
ভাই কাঁঠাল বিচী কত করে ?
দোকানী দাম বলল।
আড়াইশো গ্রাম দেন তো।
দোকানী অনেকটা বিদ্রুপের হাসি দিয়ে বলল, আড়াইশো গ্রাম দিয়ে কী করবেন।
কী করবো সেটা আমার ব্যাপার। কিছুটা নমিত স্বরে বলল।
না কেউ আড়াইশো গ্রাম চায় না, আপনি চাইলেন।
কারো কম দরকার হয় না, আমার যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই নিব। দোকানীর চোখে মুখে আবারো তাচ্ছিল্যের হাসি। কম চেয়ে মনে হয় বিশাল অপরাধ করে ফেলেছে। ছেলেটির বয়স বাইশ/তেইশ হবে। হতে পারে পরিবারের সবাই কে ছেড়ে জীবন জীবিকার তাগিদে একা থাকা।
পাশ থেকে দাঁড়িয়ে শুনছিলাম।
বললাম, যা চায় তাই দেন না কেন।
এ সমস্যায় আমাদের প্রায় পরতে হয়। আবার কিনবো এক কেজি , দোকানী পারলে দুই কেজি দিয়ে দিবে।
দিল খোলা বাঙালির মন শুধু বড় নয়। হাত ও বেশ চওড়া। অল্প কিছুতে হাত ভরে না। এটা বাঙালির অভ্যাস না স্বভাব জানি না।
এক সময় যৌথ পরিবার ছিল। ব্যাগ ভর্তি বাজার করলেও ক্ষতি ছিল না। যে কারণেই হোক। এখন শহরে একক পরিবারের সংখ্যা বেশি। তাছাড়া আগে বেশিরভাগ পরিবারে কমন খাবার, মানে একই খাবার সকলে খাওয়ার প্রচলন ছিল। যুগের পরিবর্তন হয়েছে। এখন পৃথকভাবে ভিন্ন রুচি ও ভিন্ন স্বাদের খাবার তৈরি করতে হয়।
পরিচিত যারা দেশের বাইরে থাকে। বিশেষ করে উন্নত বিশ্বে। সেখানে কিনা একটি করে পেঁয়াজ, রসুন, ও কেনা যায়। যা আমরা ভাবতেই পারিনা।
অনেক খাবার আছে, ঘরে বেশি দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় না। তাছাড়া যতই প্রযুক্তি নির্ভর হই না কেন। সব খাবার ফ্রিজে রেখে খাওয়া যায় না।
আমাদের দেশে আস্তো জিনিস ছাড়া বেঁচা কেনা হয় না। শুনেছি আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও অনেক কিছুই পরিমাণ মতো কেটে বিক্রি করা হয়। এতে অনেকে প্রয়োজন মতো ক্রয় করে খেতে পারেন। অর্থের অপচয় হয় না। কম করে জিনিস কেনা, আমরা অনেকেই লজ্জা বোধ করি। কিন্তু বেশি ক্রয় করে অর্থের শ্রাদ্ধ করতে দ্বিধা বোধ করি না।
তাই আজ নতুন শ্লোগানে হোক পথ চলা- “অর্থের আর নয় অপচয়, প্রয়োজনের অতিরিক্ত কেনা নয়”
ছবি সংগ্রহ-নেট থেকে
১৪টি মন্তব্য
বোরহানুল ইসলাম লিটন
আমাদের দেশেও কেটে বেচা শুরু হয়েছে আপু!
