
সাধারনত রমজান মাসে সকালে টিভি দেখা হয়না। নিউজ দেখার জন্য টিভি অন করতেই ব্রেকিং নিউজ–মাদারীপুরের শিবচরে বালুবোঝাই বাল্কহেড এর সাথে স্পিডবোটের সংঘর্ষে ২৬ জনের মৃত দেহ উদ্ধার। ৫ জন জীবিত উদ্ধার। নিখোঁজ আরো কয়েক জন। পরিসংখ্যানের হিসাব মেলাতে পারলাম না। সাধারণত এই রুটে চলাচলকারী স্পিডবোট গুলোতে ১৮ থেকে ২০জন যাত্রীর আসন থাকে। দ্বিগুণ যাত্রী নিয়ে কিভাবে স্পিডবোট গুলো চলাচল করছিল তা বোধগম্য নয়।
করোনা ভাইরাস সংক্রামক রোধে বাংলাদেশে যে লকডাউন চলছে তার অংশ হিসাবে স্পিডবোট সার্ভিস বন্ধ থাকার কথা। প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে এর অবৈধভাবে যাত্রী পারাপার করছিল। যা দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ হতে পারে।
প্রায় তিন সপ্তাহ আগে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় সাবিত আল হাসানকে কার্গো ধাক্কা দিলে প্রায় ৩৫ জন যাত্রীর সলিল সমাধি ঘটে।
২০১৪ সালের ৪ আগস্ট ২৫০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে পদ্মা নদীতে ডুবে যায় পিনাক – ৬। ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। প্রায় ৫০ জনের অধিক যাত্রীর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
২০০৩ সালের ৪ জুলাই ঢাকা থেকে ভোলা লালমোহনগামী এম ভী নাসরিন-১ চাঁদপুরের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় ডুবে যায়। ধারণা করা হয় অতিরিক্ত যাত্রী ও মাল বোঝাই এর কারণে লঞ্চের তলা ফেটে গিয়েছিল তা দুর্ঘটনার প্রধান কারণ।
২০০০ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঈদুল আযহার রাতে চাঁদপুরের নিকট মেঘনা নদীতে জলকপোত এবং রাজহংসী নামে দুটি লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এ দুর্ঘটনায় রাজহংসী নামের লঞ্চটি পানিতে তলিয়ে যায়। সরকারি হিসাব মতে সলিল সমাধি ঘটে ১৬২ জন যাত্রীর। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীর মতে লঞ্চে যাত্রী ছিল প্রায় ছয় থেকে সাতশ ।
নদীমাতৃক বাংলাদেশে দক্ষিণ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ চলাচল করার মাধ্যম নৌপথ। যখন কোনো দুর্ঘটনা হয় তখন মামলা হয়, তদন্ত কমিটি হয়। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আলোর মুখ দেখে কিনা জানা হয় না। আমাদের দেশের নৌ-দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ গুলো হচ্ছে অতিরিক্ত যাত্রী বহন, অদক্ষ চালক, ফিটনেস বিহীন নৌযান।
প্রতিবারের মতো এবারও মামলা হবে, তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। হয়তো তা আবার নদীর পলি মাটিতে চাপা পড়ে যাবে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন?
ছবি- নেট থেকে।
২০টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
আমরাও শুনি মামলা-টাম্লা হয়, হয় ও, শেষে কী হয় তা আর জানতে পারি না।
আল্লাহ যেন স্বজন হারাদের সাহায্য করেন এই প্রার্থনা করি।
হালিমা আক্তার
আমাদের আইন আছে, কিন্তু আইনের এর প্রয়োগ নাই। এ কারণে কোনো প্রতিকার ও হয়না। শুভকামনা, ভালো থাকবেন।
মনির হোসেন মমি
এ সব অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা এড়াতে সরকারী ভাবে সুনিদিষ্ট কর্মপ্রণালী এবং বাস্তবায়ণে কঠোর হতে হবে যা আমাদের অদুর ভবিষৎও হবে কীনা জানিনা।
দুঃখজনক।
হালিমা আক্তার
যখন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তখন নড়েচড়ে বসে। কিছুদিন পর সব শেষ। ভবিষ্যতে হয়তো এভাবেই চলবে। শুভকামনা, ভালো থাকবেন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
সারাবছর একই ঘটনা ঘটতেই থাকে তারপর এই নৌ মালিকরা আবারও সরগরম হয় এবং দূর্ঘটনার শিকার হয় সাধারন মানুষ।
এর উত্তরণের উপায় নেই। সুন্দর পোষ্ট। শুভ কামনা।
হালিমা আক্তার
নৌ মালিকরা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই কিছুদিন সরব হয়ে , তারপরে নিরব হয়ে যায়। শুভকামনা, ভালো থাকবেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ঢাকঢোল পিটিয়ে মামলার মহরত শুনতে পাই কিন্তু জনসম্মুখে প্রকাশ পায়না আর , পরিণতি ও জানা হয় না কখনো ই। এটারও বিচার শুরু হবে তারপর পলি মাটিতে চাপা পড়ে যাবে। হায়রে বিচার ব্যবস্থা, হায়রে মৃত্যু! যার যায় সেই বুঝে কিন্তু এখানে আমাদের পাবলিকের ও অনেক দোষ আছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই করোনাতেও থেমে নেই গাদাগাদি করে চলাফেরা। নিয়ম মানতে আমরা কোনভাবেই রাজি নই । আমরা সচেতন হলে এরা কি পারতো বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে এভাবে চলতে? রাষ্ট্র, প্রশাসন ও বিচার করতে পারতো কঠিন ভাবে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন নিরাপদে থাকুন
হালিমা আক্তার
আমরা জনগণ অনেক অসচেতন। আমরাও গাদাগাদি করে চলতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। ভাবি কি হবে আল্লাহ ভরসা। শুভকামনা , ভালো থাকবেন।
জিসান শা ইকরাম
মামলা হবে, তদন্ত কমিটিও হবে। কিন্তু কিছুরই ফলাফল হবে না।
আমরাই সচেতন নই। নইলে ২০ জন যাত্রী ক্ষমতার স্পিডবোটে ২৬ জন উঠবো কেন?
