
অতনু ঘোষ , তুখোড় এবং সংবেদনশীল একজন পরিচালক। তাঁর পরিচালিত ” রবিবার “। যেখানে অভিনয় করেছেন প্রসেনজিৎ এবং বাংলাদেশের জয়া আহসান।
ভালোবাসা, বিচ্ছেদ এবং পরিণীতিহীন বর্তমান এই তিনটি মেইন থিম সিনেমার। ছবিটিতে দুই প্রাক্তনের প্রেমের গল্প। তারা ১৫ বছর পর কোন এক রবিবারে একসাথে কাটাতে গিয়ে বদলাতে পারেনি দুজনের মত বা জীবনকে। কারণ তারা দুজন দুই মেরুর। সায়নী, রাইটার এবং লইয়ার। অসীমাভ জালিয়াতি গ্রুপের সদস্য। লাখ লাখ টাকা ইনকাম করেছেন মানুষের চোখে ধূলো দিয়ে। সায়নী বই লিখছেন প্রতারণা এবং ট্যাক্স ফাঁকি নিয়ে। আর এই আগ্রহ নিয়েই কি কোন এক রবিবারে তারা মিলিত হয়েছেন?
জালিয়াত হয়েও প্রসেনজিৎ আমাদের মন কেড়েছেন। তার একটা ডায়ালগ, ” আমার মতো মানুষ তৈরি করা যায় না, জন্মায় !”
আর জয়ার সাবলীল অভিনয় নিয়ে বলার কিছু নেই। নো মেকাপ, নো ড্রেস চেঞ্জ, এক কথায় ক্যারিসমাটিক। ধীর স্থির, বুদ্ধিমতী একটা চরিত্র শায়নী। অসীমাভের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তার মনের মধ্যে যে তোলপাড় তা মুখে ফুটে উঠেনি। ম্যাজিক্যাল ট্যালেন্ট বলা যায়। ১৫ বছরের আগের এবং এখনকার শায়নীর মাঝে অনেক তফাত তবুও অসীমাভের প্রতি মায়ার বাঁধন কাটাতে পারেনি।
শায়নীর একটা ডায়ালগ, ” আমাকে আটকাচ্ছ কেনো? ” এখান থেকে বোঝা যায়, অসীমাভ তার পরিণতি নিয়ে শংকিত। আবার, অবচেতন মনে সে শায়নীকে বলে, ” আমি ভালো নেই শায়নী, একদম ভালো নেই। ” আসলে শায়নীকে অবিবাহিত দেখে, সে কী চেয়েছিলো যে, শায়নী থেকে যাক !
ছবিতে ফ্ল্যাসব্যাক নেই এবং ভবিষ্যতের কোন পরিণতি নেই। পরিচালক বর্তমানকে উপস্থাপন করেছেন সুন্দরভাবে।
অসীমাভ নিজেকে ট্যালেন্ট ভেবে ছেড়ে গিয়েছিলো শায়নীকে। অথচ আজ নিজেই চাচ্ছেন বই এর ব্যাপারে তার জালিয়াতির কাহিনী শেয়ার করতে। আর শায়নী তাকে রক্ষা করবে জাল সই থেকে।
একটা রবিবারের ১২/১৬ ঘণ্টা একসঙ্গে কাটিয়ে তারা অনুভব করে, যা হারায়, তা শুধু চোখে হারায়। জীবন সমুদ্রের মতো ; যা নেয় তার অনেকটাই ফিরিয়ে দেয়। ঢেউয়ে ঢেউয়ে ফেনায় ফেনায়।
” জীবনে যাত্রটাই মূল্যবান, ফলাফল নয়। ” এটি জানতে মুভিটি দেখবো। কারণ এটি ভালো মুভির একটা উদাহরণ। এক কথায় থট প্রভোকিং।
সমালোচক রেটিং ৪/৫। পাঠকের ৩.৫।
★★ মুভির দেখার এবং লেখার জন্য ব্লগার ছাইরাছ হেলাল ভাই উৎসাহিত করেছেন বলেই লিখতে পেরেছি।
ছবিটির লিংক দেয়া হলো :
২৪টি মন্তব্য
হালিমা আক্তার
সুন্দর বিশ্লেষণ।জয়ার অভিনয় খুব সুন্দর বললে ভুল হবে। চমৎকার অভিনয় করে। ছবি টি দেখা হয়নি।
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ আপা পড়ার জন্য।
বন্যা লিপি
ছবিটা দেখার আগ্রহ বেড়ে গেলো। ভাববার মশলা আছে মনে হচ্ছে জ।
প্রসেনজিতের পুরোনো মুভি দেখতে ভালো লাগতো, তবে মধ্যবর্তী সময়ের অভিনয় ওর, আমার ভালো লাগেনা। আর জয়া আহসান কখনো কখনো অতি নাটুকেপনা টেনে আনেন অভিনয়ে, তখন বিরক্ত লাগে। রিভিউ পর্ব চালু থাকলে আমরাও সমালোচনা করার সুযোগটা ভালোই পাব বলে মনে করছি।
এই মন্তব্য করতে করতে একটা জগাখিচুড়ি মার্কা আইডিয়া আসলো মাথাত!!! দেখি চেষ্টা করে কতটা গড়গড়িয়ে লিখে যেতে পারি☺☺☺☺☺
আরজু মুক্তা
আমি আবার নায়ক নায়িকা দেখি না। কাহিনী দেখি। ভালো লাগলে আবার দেখি। রিভিউ চালু থাকবে।
শুভ কামনা
বন্যা লিপি
জবাব না দিয়ে ফিরে যাওয়া হলোনা আমার।
একটা কাহিনী লেখার সময় কাহিনীকার বা গল্পকার সবসময় প্রধান চরিত্র গুলো মাথায় রেখেই কাহিনী বা গল্প লেখেন। চিত্রায়নের সময় বহুবার টেক নিতে হয়, যথাযথ চরিত্র চিত্রায়ন ফুটিয়ে তোলার জন্য, আমি যখন কোনো মুভি দেখতে বসি, পূঙ্খানুপূঙ্খ এ বিষয়গুলো খেয়াল করি। সংলাপের সাথে সাথে এক্সপ্রেশন, কাহিনী তখনই হৃদয়াগ্রাহী হতে বাধ্য। এবং সবচে বড় কথা কাহিনীর সাথে সমমান বিচার ফুটিয়ে তোলার দায়িত্ব নায়ক নায়িকারই বেশি বর্তায়। পদ্মা নদীর মাঝি যার দৃষ্টান্ত। চরিত্রানুযায়ী কাষ্টিং না হলে দর্শক মহলে মার খায় এসব কাহিনী নির্ভর মুভি। আপনাকে বলেছি বেলাশেষে মুভিটার কথা। মুভিটা দেখলেই বুঝবেন। প্রত্যেকটা চরিত্র যথার্থ কাষ্টিং লেগেছে, (অন্তত আমার কাছে) যেমন ঋতুপর্ণা ঘোষের অভিনয় সব মুভিতে আমার ভালো লাগে না। কোনো কোনো মুভিতে মনে হয়, এ চরিত্রে ওকেই মানায়।
ঋতুপর্ণার একটা মুভি দেখেছি বহু আগে। আজো মনে গেঁথে আছে। আমি চেষ্টা করব সেই মুভিটা নিয়ে কিছু লিখতে। তার আগে আমার একখান নতুন মোবাইল কেনা লাগবে। কতকিছু লেখার সাধ ধুলিস্যাৎ হচ্ছে!!
শুভস্য……
সাবিনা ইয়াসমিন
ছবিটি দেখার প্রতি আগ্রহ নেই। আপনার মুভি রিভিউ পড়তে ভালো লাগে। বিশেষ করে শেষ দিকে আপনার নিজস্ব কথন, ওটাই আমাকে পড়তে আগ্রহী করে।
ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
আরজু মুক্তা
এটাও পরম পাওয়া। ভালো লাগলো জেনে।
শুভ কামনা
তৌহিদুল ইসলাম
পুরো ছবিই ফ্ল্যাশব্যাক নিয়ে। একবার দেখার পরে অর্ধেক দেখে আর ইচ্ছে করেনি। ঠান্ডা শীতল অনুভূতির মুভি আমি পছন্দ করিনা। তবে আপনার রিভিউ ভালো লেগেছে।
শুভকামনা আপু।
আরজু মুক্তা
আচ্ছা এরপর নিশ্চয় আপনার পছন্দের একটা মুভি এর রিভিউ থাকবে।
শুভ কামনা সবসময়
তৌহিদুল ইসলাম
অপেক্ষায় রইলাম কিন্তু।
রোকসানা খন্দকার রুকু
হুম দেখা হয়নি তবে দেখতে হবে। আপনার মুভি রিভিউ পড়ে দেখতে ইচ্ছে করছে। জয়া আহসান পাকা অভিনেত্রী সাথে প্রসেনজিৎ তো আছেই।
শুভ কামনা ও ভালোবাসা নিরত্তর।
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
শুভ কামনা
সঞ্জয় মালাকার
দিদি, ছিবি দেখা আমার ভালো লাগেনা, তবে শেষের আপনার লেখা গুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো,
ভালো থাকবেন দিদি শুভ কামনা //
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ ভাই।
শুভ কামনা
ছাইরাছ হেলাল
আমি ছবি-দেখা মানুষ, ছবি নিয়ে কেউ মন দিয়ে আলোচনা করছে এটি দেখতেও আমার ভালো লাগে।
পরিচালকের মুন্সিয়ানা অনুভবে রেখেছি। নাই হয়ে যাওয়া প্রেম- ও যে গভীর ভাবেই আছে তা তারা দুজনেই ভাল ভাবেই দেখাতে পেরেছেন।
শেষটায় জয়া প্রমটি মেনে নিয়েই লিখতে রাজি হয়েছেন, এটি যে ভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে ধোঁয়াশা ভাবে সেটি সুন্দর।
ছবি দেখে খুব কিছু সিলেক্টিভ মুভি ছাড়া আমি মুছে ফেলি, কিন্তু এটি রেখেছি।
হ্যাঁ, ছবিটি আমার অনুরোধে দেখেছেন কষ্ট করে লিখেছেন, সেটি কিন্তু স্বীকার করেন-নি।
এর পর কোন ছবি হিন্দি বাদে তা আগাম বলে দিন, দেখে রেডি হই, আপনার রিভিউ পড়ার জন্য।
আরজু মুক্তা
ছোট ভুলের জন্য দুঃখিত। স্বীকারোক্তি দেয়া হলো।
এই মুভিটি দেখে এবং বুঝে লিখতে অনেক কষ্ট হয়েছে। তারপরও আপনাদের মূল্যবান কমেন্ট পেয়ে ভালোই লাগলো। কষ্ট সার্থক।
অবশ্যই নতুন কোন মুভির রিভিউ নিয়ে আসবো।
শুভ কামনা
ছাইরাছ হেলাল
আগে নাম বলে দিন, আমরাও দেখি!!
আরজু মুক্তা
বেলাশেষে মুভির রিভিউ দেয়া হবে
পপি তালুকদার
চমৎকার বিশ্লেষণ করলেন। আশা করি ছবি টা দেখবো।
শুভ কামনা রইলো। ভালো থাকুন।
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
শুভ কামনা
সুপর্ণা ফাল্গুনী
জয়ার অভিনয় আমার সবসময়ই ভালো লাগে কারণ ও চরিত্রকে ধারন করে যা সবাই পারেনা। যেকোন চরিত্রে বাজিমাৎ করে দেয় মনে হয় ওর ঘটনাই লাইভ দেখছি। আপনার মুভি রিভিউ ভালো লাগে। অবিরাম শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো
আরজু মুক্তা
ভালো লাগলেই তো কম্ম সাবাড়।
ধন্যবাদ। এ রকম উৎসাহ পেলে অবশ্য মুভি রিভিউ দেয়া যায়।
জিসান শা ইকরাম
অতনু ঘোষ সব সময়ই ভালো মুভির পরিচালক,
আমার দুই প্রিয় অভিনেতা এবং অভিনেত্রী ( প্রসেনজিত, জয়া আহসান ) রবিবার এ প্রধান ভুমিকায় আছেন। রিভিউ পড়ে জানলাম যে অত্যন্ত সুন্দর একটি কাহিনী চিত্র এটি। মুভিটি দেখা হয়নি। অবশ্যই দেখবো।
ইউটিউব এর লিংক যেটা দেয়া হয়েছে তা মুভির ট্রেলার। ইউটিউবে পূর্ন মুভি মনে হয় নেই। টরেন্ট এ পেয়েছি, ডাউনলোড দিয়েছি। অবশ্যই দেখবো।
এমন সুন্দর রিভিউ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
চালু থাকুক মুভি রিভিউ।
আরজু মুক্তা
মুভি রিভিউ যে অনুপ্রেরণা দেখাচ্ছে মুভিটি দেখার সেটাই বড়। আর মুভি রিভিউ লেখার সার্থকতা এখানেই।
শুভ কামনা সবসময়।