Google Chrome, কম সময়ে সবচেয়ে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া ব্রাউজারের তালিকায় যার অবস্থান একেবারে শীর্ষে তাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছু নেই। দিনকে দিন এটি ব্রাউজার কম ইন্টারনেটকে নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে বেশি আত্মপ্রকাশ করছে নিজেকে। কোডার, ডেভেলপারদের পছন্দের তালিকায় এর অবস্থানও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কয়েকটি সাইট তাদের সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করতে ইদানীং Google Chrome কে ব্যবহারের সুপারিশ করে। পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন মত নিত্য একে উন্নয়ন করে চলেছে Google.
আর আপনি এই ব্রাউজারটির কিছু Extension ব্যবহার করে আপনার ইন্টারনেট ভ্রমণ আরও চিত্তাকর্ষক, নিরাপদ এবং সুরক্ষিত করতে পারেন। আজ তেমন ৩টি Extension নিয়েই আলোচনা করবো।
এখন আর নতুন করে কারও অজানা নয় ইন্টারনেটে বিভিন্ন সাইটের বিজ্ঞাপন সম্বন্ধে। কম বেশি প্রায় সকল জনপ্রিয় কিংবা অজনপ্রিয় সাইটেই এখন ছোটখাটো এড তারা দিয়ে থাকে। কিন্তু কিছু সাইট রয়েছে যেখানে এড এর পরিমাণ এত বেশি থাকে যে বাকি মূল কন্টেন্টকেই সেখানে এড মনে হয় ^:^ আর যারা স্বল্প ব্যান্ডউইথের ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাদের জন্যে এইসব এড তো রীতিমত মেগাবাইট খাদক বলা যায় 🙁 আর কিছু এড রয়েছে যা এত বিরক্তির কিংবা আপত্তিকর যে তাদের ভয়ে বেশ কিছু সাইটে যেতেই রীতিমত হিমসিম খেতে হয় ;? আর এই সকল বিরক্তি কিংবা অপ্রয়োজনের মেগাবাইট খালি করার পদ্ধতি থেকে আপনাকে বাঁচাতে পারে এই ছোট্ট একটি Extension.
এখন পর্যন্ত Adblock Plus তাদের সকল সুবিধা বিনামূল্যে প্রদান করছে। তবে কেউ তাদের এই কাজে সন্তুষ্ট হয়ে ডেনেশনও দিতে পারেন। অন্তত মেগাবাইট বাঁচানোর জন্যে এতটুকু তো করা যেতেই পারে।
Chrome Store থেকে সরাসরি আপনি এই Extension টি ইন্সটল করতে পারেন। আর ইন্সটল করার পর এর ডাটাবেস আপডেট করে নিতে ভুলবেন না যেন। তাহলে নতুন যত এড রয়েছে তাদের থেকেও বেঁচে থাকতে পারবেন এই ইন্টারনেটের সাগর থেকে।
হাইজ্যাক কিন্তু এখন আর বাস্তব জগতেই সীমাবদ্ধ নেই। এর দৌরাত্ব এখন চলে এসেছে ইন্টারনেটের এই বিশাল মহাসমুদ্রেও। আপনি একটু বেখেয়ালি হয়েছেন কি আপনার সকল তথ্য হাতিয়ে নিবে এখানে লুকিয়ে থাকা ছিনতাইকারীরা। আর এখানে এইসকল ছিনতাইকারীদের সবাই হ্যাকার নামেই চেনে। নিত্য নতুন সকল প্রযুক্তির দুর্বলতা খুঁজে বের করে তাকেই কাজে লাগায় এই বুদ্ধিমান ছিনতাইকারী কিংবা হ্যাকারেরা। আপনার ছোট থেকে ছোট ডিটেল আপনার কাছ থেকেই খুব সাবধানে চুরি করে নেয় এরা, আর আপনি তা দেখেও দেখতে পারেন না।