সমসাময়িক পোস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এমন সচেতনতা মূলক পোস্ট আরো চাই।
শুভ কামনা।
হালিমা আক্তার
স্পিডবোট গুলি যে আকার। তাতে ৩০ জনের অধিক যাত্রী উঠল এমনি ডুবে যাওয়ার কথা। আমরা মোটেও সচেতন নই। দুর্ঘটনা ঘটার পরে আফসোস করতে থাকি। শুভকামনা, ভালো থাকবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
দুর্ঘটনা ঘটার আগ পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক থাকে। মানুষ গাদাগাদি করে চলাচল করে, নদী প্রশাসনের লোকজন চোখ মেলে নদীর ঢেউ গুনে সময় পাড় করে। কোথাও কোন সমস্যা থাকে না। যেই কিছু একটা ডুবে যায়, অগুনতি মানুষের সলীল সমাধি ঘটে, তখনই জন সাধারণের টনক নড়ে! একপক্ষ দোষ দেয় কতৃপক্ষের, আর কতৃপক্ষের তদন্তে ধরা পড়ে ডুবে যাওয়া যানটি ছিলো অবৈধ, মেয়াদ ছাড়া, ভারসাম্যহীন ইত্যাদি ইত্যাদি..
ঘটনা দুর্ঘটনার উপর মানুষের যেমন হাত থাকে না, তেমনই সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। মানুষ যদি নিজেরা সচেতন না হয় তাহলে অতীতের মতো আগামীতেও দুর্ঘটনা ঘটবে।
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আপনার লেখা গুলো প্রশংসনীয়। আরও লিখুন, ভালো থাকুন।
শুভ কামনা 🌹🌹
হালিমা আক্তার
একদম ঠিক বলেছেন। দুর্ঘটনা ঘটার আগে আমরা কেউ সাবধান বা সচেতন হইনা। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর কারণ খুঁজে বের করি। শুভকামনা ভালো থাকবেন।
আলমগীর সরকার লিটন
খুব দুখজনক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের জীবনে মানুষগুলোর কোন সচেতনা নেই
হালিমা আক্তার
আমি আমরা কেউ সচেতন নই। শুভকামনা।
তৌহিদুল ইসলাম
প্রত্যেকটি দুর্ঘটনাই আমাদের জীবনে শোকের বার্তা নিয়ে আসে। আবারো এই দুর্ঘটনায়য় ২৬ জনের মৃতের খবরে ব্যথিত হয়েছি। কিছু অসাধু ব্যক্তির লোভই এর জন্য দায়ী।
জড়িত প্রত্যেকের বিচার চাই। সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন আপু।
শুভকামনা।
হালিমা আক্তার
দুর্ঘটনায় ক্ষত মুছে যাওয়ার নয়। জড়িত ব্যক্তিদের ধরেছে, জানি না এবারও তারা পার পেয়ে যাবে কিনা। শুভকামনা , ভালো থাকবেন।
আরজু মুক্তা
যাহা লাউ তাহাই কদু। কোন উন্নতি হয় না। সাধারণ মানুষ এভাবেই চলে
হালিমা আক্তার
একদম সঠিক কথা আপা। সাধারণ মানুষ কোন কথা শুনতে চায় না। লকডাউনে যেভাবেে মানুষ শহর ছাড়ছে, যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
আশরাফুল হক মহিন
খুবই দুঃখজনক একটি ঘটনা
আসলে মানুষ কেউ সজাগ নেই
নার্গিস রশিদ
সবকিছুতে অনেক পরিবর্তন দরকার। হাল ধরবে কে? সুন্দর প্রকাশ।