একই রকম পরিস্থিতিতে মারা যায়! তাঁর মারা যাওয়াটা ছিলো এরকম, সন্ধ্যার পর বাড়ির পেছনে বাগানে পিঠের হাঁড়ি নিয়ে গাছের নিচে বসে বসে সে পিঠে খাচ্ছিলো। হঠাৎ একটা বিদঘুটে ছেলে এসে তাঁর কাছে পিঠে চাচ্ছিলো। কিন্ত সে পিঠে দেই নাই। অনেকবার চাওয়ার কারনে বিরক্ত হয়ে সে ছেলেটাকে মেরে বসে!
তাঁর ঠিক ২ দিন পর ওই ছেলেটার মৃত্যু হয়!
বোবা ভুতে ধরাঃ
অনেকের এই সমস্যা থাকতে পারে। আবার নাও থাকতে পারে। কেউ কেউ এর সম্মুখীন হয়েছেন কিংবা এখনো হননি। তবে আমি এর সম্মুখীন হয়েছি বহুবার!! বোবা ভুতে সাধারণত ধরে তাদের, যারা রাতে একা থাকেন। অনেকেই একা থাকেন কিন্ত ধরে না! হুম, সবাইকে ধরবেনা এটাই স্বাভাবিক। এর মধ্যেও কিছু সিস্টেম আছে। যেমন ধরেন, একা থাকেন আবার শোয়া উল্টা পাল্টা, কিংবা যদি শরীর নাপাক থাকে। মরা মানুষের ন্যায় একেবারে টনটন সোজা হয়ে শুয়ে থাকলেও বোবা ভুতে ধরার সম্ভাবনা বেশী থাকে! “বোবা ভুত” আসলে এরা হচ্ছে “জীন” কিছু খারাপ জীনেরা যারা সবসময় আপনার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছে। আমাকে যতবারই ধরেছে “আল্লাহর” রহমতে সুরা, কালাম পড়ে বের হয়ে আসতে পেরেছি। এরা যখন আপ্নাকে ধরবে আপনি সহজে বের হয়ে আসতে পারবেন না। গভীর ঘুমে থাকা ছাড়া সাধারণত এরা কাউকে ধরেনা। আপনি যখন গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে পড়বেন ঠিক তখনই কোন দুঃস্বপ্ন দেখা শুরু করবেন। যেমন ধরেন স্বপ্নটা এরকম হতে পারে, আপনি মাঠে খেলা করছেন। সবাই ছুটাছুটি করছে আপনি তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন। কোথাও লুকালেন যাতে কেউ আপ্নাকে দেখতে না পারে। সবাই আপনার খোঁজ করছে আপনি সেটা পালিয়ে পালিয়ে উপভোগ করছেন। একা একা বসে হাসছেন। ভাবছেন একটু পরই পেছন থেকে যেয়ে তাদের চমকিয়ে দিবেন! অপেক্ষার অবসন ঘটিয়ে আপনি এবার সেখান থেকে ওঠার চেষ্টা করছেন কিন্ত এবার আপনি আর সেখান থেকে উঠতে পারছেন না! আপনি কিছুতেই উঠতে পারছেন না! আপনি চিল্লাপাল্লা করছেন সবাইকে জানানোর জন্য যে আপনি সেখানে আটকা পড়েছেন কিন্ত কেউই আপনার গলার আওয়াজ শুনতে পারছেনা! আপনি সবাইকে দেখতে পারছে তাদের আওয়াজ শুনতে পারছেন অথচ কেউই আপ্নাকে দেখা কিংবা আপনার ভয়েস কিছুই শুনতে পারছেনা। আপনি সত্যি সত্যিই হারিয়ে যাচ্ছেন! এই হারিয়ে যাওয়া হতে পারে আপনার বাস্তব জীবন থেকেও। আপনি এই স্বপ্নে মৃত্যু বরন পর্যন্ত করতে পারেন! জী হ্যাঁ “মৃত্যু” হয়ে যেতে পারে আপনার! আপনি