আজ লাউ কুমড়ো কচু কাঁচা কাঁঠাল সবই কেটে বিক্রি হচ্ছে
অদূর ভবিষ্যতে অবস্থার প্রেক্ষিতে আরও পরিবর্তন আসবে।
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানবেন সতত।
হালিমা আক্তার
কুমড়ো কেটে বিক্রি করে, লাউ কেটে বিক্রি করতে দেখি নাই। পরিবর্তন আসলে ভালো। ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
ছাইরাছ হেলাল
আমি নিজে এমন অনেক দেখি, আমার এক বন্ধু একা থাকে, চাকুরী আর লেখাপড়া সূত্রে
পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র, সে তো আড়াইশো গ্রাম করে তরিতরকারি কিনতে চাই।
তখন তো মহা সমস্যা…………
আসলে যে যার নিজের দিকে ভাবে, অন্যকে ভাবার তোয়াক্কা না রেখেই।
হালিমা আক্তার
ওরা তো জোর করে পারলে বেশি দিয়ে দিবে। মাঝে মাঝে এদের ব্যাবহার বিরক্ত লাগে। হয়তো একদিন পরিবর্তন আসবে। সেটা কবে কে জানে। ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
রেজওয়ানা কবির
এই ঘটনায় যখন হোস্টেলে ছিলাম তখন বার বার পড়েছি এবং বিরক্ত হয়েছি কিন্তু তাদের মুখে তাচ্ছিলের হাসি দেখে মেজাজটা আরও খারাপ হয়ে যায় আরে বাবা!যার যতটুকু দরকার সেতো ততটুকুই কিনবে।।।।
হালিমা আক্তার
অল্প কিনতে চাইলে ওদের মাথা ব্যথা হয়। সবচেয়ে বড় কথা অল্প বিক্রি করবে না ভালো কথা। তাচ্ছিল্য সহ্য হয়না। ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
সঞ্জয় কুমার
অল্প কিনতে গেলে দোকানদার তাচ্ছিল্যপূর্ণ ব্যাবহার করে, এই জন্য অনেকে প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত ক্রয় করে, যেটা ভবিষ্যতে অপচয়ের খাতে যায়।
সবাই নিজ থেকে সচেতন হলে আশাকরি এই সমস্যা কমে আসবে।
হালিমা আক্তার
একদম সঠিক কথা বলেছেন। অনেকটা বাধ্য হয়েই বেশি কিনতে হয়। শুধু বিক্রেতা নয়, অনেকেই কৃপণ বলে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কেন কিনবো। পরিবর্তন দরকার। শুভ কামনা রইলো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমি এ সমস্যায় সবচেয়ে বেশি পড়ি। অল্প চাইলেই এমনভাবে তাকায় যেন অপরাধ করে ফেলেছি। যদি দোকানদার অপরিচিত হয় তাহলে তো মহা তাচ্ছিল্য। পরিচিতরা জানে বলে দেয়।।
হালিমা আক্তার
অপরাধ ই তো।কম কিনলে কম বিক্রি হবে। আমি আপনি বেশি কিনলে তাদের বেশি বিক্রি হবে। অনেক সময় এরকম বলে – আপা নেন, নিলে খাওয়া হইয়া যাইবো। ধন্যবাদ আপা।
দালান জাহান
সুন্দর পোস্ট। একসময় এমন হয়ে যাবে।
হালিমা আক্তার
হলে ভালো। পরিবর্তন প্রয়োজন। ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।
সাবিনা ইয়াসমিন
সাধারণ দোকানীরা অল্প জিনিস বিক্রিতে প্রচন্ড বিরক্ত হয়। সব দোষ অবশ্য তাদেরকে দেয়া যাবেনা, এমন অনেক ক্রেতা আছেন যারা প্রয়োজনের চাইতে অতিরিক্ত কেনাকাটা করেন। দোকানীরা মূলত এইসব ক্রেতাদের জন্যে অন্যান্যদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। এখন অবশ্য পরিবর্তন এসেছে, মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হলে আরও আসবে।
শুভ কামনা 🌹🌹
হালিমা আক্তার
আসলেই আপা। অনেকেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত কেনা কাটা করে। পয়সা থাকলে যা হয় আর কি। দিল খোলা হাত খোলা হলে যা হয়। পরিবর্তন হচ্ছে। পরিবর্তন হবে। সে সুন্দরের অপেক্ষায় আছি। ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইলো।