
“পরের কারনে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও,তার মত সুখ কোথাও কি আছে আপনার কথা ভুলিয়া যাও। পরের কারনে মরনেও সুখ, সুখ সুখ করি কেঁদনা আর; যতই কাঁদিবে যতই ভাবিবে ততই বাড়িবে হৃদয় ভার”
বড্ড অগোছালো/ এলোমেলো তুমি!
– হ্যাঁ ঠিক তাই।
জীবন সম্পর্কে উদাসীন কোনকিছুরই ঠিক নেই! সবসময় কি এত ভাব?
– আমি এমনই কি করব বল?
ভবিষ্যত, বাস্তবতা এসব বুঝবেনা, ভাববে না?
– ভাবতে তো চাই কিন্তু মাথায় আসেনা।
পৃথিবীকে চোখ মেলে দেখো বসেছে কত রঙ্গের মেলা। স্বার্থপর হও, লুটেপুটে সব নিজের করে নাও । রং মাখামাখি করে রঙ্গিন হও।
– এসবের মানে কি? সুখের জন্য হাতরানো বলছ তো! আচ্ছা, তুমি কি সুখী?
হ্যাঁ আমি তো সুখী। কারন আমার সব আছে সব।
– আচ্ছা সুখী মানুষ সব আছে তোমার? তো বল তোমার কি কি আছে? আছে এমন অনুভূতি; কোন ক্ষুধার্ত হাড় জিরজিরে মানুষ দেখলে, আমি কেন এতবার এত ভালো ভালো খাবার খাই? আজ থেকে আর খাবনা।
উমহুম নেই; হয়না এমন।
– অন্যায় ব্যাভিচারে দাঁড়াও রুখে? প্রতিবাদ কর?
দুর কাজ নেই, নিজে বাঁচলে বাপের নাম।
– কোন নির্দোষকে পুড়িয়ে মেরেছে, কাউকে পানিতে ফেলে দিয়েছে, কেউ খুন হয়েছে, কেউ ধর্ষিতা। তাতে কি তোমার চলে যায় চায়ের নেশা, রাতের ঘুম হয় নষ্ট, চোখে পানি আসে?
না না , যত্তোসব। কুকুর মরলে বা বাঁচলে তাতে আমার কি?
– পাশের বাড়ির অসুস্থ মানুটাকে নিয়েছ হাসপাতালে?
সময় কোথায়। আর ওটা কি আমার কাজ?
– দিয়েছ কোন অসহায়, এতিম, অনাথের মাথায় হাত।
না দেইনি।
– আর মেধাবী ছেলেটি/মেয়েটি বিনা পয়সায় পড়তে পারছেনা জুগিয়েছ তার পড়ার খরচ। তোমার তো বিরাট রাজত্ব।
হুম; কাজ নেই!
– হাসিমুখ দেখেছ কখনও কোন অসহায়ের পাশে দাঁড়িয়ে, নতুন কাপড়ে, ভালো খাবারে, আশ্রয়ে- প্রশ্রয়ে।
না, তাও করিনি।
– কিছুই করনি যখন, তখন দাবি কিসের তোমার সব থাকার। আমার তোমার মত অতসব নেই। আমি অসহায়, পঙ্গু। তবুও আমি সব করতে চাই। মন কাঁদে, হাহাকার করে, কষ্ট হয়। ঘুমুতে পারিনা, চায়ের নেশা চলে যায়, চোখের পাতা ভিজে লেপ্টে যায়।
আমার যা আছে তাই সবার সাথে করি ভাগাভাগি। আর বললে না কি ভাবি? ভাবতে থাকি এই তাবত ক্ষমতার মালিক যদি আমি হতাম। হয়ত হতাম তোমার মতই মনুষ্যত্ব হারিয়ে জড় পদার্থ। তারচেয়ে বরং আমি এমনই ভালো অগোছালো, উদাসীন, অসুখী!
ছবি- সংগ্রহ।
২০টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
এত সহজে সুখের বন্দরে পৌঁছে গেলেন!
রোকসানা খন্দকার রুকু
সূখটাই এমন ভাগাভাগি করলেই পৌছানো যায় চরম সুখে।
ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভ কামনা।
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ লেখেছেন রুকু আপু
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আপু অসাধারণ লেগেছে। কথাগুলো চরম বাস্তব আমাদের ক্ষেত্রে। আমরা সবকিছু এড়িয়ে চলে নিজেকে সুখের তকমা লাগিয়ে দেই। নিজে বাঁচলে বাপের নাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা অবিরাম।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমি যা লিখি তাই আপনার ভালো লাগে অবাক হই।
অনেক সময় নিজেরই পছন্দ হয়না তারপর যখন এমন মন্তব্য আসে। আবার সাহস হয় লোভ হয় লেখার। কারও অন্তত ভালো লাগে তো!!!
শুভ কামনা দিদিভাই।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ভালো না লেগে উপায় আছে এমন করে লিখলে! শুভ কামনা রইলো। আরো লিখুন এমন করে
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ আবারও দিদিভাই।
সুপায়ন বড়ুয়া
লেখার সাথে ছবিখানি দারুন উপভোগ্য আপু।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ছবিখানি একজন অক্ষমের শেষ চেষ্টা।
আমাদের ও এমন হতে হবে নিজ নিজ জায়গা থেকে হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদাভাই।
রেজওয়ানা কবির
অসাধারণ লেখা। সুখ নিয়ে বিশদ আলোচনা। আসলেই আমরাতো কিছুই করি না অথচ আর্টিফিশিয়ালি সুখের সাগরে ভাসতে চাই। কিন্তু এভাবে সুখী হওয়া যায় না? ঐ সুখীর চেয়ে ভালো, অগোছালো, উদাসীন, অসুখী,মানুষটাই আমার নিজের মধ্যে রাখি💙💙💙
রোকসানা খন্দকার রুকু
জী আপুমনি সেটাই বলতে চেয়েছি।
শুভ কামনা রইলো।
অনেক ভালো থেক।
আরজু মুক্তা
যদি, তুমি সুখ ভাগাভাগি করো! তবে তা বেড়ে যাবে। আর যদি দুঃখ ভাগাভাগি করে তাহলে তা বিভক্ত হবে।
এমনই হোক মানবজীবন। মানবিকতা থাক। সহানুভূতি থাক।
ভালো লিখলেন।
শুভকামনা
রোকসানা খন্দকার রুকু
অসাধারণ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ও ভালোবাসা অবিরাম॥
ভালো থাকবেন। শুভ কামনা রইলো।
প্রদীপ চক্রবর্তী
ছোটগল্প হলেও কথা গুলো খুবি ভাবার্থ।
বাস্তবতা সেখানে উদীয়মান।
তবুও চাই গল্পে মানবতা স্বার্থক হয়ে উঠুক।
ভালো লেখনী, দিদি।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ দাদা মন্তব্যের জন্য।
শুভ কামনা রইলো।
তৌহিদ
অন্যকে এড়িয়ে গিয়ে যারা ভাবে সহজেই সুখ পাওয়া যায় তারা বোকা। সুখ অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র মাধ্যম থেকেও পাওয়া সম্ভব তবে মানবিকতা আর মনুষ্যত্ববোধ নিজের মধ্যে থাকলে তবেই।
ভালো থাকুন আপু।
রোকসানা খন্দকার রুকু
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনিও ভালো থাকবেন।
শুভ কামনা।
শামীম চৌধুরী
আপনার সবগুলি ছোটগল্প আমার ভীষন ভালো লাগে। এটাও দারুন লাগলো। কেমনে লিখেন?
শুভ কামনা রইলো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আপনি যেমনে সাপের পিছুপিছু গিয়ে ছবি তোলেন তেমন করে। কি ভয়ংকর রে বাবা। ডিসকভারি ফেল।
শুভ কামনা।