এই স্বপ্ন থেকে চাইলেও উঠতে পারবেন না। আপনি সব কিছু স্পষ্ট উপলব্ধি করতে পারবেন! আপনি বুঝতে পারবেন আপনার উপর কিছু একটা ভর করে আছে! কিন্ত আপনি তাঁকে অতিক্রম করে উঠে বসতে পারছেন না! আবার সেই স্বপ্নের জগতে যেখানে আপনি বন্দী হয়ে আছেন সেখান থেকেও আপনি মুক্তি পাচ্ছেন না! আপনি যখনই চোখ মেলাতে সক্ষম হবেন, অশরীরী যখনই আপনার শরীর থেকে সরে যাবে? ঠিক তখনই আপনি দুটি জগত থেকেই মুক্তি পাবেন। শুনে কেমন যেনো রুপকথার মত মনে হলো তাইনা? আসলে এটা কিন্ত রুপ কথা না। এটা সত্যিই বাস্তব! আমি এর সম্মুখীন হয়েছি বহু বহুবার। বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। কেউ এরকম সিচুয়েশনে পড়লে অবশ্যই মনে মনে “আয়াতুল কুরসি” পড়বেন এটা না পারলে সূরা “কাফিরুন” সূরা “ইখলাচ” পড়বেন। এগুলো পাঠ করতে পারলে সাথে সাথে বিদ্যুতের মত এই অশরীরী আপনার শরীর ত্যাগ করবে।
আমার দেখা মতে বোবা ভুতে ধরে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
জেনে রাখা ভালো। অনেকে এসব গুজব হিসেবে উড়িয়ে দিতে পারেন। এতে আমার কিছু যায় আসেনা। আমার ব্যাক্তিগত এক্সপেরিয়েন্স থেকে বললাম। আগেই বলেছি পৃথিবীটা কিন্ত বড়ই অদ্ভুত! অদ্ভুত পৃথিবীতে অদ্ভুত সৃষ্টির লিলা খেলা কিন্ত চলবেই! তাই সব কিছু হেঁসে উড়িয়ে না দিয়ে জেনে রাখুন। জীবনের কোন এক মোড়ে কাজে লাগতেই পারে!
আজকে আর আলোচনা করবোনা। সংক্ষিপ্ত কিছু লিখলাম। হাতে সময় পেলে এসব জিনিস নিয়ে আবারো দ্বিতীয় পর্বে আসবো। আরো অনেক কিছুই আছে যা আজ আর আলোচনায় আনলাম না।
ভালো থাকবেন সবাই।
১২টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
বিশ্বাস করলেই অনেক কিছু, নয়তো নয়।
অশরীরির চেয়ে মানুষ ভয়ঙ্কর, আমি এটাই মনে করি।
রাসেল হাসান
ভালোই বলেছেন! :c
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
সীমান্ত উন্মাদ
নিশিথী রাতে ভূতের গল্প আমার বেশি ভাললাগে। ভাই আপনার কাছ একটা অনুরোধ নিয়মিত দিয়েন কিন্তু।
গল্প ভাললাগছে। \|/
শুভকামনা জানিবেন নিরন্তর।
রাসেল হাসান
নিয়মিত দিতে পারবো কিনা জানা নেই! তবে চেষ্টা করা যাবে।
আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন। 🙂
শুন্য শুন্যালয়
ডাক্তারদের তো ভাই পেশেন্ট কমিয়ে দিবেন আপনি 🙂
চোখের সামনে যা রয়েছে তাতেই আমাদের অবিশ্বাস, আর বলছেন অশরীরি কে বিশ্বাস করতে? যাই হোক ভূতের গল্প হিসাবে পড়ে নিলাম।:)
রাসেল হাসান
:p কি যে বলেন আপু…
অনেক অনেক শুভেচ্ছা পাঠে। আর ভুতের গল্প
