
অনুপমার অব্যক্ত প্রেমের গল্প
কে ওখানে দাঁড়িয়ে আছে, কে? পিছনের অবয়ব দেখে মনে হচ্ছে ,সে আমার কত যুগের চেনা। যেনো কতো শত বছর ধরে জানি তাকে ।
কে, কে ওখানে দাঁড়িয়ে আছে অমন পাশটি ফিরে একবারও ঘুরছে না, তাকে দেখবো কি করে? নাহ এ তো দেখছি ফিরছেই না।
যাই আমি না হয় সামনে গিয়ে দেখি, কেনো তাকে এতো চেনা ঠেকছে? কয়েক পা সামনে গিয়েই থমকে গেলাম
অনিন্দ্য ।
(অনিন্দ্য অনুপমার সহপাঠী। কয়েক বছর আগে তারা একই কলেজে পড়েছে। একে অন্যের দারুণ বন্ধু ছিলো। পুরো কলেজ ক্যাম্পাস দাপিয়ে বেড়াতো অনিন্দ্য অনু মিলে। আজ অনেকদিন পর সেই অনিন্দ্যকেই দেখছে। এই সেই অনিন্দ্য যাকে ঘিরে এক পৃথিবী স্বপ্ন ছিলো অনুপমার চোখে। )
হ্যাঁ, হ্যাঁ অনিন্দ্যই তো । এ আমার অনিন্দ্য।
বাহ্! আজো বেশ লাগছে ওকে লাল টিশার্টে ।
এতো গুলো বছর পরেও যেনো একটুও পরিবর্তন ঘটেনি কোথাও। কোথাও বিন্দুমাত্র পড়েনি বয়সের ছাপ। আজোও ততোটায় স্মার্ট আছে সে যেমন ছিলো কয়েক বছর আগে।
অনুপমা হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অনিন্দ্যকে ডাকবে বলে।
অনিন্দ্য,,,
হঠাৎ চোখে পড়লো অনিন্দ্যের পাশে দাঁড়িয়ে আছে কেউ।
অনিন্দ্যর পাশে মেয়েটি কে? বেশ সুন্দর দেখতে
ওহ,,,, বোধহয় অনিন্দ্যর বউ।
অনুপমা নিঃশব্দে চুপিসারে পিছু হাঁটতে যাবে এমন সময় নিজের নাম শুনে থমকে দাঁড়ালো। কেউ ডাকছে অনুপমাকে।
অনিন্দ্যঃ অনু মুখ ফিরিয়ে চললে কোথায়? এতোদিন পর দেখেও আমায় কথা না বলেই চলে যাচ্ছো!
অনুঃ নাহ মানে খেয়াল করিনি
অনিন্দ্যঃ হুম বুঝেছি,,,,,,
অনুঃ কি বুঝলে,,,?
অনিন্দ্যঃ তোমার চলে যাবার কারণ
অনুঃ ও তোমার বউ বুঝি! বউ ভাগ্য তোমার বেশ ভালো গো। কি সুন্দর বউ পেয়েছো? দেখে তো বেশ সুখিই মনে হচ্ছে। সুখের সংসার হয়েছে তোমার। ভালো আছো তুমি। ভালো লাগছে এটা দেখে।
অনিন্দ্যঃ অনু, অনুপমা তুমি তেমনই আছো। একটুও বদলাওনি। আজো সবকথা তুমিই বলে যাচ্ছো, আমাকে সুযোগই দিচ্ছো না কিছু বলার,,,
অনুঃ ওহ সরি!
অনিন্দ্যঃ তুমি কেমন আছো অনু! আর একা কেনো তোমার কর্তাটি কোথায়?
আমি আজীবন একা অনিন্দ্য। আমার যে আর কেউ নেই, যে ছিলো সে তো অন্যের হয়ে গেছে
অনিন্দ্যঃ হ্যালো ম্যাডাম কই হারালেন? বলছি উনি কই?
অনুঃ ছাড়ো ও সব,, তোমার কথা বলো
অনিন্দ্যঃ মানে কি?
অনুঃ বিয়ে থা হয়নি আমার৷ অথবা বলতে পারো আমিই করিনি?
অনিন্দ্যঃ কিন্তু কেনো অনু? তুমি তো বলতে তুমি কেউকে ভালোবাসতে, তবে বিয়ে করলে না কেনো?