এইসকল হ্যাকারদের দৌরাত্ব কমাতেই HTTP পোর্টকে আরও একটু সুরক্ষিত করে তৈরি করা হয়েছে HTTPS পোর্ট। একটু লক্ষ করলেই দেখবেন খ্যাতিমান সকল সাইট গুলি তাদের পোর্ট হিসেবে এই HTTPS পোর্ট ব্যবহার করছে। কিন্তু এই সিকিউরড HTTPS সুবিধা নিতে সকল সাইট আগ্রহী নয়। আর এই অনাগ্রহকে কাজে লাগিয়েই বিভিন্ন সাইটে মেইলওয়্যার স্থাপন করে হ্যাকারেরা। আর তারপর ব্যবহারকারীকে সেই মেইলওয়্যারে আক্রান্ত করে চুরি করে তথ্য। আর এই কাজটুকু যাতে করতে তাদের বেগ পেতে হয় সেই উদ্দেশ্যে এই Extension এর অবতারণা।
আপনার ভিজিট কৃত প্রতিটি সাইট এবং পাতাকে এই Extension সেই HTTPS পোর্ট হয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে। আর কোন সাইটে অনাকাঙ্ক্ষিত কোন হ্যাকারের মেইলওয়্যার লুকিয়ে থাকলে সেই সাইট কিংবা পেইজে প্রবেশ করার আগেই আপনাকে ওয়ার্নিং দিবে। আর তখন আপনি সহজেই নিজেকে সেই সকল মেইলওয়্যার থেকে বাঁচিয়ে চলতে পারবেন।
Chrome Store থেকে সরাসরি আপনার ব্রাউজারে Extension টি যুক্ত করতে এখানে ক্লিক করুন।
নাম থেকেই এর কাজ কিছুটা অনুমান করা যায়। এটি একটি কম্যুনিটি Extension যা আপনাকে নিরাপদ এবং অনিরাপদ সকল সাইটের লিংক সম্বন্ধে তাতে ক্লিক করার আগেই জানাতে সচেষ্ট থাকবে। সাধারণত যে সকল সাইট গুলি হ্যাকারের হাত থেকে নিরাপদ সেই সকল সাইটের লিংকের পাশে আপনি এর সবুজ চিহ্ন দেখতে পারবেন। আর এই সবুজ বাতি নিশ্চিত করে হাজার কোটি ব্যবহারকারী এই সাইটে সুরক্ষিত রয়েছে।
আবার একটু কম পরিচিত এবং কম সুরক্ষিত সাইটের পাশে কমলা রঙ্গের চিহ্ন দেখতে পাবেন। এর অর্থ সাইটটি নিরাপদ কিন্তু তার সম্বন্ধে শতভাগ নিশ্চিত নয়। হ্যাকার লুকিয়ে সেই সকল সাইটে মেইল ওয়্যার স্থাপন করেও রাখতে পারে। আর আপনি খুব প্রয়োজন না হলে সেই সকল সাইট এড়িয়ে চলতে পারবেন। আর যে সকল সাইট গুলি সম্পূর্ণ অনিরাপদ কিংবা এখনো স্ক্যান করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি সেই সকল সাইটের লিংকের পাশে এর রুদ্রমূর্তি দেখতে পাবেন।
তবে আপনার কাছে যদি মনে হয় সাইটটি নিরাপদ এবং হ্যাক হয়ে যাবার চান্স নেই কিংবা সাইটটি যদি আপনার নিজের হয়ে থাকে তাহলে তাদের নিরাপদ লিস্টের তালিকা ভুক্তও করতে পারবেন।
আজকের জন্যে Extension আলোচনার এখানেই সমাপ্তি টানছি। আপনাদের আগ্রহ কিংবা কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই তা করতে পারেন। আমি চেষ্টা করবো যথা দ্রুত তার উত্তর দেবার জন্যে। এছাড়াও কোন এক্সটেনশন সম্বন্ধে জানতে চাইলে জানাতে পারেন। এক্সটেনশনটি সম্বন্ধে জানা থাকলে তখনই জানাবার চেষ্টা থাকবে আর অজানা হলে তার সম্বন্ধে জেনে জানাবার চেষ্টা করব। আর আমিও ভুল ত্রুটির ঊর্ধ্বে নই, এই লেখাতেও আমার ভুল থাকতে পারে। থাকতে পারে তথ্যগত না জানার বিভ্রান্তি। সেই দিক থেকে যদি আপনার জানা থাকে তাহলে আমি আহবান করবো আপনাকেও আপনার জ্ঞাত জ্ঞান টুকু আমাদের সাথে ভাগ করে নিতে।
আর অগ্রিম সকলের জন্যে রইলো আমার শুভ কামনা।
১৫টি মন্তব্য
ব্লগার সজীব
জানলাম অনেক কিছু,আমাদের সোনেলা ব্লগ কি নিরাপদ?
অলিভার
আমাদের সোনেলা ব্লগের জন্যে HTTPS সার্ভিস চালু নেই। আর সাইটটি এখনো কোন আইডেনটিডি প্রোভাইডর থেকে ভেরিফাই করা নেই ( http://i.imgur.com/ijzMzUy.jpg )। পাশাপাশি DDoS এটাক করা হলে তার থেকে নিরাপদ রাখার জন্যেও সম্ভবত সম্মানিত মডারেশন প্যানেল কিংবা ডেভেলপারেরা চিন্তা করেনি। তবে সাধারণ ব্যবহারকারী হিসেবে ব্লগ নিরাপদ। শুধু এখানে দেয়া লিংক গুলি সুরক্ষিত সেটা নিশ্চিত হতে হবে।
ব্লগার সজীব
তবে সাধারণ ব্যবহারকারী হিসেবে ব্লগ নিরাপদ। নিশ্চিন্ত হলাম 🙂
অলিভার
🙂 সময় নিয়ে পোষ্ট দেখার জন্যে কৃতজ্ঞতা -{@
সঞ্জয় কুমার
মানে সোনেলা সহজেই হ্যাক হতে পারে । http থেকে https update করা কি সম্ভব ?
অলিভার
সোনেলা কিংবা কোন সাইট সহজে হ্যাক হতে পারার সাথে অনেক গুলি বিষয় যুক্ত থাকে। হোস্টিং সার্ভার এর কোন দুর্বলতা আছে কিনা কিংবা একই সাথে থাকা শেয়ার্ড হোস্টের কোন ত্রুটি আছে কিনা এইসব আগে দেখতে হবে। আবার আমাদের সোনেলার মূল ফ্রেমওয়ার্ক রেগুলার আপডেট হচ্ছে কিনা, সিকিউরিটি প্লাগ-ইন গুলি আপডেট করে রাখা আছে কি না এইসব নিয়মিত নিয়ন্ত্রিত হলে খুব সহজেই সাইট হ্যাক করা সম্ভব হবে না। আর যে কোন সাইটকেই আপনি HTTPS / SSL সিকিউর করতে পারবেন। তবে যারা এই সার্ভিসটি দিয়ে থাকে তাদের কাছ থেকে আপনাকে তাদের সার্ভিস কিনতে হবে। এ ব্যাপারে কোন ওয়েব মাষ্টার আমার থেকেও ভালো বলতে পারবে।
ধন্যবাদ 🙂
সঞ্জয় কুমার
নিরাপত্তার প্রশ্নে কোন আপোষ নয় । আশাকরি মডুরা এই বিষয়ে নজর দিবেন
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
খুবই প্রয়োজনীয় পোষ্ট ।ধন্যবাদ আপনাকে।
অলিভার
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া, সময় নিয়ে পোষ্ট টি দেখার জন্যে 🙂
লীলাবতী
খুবই প্রয়োজনীয় পোষ্ট +++++
অলিভার
ধন্যবাদ আপু 🙂
জিসান শা ইকরাম
ফায়ারফক্স ব্যবহার করি। Add block Addon টা আছে ফায়ারফক্সে।
গুগলটা আসলে ব্যবহার করিনা,কি একটা পেইজ বার বার আসে এ কারনে।
ক্রোমি ব্যবহারকারীদের জন্য বেশ ভালো একটি পোষ্ট।
অলিভার
ফায়ারফক্সও খুবই শক্তিশালী ব্রাউজার। তবে ব্যক্তিগত ভাবে ফায়ারফক্স আমার কাছে একটু ভারী ব্রাউজার মনে হয়েছে। আর সেইদিক থেকে গুগলের ক্রোম কিংবা ক্রোমিয়াম প্রজেক্টের ব্রাউজার গুলি বেশ লাইট এবং ফাস্ট মনে হয়। আর এ কারণেই আমার পছন্দের ব্রাউজারের তালিকায় এটি চলে এসেছে। তবে কিছু কাজের জন্যে অবশ্যই এখনো ফায়ারফক্স সেরা।
ধন্যবাদ ভাইয়া, সময় নিয়ে পোষ্ট দেখার জন্যে 🙂
স্বপ্ন
উপকারী পোষ্ট।
অলিভার
ধন্যবাদ, সময় নিয়ে পোষ্টটি দেখার জন্যে 🙂