মনে করেই পড়া ভালো।
আবু খায়ের আনিছ
বিশ্বাসে মিলায় মুক্তি, তর্কে বহুদূর।
জীন আছে এটা প্রত্যেক মুসলমানের বিশ্বাস করতেই হবে।
বোবায় ধরা এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখা আছে, কিন্তু জীনে ধরা এর কোন ব্যাখা নেই। তবে মাঝে মাঝে কিছু ঘটনার ব্যাথা দিয়ে বিজ্ঞান বলে হ্যালুসিনেট।
আমার বাস্তব জীবনে এই সব বিষয়ের এক্সপিরিমেন্ট করার ইচ্ছা আছে এবং কয়েকবার কিছু ভৌতিক জায়াগায় গিয়েছি কিন্তু কোন কিছু পাইনি।
পাহাড়পুর বোদ্ধ বিহার, লাশঘর,বা শশাণ এ মধ্য রাতে একা কাটিয়েছি কিন্তু এমন কিছু পাইনি।
মাঝে মাঝে শুনি কবরস্থানে নাকি জীন থাকে, কিংবা মসজিদে। কবরস্থানে জীন থাকে এটা ভিত্তিহীন কথা কিন্তু মসজিদে থাকে এমনটার কথা অনেকজনের কাছেই শুনেছি। আমার গ্রামের বাড়ীর ঘর অথাৎ আমার রুম একদম কবরস্থান লাগুয়া, আর মসজিদ এর পাশেই। কবরস্থানে কিংবা মসজিদেরও এই ধরণের কিছু দেখিনি।
মাঝে মাঝে মসজিদের কিছু উদ্ভট শব্দ শুনেছি কিন্তু কাছে গিয়ে বা ভিতরে কোন কিছু পাইনি।
তারপরেও বিশ্বাস আবিশ্বাসের মধ্যে যেতে চাইনা, যেহেতু কোরআন বলেছে আছে সুতরাং আছে।
রাসেল হাসান
মন্তব্য পাবো বলে আশা ছিলো কিন্তু এতো সুন্দর মন্তব্যের আশা ছিলো না!
যাই হোক শুরুতেই আপনাকে প্রাণ ঢালা অভিনন্দন জানিয়ে রাখছি। এসব বিষয়ের উপর ছোট ছোট কিছু রিসার্চ করেছেন দেখছি! আরেকটি জায়গায় গিয়ে দেখতে পারেন। ফরিদপুরের রাজবাড়িতে। সেখানে নাকি অনেক পুরনো প্রাসাদ রয়েছে। অনেকেই কিছু না কিছু দেখেছে এমন তথ্য পেয়েছি কিছু। হাতে সময় থাকলে একদিন ঘুরে আসতে পারেন। আপনার মাধ্যমেই না হয় আরো নতুন কিছু জানলাম। আর মসজিদ কিংবা কবরস্থানের কোথাও জ্বীন থাকে না! দুটোই পবিত্র স্থান! তবে মানুষ রুপি তারাও মসজিদে নামাজ পড়তে আসে। গভীর রজনীতে মাঝে মাঝে আসল রুপেও আসে যখন কেউ জেগে থাকেনা। এরকম তথ্য কয়েকটা পেয়েছিলাম। তবে এরা ভালো জ্বীন হয় কারো ক্ষতি করে না। ছায়ার মতো এসে আবার ছায়ার মতো চলে যায়। আমার এক বন্ধুর চোখে বেধেঁ গিয়েছিল একদিন। পরে বলা যাবে সে ঘটনা। আবারো ধন্যবাদ আপনাকে।
ইমন
বিশ্বাস করলেই অনেক কিছু, নয়তো নয়।
অশরীরির চেয়ে মানুষ ভয়ঙ্কর, আমি এটাই মনে করি।
মন্তব্য কারর্টেসি : নীলাঞ্জনা নীলা 😀 :p
রাসেল হাসান
:p :p
খেয়ালী মেয়ে
এমন অশরীরী বিষয়ে জেনে ভয় পেলাম–এখন তো মনে হচ্ছে না জানলেই ভালো হতো…কী ভয়ংকর!!!!!
রাসেল হাসান
ভয় পাবার কিছু নেই! ভুতের গল্প মনে করে ভুলে যান। 🙂