অনুঃ ভালোবাসলেই যে বিয়ে করতে হবে এমন তো নয় অনিন্দ্য। সে অন্য কারো সাথে ভালো আছে, খুব ভালো আছে।
অনিন্দ্যঃ তোমার মতো মেয়েকে কাঁদিয়ে কেউ কি করে ভালো থাকতে পারো অনু, কি করে এমন হলো?
ও বেটার ঠিকানাটা দাও আচ্ছা করে ঝেরে আসি।আমার বন্ধুকে কাঁদানো
তুমি যদি জানতে তোমার বন্ধুকে যে কাঁদিয়েছে সে আর কেউ নয় তুমি নিজেই
অনুঃ ছাড়ে দাও এসব ,, তোমার কথা বলো কয়টা বাচ্চার বাবা হয়েছো তুমি?
অনিন্দ্যঃ বিধাতা আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে শুধু দেয়নি শুধু বাবা ডাক শোনার অধিকার। ও সুখ পাইনি আমি আর পাবোও না জীবনে।
(অনিন্দ্যের স্ত্রী নীরা গতবছর একটা দুর্ঘটনায় সে তার গর্ভে থাকা সাত মাসের সন্তান হারিয়েছে সেই সাথে পুনরায় মা হবার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে। )
অনুঃ সরি অনিন্দ্য! না বুঝেই কষ্ট দিয়ে ফেললাম।
অনিন্দ্যঃ না অনু কষ্ট পাইনি। এটাই আমার নিয়তি,আর তা মেনে নিয়েছি, না মেনে তো আর উপায় নেই।
অনুঃ তুমি ঠিকই বলেছো অনিন্দ্য, নিয়তি কে মানতেই হয়। চাইলেও আমরা বদলাতে পারিনা আমাদের ভাগ্য লিখন। একজীবনে সবাই সবটা পায় না অনিন্দ্য।
তুমিই সেই অনিন্দ্য, যাকে কখনো বলতে পারিনি আমি তোমাকে ভালোবাসি অনিন্দ্য। তুমিই আমার প্রথম প্রেম আর তুমিই আমার শেষ ভালোবাসা। তুমিও বুঝতে পারোনি আমার প্রেম। যখন ঠিক করলাম তোমায় সবটা জানাবো তখন তুমি অন্যের হয়ে গেছো
অনুঃ আসছি আমি ভালো থেকো অনিন্দ্য,,,,,,
(অনিন্দ্য চেয়ে চেয়ে অনুপমার চলে যাওয়া দেখলো। অনুপমার এমন চলে যাওয়াতে হঠাৎ অনিন্দ্যের বুকের বাম পাশে ঈষৎ ব্যথা অনুভূত হলো। কিন্তু কেনো এই ব্যথা পাওয়া? হয়তো অনুপমা এখনো একা জেনেই এই,,,)
৩৪টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি
অনুগল্প ভাল হয়েছে। নিয়তি এমনি সূখ সয় না সবার কপালে। তাড়াহুড়া পোষ্ট করায় দুএকটা বানান সমস্যা আছে।
শুভ ব্লগিং।
সুরাইয়া পারভিন
আন্থ
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
কৃতজ্ঞতা অশেষ
তৌহিদ
ভালোবাসাতো এমনই, অনুভবে তীব্র ব্যথা। চিনচিনে অনুভূতিরাই বলে দেয় কে কাকে কতটা ভালোবাসে।
ভালো লিখেছেন আপু।
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
কৃতজ্ঞতা অশেষ
জিসান শা ইকরাম
নিয়তি বলে আসলেই কিছু আছে।
আমরা ইচ্ছে করলেই জীবনকে নিজের মত করে সাঁজাতে পারিনা।
অনু রা এমন কষ্টের জীবনের মধ্যে থাকতে থাকতে একসময় অনুভূতিহীন হয়ে যাবে।
ভাল লেগেছে গল্প।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
কৃতজ্ঞতা অশেষ
অনন্য অর্ণব
একটা সময় আসবে যখন তরুণ প্রজন্ম হুমায়ূন স্যারের হিমু, মিসির আলী আর বাকের ভাই কে ভুলে “অনিন্দ্য”- নামে নিজেকে প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। অনিন্দ্য হবে বাংলা সাহিত্যের পরবর্তী হার্টথ্রব হিরো। অগ্রীম অভিনন্দন ❤️
সুরাইয়া পারভিন
হা হা হা হা তুই না পারিসও বটে।
এখন থেকে সব গল্পে তোর নাম লিখবো।
তাইলে হবে তো,,,,😏😏
সঞ্জয় মালাকার
পড়ে বেশ ভালো লাগলো দিদি, শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন দাদা
সঞ্জয় মালাকার
ধন্যবাদ দিদি শুভেচ্ছা রইলো
ছাইরাছ হেলাল
হিংসা না থাকলে কোন গল্প-ই গল্প হয়ে ওঠে না।
সুরাইয়া পারভিন
হা হা হা হা
তা ঠিক বলেছেন ভাইয়া
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
নিতাই বাবু
গল্প পড়ে কিছু বাস্তব জীবন উপলব্ধি করছি। সুন্দর নিখুঁতভাবে গল্পটি সাজিয়ে তুলেছেন বটে। ধন্যবাদ আপনি অবশ্যই অবশ্যই পাওনা। তাই ধন্যবাদের সাথে থেকে গেল অনেক শুভকামনা।
সুরাইয়া পারভিন
কৃতজ্ঞতা অশেষ দাদাভাই
ভালো থাকবেন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সময় সব বদলে দেয়, আবার সময়ই সব ফিরিয়ে দেয় যার যা প্রাপ্য।
সুরাইয়া পারভিন
একদম সঠিক বলেছেন আপু
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
মাহবুবুল আলম
পড়ে ভাল লাগলো।গল্পের দৈর্ঘ্য আরও একটু হলে ভাল লাগতো। হাওয়াই হাওয়াই মিঠাইর মতো মুখে দিতেই উধাও। হাহাহা!
সুরাইয়া পারভিন
হা হা হা হা হা
হাওয়ায় মিঠা
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
এস.জেড বাবু
ভালোবাসলেই যে বিয়ে করতে হবে এমন তো নয় অনিন্দ্য।
কথাটা এক হিসেবে অনেকটা সত্যি-
যেমন সত্যি অনিন্দ্যের বুকের বাম পাশের ব্যাথা।
নেই নিরাময়- শুধু অসুখটা থাকবে।
চমৎকার লিখেছেন আপু
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
চমৎকার মন্তব্য
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রেম এমনি হয়!
বেশ লিখলেন দিদি।
শুভকামনা….
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
কামাল উদ্দিন
জীবন একটাই, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে একাকী জীবন কাটানোর কোন মানে হয় না। আপনার লেখনী খুবই সাবলীল। ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম আপু।
সুরাইয়া পারভিন
গল্প উপন্যাসে একরকম একটা থাকায় যায়। বাস্তবে ইচ্ছে থাকলেও হয়তো উপায় থাকে না ভাইয়া।
কৃতজ্ঞতা অশেষ
কামাল উদ্দিন
চেষ্টা থাকলে কিছুটা হলেও সম্ভব আপু, ধন্যবাদ।
মোহাম্মদ দিদার
আমাদের সাধ্য ক্ষমতা চেষ্টা করা অব্দি।নিয়তি না চাইলে চেষ্টা করেও হবেনা।
ভালোবাসলেই যে বিয়ে করতে হবে এমন তো নয় অনিন্দ্য।
কথাটি চেষ্টার শেষ পর্যায়েই মুখে আসে। আর এ কথাটি বলার জন্যবুকে কতটা চাপা কষ্ট জমাতে হয়, তা ভুক্ত ভুগিই ভালো জানে।
লেখায় বেশ বাস্তবিকতার ছাপ আছে।।বেশ ভালো লাগলো
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
মোঃ মজিবর রহমান
এটাই আমার নিয়তি,আর তা মেনে নিয়েছি, না মেনে তো আর উপায় নেই। সব নিয়তির চাল!!!
সবাই পরাজিত এখানে।
সুরাইয়া পারভিন
নিয়তির নির্মম নিষ্ঠুরতার কাছে সবাই পরাজিত।
সঠিক বলেছেন ভাইয়া
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
মোঃ মজিবর রহমান
ভাল থাকুক।
রুমন আশরাফ
বেশ ভাল লাগলো লেখাটি। শুভেচ্ছা রইলো।
সুরাইয়া পারভিন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া